Saturday, June 7, 2025

প্রকৃত ভালোবাসাঃ শিক্ষকের কাছে ছাত্রীর প্রশ্ন

জবাবে শিক্ষক বললেন, আমি তোমার প্রশ্নের উত্তর দেব, কিন্তু তার আগে তোমাকে একটি কাজ করতে হবে। আমাদের কলেজের সামনে যে ভুট্টার ক্ষেত আছে তুমি ওখানে যাবে আর সবচেয়ে বড় ভুট্টাটি নিয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু একটা শর্ত আছে। বড় ভুট্টা খুঁজতে গিয়ে যে ভুট্টগুলো তুমি পিছনে ফেলে যাবে তা আর‌ নিতে পারবে না

ছাত্রীটি ভাবল, এ আবার এমন কি কাজ! সে মৃদু হেসে উঠে দাঁড়িয়ে ভুট্টার ক্ষেতে গেল আর একেবারে প্রথম সারি থেকে খোঁজা শুরু করল। সেই সারিতে একটা বড় ভুট্টা ছিল, কিন্তু তার মনে হল, সামনের সারিতে হয়তোবা আরো বড় কোনো ভুট্টা তার জন্য অপেক্ষা করে আছে।

এরপর সে যখন মাঠের অর্ধেকের বেশি খোঁজা শেষ করল তখন বুঝতে পারল, এদিকের ভুট্টাগুলো ঠিক অতটা বড় নয় যেটা সে আগেই খুঁজে পেয়েছিল। ক্ষেতের সবচেয়ে বড় ভুট্টাটি সে পেছনে ফেলে এসেছে এবং এজন্য তার অনুশোচনার শেষ থাকল না। কিন্তু এখন তার আর কিছুই করার নেই। তাই সে খোঁজা বাদ দিয়ে খালি হাতে শিক্ষকের কাছে ফিরে আসলো।

তখন শিক্ষক তাকে বললেন, এটাই‌ প্রকৃত ভালোবাসা। তুমি হয়তো তোমার জীবনে তাকে খুঁজে পেয়েছিলে, কিন্তু তবু আরো ভালো কাউকে পাবার আশায় যদি তাকে ত্যাগ করে থাকো, তবে এমন একদিন আসবে যেদিন তুমি উপলব্ধি করবে তোমার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মানুষটিকে তুমি হারিয়ে ফেলেছ। তখন হাজার আফসোস করলেও তাকে আর ফিরে পাবে না।







সন্তান জন্মের পর বেশীরভাগ স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কেই ভাটা পড়ে

 সন্তান জন্মের পর আমাদের দেশের বেশীরভাগ স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কেই ভাটা পড়ে। ২ জন বা ৩ জন বাচ্চা হলে তো কথাই নেই। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক হয়ে যায় ভাইবোনের মতো। বাচ্চার পিছনে দৌড়ে দৌড়ে, সংসারের কাজ করে করে স্বামীর সাথে রোমান্টিক সম্পর্কের মুড আর থাকেনা। সম্পর্কে শুরু হয় তিক্ততা। 

এদিকে দেশীয় কালচারে বাচ্চা নিয়ে ঘুমানো প্রায় সব পরিবারেই দেখা যায়। বাচ্চার বয়স ৫/৬/৭ কিন্তু মা বাবার সাথে শোয়। যেখানে আড়াই বা তিন হলেই বাচ্চাকে আলাদা করে দেয়া উচিত। কারন এরপর বাচ্চারা বুঝতে পারে অনেক কিছুই। রাতে ঘুম ভেংগে সে মা-বাবাকে অপ্রস্তুত অবস্থায় দেখলে তার মনে যেমন প্রশ্নের উদ্রেক হবে, তেমনি উল্টোদিকে বাচ্চার সাথে একসাথে শোবার কারনে দাম্পত্যে বিঘ্ন তৈরি হয়।

বাচ্চার বয়স আড়াই বা তিন হলেই তাকে আলাদা করে দিন। বাচ্চা কিন্তু কষ্ট পাবেনা, কষ্ট পাবেন আপনি, বাচ্চা দূরে সরে যাবে মনে হবে। কিন্তু না, আসলে বাচ্চা দূরে সরে যায়না। এটা বাচ্চার ভালোর জন্য, আপনাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

