Tuesday, February 24, 2015

দুশ্চিন্তা ও প্রার্থনা

প্রার্থনা কি এমনি একটি স্পেয়ারহুইল যা কেবল বিপদের সময়ই দরকার পড়বে? না আসলে তা নয়। প্রার্থনা হলো স্টিয়ারিং হুইল যা আপনাকে সারা জীবনই সঠিক পথের সন্ধান দেয়। আপনি কি জানেন আপনার গাড়ীর উইন্ডশীল্ডটি কেন বড় আর রেয়ার-ভিউ মিরর কেনইবা অনেক ছোট? সম্ভবতঃ জানার চেষ্টাই করেন নি। এর একটি জীবনাশ্রয়ী উত্তর আছে সেটা হলোঃ আমাদের অতীত এতটা দরকারী নয়। তাই বর্তমানটা হলো গাড়ীর উইন্ডশীল্ড আর ভবিষ্যৎটা হলো রেয়ার ভিউ মিরর। বাস্তববাদীরা বলে, অতীতের দীর্ঘশ্বাস আর ভবিষ্যতের আশ্বাস বাস্তব জীবনে কোনটাই কাজে আসে না। বর্তমানই জীবন্ত। সুতরাং জীবন্ত বর্তমানে কাজ করে যাওয়াটাই প্রজ্ঞা। লুক অ্যাহেড। উইন্ডশীল্ড দিয়ে বর্তমানটাই দেখুন। 
বন্ধুত্ব হলো বই বা পুস্তকের মত। এই বই পুড়িয়ে ফেলতে কয়েক সেকেন্ড লাগে। তাই না? কিন্তু এই বই লিখতে? কয়েক বছর লাগে এই বই লিখতে।
এ বিশ্বের সব কিছুই নশ্বর, ক্ষণস্থায়ী কেবল আল্লাহ পাক ছাড়া। তাই্ এ দুনিয়ার যা ভালো, সেটা উপভোগ করুন। এই ভাল সারা জীবন থাকবে না। যদি খারাপ লাগে, অধৈর্য হবেন না। এটাও ক্ষণস্থায়ী। পুরোনো বন্ধুরা এক একটা সোনার টুকরো। আর নোতুন বন্ধুরা হীরা। তাই নোতুন বন্ধু বা হীরা পেলে পুরোনো বন্ধু বা সোনার টুকরোকে ভুলে যাওয়াটা ঠিক হবে না। কারণ, হীরা পেতে হলে সোনার ভিত দরকার পড়ে। 
কখনো কখনো আশা ভরসা হারিয়ে ফেললে আমরা অধৈর্য হয়ে পড়ি তাই না। আসলে এটা আমাদেরকে ভাবতে সময় দেয়। মানে রিল্যাক্স করবার সময় দেয়। আমরা সেটা বুঝিই না। তাই রিল্যাক্স করুন। এটা সরল পথে একটু বাঁক। এই বাঁকই শেষ না। আরো বাঁক আসতে পারে। এর পর সোজা পথ পাবেনই। কারণ আল্লাহই বলেছেন নিশ্চয়ই কষ্টের পরে সুখ আছে।
একবার এক অন্ধ লোক এক জ্ঞানী লোককে প্রশ্ন করেছিল, “আচ্ছা, দৃষ্টিশক্তি হারানোর মত এমন খারাপ কিছু আছে কি?” জ্ঞানী লোক জ্ঞানীর মত উত্তর দিয়ে বলেছিল, “দৃষ্টিশক্তি হারানোর মত এমন খারাপ কিছু আছে বৈ কি, আর সেটা হলো ভিশন বা স্বপ্ন বা মনের চোখ বন্দ করা।”
 দুশ্চিন্তা আগামী দিনের দুর্দশা দূর করে না। দুশ্চিন্তা আজকের শান্তিটাই নষ্ট করে দেয়। তাই আসুন আমরা প্রার্থনা থেকে শক্তি নিই আর দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকি।
আল্লাহ পাক তাই পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ওয়াস্তাঈনু বিস-সাবরে ওয়াসসালাহ্ ইন্নাল্লাহা মা আস-সাবেরীন।