Tuesday, September 28, 2021

মহাযুদ্ধের কথা


মহাযুদ্ধের কথা

না! এ যুদ্ধে নেমে কোন হতাশা নয়

আল কুরআন কি বলে?
১. হে মানুষ! কিসে তোমাকে তোমার মহান রব সম্পর্কে বিভ্ৰান্ত করল?
یٰۤاَیُّهَا الۡاِنۡسَانُ مَا غَرَّکَ بِرَبِّکَ الۡکَرِیۡمِ
O mankind, what has deceived you concerning your Lord, the Generous
কোন্ বস্তু তোমাকে ধোঁকা ও প্রতারণায় ফেলে রেখেছে? যার কারণে তুমি সেই প্রভুকে অস্বীকার করেছ; যিনি তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং তোমাকে অস্তিত্ব প্রদান করেছেন, তোমাকে জ্ঞান ও সমঝ-বুঝ দান করেছেন, জীবন-যাপন করার জন্য নানান উপকরণ দিয়েছেন।
-সূরা আল-ইনফিতার | Al-Infitar | سورة الإنفطار - আয়াতঃ ৬
২.
أَفَرَأَيْتُم مَّا تُمْنُونَ
أَأَنتُمْ تَخْلُقُونَهُ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُونَ
তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, যে শুক্র তোমরা নিক্ষেপ করো
তা দ্বারা সন্তান সৃষ্টি তোমরা করো, না তার স্রষ্টা আমি?
Afara'aytum maa tumnoon
'A-antum takhluqoo nahooo am nahnul khaaliqoon
(সূরা আল ওয়াক্কিয়াহ, আয়াত ৫৮-৫৯)
৩. فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ
خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ
يَخْرُجُ مِن بَيْنِ الصُّلْبِ وَالتَّرَائِبِ
Fal yanzuril insaanu mimma khuliq
Khuliqa mim maaa'in daafiq
Yakhruju mim bainissulbi wat taraaa'ib
কাজেই মানুষ একবার এটাই দেখে নিক কী জিনিস থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে !
তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রবলবেগে নিঃসৃত পানি থেকে
যা পিঠ ও বুকের হাড়ের মাঝখান দিয়ে বের হয়৷
(সূরা আত তারিক আয়াত ৫-৭)
মানব জন্ম বিষয়ে আল কুরআন কতটা স্পষ্ট-ভাবা যায় কি?
বিজ্ঞান বলে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ্য পুরুষ একবার সহবাস করলে যে পরিমান বীর্য নির্গত হয় তাতে ৪০ কোটি শুক্রাণু থাকে। তো, লজিক অনুযায়ি মেয়েদের গর্ভে যদি সেই পরিমান শুক্রানু স্থান পেতো তাহলে ৪০ কোটি বাচ্চা তৈরি হতো। এই ৪০ কোটি শুক্রাণু মায়ের জরায়ুর দিকে পাগলের মত ছুটতে থাকে, জীবিত থাকে মাত্র ৩০০-৫০০ শুক্রাণু। আর বাকিরা? এই ছুটে চলার পথে ক্লান্ত অথবা পরাজিত হয়ে মারা যায়। এই ৩০০-৫০০ শুক্রাণু যেগুলো ডিম্বানুর কাছে যেতে পেরেছে, তাদের মধ্যে মাত্র একটি মহাশক্তিশালী শুক্রাণু ডিম্বানুকে Fertilize বা নিষিক্ত করে বা ডিম্বানুতে আসন গ্রহন করে। সেই ভাগ্যবান শুক্রাণুটি হচ্ছে আপনি কিংবা আমি বা আমরা সবাই।
