Saturday, June 7, 2025

প্রকৃত ভালোবাসাঃ শিক্ষকের কাছে ছাত্রীর প্রশ্ন

জবাবে শিক্ষক বললেন, আমি তোমার প্রশ্নের উত্তর দেব, কিন্তু তার আগে তোমাকে একটি কাজ করতে হবে। আমাদের কলেজের সামনে যে ভুট্টার ক্ষেত আছে তুমি ওখানে যাবে আর সবচেয়ে বড় ভুট্টাটি নিয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু একটা শর্ত আছে। বড় ভুট্টা খুঁজতে গিয়ে যে ভুট্টগুলো তুমি পিছনে ফেলে যাবে তা আর‌ নিতে পারবে না

ছাত্রীটি ভাবল, এ আবার এমন কি কাজ! সে মৃদু হেসে উঠে দাঁড়িয়ে ভুট্টার ক্ষেতে গেল আর একেবারে প্রথম সারি থেকে খোঁজা শুরু করল। সেই সারিতে একটা বড় ভুট্টা ছিল, কিন্তু তার মনে হল, সামনের সারিতে হয়তোবা আরো বড় কোনো ভুট্টা তার জন্য অপেক্ষা করে আছে।

এরপর সে যখন মাঠের অর্ধেকের বেশি খোঁজা শেষ করল তখন বুঝতে পারল, এদিকের ভুট্টাগুলো ঠিক অতটা বড় নয় যেটা সে আগেই খুঁজে পেয়েছিল। ক্ষেতের সবচেয়ে বড় ভুট্টাটি সে পেছনে ফেলে এসেছে এবং এজন্য তার অনুশোচনার শেষ থাকল না। কিন্তু এখন তার আর কিছুই করার নেই। তাই সে খোঁজা বাদ দিয়ে খালি হাতে শিক্ষকের কাছে ফিরে আসলো।

তখন শিক্ষক তাকে বললেন, এটাই‌ প্রকৃত ভালোবাসা। তুমি হয়তো তোমার জীবনে তাকে খুঁজে পেয়েছিলে, কিন্তু তবু আরো ভালো কাউকে পাবার আশায় যদি তাকে ত্যাগ করে থাকো, তবে এমন একদিন আসবে যেদিন তুমি উপলব্ধি করবে তোমার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মানুষটিকে তুমি হারিয়ে ফেলেছ। তখন হাজার আফসোস করলেও তাকে আর ফিরে পাবে না।







সন্তান জন্মের পর বেশীরভাগ স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কেই ভাটা পড়ে

 সন্তান জন্মের পর আমাদের দেশের বেশীরভাগ স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কেই ভাটা পড়ে। ২ জন বা ৩ জন বাচ্চা হলে তো কথাই নেই। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক হয়ে যায় ভাইবোনের মতো। বাচ্চার পিছনে দৌড়ে দৌড়ে, সংসারের কাজ করে করে স্বামীর সাথে রোমান্টিক সম্পর্কের মুড আর থাকেনা। সম্পর্কে শুরু হয় তিক্ততা। 

এদিকে দেশীয় কালচারে বাচ্চা নিয়ে ঘুমানো প্রায় সব পরিবারেই দেখা যায়। বাচ্চার বয়স ৫/৬/৭ কিন্তু মা বাবার সাথে শোয়। যেখানে আড়াই বা তিন হলেই বাচ্চাকে আলাদা করে দেয়া উচিত। কারন এরপর বাচ্চারা বুঝতে পারে অনেক কিছুই। রাতে ঘুম ভেংগে সে মা-বাবাকে অপ্রস্তুত অবস্থায় দেখলে তার মনে যেমন প্রশ্নের উদ্রেক হবে, তেমনি উল্টোদিকে বাচ্চার সাথে একসাথে শোবার কারনে দাম্পত্যে বিঘ্ন তৈরি হয়।

