Tuesday, October 24, 2023

সুরা লুকমানের উপদেশ বদলে দিতে পারে জীবনে চলার ধরন

 সুরা লুকমান পবিত্র কোরআনের ৩১তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এতে ৪ রুকু, ৩৪ আয়াত। যারা নামাজ পড়ে, জাকাত দেয় এবং পরলোকে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য পবিত্র কোরআন একটি একক কিতাব ও পথনির্দেশক। লোকমান হাকিম একটি পরিচিত নাম। লুকমান স্বীয় পুত্রের প্রতি আল্লার একত্ব বা তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার, মা-বাবার সেবা, নামাজ আদায়, জাকাত প্রদান ও বিপদে ধৈর্য ধারণ সম্পর্কে যেসব উপদেশ দিয়েছিলেন, তা উল্লেখ করা হয়েছে। অহংকার না করা, সংযতভাবে চলাফেরা এবং নম্রভাবে কথা বলার জন্য উপদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, গলার আওয়াজের মধ্যে গর্দভের গলাই সবচেয়ে শ্রুতিকটু।

লুকমান তার ছেলেকে উপদেশ দিয়েছিলেন। উপদেশগুলো বদলে দিতে পারে জীবনে চলার ধরন।
উপদেশ–১: আল্লাহর কোনো শরিক কোরো না । আল্লাহর শরিক করা তো চরম সীমালঙ্ঘন।
উপদেশ–২: নামাজে দাঁড়ালে অন্তরের হেফাজত করা। নামাজে দাঁড়ালে তখন মনকে স্থির রাখা কষ্ট হয়ে পড়ে। ধরা যাক কোনো একটা জিনিস হারিয়ে ফেলেছেন। অনেক খুঁজেও পাননি। দেখা যায়, নামাজে দাঁড়াতেই মনে পড়ে, জিনিসটা অমুক জায়গায় শয়তান মনকে স্থির থাকতে দেয় না। নামাজে দাঁড়ালেই সারা দিনের হিসাব কষে। নামাজে দাঁড়ালে কাজের রুটিন তৈরি করে। লোকমান হাকিম বলেন, নামাজের সময় অন্তরের হেফাজত কর।
উপদেশ–৩: খাবার ধীরেসুস্থে খাওয়া। তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় অথবা খাবার ওপরে উঠে নাক জ্বালাপোড়া করে। একটু অসতর্কতায় বড় বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে। এজন্য লোকমান হাকিম খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন।
উপদেশ–৪ : অন্যের ঘরে গিয়ে এদিক-ওদিক না তাকানো। এ অভ্যাস থাকলে দূর করা উচিত। লুকমান বললেন, অন্যের ঘরে যেন চোখের হেফাজত করে। আপনার জন্য তারাও যেন লজ্জিত না হয় আপনিও যাতে লজ্জিত না হন।
উপদেশ–৫: কথা বলা বা ভাষণ দেওয়ার সময় নিজেকে সংযত রাখা। অসতর্কভাবে কথা বললে বিপদ হতে পারে। বেশি কথা বললে নিজের মর্যাদার হানী হয়।
উপদেশ–৬: মৃত্যুকে এক মুহূর্তের জন্যও না ভুলে যাওয়া। মৃত্যুর কথা স্মরণ রাখা। কারণ যে কোনো সময় মৃত্যু চলে আসতে পারে।
উপদেশ–৭: আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কোরো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫২)। যার অন্তরে সব সময় আল্লাহর জিকির থাকবে, যার জিভ সব সময় আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত থাকবে, আল্লাহ তাঁকে প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল করে নেবেন।
উপদেশ–৮ : কারো উপকার করলে সেটা একেবারের জন্য ভুলে যাওয়া । কেউ কারও কাছে সহজে হাত পাতে না; অভাবে পড়ে কিংবা বিপদে পড়ে মানুষ সাহায্য চায়। উপকার করলে তা নিয়ে খোঁটা দেওয়া যাবে না।
উপদেশ–৯ : কেউ আঘাত দিয়ে থাকলে ভুলে যেতে হবে।
Source: Al Quran
ফেরদৌস ফয়সাল

যে সুরা পাঠে কোরআনের এক-চতুর্থাংশ পড়ার সওয়াব

 পবিত্র কোরআনের ১০৯ নম্বর সুরা হলো‌ কাফিরুন‌। মক্কায় নাজিল হওয়া এই সুরাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সুরায় তাওহিদের শিক্ষা এবং মুশরিকদের সঙ্গে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সুরায় কাফিরদের লোভনীয় প্রস্তাব এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদ বাতিল ঘোষণা করা হয়। (তাফসিরে জালালাইন আরবি-বাংলা : ৭/৫৯৬)

