আল্লাহ
তাআলা বান্দাকে তাঁর নিকট দোয়া প্রার্থনা করার তাগিদ
দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নিকট কোনো কিছু চায় না, ওই
ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তাআলা রাগান্বিত হন।’ দৈনন্দিন জীবনে দোয়া কবুলের ৫টি সোনালী সময় রয়েছে।
যে সময়গুলোতে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। হাদিসে বর্ণিত সময়গুলো তুলে ধরা হলোঃ
১. জোহরের
আগ মুহূর্তেঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, সূর্য যখন মধ্যাকাশ থেকে
পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়ে। অতঃপর জোহরের নামাজ পর্যন্ত তা আর বন্ধ করা হয় না।
(সহিহ জামে)
২. আজানের
সময়ঃ
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন আজান দেয়া হয়, তখন আসমানের দরজাসমূহ
খুলে দেয়া হয় এবং ওই সময় দোয়া কবুল করা হয়। (তারগিব)
৩. নামাজের
জন্য অপেক্ষা করার সময়ঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা এই মর্মে সুসংবাদ গ্রহণ কর যে, তোমাদের রব আসমানের
দরজাসমূহ খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলছেন- ‘আমার
বান্দাগণ আমার নির্দেশিত ফরজ আদায়ের পর পরবর্তী ওয়াক্তের ফরজ নামাজের জন্য অপেক্ষা
করছে`। (ইবনে মাজাহ)
৪. রাতের
শেষ সময়েঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘রাতের শেষার্ধ শুরু হলে একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন- কোনো আবেদন
পেশকারী আছে কি? তার আবেদন গ্রহণ করা হবে। কারো চাওয়া-পাওয়ার কিছু আছে কি? তার
চাওয়া-পাওয়া কবুল করা হবে। আছে কোনো বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি? তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করা
হবে। ওই সময় পেশাদার ব্যভিচারীনী ব্যতীত কোনো মুসলিমের দোয়াই বিফলে যায় না।’
(তারগিব)
৫. তাসবিহ
পাঠের সময়ঃ
আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু
লিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও ওয়া আসিলা’ এই তাসবিহ পাঠের সময়
আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়।
একদিন আমরা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে নামায পড়ছিলাম। ওই সময় লোকদের মধ্য থেকে একজন বলে
ওঠলো- ‘আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি
বুকরাতাও ওয়া আসিলা।’
অর্থাত আল্লাহ মহান, অতি মহান;
আল্লাহ তাআলার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহ তাআলার
পবিত্রতা বর্ণনা করছি।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম নামাজ শেষ করে বললেন, এই কথাগুলো (তাসবিহ) কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মধ্যে
একজন বলল- হে আল্লাহর রাসুল! আমি।
প্রিয় নবী বললেন, ‘এ দোয়ায় আমি খুব
আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। হজরত
ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
কাছে এ কথা শোনার পর থেকে এ তাসবিহ-এর পাঠ আমি কখনো পরিহার করিনি। (মুসলিম,
তিরমিজি)
আল্লাহ
তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দোয়া কবুলের জন্য আসমানের দরজা খুলে দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ৫টি
সোনালী সময়ে হাদিসের নির্দেশিত পন্থায় দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে দোয়া করার তাওফিক
দান করুন।
No comments:
Post a Comment