বাচ্চার বয়স আড়াই বা তিন হলেই তাকে আলাদা করে দিন। বাচ্চা কিন্তু কষ্ট পাবেনা, কষ্ট পাবেন আপনি, বাচ্চা দূরে সরে যাবে মনে হবে। কিন্তু না, আসলে বাচ্চা দূরে সরে যায়না। এটা বাচ্চার ভালোর জন্য, আপনাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

বাচ্চার জন্য আলাদা বিছানা রেডি করুন। ওর রুমটাকে ওর পছন্দ মতো সাজিয়ে দিন। রাতে গল্প শুনিয়ে বা বই পড়িয়ে ওকে ঘুম পাড়ান। ঘুমিয়ে গেলে চলে আসুন আপনার রুমে। ও আপনার অনুপস্থিতি টেরও পাবেনা। রাতে ও উঠতে পারে এই ভয় থাকলে একটা বেবি মনিটর কিনে নিন, দাম বেশি নয়। ওর মাথার কাছে মনিটর রেখে রিসিভার আপনার নিজের বালিশের কাছে রাখুন। রাতে উঠলে আপনি সাথে সাথে টের পাবেন, যেমনটা পেতেন আপনার সাথে ঘুমালে। আপনি তো জানেনই সকালে কখন উঠে। তার একটু আগে গিয়ে ওর সাথে শোবেন। ও ঘুম হতে উঠেও আপনাকে পাবে। রাতে যে আপনি ছিলেন না, তা ও বুঝবেইনা।

দ্বিতীয় সন্তান হলে বেশীরভাগ মায়েরা প্রথম সন্তানকে অবহেলা শুরু করে। সব আদর যেন ছোটজনের জন্য, অথচ সে আদরের কিছুই বোঝেনা। আর যে বোঝে সেই বড়জনকে কথায় কথায় ডাক দেয়া, বকা দেয়া চলতে থাকে। মা/ রে*র কথা তো বাদই দিলাম। স্বাভাবিকভাবেই তার মনে ছোট বাচ্চাটার প্রতি বি- দ্বেষ সৃষ্টি হয়। ভাবে, ও না থাকলেই ভালো হতো, মা আদর করতো। অথচ মায়ের উচিত এই সময়ে বড়জনকে বেশি করে সময় দেয়া, আদর করা। বড়জনকে বোঝানো তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমেনি। আপনি আর আপনার স্বামী দুজনেরই দায়িত্ব এটা।

দু বাচ্চার মাঝে তুলনা করবেন না। কারন তারা দুজনই সম্পুর্ন আলাদা মানুষ। দুই বাচ্চার জন্য আলাদা নিয়ম বানাবেন না। একজনকে মোবাইল দেখিয়ে খাওয়াবেন, আরেকজনকে বলবেন খাওয়ার সময় নো ডিভাইস, তাহলে তো হবেনা। দুজনের বেডটাইম যেন এক হয়। কোনো জিনিস কিনলে একজনের জন্য নয়, দুজনের জন্যই কিনবেন।

ছোটটির বয়স যখন আড়াই হবে তখন ওকেও আলাদা করে দিন, বড়জনের সাথে। দুজন একসাথে ঘুমুবে বা একই রুমে দুটো বিছানায়।

দিনে এক হতে দেড়ঘন্টা আলাদা করে রাখুন যখন পরিবারের সবাই মিলে সময় কাটাবেন। হাসি আনন্দ করবেন। বাচ্চাদের সাথে স্বামী স্ত্রী একসাথে খেলবেন। নিজের পার্টনারের দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকাবেন। মেজাজ যদি বেশি খারাপ থাকে অকারণে, সরে যান প্রিয় মানুষগুলোর কাছ হতে তাদের আ*ঘাত করার আগেই। আলাদা রুমে বা বারান্দা বা ছাদে গিয়ে মেডিটেশন করুন। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন যে কারনে আপনার মেজাজ খারাপ তা কতটা যুক্তিযুক্ত। গভীর নিঃস্বাস নিন। মন খারাপকে ছড়িয়ে দিন বাতাসে।