প্রতিদিন সুরা কাফিরুন পাঠ
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে সুরা কাফিরুন খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি সুন্নত নামাজে এটি পড়তেন। বাইতুল্লাহর তাওয়াফ শেষ করার পরের নামাজেও তিনি এটা পড়তেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের সুন্নত নামাজে সুরা কাফিরুন‌ ও সুরা ইখলাস পাঠ করতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৫৬৩, আবু দাউদ, হাদিস : ১২৪৬)
ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের সুন্নত দুই রাকাতে এবং মাগরিবের সুন্নত দুই রাকাতে সুরা কাফিরুন ও সুরা ইখলাস পাঠ করতেন। (মুসনাদে আহমাদ : ২/২৪)
সুরা কাফিরুনের ফজিলত
সুরা কাফিরুন ছোট্ট একটি সুরা। মাত্র ছয়টি আয়াত। পড়তে এক মিনিট লাগে না। অথচ পাঠ করার সওয়াব অনেক বেশি। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইজা জুলজিলাত সুরা যে ব্যক্তি পাঠ করবে, অর্ধেক কোরআনের সমান তার সওয়াব হবে। ক্বুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন যে ব্যক্তি পাঠ করবে, তার কোরআনের এক-চতুর্থাংশ পাঠের সমান সওয়াব হবে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯৩)
সুরা কাফিরুন ও নিরাপত্তা
শরিয়তসম্মত ‘রুকইয়া’ (নিরাপত্তা কবজ) করার বিধান আছে। আর রুকইয়ার জন্য নির্ধারিত আয়াতের অন্যতম হলো সুরা কাফিরুন। রাতে ঘুমানোর আগে এই সুরা পাঠ করার কথা আছে। ফারওয়া বিন নওফল (রহ.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, একবার নবীজি (সা.) তাঁকে বলেন, তুমি শোয়ার সময় সুরা কাফিরুন তিলাওয়াত করবে। কেননা এই সুরা শিরক থেকে মুক্তি দানকারী। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৭১, মুস্তাদরাকে হাকেম : ২/৫৩৮)
সূত্র: আল কুরআনের তাফসীর

এক বারাকার গল্প

 বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা. এর পিতা আব্দুল্লাহ, একদিন মক্কার বাজারে গিয়েছিলেন কিছু কেনা-কাটা করার জন্য I এক জায়গায় তিনি দেখলেন, এক লোক কিছু দাস- দাসী নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিক্রি করছে I

