Sunday, February 26, 2023

অন্তর কঠিন হওয়ার কারণগুলো

 অন্তর মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে। সুস্থ অন্তর মানুষকে কল্যাণের পথ দেখায়। আর অসুস্থ কলব মানুষকে কুপথে নিয়ে যায়। আমাদের সমাজে অনেক মানুষ এমন রয়েছে, যাদের অন্তর মৃতপ্রায়। যতই সুন্দর করে তার সামনে মুক্তার মতো কথামালা বলা হোক না কেন, তার ভেতরে কোনো ধরনের পরিবর্তন হয় না, সে পরিবর্তন হওয়ার অনুভবও করে না। এর কারণ হচ্ছে, তার অন্তর মরে গেছে। তার অন্তর ভীষণ অসুস্থ হয়ে আছে। এই ব্যাধিময় অন্তরের কারণে সে কোনো ভালো জিনিস অনুধাবন করতে পারে না। তাই প্রতিনিয়ত তার দ্বারা খারাপ কাজ বেড়েই চলে। নিম্নে আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যেগুলোর কারণে অন্তর কঠোর হয়ে যায়, অসুস্থ হয়ে যায়।

আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন থাকা: যে অন্তর আল্লাহকে স্মরণ করে না, আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন থাকে, সে অন্তর ধীরে ধীরে বক্র হতে থাকে, সংকীর্ণ হতে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে আমার উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন হবে বড় সংকটময়। আর কিয়ামতের দিন আমি তাকে অন্ধ করে উঠাব।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত: ১২৪)
গুনাহে লিপ্ত থাকা : কোনো ব্যক্তি যদি সব সময়, প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত থাকে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরকে কঠোর করে দেন। তার অন্তর মরে যায়, ভালো জিনিস কল্পনা করতে পারে না। আল্লাহ তার ওপর ক্রোধান্বিত থাকেন। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বান্দা যখন একটি গুনাহ করে তখন তার অন্তরের মধ্যে একটি কালো চিহ্ন পড়ে। অতঃপর যখন সে গুনাহর কাজ পরিহার করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাওবা করে তার অন্তর তখন পরিষ্কার ও দাগমুক্ত হয়ে যায়। সে আবার পাপ করলে তার অন্তরে দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তার পুরো অন্তর এভাবে কালো দাগে ঢেকে যায়। এটা সেই মরিচা আল্লাহ তাআলা যার বর্ণনা করেছেন যে, কখনো নয়, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের মনে জং (মরিচা) ধরিয়েছে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৩৪)
সীমা লঙ্ঘন করা: ইসলাম মধ্যপন্থা অবলম্বন করার কথা বলে। আল্লাহ তাআলা সীমা লঙ্ঘনকারীকে ভালোবাসেন না। যারা আল্লাহ তাআলার আদেশকৃত বিষয়ে সীমা লঙ্ঘন করে, কিংবা নিষিদ্ধ বিষয়ে সীমা লঙ্ঘন করে, আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তর বক্র করে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের কারণেই তো আমি তাদেরকে আমার রহমত থেকে বিতাড়িত করি ও তাদের অন্তর কঠিন করে দিই। তারা কথা নিজ স্থান থেকে সরিয়ে দেয় এবং তাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেওয়া হয়েছিল তার এক বড় অংশ ভুলে যায়।’ (সুরা: মায়িদা, আয়াত: ১৩)
অতিশয় দুনিয়া আসক্তি: দুনিয়ার প্রতি অত্যধিক আসক্ত হওয়া, অন্তর কঠোর হয়ে যাওয়ার কারণ। উকবাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজ হাতের দ্বারা ইয়েমেনের দিকে ইশারা করে বললেন, ঈমান এদিকে। দেখো কঠোরতা এবং অন্তরের কাঠিন্য ওই সব বেদুইনের মধ্যে যারা তাদের উট নিয়ে ব্যস্ত থাকে (সব সময় দুনিয়া নিয়ে থাকে)। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩০২)
মানুষের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় মেশা: অপ্রয়োজনীয় ও অহেতুক অন্যের সঙ্গে মেশা, খারাপ সঙ্গীর সঙ্গে মেশা, এটাও অন্তর কঠোর হওয়ার কারণ। লোকালয়ে বেশি সম্পৃক্ততার কারণে আমাদের মাঝে গিবত-শিকায়াত অহেতুক কথা, সমালোচনা ইত্যাদি হতেই থাকে। আর এসব আমাদের অন্তরে প্রভাব সৃষ্টি করে। এ জন্য মানুষের সঙ্গে মেশার প্রয়োজন হলে তাহলে মন্দকে এড়িয়ে চলা। (মুফসিদাতুল কল্ব)
অলীক আকাঙ্ক্ষা: মানুষ স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। কিন্তু অহেতুক, অলৌকিক আর অপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ভাবা, চিন্তা করা, এটাও মানুষের অন্তরকে কঠোর করে দেয়। কারণ অহেতুক চিন্তা এমন সমুদ্র, যার কোনো কূল-কিনারা নেই। সে মিথ্যার সাগরে সারাক্ষণ নৌকা চালিয়ে বেড়ায়। হ্যাঁ, ভালো চিন্তা করা, কিংবা উঁচু আকাঙ্ক্ষা করা, তার জন্য বিশেষ প্রতিদান আছে—এ ব্যাপারে রাসুল (সা.) উতসাহ প্রদান করেছেন। (মুফসিদাতুল কল্ব)
অতিভোজন: জীবনের তাগিদে মানুষকে প্রতিনিয়ত আহার করতে হয়। কিন্তু অতিভোজন অপ্রয়োজনীয়। তা শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর নয়, বরং অন্তরের মধ্যেও বিরূপ প্রভাব ফেলে। আর তা যদি হারাম কোনো খাদ্য হয়, তাহলে তো তার ক্ষতি দুনিয়া ও আখিরাতে। আর হালাল খাদ্য হলেও পরিমিত আহার করা উচিত। তা মানুষের অন্তরকে ধীরে ধীরে মৃত বানিয়ে ফেলে। কারণ অতিভোজন মানুষের প্রবৃত্তিকে শক্তিশালী করে, আর এর প্রভাবে অন্তর কঠিন হতে থাকে। (মুফসিদাতুল কল্ব)
অধিক নিদ্রা: শরীরকে সতেজ রাখতে, কর্ম-উদ্যমতা ফিরে পেতে মানুষকে প্রতিনিয়ত ঘুমাতে হয়। তাই বলে যদি সারা দিন মানুষ ঘুমাতে থাকে, তাহলে এর ক্ষতিও অনেক বেশি। এ জন্য অপ্রয়োজনীয় ঘুম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা। যখন-তখন ঘুমানো শরীরকে যেভাবে নষ্ট করে, তেমনি কলবকেও নষ্ট করে দেয়। (মুফসিদাতুল কলব)
অধিক হাসা: অধিক হাসি মানুষের অন্তরকে মৃত করে দেয়। কেননা অধিক হাসিতে অভ্যস্ত ব্যক্তি তার হাসি-কৌতুকের আধিক্যের কারণে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস প্রাণশূন্য হয়ে যায়। সে কারণে অধিক হাসা থেকে বারণ করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা অধিক হাসবে না। কারণ অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪১৯৩)
গান-বাজনা শোনা: গান বাদ্য মানুষের অন্তরকে মৃতপ্রায় করে দেয়। কারণ, নাচগান বা অন্যান্য বেহুদা কাজকর্ম আর রং-তামাশা—এসব আল্লাহর স্মরণ থেকে মানুষকে বিমুখ করে দেয়। জিকির যেভাবে মানুষের অন্তরকে সজীব করে, বিপরীতে গান বাদ্য মানুষের অন্তরকে মেরে ফেলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই গান-বাজনা অন্তরে কপটতা সৃষ্টি করে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯২৭)
সূত্র: জাওয়াদ তাহের
নিজ পাঠ