সংসার তৈরি হয় স্বামী স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে। সংসারের কাজ করতে করতে এই মানুষগুলোই যেন অবহেলিত না হয় সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কিন্তু আমাদেরই। ভালোবাসার সম্পর্কগুলো অটুট থাকুক।

(সংগৃহীত)



Monday, May 26, 2025

সম্পর্কের ওপর সময়ের চাপ

 ‘চলো, দেরি হয়ে যাচ্ছে!’—এই কথাগুলো আমাদের পরিবারে অহরহ শোনা যায়। সমাজবিজ্ঞানী জুডি ওয়াজম্যান তাঁর প্রেসড ফর টাইম-এ বলেন, সময়ের এই চাপ পরিবারে উদ্বেগ ছড়ায়। ড. উইলিয়াম ডোহার্টির গবেষণা দেখায়, সময়ের তাড়ায় পিতা–মাতা-সন্তানের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা তাড়াহুড়ায় সন্তানের সঙ্গে মূল্যবান মুহূর্ত হারাই।

নৃতত্ত্ববিদ থমাস হিল্যান্ড এরিকসেন তাঁর টাইর্যানি অব দ্য মোমেন্ট-এ বলেন, পারিবারিক সমাবেশ এখন কঠোর সময়সূচির অধীন। আমাদের স্মৃতিগুলো তখনই গভীর হয়, যখন আমরা সময়ের তাড়না ছাড়াই একে অপরের সঙ্গে থাকি।
-প্রোডাক্টিভ মুসলিম ডটকম

ঘড়ির প্রভাব স্বাস্থ্য ও কাজের ওপর

 যান্ত্রিক ঘড়ির চাপ আমাদের কাজের প্রবাহ নষ্ট করে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা বলছে, সময়ের চাপ শারীরিক বিপদের মতো স্ট্রেস সৃষ্টি করে। ড. রবার্ট লেভিন তাঁর আ জিওগ্রাফি অব টাইম-এ ‘ক্লক-টাইম সিকনেস’ নামে একটি আধুনিক সমস্যার কথা বলেন, যা দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

মিহালি সিকসেন্টমিহালির গবেষণা দেখায়, সময়ের তাড়না আমাদের কাজের প্রবাহ ভেঙে ফেলে, যা আমাদের কর্মক্ষমতা ও আনন্দ নষ্ট করে। জাপানে ‘কারোশি’ বা অতিরিক্ত কাজে মৃত্যুর ঘটনা এই যান্ত্রিক সময়ের চাপেরই ফল।

আধ্যাত্মিকতার ওপর ঘড়ির প্রভাব

 আপনি কি কখনো নামাজে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে আনন্দ অনুভব করেছেন? এটা তখনই সম্ভব, যখন আপনার ওপর সময়ের চাপ নেই। আজ মসজিদে ঢুকলেই দেয়ালে ঘড়ি আর নামাজের কাউন্টডাউন। এটি আমাদের নামাজকে তাড়াহুড়া করিয়ে দেয়। ইবনুল কাইয়্যিম তাঁর আল-ওয়াবিল আস-সায়্যিব-এ লিখেছেন, প্রাচীন মুসলিমরা ইবাদতে এত মগ্ন থাকতেন যে সময়ের অস্তিত্বই ভুলে যেতেন।

জুমার খুতবা, যা একসময় সম্প্রদায়ের জন্য প্রাণবন্ত আলোচনার মঞ্চ ছিল, এখন ১৫-২০ মিনিটের একটি সময় বাঁধা অনুষ্ঠান। রমজানের তারাবিহ নামাজও এক পারা থেকে কয়েক পৃষ্ঠায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে সময়ের চাপে। এই যান্ত্রিক সময় আমাদের আধ্যাত্মিকতাকে সংকুচিত করছে।