বাচ্চার জন্য আলাদা বিছানা রেডি করুন। ওর রুমটাকে ওর পছন্দ মতো সাজিয়ে দিন। রাতে গল্প শুনিয়ে বা বই পড়িয়ে ওকে ঘুম পাড়ান। ঘুমিয়ে গেলে চলে আসুন আপনার রুমে। ও আপনার অনুপস্থিতি টেরও পাবেনা। রাতে ও উঠতে পারে এই ভয় থাকলে একটা বেবি মনিটর কিনে নিন, দাম বেশি নয়। ওর মাথার কাছে মনিটর রেখে রিসিভার আপনার নিজের বালিশের কাছে রাখুন। রাতে উঠলে আপনি সাথে সাথে টের পাবেন, যেমনটা পেতেন আপনার সাথে ঘুমালে। আপনি তো জানেনই সকালে কখন উঠে। তার একটু আগে গিয়ে ওর সাথে শোবেন। ও ঘুম হতে উঠেও আপনাকে পাবে। রাতে যে আপনি ছিলেন না, তা ও বুঝবেইনা।

দ্বিতীয় সন্তান হলে বেশীরভাগ মায়েরা প্রথম সন্তানকে অবহেলা শুরু করে। সব আদর যেন ছোটজনের জন্য, অথচ সে আদরের কিছুই বোঝেনা। আর যে বোঝে সেই বড়জনকে কথায় কথায় ডাক দেয়া, বকা দেয়া চলতে থাকে। মা/ রে*র কথা তো বাদই দিলাম। স্বাভাবিকভাবেই তার মনে ছোট বাচ্চাটার প্রতি বি- দ্বেষ সৃষ্টি হয়। ভাবে, ও না থাকলেই ভালো হতো, মা আদর করতো। অথচ মায়ের উচিত এই সময়ে বড়জনকে বেশি করে সময় দেয়া, আদর করা। বড়জনকে বোঝানো তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমেনি। আপনি আর আপনার স্বামী দুজনেরই দায়িত্ব এটা।

দু বাচ্চার মাঝে তুলনা করবেন না। কারন তারা দুজনই সম্পুর্ন আলাদা মানুষ। দুই বাচ্চার জন্য আলাদা নিয়ম বানাবেন না। একজনকে মোবাইল দেখিয়ে খাওয়াবেন, আরেকজনকে বলবেন খাওয়ার সময় নো ডিভাইস, তাহলে তো হবেনা। দুজনের বেডটাইম যেন এক হয়। কোনো জিনিস কিনলে একজনের জন্য নয়, দুজনের জন্যই কিনবেন।

ছোটটির বয়স যখন আড়াই হবে তখন ওকেও আলাদা করে দিন, বড়জনের সাথে। দুজন একসাথে ঘুমুবে বা একই রুমে দুটো বিছানায়।

দিনে এক হতে দেড়ঘন্টা আলাদা করে রাখুন যখন পরিবারের সবাই মিলে সময় কাটাবেন। হাসি আনন্দ করবেন। বাচ্চাদের সাথে স্বামী স্ত্রী একসাথে খেলবেন। নিজের পার্টনারের দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকাবেন। মেজাজ যদি বেশি খারাপ থাকে অকারণে, সরে যান প্রিয় মানুষগুলোর কাছ হতে তাদের আ*ঘাত করার আগেই। আলাদা রুমে বা বারান্দা বা ছাদে গিয়ে মেডিটেশন করুন। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন যে কারনে আপনার মেজাজ খারাপ তা কতটা যুক্তিযুক্ত। গভীর নিঃস্বাস নিন। মন খারাপকে ছড়িয়ে দিন বাতাসে।

সংসার তৈরি হয় স্বামী স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে। সংসারের কাজ করতে করতে এই মানুষগুলোই যেন অবহেলিত না হয় সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কিন্তু আমাদেরই। ভালোবাসার সম্পর্কগুলো অটুট থাকুক।

(সংগৃহীত)