Thursday, February 23, 2023

আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামিন

প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি নিখল বিশ্ব –জাহানের রব

ইসলাম মানুষকে একটি বিশেষ সভ্যতা ও সংস্কৃতি শিক্ষা দিয়েছে৷ সেটা হচ্ছে প্রত্যেকটি কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা। এটি সভ্যতা ও সংস্কৃতির একটি রীতি৷ সচেতনতা ও আন্তরিকতার সাথে এ রীতির অনুসারী হলে অনিবার্যভাবে তিনটি সুফল লাভ করা যাবেঃ

১: মানুষ অনেক খারাপ কাজ করা থেকে নিষ্কৃতি পাবে৷ কারণ আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা অভ্যাস তাকে প্রত্যেকটি কাজ শুরু করার আগে একথা চিন্তা করতে বাধ্য করবে যে, যথার্থই এ কাজে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করার কোন ন্যায়সংগত অধিকার তার আছে কি না?

২: বৈধ সঠিক ও সতকাজ শুরু করতে গিয়ে আল্লাহর নাম নেয়ার কারণে মানুষের মনোভাব ও মানসিকতা সঠিক দিকে মোড় নেবে৷ সে সবসময় সবচেয়ে নির্ভুল বিন্দু থেকে তার কাজ শুরু করবে৷ 

৩: এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুফল হচ্ছে এই যে, আল্লাহর নামে যখন সে কাজ শুরু করবে তখন আল্লাহর সাহায্য, সমর্থন ও সহায়তা তার সহযোগী হবে৷ তার প্রচেষ্টায় বরকত হবে৷ শয়তানের বিপর্যয় ও ধ্বংসকারিতা থেকে তাকে সংরক্ষিত রাখা হবে৷ বান্দা যখন আল্লাহর দিকে ফেরে তখন আল্লাহও বান্দার দিকে ফেরেন, এটাই আল্লাহর রীতি৷
-http://islam.net.bd/tafheem/

সকালে না খেয়ে থাকলে কী কী সমস্যা হয়?

 দেরি করে ঘুম থেকে উঠছেন, সকালে খাচ্ছেন না, রাতভর জাগছেন। এতে কী কী ক্ষতি হচ্ছে সে বিষয়ে কোনও ধারণা আছে কী? সকালে না খেলে যে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে তার মধ্যে ডায়বেটিস, মুটিয়ে যাওয়ার মতো ভয়ঙ্কর রোগ আছে জানেন কী।

ব্রেকফাস্টকে বা সকালের নাস্তাকে আমরা যতটা তাচ্ছিল্যের চোখে দেখি না কেন। সকালবেলা খাবার না খাওয়ার ফল যে কতটা মারাত্মক হতে পারে তা কল্পনার বাইরে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণা অনুসারে যারা নিয়মিত ব্রেকফাস্ট করেন না, তাদের হাঠাত করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে হরমোনাল ইমব্যাল্যান্সসহ আরও নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আরও যেসব ঝুঁকি থাকে তার একটি তালিকা দেওয়া হচ্ছেঃ

১. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে: সকালে কিছু না খেয়েই যারা দিন শুরু করুন, তাদের শরীরে গ্লকোজ টলারেন্স বেড়ে যায়, যা এক সময়ে গিয়ে ইনসুলিন রেজিটান্স হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে করে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

২. ওজন বৃদ্ধি পায়: অনেকেই ভাবেন কম খেলে ওজন কমে। এই ধরণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। বরং যত কম খাবেন, তত বেশি বেশি করে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। কেন এমনটা হয় জানেন? ব্রেকফাস্ট না করার কারণে লাঞ্চের সময় আসতে আসতে এতটাই খিদে পেয়ে যায় যে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়ে যায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হতে হতে এক সময়ে গিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

৩. হজম ক্ষমতা কমে যায়: খাবার হল জ্বালানি, যাকে কাজে লাগিয়ে শরীর সচল থাকে। সেই কারণেই তো সকাল বেলা কিছু না খেলে শরীরের কাছে নির্দেশ যায় কম কম কাজ করার জন্য। সে সময় হজম কম হতে থাকে।

৪.বুদ্ধি কমে যায়: ব্রেকফাস্ট না করলে শরীরে গ্লকোজ লেভেল কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্র কমে যাওয়ার কারণে ব্রেনে পুষ্টির ঘাটতি হতে শুরু করে। ফলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধির ধারও(sharpness) কমতে শুরু করে।

৫. রাগ বাড়তে থাকে: লক্ষ করে দেখবেন যখন পেটে খিদের আগুন জ্বলতে থাকে, তখন মন মেজাজও কেমন বিগড়ে যায়। বলা হয় A hungry man is an angyr man. তাই তো সকাল সকাল খাবার না খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীর ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে মন মেজাজও খারাপ হতে শুরু করে। ফলে কোনও কিছুতেই মন বসতে চায় না। সম্প্রতি ব্রিটেনের একটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে ব্রেকফাস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা মনকে একেবারে চাঙ্গা করে তোলে।

সোরসঃ হাকীম মোঃ আব্দুর রশিদ

যে মুসলিম ডিপ্রেশনের গপ্প শোনায়, সে মুসলিম নয়!