৫ কাজ করুন নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করতে

 ১. কফি

শরীরচর্চার এক ঘণ্টা আগে কফি খেতে পারেন। তাতে আপনি চনমনে হয়ে উঠবেন। শরীরচর্চার সময় হয়ে এলে আলস্য জেঁকে বসার সুযোগ পাবে না। তবে শরীরচর্চার সময়টা যদি হয় রাত, সে ক্ষেত্রে আবার এই কফিতে আপনার ঘুমের বারোটা বাজতে পারে। আবার ভোরবেলায় যদি শরীরচর্চা করার অভ্যাস করতে চান, সে ক্ষেত্রে খালি পেটে কফি খাওয়ার ফলে আপনি অ্যাসিডিটিতে ভুগতে পারেন। তাই সকালে বা রাতে ব্যায়াম করতে চাইলে ব্যায়ামের ঘণ্টা খানেক আগে ফলের রস বা বিটরুটের রস খেতে পারেন। অন্য কিছু না হলেও ব্যায়ামের ঘণ্টা খানেক আগে নিদেনপক্ষে খানিকটা পানি খেয়ে নেওয়া ভালো।
২. শেষ বিকেলে ব্যায়াম করুন
শেষ বিকেলে আমাদের শরীর খানিকটা উষ্ণ হয়ে ওঠে। তাই এই সময়ে ব্যায়ামের জন্য ‘ওয়ার্ম আপ’ করা সহজ। ফলে এই সময়ের ব্যায়ামে নিয়মিত হয়ে ওঠাও তুলনামূলক সুবিধাজনক। কাজে যাওয়া বা সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার তাড়া না থাকায় এই সময়টাকে কাজে লাগানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব।
৩. শরীরচর্চায় সঙ্গী
ব্যায়ামের সময় একজন সঙ্গী থাকলে ব্যায়ামে উৎসাহ পাবেন। জীবনসঙ্গীকে নিয়েও ব্যায়াম করতে পারেন। বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকেও সঙ্গে নিতে পারেন। বন্ধু, প্রতিবেশী কিংবা সমমনা যে কাউকেই বেছে নিতে পারেন ব্যায়ামের সঙ্গী হিসেবে।
৪. পছন্দের অডিও ক্লিপ শুনুন
ব্যায়ামের সময় পছন্দের অডিও ক্লিপ শুনতে পারেন। এসব অডিও আপনি অন্য সময়ও নিশ্চয়ই শুনতে পারবেন। কিন্তু আপনি নিজের সঙ্গে একটা চুক্তি করে নিতে পারেন। চুক্তি অনুযায়ী কিছু অডিও আপনি কেবল ব্যায়ামের সময়ই শুনবেন। কিংবা যদি আপনি ব্যায়ামটা করতে পারেন, কেবল তারপরই শুনবেন। চুক্তির ঝামেলায় না গিয়েও অবশ্য আপনি অডিও ক্লিপ কাজে লাগাতে পারেন। চমৎকার কিছু অডিওর তালে ব্যায়াম করাটা এমনিতেই উপভোগ্য হতে পারে আপনার জন্য।
৫. নিজেকে অন্যভাবেও পুরস্কৃত করুন
সপ্তাহে যতটা শরীরচর্চা করা আপনার লক্ষ্য, তা পূরণ করতে পারলে নিজেকে পুরস্কৃত করতে পারেন। সপ্তাহান্তে নিজের পছন্দের কাজে খানিকটা বাড়তি সময় দেওয়াই হতে পারে নিজের পুরস্কার। মাসজুড়ে ঠিকঠাক শরীরচর্চা করতে পারলে মাস গেলে নিজের জন্য একটা বই কিংবা শখের অন্যান্য টুকিটাকি জিনিস কিনতে পারেন।
সূত্র: লিভস্ট্রং ডটকম
পিওনি-এর একটি ছবি হতে পারে
3 জন

অতিরিক্ত রাগ, ক্ষোভ ও হতাশার সময় কি করবেন?