আব্দুল্লাহ দেখলেন সেখানে দাঁড়িয়ে আছে, একটা ছোট নয় বছরের কালো আফ্রিকান আবিসিনিয়ার মেয়ে I মেয়েটাকে দেখে আব্দুল্লাহর অনেক মায়া হলো, একটু রুগ্ন হালকা-পাতলা কিন্তু কেমন মায়াবী ও অসহায় দৃষ্টি দিয়ে তাঁকিয়ে আছে I
তিনি ভাবলেন ঘরে আমেনা একা থাকেন, মেয়েটা পাশে থাকলে তার একজন সঙ্গী হবে I এই ভেবে তিনি মেয়েটাকে কিনে নিলেন I
মেয়েটিকে আব্দুল্লাহ ও আমেনা অনেক ভালোবাসতেন I স্নেহ করতেন I এবং তারা লক্ষ্য করলেন যে, তাদের সংসারে আগের চেয়েও বেশি রাহমাত ও বরকত চলে এসেছে I
এই কারণে আব্দুল্লাহ ও আমেনা মেয়েটিকে আদর করে নাম দিলেন "বারাকাহ"I
এই গল্প, বারাকার গল্প I
তারপর একদিন আব্দুল্লাহ, ব্যবসার কারণে সিরিয়া রওনা দিলেন I আমেনার সাথে সেটাই ছিল উনার শেষ বিদায়I তাঁর যাত্রার দুই এক দিন পর আমেনা একরাতে স্বপ্নে দেখলেন, আকাশের একটা তারা যেন খুব আলো করে তার কোলে এসে পড়লো I
পরদিন ভোরে তিনি বারাকাকে এই স্বপ্নের কথা বললেন I
উত্তরে বারাকা মৃদু হেসে বললেন, "আমার মন বলছে আপনার একটা সুন্দর সন্তানের জন্ম হবে।"
আমেনা তখনও জানতেন না তিনি গর্ভ ধারণ করেছেন কিন্তু কিছুদিন পর তিনি বুঝতে পারলেন, বারাকার ধারণাই সত্যি I
আব্দুল্লাহ আর ফিরে আসেন নি, সিরিয়ার পথেই মৃত্যুবরণ করেছেন I
আমেনার সেই বিরহ ও কষ্টের সময়ে, বারাকা ছিলেন একমাত্র সবচেয়ে কাছের সঙ্গী I
একসময় আমেনার অপেক্ষা শেষ হয় এবং তিনি জন্ম দিলেন আমাদের প্রিয় নবীকে I
শেখ ওমর সুলাইমানের বর্ণনা অনুযায়ী, সর্বপ্রথম আমাদের নবীকে দেখার ও স্পর্শ করার সৌভাগ্য হয়েছিল যে মানুষটির, সে হলো এই আফ্রিকান ক্রিতদাসী ছোট কালো মেয়েটি I
আমাদের নবীকে নিজ হাতে আমেনার কোলে তুলে দিয়েছিলেন, আনন্দে ও খুশিতে বলেছিলেন,
"আমি কল্পনায় ভেবেছিলাম সে হবে চাঁদের মত কিন্তু এখন দেখছি, সে যে চাঁদের চেয়েও সুন্দর।"
এই সেই বারাকা I নবীজির জন্মের সময় উনার বয়স ছিল তের বছরI ছোটবেলায় শিশু নবীকে আমেনার সাথে যত্ন নিয়েছেন, গোসল দিয়েছেন, খাওয়াতে সাহায্য করেছেন, আদর করে ঘুম পাড়িয়েছেন I
মৃত্যুর সময় আমেনা, বারাকার হাত ধরে অনুরোধ করেছিলেন তিনি যেন তাঁর সন্তানকে দেখে শুনে রাখেন I
বারাকা তাই করেছিলেন I বা-মা দুজনকেই হারিয়ে, ইয়াতিম নবী চলে আসলেন দাদা আবদুল মোত্তালিবের ঘরে I
উত্তরাধিকার সূত্রে নবী হলেন বারাকার নতুন মনিব I
কিন্তু তিনি একদিন বারাকাকে মুক্ত করে দিলেন, বললেন,
-"আপনি যেখানে ইচ্ছে চলে যেতে পারেন, আপনি স্বাধীন ও মুক্তI"
সেই শিশুকাল থেকেই নবী এই ক্রীতদাস প্রথাকে দূর করতে চেয়েছিলেনI বারাকা নবীকে ছেড়ে যেতে রাজি হলেন না I রয়ে গেলেনI মায়ের ছায়া হয়ে পাশে থেকে গেলেন I
এমনকি নবীজির দাদা উনাকে বিয়ে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তিনি কিছুতেই রাজি হলেন না I উনার একই কথা, -"আমি আমেনাকে কথা দিয়েছি, আমি কোথাও যাবো না"
তারপর একদিন খাদিজা (রাঃ) এর সাথে নবীজির বিয়ে হলো I বিয়ের দিন রাসূল (সাঃ) খাদিজা (রাঃ) এর সাথে বারাকাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন I তিনি বললেন, "উনি হলেন আমার মায়ের পর আরেক মা।"