 হাদিসে এমনো অনেক ঘটনা রয়েছে যা মনে করলেই অন্তরে প্রশান্তি চলে আসে। উদাহরণ হিসেবে

🔺খাদিজা(রা:) খুব ধনী ঘরের মেয়ে ছিলেন। বিলাসিতার মধ্যেই বড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। নবিজী(স:) এর ইসলাম প্রচারের কারণে অন্যান্য গোত্র যখন কুরাইশদের অবরোধ দিল তখন নবীজি আর খাদিজা (রা:) এর গোত্রের শিশুদের আড়াই বছর তীব্র কষ্টে থাকতে হয়েছিলো। এমনকি ক্ষুধার তাড়নায় গাছের পাতা পর্যন্ত খেয়েছিলেন।

🔺হযরত বিলাল (রা) ছিলেন হাবশী ক্রীতদাস। ইসলাম কবুলের অপরাধে তাকে মরুভূমির রোদে ফেলে রাখা হতো, তার গায়ের চর্বি গলে যেতো। তারপরও তার মুখে লেগে থাকতো প্রশান্তি, রোদের তেজ তাঁর কালিমার তেজের কাছে পরাজিত হতো।

🔺ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা তাঁর জীবনে আট বছর জেল খেটেছেন। জেলেই মরেছেন। অথচ তিনি কী বলেছিলেন, জানেন? বলেছিলেন, দুনিয়াতেও একটা জান্নাত আছে, আমি আমার হৃদয়ে সে জান্নাতের খোঁজ পেয়েছি।

ঘটনা তিনটি পর্যালোচনা করার পরেও কি আপনারা বুঝতে সক্ষম নন যে উনারা কিরকম ঈমানের অধিকারী ছিলেন ⁉️

1.   তারপরে আসি দুনিয়াবি কিছু ভোগ বিলাসের বস্তু সম্পর্কে। এই যে গান শোনা, মুভি দেখা, মোটিভেশনাল বই পড়া বা মানুষের সাথে আড্ডা দিয়েই যদি ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি মিলত তবে গায়ক লিনকিন পার্ক আত্মহত্যা করলেন কেন? কিংবা অভিনেতা সুশান্ত শিং সুইসাইড করলেন কেন?মোটিভেশন গুরু ডেল কার্নেগি আত্মহত্যা করেছিলেন কেন?   

আল্লাহ্ তাআলা, ইসলাম, ঈমান আর ডিপ্রেশন এক অন্তরে একসঙ্গে থাকতে পারে না। যদি আপনার মনে বিন্দুমাত্র ডিপ্রেশন থাকে, তার মানে আপনার হৃদয়ে আল্লাহ্ নাই, বরং ওখানে শয়তান বাসা বেঁধেছে।

🔺‘যারা পথভ্রষ্ট তারা ছাড়া আর কে তার রবের অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়?’ ( সূরা আল-হিজর, ৫৬)

যারা ডিপ্রেশনে পড়ে বা আত্মহত্যা করে, মোটা দাগে দেখবেন, এরা অজ্ঞেয়বাদী নাহয় অবিশ্বাসী। কোনো মুসলিম যদি ডিপ্রেশনের স্বীকার হন, তাহলে আপনার ঈমান নিয়ে ভেবে দেখার সময় এসেছে। 🙂

কোন পরিস্থিতির গল্প শোনান আপনি? বউ ভালো না?

হযরত লূত (আ) এর স্ত্রীও ভালো ছিলো না। হযরত আছিয়া (আ) এর স্বামী ছিলেন কে জানেন? ফেরাউন। ফেরাউনকে ঈশ্বর না মানার অপরাধে তাঁকে টুকরো করে কেটে গরম তেলের মধ্যে ডোবানো হয়েছিল।

আরও শুনবেন? চেষ্টা করেও কিছু হচ্ছে না তাই ডিপ্রেশন?

হযরত নুহ (আ) প্রায় হাজার বছর দাওয়াত দিয়ে আশি জনকে দাওয়াত কবুল করাতে পেরেছিলেন।

আপনজন কষ্ট দিয়েছে? অপবাদ দিয়েছে?

ইউসুফ (আ) এর ভাইয়েরা তাকে কুয়ার মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে গেলো। ব্যবসায়ীর বৌ জুলেখার সাথে ব্যভিচার না করায় উল্টো অপবাদ দিয়ে সাত বছরের জেল দেওয়া হলো!!

এরপরও আপনি আমাকে কোন পরিস্থিতির গল্প শোনাবেন?

🔺আল্লাহ্‌র রহমত হতে তোমরা নিরাশ হয়ো না। কারণ আল্লাহর রহমত হতে কেউই নিরাশ হয় না, কাফির সম্প্রদায় ছাড়া ।’ (সূরা ইউসুফ, ৮৭)

মনে রাখবেন-

🔺 "নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে" (সূরা আল ইন'শিরাহ, ৬)

তাই এই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি লাভের জন্য আপনাকে আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস রেখে তার দিকেই ফিরে আসতে হবে। ইনশা আল্লাহ, তাহলেই আপনি সক্ষম হবেন। ❣️

Man, Oh Man

 পুরুষ মানুষ অনেকটা খেজুর গাছের মতো।

আদর পায় না

যত্ন পায় না

কেউ পানি দেয় না

সার দেয় না

গোড়ায় কেউ মাটি দেয় না

অন্যেরা আবার বলে নিজের পায়ের তলার মাটি নিজে শক্ত করো

পুরুষ মানুষ অনেকটা অযত্নে অবহেলায় বেড়ে ওঠে

কিন্তু তার কাছে অনেকের অনেক পাহাড় সমান প্রত্যাশা!