 ১. রাগে অন্ধ হয়ে গেলে

প্রথমত, চুপ থাকুন। ওই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে যান। মনে করুন, মিটিংয়ে আপনি প্রচণ্ড রেগে গেলেন। রুম থেকে বেরিয়ে যান। পানি খান। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কথা–কাটাকাটি চলছে, বেরিয়ে যান। বাইরে থেকে হেঁটে আসুন। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারছেন, ততক্ষণ কিছুই বলবেন না। পরিস্থিতি শান্ত হলে তখন প্রতিক্রিয়া জানান।
২. বিহ্বল বা আবিষ্ট হয়ে গেলে
মনে করুন, আপনি অনেক কাজের চাপে পিষ্ট। কোনটা রেখে কোনটা করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না। হতবিহ্বল লাগছে। এমন হলে কাগজ-কলম নিয়ে বসুন। কী কী কাজ জমে আছে, তালিকা করুন। তারপর সেগুলো গুরুত্ব অনুসারে সাজান। যে কাজগুলো ৫ থেকে ১০ মিনিটের ভেতর সেরে ফেলা যায়, সেগুলো একে একে করে ফেলুন। তারপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটিতে মনোনিবেশ করুন। একটা সময়ে কেবল একটা কাজেই ফোকাস করুন।
৩. অনিশ্চয়তা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, হতাশা
এমন সব মুহূর্তে পেছনে ফিরে তাকান। আপনার সেই কঠিন সময়ের কথা ভাবুন, যেটা আপনি পার করে এসেছেন। আপনার মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা নিজের সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান। নিজের দক্ষতা নিয়ে প্রবল হীনম্মন্যতায় ভোগেন। এটাকে বলে ‘ইমপোস্টার সিনড্রোম’। পর্যাপ্ত মূল্যায়নের অভাবে অনেক মেধা–ই অকালে ঝরে যায়। আর আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সিস্টেমে অনেক সময়ই মানুষকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। তাই নিজেই নিজেকে ‘ক্রেডিট’ দিতে শিখুন। নিজেই নিজেকে মূল্যায়ন করুন। বাহবা দিন। আপনি মন দিয়ে আপনার কাজটা করে যান। আর সঠিক সময়ের অপেক্ষা করুন।
৪. ‘প্রত্যাখ্যাত’ অনুভূতি হলে
কথায় বলে ‘রিজেকশন ইজ রিডিরেকশন’। প্রথমত, প্রত্যাখ্যান জীবনের অংশ। সবাই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। সেখান থেকেই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে গেছে। তাই প্রত্যাখ্যান থেকেই আপনার জীবনে আরও ভালো কিছু ঘটতে পারে। যেটা আপনি চিন্তাও করেননি। প্রত্যাখ্যানের অনুভূতি খুবই ভয়ানক ও কষ্টকর। তাই আপনি সেই মুহূর্তে নিজের প্রতি সবচেয়ে বেশি দয়ালু হোন।
৫. ভয় ও উদ্বেগ
ভয় পেলে ও উদ্বেগ হলে প্রথমত বড় বড় করে শ্বাস নিন। এতে মস্তিষ্ক অক্সিজেন বেশি পাবে। আর আপনার ভয় ও উদ্বেগ কমে যাবে। এরপর ঠান্ডা পানি খান। স্থির হোন। ‘ফোকাস’ করুন। মাথাটাকে সঠিকভাবে চিন্তা করার জন্য সময় দিন। সময় নিন। সময় দেওয়া শিখুন। এটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঙ্গে সবকিছুই স্বাভাবিকতা পেতে থাকে।
-জীবনযাপন
s

আল্লাহ, আপনার কথা শোনেন, জানেন আপনার কী প্রয়োজন, আপনার সঙ্গে আছেন, আপনাকে সুস্থ করেন