কখনও কি এই মহাযুদ্ধের কথা মাথায় এনেছি আমরা?
❒ আপনি যখন দৌড় দিয়েছিলেন- তখন ছিলনা কোন চোখ, হাত, পা, মাথা, ছিল চলার জন্য কেবল একটি লাঙ্গুল বা লেজ। তবুও আপনি জিতেছিলেন।
❒ আপনি যখন দৌড় দিয়েছিলেন- তখন আপনার ছিলনা কোন সার্টিফিকেট, ছিলনা মগজ বা ঘিলু তবুও আপনি জিতেছিলেন।
❒ আপনি যখন দৌড় দিয়েছিলেন- তখন আপনার ছিলনা কোন শিক্ষা, কেউ সাহায্য করেনি তবুও আপনি জিতেছিলেন।
❒ আপনি যখন দৌড় দিয়েছিলেন- তখন আপনার একটি গন্তব্য ছিল এবং সেই গন্তব্যের দিকে উদ্দেশ্য ঠিক রেখে একা একাগ্র চিত্তে দৌড় দিয়েছিলেন এবং শেষ অবধি আপনিই জিতেছিলেন।
-এরপর?
❒ বহু বাচ্চা মায়ের পেটেই নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু আপনি মারা যাননি, পুরো ১০ টি মাস পূর্ণ করতে পেরেছেন। ত্রুটিহীনভাবে জন্ম নিয়েছেন।
❒ বহু বাচ্চা জন্মের সময় মারা যায় কিন্তু আপনি টিকেছিলেন।
❒ বহু বাচ্চা জন্মের প্রথম ৫ বছরেই মারা যায় কিন্তু আপনি এখনো বেঁচে আছেন।
❒ অনেক শিশু অপুষ্টিতে মারা যায় কিন্তু আপনার কিছুই হয়নি।
❒ বড় হওয়ার পথে অনেকেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে কিন্তু আপনি এখনো আছেন।
-আর আজ?
আপনি কিছু একটা হলেই ঘাবড়ে যান,
নিরাশ হয়ে পড়েন,
কিন্তু কেন?
কেনো ভাবছেন আপনি হেরে গিয়েছেন?
কেন আপনি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন?
এখন আপনার বন্ধু বান্ধব, ভাই বোন, সার্টিফিকেট, সবকিছু আছে,
হাত-পা আছে,
শিক্ষা আছে,
প্ল্যান করার মগজ আছে,
সাহায্য করার মানুষ আছে,
তবুও আপনি আশা হারিয়ে ফেলেছেন।
যখন আপনি জীবনের প্রথম দিন থেকেই হার মানেননি। ৪০ কোটি শুক্রাণুর সাথে মরণপণ যুদ্ধ করে ক্রমাগত দৌড় দিয়ে কারও সাহায্য ছাড়াই চরম এক প্রতিযোগিতায় একাই বিজয়ী হয়েছেন।
-তাহলে হতাশা কেনো?
দীর্ঘ পথ দেখে পথিক যদি পথ চলা বন্ধ করে দেয় তাহলে তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর আকাঙ্ক্ষা আর পূরণ হয় না। উপযুক্ত উদ্যম ও পরিশ্রম ছাড়া জীবনের বাঞ্ছিত লক্ষ্যে পৌঁছানোও সম্ভব নয়।
Sources:
-আল কুরআন
-নিজ পাঠ, পোষ্ট গ্রাজুয়েট লেভেলের