পুরুষ মানুষের ফল ভারী মিষ্টি

পুরুষ মানুষের রসের জন্য হাহাকার পড়ে যায়

পুরুষ মানুষের রসের গুড় চিনির চেয়ে কয়েকগুন বেশি উপকারী

পুরুষ মানুষকে করা হয় বছরের পর বছর ক্ষতবিক্ষত

যতদিন বেঁচে থাকে তাকে কাটা হয়

তার রস ফোঁটা ফোঁটা করে নিঙড়ে নেয়া হয়

রস নেয়া শেষ হলে তার আর কোন কদর থাকে না

পথের ধারে একাকী অযত্নে অবহেলায় খাড়া হয়ে থাকে

আবার জীবন শেষ করে জ্বালানির কাঠ হিসেবে পুরুষ মানুষ অধিক বিশ্বস্ত

মাছ ধরার ফাঁদ পাতার জন্য তার জুড়ি নেই

তারপরও খেজুর গাছ রূপী পুরুষ মানুষ কোন অভিযোগ করে না

কিছু প্রত্যাশা করেনা

ভালোবাসা চায়না; শুধু ফল দিয়ে যায়

রস দিয়ে যায় আর মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকে নিঃস্বার্থভাবে

পরিবারের জন্য সবকিছু কোরে!

-সূত্রঃ বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় ও নাঈম ইসলাম

-নিজ অভিজ্ঞতা

তরঙ্গায়িত জীবন

 Every minute someone leaves this world behind

প্রতি মিনিটেই কেউ না কেউ এ দুনিয়া ছেড়ে চলে যাচ্ছে

We're all in "the queue" without knowing it

আমরা সবাই ওই লাইনেই আছি সেটা না জেনে

We will never know how many people are ahead of us

আমরা জানতে পারবো না আমাদের আগে কজন চলে গেছে

We can't move to the bottom of the row

আমরা এই লাইনের শেষে যেতে পারবোনা কক্খনোই

We can't get out of line

না পারবো আমরা এই লাইনের বাইরে যেতে

We can't avoid the queue

না পারবো আমরা এই লাইন অবজ্ঞা করতে

 

So while we wait in line

তাই আমরা যখন এখানে অপেক্ষমান-

Make the moments count

আমরা দিন-ক্ষণ হিসেব করে চলি

Make priorities

অগ্রাধিকারগুলো কি কি, তা জেনে নেই

Make the time

সময় বের করি সেগুলো করতে

Let your qualities be known

গুণগুলো অপরকে জানাই

Make people feel important

মনুষের গুরুত্ব বুঝতে চেষ্টা করি

Make your voice heard

আমার কন্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়ুক

Make big things out of small things

ছোট ছোট কাজের সমন্বয়ে বড় বড় কাজ করি।

Make someone smile

কারো অন্তরের সুখ হয়ে বেঁচে রই

Make the change

ভালোর দিকে বদলাই

Make love

ভালোবাসি মানুষকে

Make Peace

শান্তির দিকে আসি

Get it together

একত্রে থাকি, একত্রে বাঁচি

Make sure you tell your people you love them

মানুষ যেনো বলে আমি তাদের ভালোবাসি

Make sure you have no regrets

নিশ্চিত হই যে আমার কোন অনুতাপ নেই

Make sure you're ready

নিশ্চিত হই চলে যাবার জন্যে

Very true

এটেই নিরেট সত্যি

Live life and let live, enjoy, be grateful

বাঁচি, বাঁচতে দেই, আনন্দ করি  আর কৃতজ্ঞ থাকি

don't waste time arguing

মিছে তর্কে সময় না নষ্ট করি

fighting in doing bad things life is short

জীবন ছোট, তাই ছোট খাটো কিছু নিয়ে বিতন্ডা না করি

live it

সচেতন হই,

be humble

বিনয়ী থাকি

love yourself and be happy with what you have

নিজেকে ভালোবাসি আর সুখী থাকি আমার যা যা আছে তাই নিয়ে

Have a awesome life

জীবন হোক সুন্দরতম

সকালে না খেয়ে থাকলে কী কী সমস্যা হয়?

 দেরি করে ঘুম থেকে উঠছেন, সকালে খাচ্ছেন না, রাতভর জাগছেন। এতে কী কী ক্ষতি হচ্ছে সে বিষয়ে কোনও ধারণা আছে কী? সকালে না খেলে যে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে তার মধ্যে ডায়বেটিস, মুটিয়ে যাওয়ার মতো ভয়ঙ্কর রোগ আছে জানেন কী।

ব্রেকফাস্টকে বা সকালের নাস্তাকে আমরা যতটা তাচ্ছিল্যের চোখে দেখি না কেন। সকালবেলা খাবার না খাওয়ার ফল যে কতটা মারাত্মক হতে পারে তা কল্পনার বাইরে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণা অনুসারে যারা নিয়মিত ব্রেকফাস্ট করেন না, তাদের হাঠাত করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে হরমোনাল ইমব্যাল্যান্সসহ আরও নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আরও যেসব ঝুঁকি থাকে তার একটি তালিকা দেওয়া হচ্ছেঃ
১. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে: সকালে কিছু না খেয়েই যারা দিন শুরু করুন, তাদের শরীরে গ্লকোজ টলারেন্স বেড়ে যায়, যা এক সময়ে গিয়ে ইনসুলিন রেজিটান্স হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে করে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
২. ওজন বৃদ্ধি পায়: অনেকেই ভাবেন কম খেলে ওজন কমে। এই ধরণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। বরং যত কম খাবেন, তত বেশি বেশি করে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। কেন এমনটা হয় জানেন? ব্রেকফাস্ট না করার কারণে লাঞ্চের সময় আসতে আসতে এতটাই খিদে পেয়ে যায় যে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়ে যায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হতে হতে এক সময়ে গিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
৩. হজম ক্ষমতা কমে যায়: খাবার হল জ্বালানি, যাকে কাজে লাগিয়ে শরীর সচল থাকে। সেই কারণেই তো সকাল বেলা কিছু না খেলে শরীরের কাছে নির্দেশ যায় কম কম কাজ করার জন্য। সে সময় হজম কম হতে থাকে।
৪.বুদ্ধি কমে যায়: ব্রেকফাস্ট না করলে শরীরে গ্লকোজ লেভেল কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্র কমে যাওয়ার কারণে ব্রেনে পুষ্টির ঘাটতি হতে শুরু করে। ফলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধির ধারও(sharpness) কমতে শুরু করে।
৫. রাগ বাড়তে থাকে: লক্ষ করে দেখবেন যখন পেটে খিদের আগুন জ্বলতে থাকে, তখন মন মেজাজও কেমন বিগড়ে যায়। বলা হয় A hungry man is an angry man. তাই তো সকাল সকাল খাবার না খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীর ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে মন মেজাজও খারাপ হতে শুরু করে। ফলে কোনও কিছুতেই মন বসতে চায় না। সম্প্রতি ব্রিটেনের একটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে ব্রেকফাস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা মনকে একেবারে চাঙ্গা করে তোলে।
Source: হাকীম মোঃ আব্দুর রশিদ