 আল্লাহ

তিনি আপনার কথা শোনেন
‘আর (হে নবী) যখন আমার বান্দারা তোমার কাছে আমার বিষয়ে জানতে আসে, তদ্রূপ আমি কাছে আছি। আমি যে কারও ডাক শুনি, যখন সে আমাকে ডাকতে আসে। তাহলে তারা যেন আমার প্রতি আনুগত্য করে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, যাতে তারা সঠিকভাবে পথপ্রদর্শিত হতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ কখনো বিচ্ছিন্ন হয় না। মানুষের কাছে পৌঁছানোর পথ বন্ধ হলেও আল্লাহর দরজা ২৪/৭ খোলা। তিনি আপনার প্রশ্ন জানেন, আপনার ফিসফিস শোনেন, এমনকি আপনার নীরব অশ্রুও দেখেন। তিনি সাত আসমানের ওপরে থাকলেও আপনার হৃদয় থেকে দূরে নয়। যখন শয়তান আপনাকে ভাবায় যে আল্লাহ দূরে, তখন এই আয়াতের কথা স্মরণ করুন। প্রার্থনা করুন, কারণ তিনি আপনার ডাকের অপেক্ষায় আছেন।
তিনি আপনাকে পথ দেখান
‘আর তিনি তোমাকে পথ না–জানা অবস্থায় পেয়েছিলেন এবং তোমাকে পথ দেখিয়েছেন।’ (সুরা দুহা, আয়াত: ৭)
একবার ভেবে দেখুন, কতবার আপনি পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না? আল্লাহই আপনাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। তিনি আপনাকে ইসলামের পথে রেখেছেন। যিনি এই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়েও আপনাকে এত দূর অবধি এনেছেন, তিনি কি আজ আপনাকে ছেড়ে দেবেন? এই আয়াত সুরা আদ–দুহার অংশ, যা মহানবী (সা.)–কে কঠিন সময়ে অপূর্ব সান্ত্বনা দিয়েছে। আল্লাহ আপনার স্রষ্টা, তিনি আপনাকে গড়েছেন এবং পথ দেখিয়েছেন। ভরসা রাখুন, তিনি আজও আপনার পাশে আছেন।
তিনি জানেন আপনার কী প্রয়োজন
‘এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি জানবেন না? তিনি তো সূক্ষ্ম, সূক্ষ্মভাবে জানেন।’ (সুরা মুলক, আয়াত: ১৪)
আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা। তিনি আমাদের শরীরের প্রতিটি শিরা, প্রতিটি চুল, প্রতিটি কোষ গড়েছেন। তিনি জানেন আমাদের কী প্রয়োজন এবং কখন প্রয়োজন। তিনি আল–খাবির (সর্বজ্ঞ) ও আল–লতিফ (সূক্ষ্মদর্শী)। যখন আমরা দুঃখে ডুবে থাকি, তখন তিনি আমাদের জন্য সমাধান প্রস্তুত করছেন। তাঁর পরিকল্পনা সূক্ষ্ম, তিনি আমাদের সবচেয়ে সুন্দর উপায়ে পথ দেখাবেন। ধৈর্য ধরুন, তাঁর সাহায্য আসছে।
তিনি আপনার সঙ্গে আছেন
‘তিনি আপনার সঙ্গে আছেন, যেখানে আপনি আছেন।’ (সুরা হাদিদ, আয়াত: ৪)
যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক, আল্লাহ আপনার সঙ্গে আছেন। তিনি আপনার কথা শোনেন, আপনার কাজ দেখেন, আপনার হৃদয় জানেন। তিনি কখনো আপনাকে একা ছাড়েননি, ছাড়বেনও না। যখন পৃথিবী আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন জানুন, আল–ওয়ালী (রক্ষক বন্ধু) আপনার পাশে। এই আয়াত মনে করিয়ে দেয় যে আপনি কখনো একা নন।
তিনি আপনাকে সুস্থ করেন
‘আর রাসুলদের এসব সংবাদ আমি তোমার কাছে বর্ণনা করছি, যার দ্বারা আমি তোমার মনকে স্থির করি আর এতে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মুমিনদের জন্য উপদেশ ও স্মরণ।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ১২০)
পবিত্র কুরআনের প্রায় এক–তৃতীয়াংশ ঘটনা দিয়ে গঠিত। এতে ২৫ নবী ও সৎ ব্যক্তিদের কাহিনি রয়েছে, যেগুলো আমাদের জন্য নির্দেশনা। আপনার সমস্যা যা–ই হোক, পবিত্র কোরআনের গল্পে তার সমাধান পাবেন। যদি আপনার পরিবার ইসলামের বিরোধিতা করে, তবে হজরত ইব্রাহিম (আ.)–এর ঘটনা পড়ুন। যদি দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগেন, তাহলে আইয়ুব (আ.)–এর কাহিনিতে সান্ত্বনা পাবেন। প্রিয়জন হারালে ইয়াকুব (আ.)–এর কথা ভাবুন, অবিচারের শিকার হলে ইউসুফ (আ.)–এর জীবন আপনাকে শান্তি দেবে।
সুতরাং পবিত্র কুরআন পড়ুন এবং পবিত্র কুরআনের আয়াতে শান্তি খুঁজুন। এই পাঁচ আয়াত আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আল্লাহ আপনার সঙ্গে আছেন, আপনার কথা শোনেন, আপনার প্রয়োজন জানেন এবং আপনাকে পথ দেখান। আমরা প্রার্থনা করি, আল্লাহ আমাদের বিপদ থেকে মুক্তি দিন এবং এখানে ও পরকালে শান্তিপূর্ণ জীবন দান করুন।
‘ডিসকভারিং ইসলাম’ আর্কাইভ থেকে
ফুল-এর একটি ছবি হতে পারে