বিয়ের পর রাসূল (সাঃ) একদিন বারাকাকে ডেকে বললেন, -"উম্মি! আমাকে দেখাশুনা করার জন্য এখন খাদিজা আছেন, আপনাকে এখন বিয়ে করতেই হবেI" (নবীজি উনাকে উম্মি ডাকতেন, নাম ধরে ডাকতেন না।)
তারপর রাসূল (সাঃ) ও খাদিজা মিলে উনাকে উবাইদ ইবনে জায়েদের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন I কিছুদিন পর বারাকার নিজের একটা ছেলে হলো, নাম আইমান I এরপর থেকে বারাকার নতুন নাম হয়ে গেলো "উম্মে আইমান"I
একদিন বারাকার স্বামী উবাইদ মৃত্যু বরণ করেন, নবীজি গিয়ে আইমান ও বারাকাকে সাথে করে নিজের বাড়ি নিয়ে আসেন এবং সেখানেই থাকতে দিলেন I
কিছুদিন যাওয়ার পর নবীজি একদিন বেশ কয়েকজন সাহাবীকে ডেকে বললেন,
"আমি একজন নারীকে জানি, যার কোন সম্পদ নেই, বয়স্ক এবং সাথে একটা ইয়াতিম সন্তান আছে কিন্তু তিনি জান্নাতি, তোমাদের মধ্যে কেউ কি একজন জান্নাতি নারীকে বিয়ে করতে চাও?"
এইকথা শুনে জায়েদ ইবনে হারিসা (রাঃ) নবীজির কাছে এসে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন I নবীজি উম্মে আইমানের সাথে কথা বলে বিয়ের আয়োজন করলেন I
বিয়ের দিন রাসূল (সাঃ) জায়েদকে বুকে জড়িয়ে আনন্দে ও ভালোবাসায়, ভেজা চোখে, কান্না জড়িত কণ্ঠে বললেন,
"তুমি কাকে বিয়ে করেছো, জানো জায়েদ?"
-হাঁ, উম্মে আইমানকে I জায়েদের উত্তর I নবীজি বললেন, -"না, তুমি বিয়ে করেছো, আমার মা কে।”
সাহাবীরা বলতেন, রাসূল (সাঃ) কে খাওয়া নিয়ে কখনো জোর করা যেত না I উনি সেটা পছন্দ করতেন না I কিন্তু উম্মে আইমান একমাত্র নারী, যিনি রাসূল (সাঃ) কে খাবার দিয়ে "খাও".." খাও".. বলে তাড়া দিতেন I আর খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাশে বসে থাকতেন I নবীজি মৃদু হেসে, চুপ চাপ খেয়ে নিতেন I
রাসূল (সাঃ) উনার দুধ মাতা হালিমাকে দেখলে যেমন করে নিজের গায়ের চাদর খুলে বিছিয়ে তার উপর হালিমাকে বসতে দিতেন ঠিক তেমনি মদিনায় হিজরতের পর দীর্ঘ যাত্রা শেষে উম্মে আইমান যখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন নবীজি উনার গায়ের চাদরের একটা অংশ পানিতে ভিজিয়ে, উম্মে আইমানের মুখের ঘাম ও ধুলোবালি নিজ হাতে মুছে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, "উম্মি ! জান্নাতে আপনার এইরকম কোন কষ্ট হবে না"
নবীজি মৃত্যুর আগে সাহাবীদের অনেক কিছুই বলে গিয়েছিলেন I সেই সব কথার মধ্যে একটা ছিল, উম্মে আইমানের কথা Iবলেছেন, "তোমরা উম্মে আইমানের যত্ন নিবে, তিনি আমার মায়ের মত I তিনিই একমাত্র নারী, যিনি আমাকে জন্ম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখেছেন I আমার পরিবারের একমাত্র সদস্য, যিনি সারাজীবন আমার পাশে ছিলেন I"
সাহাবীরা সেই কথা রেখেছিলেন I গায়ের রং নয়, এক সময়ের কোন ক্রিতদাসী নয়, তাঁর পরিচয় তিনি যে নবীর আরেক মা I মায়ের মতোই তাঁরা, এই বৃদ্ধা নারীকে ভালোবেসে আগলে রেখেছিলেন I
সূত্র: ইবনে হিশাম ও শেখ ওমর সুলাইমান।