কোষ্ঠকাঠিন্যে

 কিছু টোটকা

আমলকির রস
আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি, এ-র উপকারী ভিটামিন। যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য ঠেকাতেও কিন্তু ভরসা রাখতে পারেন আমলকির রসে। কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীরা প্রতি দিন গরম জলে আমলকির রস মিশিয়ে খেতে পারেন। সুফল পাবেনই।
চিয়াবীজ
প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবারে সমৃদ্ধ চিয়াবীজ কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘরোয়া ওষুধ হতেই পারে। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও কমাত সাহায্য করে। ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে চিয়াবীজ দারুণ উপকারী।
নারকেল তেল
রূপচর্চা থেকে ওজন কমানো— সবেতেই নারকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এড়াতেও কিন্তু নারকেল তেল ঠিক তেমন ভাবেই সাহায্য করে। নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। নারকেল তেলে রান্না করতে পারেন। অথবা স্যালাডের উপর থেকে নারকেল তেল ছড়িয়ে দিতে পারেন।
যে খাবারে ফাইবার বেশি
হজমশক্তি ঠিক রাখতে ফাইবার দারুণ সাহায্য করে। হজমের গোলমাল থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্ম। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকতে ফাইবার আছে এমন খাবার বেশি করে খান। বেরি, ওট্‌স, বিনস্‌, ডাল, মটরশুঁটিতে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ফাইবার। নিয়মিত এগুলি খেতে পারেন। উপকার পাবেন।
-anandabazar

মুখের দুর্গন্ধ

 মুখের দুর্গন্ধ বিব্রতকর একটি সমস্যা

মুখের দুর্গন্ধ বিব্রতকর একটি সমস্যা। এ সমস্যাটার সমাধান কিন্তু খুব সহজ—জীবনযাত্রায় ইতিবাচক কিছু পরিবর্তন। আর এর পেছনে যদি আলাদা কোনো কারণ দায়ী থাকে, তাহলে সেটির চিকিৎসাও প্রয়োজন।
প্রতিটি মানুষের মুখ, দাঁত ও জিহ্বায় স্বাভাবিকভাবেই কিছু জীবাণু থাকে। এগুলো নিজের সুস্থতার জন্যই প্রয়োজনীয়। তবে এসব ব্যাকটেরিয়া থেকে এমন কিছু উদ্বায়ী পদার্থ তৈরি হয়, যা মুখের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। মুখের স্বাভাবিক লালা সঞ্চারণের ফলে এমন দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী পদার্থ জমা হতে পারে না, তাই সাধারণত সারা দিনে মুখে তেমন দুর্গন্ধ হয় না। ঘুমালে লালা সঞ্চারণ কমে যায়, ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখের দুর্গন্ধ হয় অনেকেরই। নিয়মিত সঠিক উপায়ে দাঁত ব্রাশ, খাওয়ার পরে কুলকুচি, প্রয়োজনে ফ্লস ব্যবহার, মাউথওয়াশ ব্যবহার করার মাধ্যমে সহজেই এমন সমস্যা
ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ছাড়াও যেসব কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে—
খাবারদাবার এবং অভ্যাস
পেঁয়াজ, রসুন, কমলালেবুর রস এবং কিছু মসলার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। এ ছাড়া যেকোনো খাবার দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলেও কিন্তু মুখে দুর্গন্ধ হয়। তাই না খেয়ে থাকতে হলে (যেমন পবিত্র রমজানে রোজা রেখে কিংবা উপবাসের সময়) মুখ পরিষ্কার রাখার প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। যাঁরা অ্যালকোহল কিংবা ধূমপান করেন, তাঁদের মুখেও দুর্গন্ধ হয়। পান, সুপারি, জর্দা, গুল প্রভৃতিও দুর্গন্ধের কারণ।
মুখের আরও ব্যাপারস্যাপার
মুখ যাঁদের শুষ্ক হয়ে থাকে, তাঁদেরও মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা বেশি। মুখ খোলা রেখে যাঁরা ঘুমান, তাঁদের মুখ শুষ্ক হয়ে থাকে। আবার কিছু ওষুধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও মুখ শুষ্ক হয়ে যায়।
দুর্গন্ধের অন্যান্য কারণ
শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ
সাইনাসে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ
গলার পেছনের অংশে কফ জমা হওয়া
বদহজম
ডায়াবেটিস
লিভার বা কিডনির কিছু রোগ
দুর্গন্ধের সমাধান
মুখ পরিষ্কার করার সময় জিহ্বাও (গোড়ার দিকটাসহ) পরিষ্কার করুন।
ঘুমের আগে মাউথওয়াশ ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
চিনিবিহীন Chewingগাম চিবাতে পারেন।
মুখ শুকনা বোধ করলেই একটু পানি খেয়ে নিন, যাতে অন্তত গলাটা ভেজে।
পান, সুপারি, জর্দা, গুল, সিগারেট এবং অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
যখন চিকিতসা প্রয়োজন
সব চেষ্টার পরও মুখে দুর্গন্ধ রয়ে গেলে চিকিতসকের পরামর্শ নিন। দাঁত বা মাড়ির কোনো অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকলে সেটির চিকিতসা নিন। আর কফ-কাশি, হজমের সমস্যা কিংবা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা গেলে সেটির চিকিতসা তো নেবেনই।