Saturday, May 24, 2025

কাঁচা আম খাও

 গ্রীষ্মকালে শরীর হাইড্রেটেড ও ঠান্ডা রাখা অত্যন্ত জরুরি। এ সময় অতিরিক্ত ঘাম, পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু স্বাস্থ্যকর পানীয় ও খাবার রাখা প্রয়োজন, যা শরীর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি পুষ্টিও জোগায়। এ সময় কাঁচা আম শুধু রসনা তৃপ্ত করার উপাদান নয়, এটি এক অনন্য স্বাস্থ্যকর ফল। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ ও ঘরোয়া চিকিৎসায় কাঁচা আম ব্যবহৃত হয়ে আসছে রোগ প্রতিরোধে ও শরীর সুস্থ রাখতে। কাঁচা আম খাওয়ার অনেক উপকারিতা।

গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত তাপ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কাঁচা আম শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং সূর্যের অতিরিক্ত তাপ থেকে সৃষ্ট হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে থাকা টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড শরীরকে ক্ষারীয় রাখে, যা তাপজনিত ক্লান্তি ও পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে।
কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি শ্বেত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে, যা বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কাঁচা আমে থাকা এনজাইম হজমে সাহায্য করে। এটি যকৃতের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং পিত্তরস নির্গত হতে সাহায্য করে, যা চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে।
যাঁরা অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য কাঁচা আম অনেক উপকারী। লিভার ডিটক্সিফিকেশন করে বা যকৃতের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, ফলে টক্সিন পরিষ্কার হয় এবং লিভার ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
কাঁচা আমের আয়রন ও ভিটামিন সি রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন সি, এ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় কাঁচা আম ত্বককে উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
পাকা আমে চিনি বেশি থাকে, কাঁচা আমে তা কম। তাই এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে, ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কাঁচা আম চিবানোর সময় লালা নিঃসরণ বাড়ে, যা মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এটি মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, মুখের দুর্গন্ধ ও সংক্রমণরোধে সহায়ক। বলা যায়, দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
কাঁচা আমে ক্যালরি কম কিন্তু ফাইবার বেশি। ফলে এটি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় খাওয়া কমে যায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও পলিফেনল থাকার কারণে কাঁচা আম শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
কিছু সাবধানতাঃ
অতিরিক্ত কাঁচা আম খেলে গ্যাস, পেটব্যথা বা পেটের সমস্যা হতে পারে।
খালি পেটে কাঁচা আম না খাওয়াই ভালো।
যাঁদের টনসিল বা গলাব্যথা হয়, তাঁদের কাঁচা আম না খাওয়াই ভালো।
সোর্সঃ ফারজানা ওয়াহাব, পুষ্টিবিদ, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা
May be an image of fruit