Thursday, October 12, 2023

Basics of Family Life

 9 Simple Ways to Show

1. The Power of Kindness

An essential trait that sets you apart. Little gestures that speak volumes of your care.

2. Let Communication Flourish

The key to unlock her heart's door. Share, listen, and grow together.

3. Charm with Humor

The magic of laughter and joy. Weave a bond that lasts a lifetime.

4. Confidence: A Magnet Believe in yourself, and she'll believe in you. A pillar of strength for her heart to lean on.

5. A Foundation of Respect Treasure her feelings, embrace her thoughts. A relationship built on mutual honor.

6. Ambition: A Woman's Attraction

Be a man with goals, dreams, and drive. She'll walk hand in hand, supporting your stride.

7. Honesty Bonds Hearts

Speak the truth, no matter how tough. Honesty, the glue that binds two souls.

8. Embrace Emotional Intelligence

Understanding emotions, both hers and yours. Forge a connection that goes beyond words.

9. Love with All Your Heart In the end

love is the key With kindness, respect, and honesty, you'll truly be THE ONE! 





‘ইন্না লিল্লাহ’ শব্দের প্রভাব

 ‘ইন্না লিল্লাহ’ শব্দ একটি ইসলামী পরিভাষা। এটি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বাক্যের সংক্ষেপিত রূপ। এ বাক্যটি সম্পর্কে ধর্মবিশ্বাসী কিংবা ধর্মবিদ্বেষী সবাই ওয়াকিবহাল। বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ কিংবা ধর্মভীরু সব মুসলমানের কাছে এ শব্দ বা বাক্যটি অতি পরিচিত। মুসলিম সমাজে সর্বাধিক উচ্চারিত এ শব্দ বা বাক্যের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এ শব্দ বা বাক্যটির প্রকৃত মর্মার্থ সম্পর্কে অনেকের ন্যূনতম ধারণা নেই। এমনকি বাক্যটির সাধারণ সরল অর্থও অনেকে জানেন না এবং জানতেও চেষ্টা করেন না। অথচ সব মুসলিমের জন্য এ শব্দটির প্রকৃত অর্থ জানা অতীব জরুরি।