সূত্র: প্রথম আলো

কলা

 Origin Of Banana

কলা নামক ফলটি আসলে কী-কোথায় এর উত্পত্তি?
কলা (Banana) নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে যে এর ভিতরে এমন তিনটি জেনেটিক মার্কার রয়েছে, যা তিনটি ভিন্ন বন্য কলার (Wild Banana)। কিন্তু এমন কলা সারা বিশ্বে আবিষ্কৃত হয়নি। কলা পাকলে হলুদ রঙের হয়। মিষ্টি, নরম এবং মসৃণ হয়। কিন্তু আসলে একটি কলা আপনি যা ভাবেন তা নয়। এগুলি হলুদ, সবুজ, নীল, বাল্বের মতো, বীজযুক্ত বা বীজহীন হতে পারে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম কলা।
পৃথিবীতে অনেক ধরনের, অনেক আকারের ও রঙের কলা পাওয়া যায়। উদ্ভিদবিদ জুলি সার্ডোস (Julie Sardos) বলেন, 'কলার বৈচিত্র্য সমগ্র বিশ্বে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। আমরা আমাদের অনুসন্ধানে জানতে পেরেছি বর্তমানে সারা বিশ্বে যে সাধারণ কলা খাওয়া হচ্ছে তা তিনটি বন্য কলা থেকে এসেছে। কিন্তু তিনটি বুনো কলা সম্পর্কে কেউ কিছু জানে না। এমনকি খুঁজেও পাওয়া যায়নি। কলার এই তিন বন্য পূর্বপুরুষ মিলিত হলে মনে হয় কলা নিয়ে আমাদের চিন্তাধারা বদলে যাবে।'
বন্য কলা (Wild Bananas), যাকে বৈজ্ঞানিকভাবে Musa Acuminata বলা হয়। এর মধ্যে অনেক বীজ আছে। এটা খাওয়া যাবে না। মুসা প্যারাডিসিকা হলো কাঁচ কলা। বিজ্ঞানীরা মনে করেন কলার ইতিহাস ৭ হাজার বছরের পুরনো। আমরা এখন যে কলা খাচ্ছি, তার জন্ম ৭ হাজার বছর আগে পাপুয়া নিউ গিনিতে (Papua New Guinea)। তখনকার মানুষ কলার উৎপাদন করত, তাও কোনও সার ছাড়াই। তারপর প্রথমবার বীজ ছাড়াই কলা বের হলো। এটা খাওয়ার মতো ছিল। কিন্তু কীভাবে উৎপাদন করা হয়েছিল, তা আমরা জানি না।
কীভাবে সারা বিশ্বে কলা ছড়িয়ে পড়ল?
পাপুয়া নিউগিনি থেকে বাণিজ্যপথে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারতে কলা পৌঁছেছিল। এখানে আসার পর ক্রসব্রিড হয়েছে। আরও অনেক জাতের কলা তৈরি হতে থাকে। ছোট কলা, মোটা কলা, হাই পাল্প কলা, পাতলা কলা, হাই পাল্প কলা ইত্যাদি। বিভিন্ন রঙের কলা। মিষ্টি কম আর মিষ্টি বেশি। আপনি শুধু ভারতেই দেখুন, কয়েক ডজন ধরনের কলা পাবেন। কেরলের লাল রঙের কলা এবং ভুসাওয়ালের হলুদ কলা। গ্রোস মিশেল Gros Michel ("বিগ মাইক") কলার একটি রপ্তানি জাত এবং 1950 এর দশক পর্যন্ত এটি প্রধান জাত ছিল।
এভাবেই তিন বন্য কলার কথা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা
জুলি সার্ডোস বলেন, 'আমরা কম্পিউটারে তিনটি কলার জেনেটিক মার্কার দেখেছি। কোন রুট থেকে তারা মিলিত হয়েছে, তা খুঁজে বের করেছি। তদন্ত এখনও চলছে। এই কলা কোথা থেকে শুরু হয়েছে তা এই তদন্তে জানা যাবে। তাদের ক্রসব্রিডিং কোথায় করা হয়েছিল? কলার আগে বড় বীজ ছিল, কীভাবে বীজহীন ফল হয়ে উঠল, তাও জানা যাবে।'
বিজ্ঞানীরা কী পেয়েছেন?
তিনটি বন্য কলার জেনেটিক মার্কারগুলির মধ্যে একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। দ্বিতীয়টি স্থানীয়ভাবে বোর্নিও দ্বীপে প্রজনন করা হয়েছিল। তৃতীয়টি এসেছে পাপুয়া নিউ গিনির কলা থেকে। এসব জায়গা থেকে জেনেটিক চরিত্র অবশ্যই পাওয়া যায়, কিন্তু তার পরেও কলা সবচেয়ে রহস্যময় ফল। তাদের গোপন কথা প্রকাশ করা হচ্ছে না। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানী জেমস লাইবেনস ম্যাক বলেন, সার্ডোসের তথ্য থেকে জানা যায় যে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কোথাও কলা জন্মেছিল।
আগে কলা নরম ফল ছিল না:
কলা ছিল বীজসহ প্রথম শক্ত ফল, যা খাওয়া যেত না। তাহলে হঠাৎ করে মিষ্টি মণ্ডসহ বীজহীন ফল হল কী করে? এই প্রশ্নের উত্তরে জুলি বলেছেন, 'কলার প্রজনন এত সহজ নয়। একটি ভোজ্য কলা তৈরি করা সহজ নয়। আপনাকে এক জাতের কলা অন্য জাতের সঙ্গে ক্রসব্রিড করতে হবে। এটা যে সফল হবেই তা নয়। তারপর কলা এমন হতে হবে, যেন খেতে হয়। অন্যথায় প্রজনন নষ্ট হয়ে যাবে। এই গবেষণাটি সম্প্রতি ফ্রন্টিয়ার্স ইন প্ল্যান্ট সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।'

জামাতে নামায পড়া কেন?