Friday, May 16, 2025

Why do we shout in anger? বেশী রাগের সময় আমরা চিতকার করি কেন?

 একদিন এক শিক্ষক তার ছাত্রদের প্রশ্ন করলেন- "তোমরা কি বলতে পারো, আমরা যখন অনেক বেশি রেগে যাই, তখন চিতকার করি কেন?"

সবাই কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর একজন ছাত্র উত্তর দিলো- "কারণ রেগে গেলে আমরা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাই তাই একটা পর্যায়ে চিতকার করে ফেলি।"
-"কিন্তু আমরা যার উপর রাগ করি সেই মানুষটি তো আমাদের সামনেই থাকে তবুও কেন আমাদের কে চেঁচিয়ে তার সাথে কথা বলতে হবে? নরম স্বরে, আস্তে কথা বললেও তো সে শুনতে পাবে। তাই না?"
ছাত্ররা অনেক চিন্তা করেও শিক্ষকের এই প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর খুঁজে পেলো না। তখন শিক্ষক ব্যাখা করলেন- "দুটো মানুষ যখন একে অপরের উপর রেগে যায় তখন তারা একে অন্যের অন্তর থেকে দূরে সরে যায়। এই রাগ তাদের অন্তরের মাঝেও দুরত্ব সৃষ্টি করে। সেই দুরত্ব একটু একটু করে যত বাড়তে থাকে ততই তাদের রাগ বা ক্রোধ বেড়ে যায় এবং তখন তাদেরকে আরও চিতকার করতে হয়, আরও জোরে তর্ক করতে হয়।"
-"আবার যদি আমরা ভেবে দেখি, দুজন মানুষ যখন একে অন্যের প্রেমে পড়ে বা ভালোবাসে তখন কী হয়? তখন ভালোবাসার বন্ধনে থাকা মানুষ দুজন একে অন্যের সাথে ধীরে ধীরে নরম স্বরে, আবেগ নিয়ে কথা বলে। কারণ যারা ভালোবাসে তারা একে অন্যের অন্তরের খুব কাছে থাকে। আর যারা অন্তরের কাছে থাকে তাদের কথা শুনতে হলে চিতকার করার কোন প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি শুধুমাত্র ফিস্ ফিস্ করেও তারা তখন কথা বলতে পারে।"
-"যারা আরও বেশি গভীরভাবে একে অন্যকে অনুভব করতে পারে, ভালোবাসতে পারে তখন কী হয় তা কি আমরা জানি?"
-"অদ্ভুত সুন্দর ব্যাপার হলো, তাদের তখন ফিস্ ফিস্ করেও কথা বলতে হয় না। তারা দুজন যখন একে অন্যের চোখের দিকে তাকায় তখনই অন্তরের অনুভূতি, কথা, শব্দমালা সব অনুভব করে ফেলতে পারে। কারণ তখন তাদের অন্তর তাদের কে এক করে ফেলে। তাদের কথা হয় তখন অন্তরে অন্তরে।"
সকলের জীবন বাঁধা পড়ুক আত্মিক বন্ধনে।
(ব্রাজিলের বিখ্যাত এবং বেস্টসেলার লেখক পাওলো কোয়েলহো ঠিক এমন করেই লিখেছেন তার "30 SEC READING: why do we shout in anger?" বইতে)
সংগৃহীত পোস্ট।
ছবির ফুল: butterfly Pea Vine
No photo description available.
Islam