Sunday, September 5, 2021

আল্লাহভীরু কারা, আল কুরআন কি বলে?

মুত্তাকি হলো যাদের অন্তরে আল্লাহ তাআলার ভয় আছে এবং যারা আল্লাহ তাআলার ভয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।

তাকওয়া শব্দ থেকে মুত্তাকি শব্দ থেকে এসেছে।
কুরআনে বর্ণিত আল্লাহভীরু কারা?
১. যারা অদৃশ্য বিষয়ের প্রতি ঈমান আনে
আল্লাহভীরুদের প্রধান গুণ হলো তারা গায়েবি তথা অদৃশ্য বিষয়ের প্রতি ঈমান আনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা অদৃশ্যের বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদের যে জীবিকা দান করেছি, তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৩)
২. যারা ক্ষমা করে
কারো ভুল কিংবা অপরাধের পর তাকে ক্ষমা প্রদর্শন করা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। কোরআনে ক্ষমা করাকে মুত্তাকিদের গুণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা যদি ক্ষমা করো, তবে তা হবে তাকওয়ার নিকটবর্তী।’(সুরা বাকারা, আয়াত : ২৩৭)
৩. যারা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে
মুত্তাকিদের অন্যতম গুণ হলো তারা গুনাহ থেকে নিজেদের দূরে রাখে। যদি কখনো গুনাহে জড়িয়ে পড়ে, তারা দ্রুত তাওবা করে নিজেদের সংশোধন করে নেয়। আল্লাহ বলেন, ‘যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের ওপর শয়তানের আগমন ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে ওঠে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২০১)
৪. যারা সত্য খুঁজে নেয়
আল্লাহভীরুরা সত্যান্বেষী হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা হলো সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই মুত্তাকি।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ৩৩)
৫. যারা দান করে
মুত্তাকিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তারা সুখে-দুঃখে দান-সদকা করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘(আল্লাহভীরু তারাই) যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, আর আল্লাহ তাআলা সতকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
৬. যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ করে
রাগ মানুষের একটি স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাগ অন্যায় কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই ইসলাম মানুষকে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, আর আল্লাহ তাআলা সতকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
৭. যারা আল্লাহর আয়াতগুলোকেে সম্মান করে
মুত্তাকিরা আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে সম্মান প্রদর্শন করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতির কারণে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩২)
৮. যারা ন্যায়পরায়ণ
ন্যায়পরায়ণ হওয়া এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা মুত্তাকিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদের ন্যায়বিচার পরিত্যাগে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার কোরো, এটাই তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কোরো। তোমরা যা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৮)
৯. রাত জেগে ইবাদত করে যারা
পবিত্র কোরআনে রাতের শেষাংশে ইবাদত করাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা অত্যন্ত ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সতপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫)
আল্লাহ আমাদের এই ৯টি গুণ ধারন করার তাওফীক দিন।
সূত্রঃ কালের কন্ঠ

কল্যাণ ও ইসলাম

     আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা বলছেন:

'মানুষের কল্যাণ করুন যেভাবে আল্লাহ আপনার কল্যাণ করেন'।- আল ক্বাসাস, আয়াত-৭৭
কে আপনার অকল্যাণ সাধন করলো, কে আপনার দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ালো না, কে আপনার পেছনে শত্রুতা করেছিলো— এসবকিছুর জন্যে আপনার জীবন কিন্তু থেমে থাকেনি। সেই অকল্যাণ থেকে, সেই দুঃসময় থেকে, সেই শত্রুতা থেকে কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা আপনাকে ঠিক-ই উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন। তাই, কারো উপকার করার জন্যে 'সে আপনার জন্য কী করেছে' তা বিবেচ্য নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা আপনার জন্যে যা করেন তা-ই বিবেচ্য।
কল্যাণ নিয়ে একটি কবিতা
মেথর
কে বলে তোমারে বন্ধু, অস্পৃশ্য অশূচি?
শুচিতা ফিরিছে সদা তোমারি পিছনে;
তুমি আছ, গৃহবাসে তাই আছে রুচি,
নহিলে মানুষ বুঝি ফিরে যেত বনে।
শিশুজ্ঞানে সেবা তুমি করিতেছ সবে,
ঘুচাইছ রাত্রিদিন সর্ব ক্লেদ-গ্লানি!
ঘৃনার নাহিক কিছু স্নেহের মানবে;-
হে বন্ধু! তুমি একা জেনেছ সে বাণী!
নির্বিচারে আবর্জনা বহ অহর্নিশ,
নির্বিকার সদা শূচি তুমি গঙ্গাজল!
নীলকন্ঠ করেছেন পৃথ্বীরে নির্বিষ;
আর তুমি? তুমি তারে করেছ নির্মল।
এসো বন্ধু এসো বীর, শক্তি দাও চিতে,-
কল্যাণের কর্ম করি লাঞ্ছনা সহিতে।
সূত্র: আল কুরআন
নিজ মেধা
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

ইসলাম ও গোল্ডেন রুল

 “থ্রি রুলস অব লাইফ” এবং হযরত আবু বকর (রা.)