 নামাজ আদায়কারীদের অনেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মসজিদে আসেন। মসজিদে নামাজ পড়তে এলে তাঁদের পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে ওঠে। মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের অশেষ সওয়াব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত একা পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি। (বুখারি শরিফ)

মসজিদে নামাজ আদায় করলে বান্দার আত্মিক উন্নতি হয়। সামাজিক ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। জামাতে নামাজ আদায় করায় মুসলমানরা দৈনিক পাঁচবার একত্রে মিলিত হওয়ার সুযোগ পান। ফলে তাদের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে ওঠে। একতাবদ্ধ হয়ে সত কাজ করার শিক্ষা জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে অর্জন করা যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজের প্রথম সারি হলো ফেরেশতাদের সারির মতো। তোমরা যদি প্রথম সারির মর্যাদা সম্পর্কে জানতে, তবে তা পাওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তে। মনে রেখো, একা নামাজ পড়ার চেয়ে দুই ব্যক্তির একত্রে নামাজ পড়া উত্তম। আর দুই ব্যক্তির একত্রে নামাজ পড়ার চেয়ে তিন ব্যক্তির একত্রে নামাজ পড়া উত্তম। এভাবে যত বেশি লোকের জামাত হবে, তা আল্লাহর কাছে তত বেশি প্রিয় হবে।’
একবার এক অন্ধ ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার এমন কেউ নেই, যে আমাকে হাত ধরে মসজিদে আনবে।’ অতঃপর লোকটি মসজিদে উপস্থিত হওয়া থেকে অব্যাহতি চান এবং ঘরে নামাজ পড়ার অনুমতি চান। রাসুলুল্লাহ তাঁকে ঘরে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়ে দেন। লোকটি রওনা করলে রাসুলুল্লাহ তাঁকে পুনরায় ডেকে পাঠান। লোকটি ফিরে আসেন। রাসুলুল্লাহ তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তুমি কি আজান শুনতে পাও?’ লোকটি বললেন, ‘হ্যাঁ, শুনতে পাই।’ রাসুলুল্লাহ বললেন, ‘তাহলে তুমি মসজিদে উপস্থিত হবে।’ তারপর বললেন, ‘ফজর ও এশার নামাজ মুনাফিকদের জন্য অন্যান্য নামাজের তুলনায় বেশি কষ্টকর। তোমরা যদি জানতে এ দুটি নামাজের মধ্যে কী পরিমাণ সওয়াব নিহিত আছে, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাজে উপস্থিত হতে।’
-.prothomalo

সূরা ফাতিহা সালাতে অত্যাবশ্যকীয়

 সুরা ফাতিহা এমন এক সুরা, কেউ যখন এর একটি করে আয়াত পড়তে থাকে, আল্লাহ সঙ্গে সঙ্গে সেই আয়াতের জবাব দিতে থাকেন। এই সুরা যেন আল্লাহর সঙ্গে তাঁর বান্দার সরাসরি যোগাযোগ।

সুরা ফাতিহার অর্থ আবার দেখে নিই:
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহরই।
যিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়;
বিচার দিনের মালিক।
আমরা তোমারই উপাসনা করি, তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি;
তুমি আমাদের চালিত করো সঠিক পথে,
তাঁদের পথে, যাঁদের তুমি অনুগ্রহ দান করেছ,
যারা (তোমার) রোষে পতিত হয়নি, পথভ্রষ্ট হয়নি।
এই সাতটি আয়াতের মধ্যে প্রথম তিনটি আয়াতে আছে আল্লাহর পরিচয়। আর শেষ তিন আয়াতে আছে আল্লাহর কাছে আমাদের প্রার্থনা।
আল্লাহর পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে, তিনি পরম দয়ালু ও করুণাময়; কারণ তিনিই মহাবিশ্বের প্রতিপালন করছেন। তাই তিনিই আমাদের মাফ করে দেওয়ার চূড়ান্ত অধিকারী। তিনি যেহেতু বিচার দিবসের প্রভূ, সেই বিচারে তিনিই আমাদের প্রতি দয়া বর্ষণ করার একমাত্র ত্রাণকর্তা।
সুরাটির শেষ তিন আয়াতের প্রথমেই আল্লাহর কাছে আমরা সরল পথ দেখিয়ে দেওয়ার পথনির্দেশ চাচ্ছি। কোন পথ সরল? আল্লাহ তায়ালা নবী-রাসুলকে যে পথে চালিত করেছেন। এটি হলো আল্লাহর কাছে আমাদের প্রত্যাশা। যিনি নবী-রাসুলদের পথ দেখিয়েছেন, তিনি ছাড়া আমাদের কে আর সর্বোত্তম পথ দেখাতে পারেন!
প্রথম অংশে আল্লাহর পরিচয় আর শেষ অংশে আল্লাহর কাছে আমাদের প্রত্যাশার মাঝখানে বলা হয়েছে, ‘ইয়া কানা বুদু ওয়া ইয়া কানাস্তাইন।’ অর্থাত, ‘আমরা তোমারই উপাসনা করি, তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।’ এই আয়াতকে বলতে পারি আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। তাঁর কাছে আমাদের নিঃশর্ত আত্মনিবেদনের সম্পর্ক। আমাদের একমাত্র ইবাদত আল্লাহরই প্রতি। সব সাহায্যও আমরা তাঁর কাছেই চাই।
সুরাটির শেষাংশের প্রথম আয়াতে বলা হচ্ছে, তুমি আমাদের সরল পথ দেখাও। এর পরেই কথাটি আরেকটু বিশদ করে পর পর দুই আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ যাঁদের পরম অনুগ্রহ করেছেন, তাঁদেরকে দেখানো পথটিই হলো এ সরল পথ। কারা আল্লাহর এই অনুগ্রহ পেয়েছেন? যাঁরা পথভ্রষ্ট হননি। এ জন্য তাঁরা আল্লাহর ক্রোধেরও শিকার হননি।
-prothomalo

নবী, রাসূলদের ভাষা

 মাতৃভাষা আল্লাহর সেরা দান। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষকে মনের ভাব ব্যক্ত করতে মাতৃভাষা দান করেছেন। ভাষা অন্যান্য প্রাণীর ওপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম দিক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন, তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে।’ (সুরা আর-রহমান, আয়াত : ১-৪)

