Monday, August 9, 2021

হিসাব-নিকাশ

 হিসাব-নিকাশ

Accountability and Clearance
কেমন করে হিসাব দেবো
নিকাশ যদি চায়!
দিন ফুরায়ে যায়রে আমার
দিন ফুরায়ে যায়!!
পাপ করেই চলেছি অথচ শিউরে উঠিনা,
আমি কি পাষান?
আশা ও নিরাশার দোলাচলে মানুষ
কুরআনের সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক ও হতাশাব্যঞ্জক আয়াত- শিউরে ওঠার মত।
আমিরুল মুমীনিন, খলিফাতুল মুসলীমিন, চিরধারী সম্রাট হজরত উমার ইবনুল খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু, এই উমরের কতটুকু জানি আমরা, অনেক কিছুই জানি না।
হজরত উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু অন্ধকারে একদিকে যাচ্ছিলেন। পিছনে কিছু লোক ছিল। হঠাত করে তিনি প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা- তোমাদের মধ্যে কেউ কি বলতে পারো?-কুরানে কারীমের মধ্যে সব থেকে হতাশা ব্যঞ্জক আয়াত কোনটি?
অন্ধকারের ভিতরে একজন জবাব দিলেন, (ফা মাই ইয়ামাল মিস কালা জাররাতিন খইরাই ইয়ারাহ, ওয়ামাই ইয়ামাল মিস কালা জাররাতিন শাররাই ইয়ারাহ)
فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
Famaiy ya'mal mithqala zarratin khai raiy-yarah
Wa maiy-y'amal mithqala zarratin sharraiy-yarah
সুরা যিলযাল,আয়াত-৭,৮)
এর অর্থ হল-যদি কেউ জাররাহ (সরিষা) পরিমান ভালো কাজ করে কিয়ামতে সে তা দেখতে পাবে, আর যদি সামান্য সরিষা পরিমান গুনাহর কাজ করে, সে তা দেখতে পাবে।
এই আয়াতটি যখন নাযিল হয়, হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাযিয়াল্লাহু আনহু তিনি আল্লাহর রসুলকে প্রশ্ন করলেন, ইয়া রসুলাল্লাহ, আল্লাহ যে আয়াত নাযিল করলেন, কিয়ামতের দিন আমি কি আমার ছোট্ট পাপ কি দেখতে পাবো? আল্লাহর নবী বললেন, আল্লাহ বলেছেন অবশ্যই তা দেখতে পাবে। হজরত আবু সাইদ খুদরি রাযিয়াল্লাহু আনহু চিতকার করে কেঁদে উঠলেন আর বললেন তাহলে তো আমি মরেই যাবো, (আমার ছোট্ট পাপ তাও যদি আমি দেখি কিয়ামতে তাহলে আমি তো মরে যাবো)
হজরত উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু অন্ধকারের ভিতরে হাঁটছেন, আর কাঁদছেন, কিছু দূর অগ্রসর হয়ে তিনি আবার প্রশ্ন করলেন?
আচ্ছা কেউ কি বলতে পারো, কুরানে কারীমের মধ্যে আশাব্যঞ্জক আয়াত কোনটি?
পিছন থেকে অন্ধকারের ভিতর থেকে আওয়াজ এল -قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّ ( 'কুল ইয়া ‘ইবাদিয়াল লাজিনা আসরাফু আলা আনফুছিকুম, লা-তাকনাতু মির রাহমাতিল্লাহ। Qul yaa'ibaadiyal lazeena asrafoo 'alaaa anfusihim laa taqnatoo mirrahmatil laah)
এর অর্থ হল- বলে দিন ওহে আমার বান্দারা তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছ তারা আল্লাহর রহমত প্রাপ্তি থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করবেন, তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [সূরা আল-যুমার ৫৩]
হজরত উমার কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ আছে না কি?
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বললেন, আমি তো বললাম, আমি তো জবাব দিলাম।
--------------------------------------------------------------------------রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জনৈক লোক যে জীবনে কক্ষনো কোন প্রকার সাওয়াবের কাজ করেনি, যখন সে মারা যাবে তার পরিবার পরিজনকে ডেকে বলল, মৃত্যুর পর তোমরা তাকে পুড়ে ফেলবে সেটার অর্ধেক স্থলভাগে বাতাসে উড়িয়ে দিবে এবং অর্ধেক পানিতে নিক্ষেপ করবে। কারণ আল্লাহর কসম! আমাকে যদি আল্লাহ পুনঃ একত্রিত করতে পারেন তাহলে তিনি আমাকে অবশ্যই এমন ‘আযাব দিবেন, যা পৃথিবীর অন্য কাউকে কখনো দেননি।
তারপর লোকটি যখন ইন্তিকাল করল তখন তার পরিবারের লোকেরা তার নির্দেশ অনুযায়ী তদ্রূপ করল। তখন আল্লাহ তা‘আলা স্থলভাগকে আদেশ দিলেন সে তার মধ্যস্থিত যা কিছু আছে (ছাই) একত্রিত করলো। এরপর পানিতে মিশ্রিত ভাগকে নির্দেশ দিলেন। সেও তার মধ্যস্থিত সব কিছু একত্রিত করে দিল। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি এমনটি কেন করলে? সে বলল, হে আমার রব! আপনার ভয়ে। আপনি তো সর্বজ্ঞ। তখন আল্লাহ তা‘আলা সদয় হয়ে তাকে মাফ করে দিলেন। (সহিহ মুসলিম, ই.ফা. ৬৭২৭, ই.সে. ৬৭৮২)
আসুন ক্ষমা চাই তাঁর কাছেই। তিনি দুয়ার খুলে রয়েছেন সব সময়। সে দুয়ার ককখোনো বন্ধ হয় না।

No comments:

Post a Comment