কবিতাটি পড়া আমার ৬ ক্লাশে। কিন্তু তার অনুরণন এখনো। প্রধান শিক্ষক আবদুল বাসিত স্যার বলেছিলেন, “শিখে নাও, আরো বড় হলে জীবনে কাজে লাগাতে পারবে।”
সে কথাগুলোও ভুলিনি আজও।
কবিতাটিঃ
The Three Rules
What is the iron rule?
The rule of savage men: if evil is done unto you, evil do thou again,
This is the iron rule.
What is the silver rule?
The rule of worldly men: if good your neighbour does do you, do good to him again,
This is the silver rule.
What is the golden rule?
The rule of righteous men: if devil is done unto you, return thou good again,
This is the golden rule
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু
দূর সম্পর্কের এক দরিদ্র আত্মীয়কে আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করতেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু। দারিদ্রের ভারে নুইয়ে পড়া তার জীবনের অচলাবস্থায় আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন সাহায্যের অন্যতম ভরসাস্থল।
কিন্তু, যেবার 'আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার ব্যাপারে মদীনার মুনাফিকেরা কুতসা রটালো, চারিত্রিক কলংকের যে অপবাদ তারা লেপ্টে দিতে চেয়েছিলো উম্মুল মুমিনীনের গায়ে, সেই ঘটনায় যুক্ত হয়ে পড়েছিলো আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সেই আত্মীয়ই।
ভাবুন তো— কারো দুঃখের দিনে আপনি আপনার সর্বোচ্চটা দিয়ে তার পাশে দাঁড়ান, কিন্তু দিন শেষে যদি জানতে পারেন যে সেই লোকটা আপনার মান-ইজ্জতকে দুই পয়সার দাম দেয় না, সুযোগ পেলে আপনার পিঠেও ছুরি চালাতে মরিয়া, আপনার অবস্থা তখন কেমন হবে?
আমরা হলে বলতাম— না! তোমার সাথে আর না। তোমাকে আমার চেনা হয়ে গেছে।
তাকে এতোদিন যা সাহায্য-সহযোগিতা আপনি করতেন, সব বন্ধ করে দিবেন মুহূর্তেই। আর যাই হোক— একজন বিশ্বাসঘাতকের সাথে আর কোন সম্পর্ক আপনি রাখতে পারেন না।
'আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার ঘটনায় দূর সম্পর্কের সেই আত্মীয়ের ব্যাপারেও মুহূর্তের জন্য এভাবে ভেবেছিলেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি —বললেন— 'নিয়মিতভাবে তোমাকে যে সাহায্য-সহযোগিতা আমি করতাম সেটা আজ থেকে বন্ধ করলাম। আমার কন্যার ব্যাপারে যে লোক এতোটা অপবাদ দিতে পারে, তার জন্য আমার কোন দয়া থাকতে পারে না'।
একজন মানুষ হিসেবে, একজন বাবা হিশেবে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর এই চিন্তাটা খুব-ই স্বাভাবিক। আপনি বা আমি হলেও এর ব্যতিক্রম চিন্তা কখনোই করতে পারতাম না। কিন্তু আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর এই চিন্তাটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা পছন্দ করলেন না। কেউ একজন অন্যায় করেছে বলে, সেই অন্যায়ের পই পই হিসেব করে, তার সাথে যাবতীয় সম্পর্ক আপনি ছিন্ন করে আসবেন, দুঃসময়ে তাকে দিয়ে আসা সাহায্য-সহযোগিতা বন্ধ করে দিবেন— এমনটা করবার ব্যাপারে ইসলাম আপনাকে উতসাহিত করে না। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর এমন সিদ্ধান্তের বিপরীতে, তাকে সতর্ক করে দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা কুরআনে আয়াত নাযিল করলেন:
'তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদা ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন এবং আল্লাহর পথে হিজরাতকারীদেরকে সাহায্য করবে না। তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে ও তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি উপেক্ষা করে। তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিক? আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু।'- আন নূর, আয়াত-২২
ইসলাম - সে তো পরশ-মানিক তাকে কে
পেয়েছে খুঁজি?
পরশে তাহার সোনা হল যারা তাদেরেই মোরা
বুঝি।
উমর ফারুক কবিতাংশ ( কাজী নজরুল ইসলাম)
সূত্র:
আল কুরআন
নিজ মেমোরী
আরিফ আজাদ, FB Friend
কাজী নজরুল ইসলাম