পৃথিবীতে বৈচিত্র্যময় ভাষা দান করেছেন। ভাষার এই বৈচিত্র্য আল্লাহর নিদর্শনের অংশ। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে আছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে।’ (সুরা রুম, আয়াত : ২২)
নবীরা মাতৃভাষায় কথা বলতেন : আল্লাহ তাআলা সব নবীকে তাঁর স্বজাতির ভাষা দিয়ে প্রেরণ করেছেন। তাঁরা নিজ নিজ জাতিকে মাতৃভাষায় আল্লাহর পথে আহ্বান করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে স্বজাতির ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ০৪)
আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ প্রত্যেক নবীকে তাঁর স্বজাতির ভাষায় প্রেরণ করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২১৪১০)
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘রাসুলরা মাতৃভাষাভাষী হওয়ার কারণ হচ্ছে, যেন তাদের জাতি রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য এবং তাঁরা কী নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন তা বুঝতে পারেন।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৪/৪৭৭)
মাতৃভাষায় দক্ষ ছিলেন রাসুলরা : নবী (আ.) শুধু মাতৃভাষায় ধর্ম প্রচার করেননি; বরং তাঁরা ছিলেন নিজ নিজ ভাষায় পাণ্ডিত্যের অধিকারী। সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও আলংকারিক ভাষার কৃতিত্বধারী। পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত থেকে যা অনুমান করা যায়। কোরআনে মুসা (আ.)-এর ভাষ্যে হারুন (আ.)-এর প্রশংসা করে বলা হয়েছে, ‘আর আমার ভাই হারুন, সে আমার চেয়ে বিশুদ্ধ ভাষার অধিকারী, তাই তাকে আমার সঙ্গে সাহায্যকারী হিসেবে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে।’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৩৪)
নবীজি (সা.)-এর ভাষাগত দক্ষতা : শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভি (রহ.) মহানবী (সা.)-এর ভাষাগত দক্ষতা সম্পর্কে লেখেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মুবারক ভাষার বিশুদ্ধতা, একই বাক্যে বহু বাক্যের সমাবেশ, অভূতপূর্ব বাচনভঙ্গি, অমূল্য নির্দেশ ও সমাধান এত বেশি থাকত যা কোনো গবেষক ও চিন্তাবিদ কোনো সীমা ও গণনার মধ্যে আবদ্ধ করতে পারবে না। তাঁর ভাষার মাধুর্য, গভীরত্ব ও সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কেননা আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে অধিক শুদ্ধ ও সুমধুর ভাষার অধিকারী কাউকে সৃষ্টিই করেননি।
একবার ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন যে হে আল্লাহর রাসুল, না আপনি বাইরে ভিনদেশে কোথাও গেছেন, না আপনি বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে ওঠা-বসা করেছেন, তবু আপনি এত সুন্দর শুদ্ধভাষা কোথা থেকে পেলেন? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ইসমাইল (আ.)-এর ভাষা ও পরিভাষা যা দুষ্প্রাপ্য ও বিলীন হয়ে গিয়েছিল তা আমার কাছে জিবরাইল (আ.) নিয়ে আসেন এবং তা আমি আত্মস্থ করেছি। উপরন্তু তিনি বলেন, আমার প্রভু আমাকে (আদব) ভাষা শিক্ষা দিয়েছেন, ফলে আমার ভাষাকে অতি উত্তম করে দিয়েছেন। যে শিক্ষা আরবি ভাষা, তার শুদ্ধতা, অলংকার, সৌন্দর্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাকে আরবরা আদব বলে। (মাদারিজুন নুবুওয়াহ)
কোন নবীর ভাষা কী ছিল : কোরআনের বর্ণনা থেকে স্পষ্ট হয় যে নবী-রাসুল (আ.) মাতৃভাষায় কথা বলতেন এবং মাতৃভাষাতেই মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। নবী-রাসুলদের ভাষা সম্পর্কে যেসব ঐতিহাসিক বর্ণনা পাওয়া যায়, তা হলো—
১. আদম (আ.) : পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী আদম (আ.) জান্নাতে আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে পৃথিবীতে আগমনের পর তিনি সিরিয়াক ভাষায় কথা বলেন। যাকে সিরিয়াক অ্যারামিক ভাষাও বলা হয়।
২. নুহ, শিশ, ইউনুস ও ইদরিস (আ.) : সিরিয়াক ভাষায় কথা বলতেন।
৩. হুদ ও সালিহ (আ.) : আরবি ভাষায় কথা বলতেন।
৪. ইবরাহিম (আ.) : তাঁর মাতৃভাষা ছিল সিরিয়াক। তবে তিনি আরবি ভাষায়ও পারদর্শী ছিলেন।
৫. লুত ও ইয়াকুব (আ.) : তাঁরাও সিরিয়াক ও আরবি উভয় ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।
৬. ইসমাইল, আইয়ুব ও শোয়াইব (আ.) : আরবি ভাষায় কথা বলতেন।
৭. ইউসুফ (আ.) : শৈশবে তিনি আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে মিসরে আগমনের পর প্রাচীন মিসরীয় ভাষা কিবতি ভাষায় কথা বলতেন।
৮. দাউদ ও সুলাইমান (আ.) : অ্যারামিক (সিরিয়াক ভাষার উপভাষা ও হিব্রুর প্রাচীনরূপ) ভাষায় কথা বলতেন। তবে তাঁরা আরবি ভাষায়ও পারদর্শী ছিলেন।
৯. মুসা ও হারুন (আ.) : তাঁরা প্রাচীন মিসরীয় কিবতি ভাষায় কথা বলতেন। তবে তিনি মাদায়েনে হিজরত করার পর আরবি ভাষা রপ্ত করেন। তবে মিসরের বনি ইসরাঈলরা অ্যারামিক (হিব্রু) ভাষায় কথা বলত।
১০. ইউশা বিন নুন (আ.) : তিনি মূলত আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে প্রাচীন মিসরীয় কিবতি ভাষাও জানতেন।
১১. জাকারিয়া, ঈসা ও ইয়াহইয়া (আ.) : তাঁরা অ্যারামিক ভাষায় কথা বলতেন। তবে তাঁরা আরবি ভাষাও জানতেন।
১২. মুহাম্মদ (সা.) : তিনি আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তিনি ছিলেন আরবের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ভাষার অধিকারী।
মতভিন্নতা ও সমাধান : নবীদের মাতৃভাষা নিয়ে ঐতিহাসিকদের ভেতর মতভিন্নতা আছে। তবে বেশির ভাগ মতের মধ্যেই সমন্বয় করা সম্ভব। যেমন ঈসা (আ.)-এর ভাষার বিষয়ে দুটি মত হলো অ্যারামিক ও হিব্রু। মূলত অ্যারামিক হলো হিব্রু ভাষার প্রাচীনরূপ। হিব্রু অ্যারামিকের বিবর্তিত রূপ। তাই মৌলিকভাবে উভয় মতের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
সূত্রঃ (ফিকরাহ ডটকম ও আল-মুলাক্কাস ডটকম)
আতাউর রহমান খসরু