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বাক্যটির সরল অর্থ হলো- নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য আর আমাদেরকে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। ইহলৌকিক জীবনে প্রতিটি মানুষকে ইন্না লিল্লাহ শব্দের উচ্চারিত ধ্বনি পরকালীন ভাবনায় উজ্জীবিত করে। মানুষকে এ ভাবনায়ও নিয়োজিত করে যে, আমি কিংবা আমার ব্যক্তিসত্তা ক্ষণস্থায়ী, পরিবার কিংবা পরিজন আমার সাময়িক সঙ্গী, ধন-সম্পদ কিংবা বিত্ত-বৈভব এগুলোও আমার পরকালীন পাথেয় নয়, আমাকে এ জগৎ ছাড়তে হবে, কালের অতলে হারাতে হবে, ইতিহাসের উল্টানো পাতার সারিতে চাপা পড়তে হবে। মরণের পর হয়তো তখন কেউ আর কোনো দিন আমাকে স্মরণও করবে না, বরণও করবে না, আমার রেখে যাওয়া নীতি ও আদর্শ ধারণ করবে না, আমার অন্তিম শয্যার শেষ স্মৃতিটুকুও রক্ষা করবে না। আত্মীয়-স্বজন কিংবা প্রতিবেশীরা আর আমার নামটিও স্মরণে নিতে চাইবে না। জীবনের নির্মম পরিহাসময় এ বাস্তবতা প্রতিটি মানুষের ভাবনায় ফুটিয়ে তোলে ইন্না লিল্লাহ শব্দটি কিংবা ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বাক্যটি। এ বাস্তবতাটি রাসূলুল্লাহ সা:-এর একটি হাদিসে দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। খাদেমুর রাসূল সা: হজরত আনাস বিন মালেক রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘তিনটি জিনিস মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে (সাথে যায়)। দাফনের পর দু’টি ফিরে আসে, আরেকটি তার সাথেই থেকে যায়। সে তিনটি হলো- তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার আমল। দাফনের পর তার পরিবারবর্গ ও মাল ফিরে আসে। আর তার আমল তার সাথেই থেকে যায়’ (বুখারি-৬৫১৪, মুসলিম-৭৬১৩)।
ইহকালীন জীবনে মানুষ নানাবিধ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। অনেক সময় বিপদ পরিস্থিতি মানব জীবনকে তছনছ করে দেয়। বিপদের সম্মুখীন হয়ে অনেকে ভয়ানকভাবে ভড়কে যায়। মানুষের ক্ষমতা তখন আর কার্যকর হয় না। বিপদের এ ঘনঘটা মহান আল্লাহ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। তিনি বিপদ-আপদ দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন, মানুষের কর্মকাণ্ড যাচাই করেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে- ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা তাদের ওপর বিপদ এলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী’ (সূরা বাকারা-১৫৫ ও ১৫৬)।
ইন্না লিল্লাহ’ শব্দ বা বাক্যটির বহুবিধ কল্যাণ রয়েছে। জাগতিক জীবনে ঘটে যাওয়া বিপদে মানুষের যে অকল্যাণ হয়, ইন্না লিল্লাহ-এর আমলের বরকতে মহান আল্লাহ তায়ালা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে তার ধারণার চাইতেও বেশি কল্যাণ দান করেন। এ প্রসঙ্গে হাদিস বর্ণিত হয়েছে, নবী সা:-এর পত্নী উম্মে সালমা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যার (ওপর) কোনো মুসিবত পৌঁছে, অতঃপর আল্লাহ তাকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন সেরূপ বলে- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি; ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা’ অর্থ- ‘আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমাকে আমার এই বিপদে বিনিময় দান করুন এবং আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা করে দিন।’ তবে আল্লাহ তার সাথে সেরূপ করবেন। উম্মে সালমা রা: বলেন, আবু সালমা রা:-এর ওফাতের পর আমি ওই দোয়া পাঠ করলাম, আর বললাম, আবু সালমা রা: থেকে ভালো কে হবেন? ফলে তার পরিবর্তে আল্লাহ আমাকে তাঁর রাসূলুল্লাহ সা:কে প্রদান করলেন, অতঃপর তিনি আমাকে বিয়ে করেন (মুয়াত্তা ইমাম মালিক-৫৪৬)। আরো একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে কেউ বিপদ-মুসিবতে পড়ে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলবে এবং বলবে, হে আল্লাহ আমাকে এ মুসিবত থেকে উদ্ধার করুন এবং এর থেকে উত্তম বস্তু ফিরিয়ে দিন’ অবশ্যই আল্লাহ তাকে উত্তম কিছু ফিরিয়ে দেবেন’ (মুসলিম-৯১৮)।
জীবনকে পাপমুক্ত রাখতে ইন্না লিল্লাহ শব্দের ভূমিকা অত্যধিক। কোনো ব্যক্তি যদি অনাকাক্সিক্ষত কোনো পাপে জড়িত হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় যখনই ইন্না লিল্লাহ শব্দের মমার্থ তার স্মরণে আসে ওই ব্যক্তি তৎক্ষণাতই পাপ কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে সচেষ্ট হয়। কৃত পাপের জন্য সে অনুতপ্ত হয়, অনুশোচনা তাকে পরিশুদ্ধতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। সে মহান রবের দরবারে তাওবাহ-ইস্তিগফার কামনা করে কায়মনোবাক্যে অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রার্থনা করে। ইন্না লিল্লাহ শব্দের স্মরণ তার জীবনকে পরিশুদ্ধ করে তাকে সফল বানায়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে সে সফলকাম হয়েছে, যে তাকে পরিশুদ্ধ করেছে’ (সূরা আশ শামস-৯)।
প্রতিটি মানুষ যখন প্রিয়জন হারায় কিংবা কোনো মুসলিম ব্যক্তির মৃত্যু সংবাদ শুনে তখন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন শব্দটি সজোরে কিংবা মনে মনে পাঠ করে। বিপদ কিংবা আচানক ভয়াবহ কোনো বিপদের কথা শুনলে চোখে পানি টলমল করে, দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে, এমনকি চোখের সামনে এক ভয়াবহ স্মৃতি কিংবা স্বজনের নিত্যসঙ্গ কিংবা সহাবস্থানের দৃশ্যপট ফুটে উঠে। স্বজন হারানোর শোকে হৃদয় অশান্ত হয়, মুখে বিলাপের সুর ছড়িয়ে পড়ে। স্বজন হারানোর বুকচাপা এ কষ্ট লাঘবে শোকাহত লোকজন বার বার ইন্না লিল্লাহ শব্দ বলতে থাকে। এ শব্দ বলে বলে মনকে শান্ত রাখতে চায়, অবুঝ মনকে বুঝ দিতে চেষ্টা করে।
ইন্না লিল্লাহ শব্দের উপকারিতা বর্ণনা করতে গিয়ে ড. মুহাম্মদ আশ শাহহাত আল জুনদি বলেন, ‘মানুষের স্বভাবজাত অভ্যাস হলো, প্রিয়জনের বিচ্ছেদে অশ্রুসিক্ত হয়, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়, মন দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত হয়। প্রিয়জনের এ ব্যবচ্ছেদ তার মনোজগতে বিরাট প্রভাব বিস্তার করে। মনের এ অশান্তিকে ‘ইন্না লিল্লাহ’ শব্দ বা বাক্যের উচ্চারণ প্রিয়জনহারা ব্যক্তিকে প্রশান্তি দেয়, সবরে জামিল এখতিয়ারের তাওফিক দেয়।
প্রখ্যাত তাবেয়ি সাঈদ ইবনে জুবাইর রহ: বলেন, বিপদমুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ খুবই বরকতপূর্ণ একটি বাক্য। আমাদের নবীর আগে আর কোনো নবীকে ইন্না লিল্লাহ-এর মতো রবরকতপূর্ণ বাক্য দান করা হয়নি।
সূত্র: মো: আবদুল গনী শিব্বীর, মুহাদ্দিস, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদরাসা, নোয়াখালী