মুত্তাকি হলো যাদের অন্তরে আল্লাহ তাআলার ভয় আছে এবং যারা আল্লাহ তাআলার ভয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।
তাকওয়া শব্দ থেকে মুত্তাকি শব্দ থেকে এসেছে।
কুরআনে বর্ণিত আল্লাহভীরু কারা?
১. যারা অদৃশ্য বিষয়ের প্রতি ঈমান আনে
আল্লাহভীরুদের প্রধান গুণ হলো তারা গায়েবি তথা অদৃশ্য বিষয়ের প্রতি ঈমান আনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা অদৃশ্যের বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদের যে জীবিকা দান করেছি, তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৩)
২. যারা ক্ষমা করে
কারো ভুল কিংবা অপরাধের পর তাকে ক্ষমা প্রদর্শন করা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। কোরআনে ক্ষমা করাকে মুত্তাকিদের গুণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা যদি ক্ষমা করো, তবে তা হবে তাকওয়ার নিকটবর্তী।’(সুরা বাকারা, আয়াত : ২৩৭)
৩. যারা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে
মুত্তাকিদের অন্যতম গুণ হলো তারা গুনাহ থেকে নিজেদের দূরে রাখে। যদি কখনো গুনাহে জড়িয়ে পড়ে, তারা দ্রুত তাওবা করে নিজেদের সংশোধন করে নেয়। আল্লাহ বলেন, ‘যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের ওপর শয়তানের আগমন ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে ওঠে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২০১)
৪. যারা সত্য খুঁজে নেয়
আল্লাহভীরুরা সত্যান্বেষী হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা হলো সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই মুত্তাকি।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ৩৩)
৫. যারা দান করে
মুত্তাকিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তারা সুখে-দুঃখে দান-সদকা করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘(আল্লাহভীরু তারাই) যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, আর আল্লাহ তাআলা সতকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
৬. যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ করে
রাগ মানুষের একটি স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাগ অন্যায় কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই ইসলাম মানুষকে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, আর আল্লাহ তাআলা সতকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
৭. যারা আল্লাহর আয়াতগুলোকেে সম্মান করে
মুত্তাকিরা আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে সম্মান প্রদর্শন করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতির কারণে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩২)
৮. যারা ন্যায়পরায়ণ
ন্যায়পরায়ণ হওয়া এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা মুত্তাকিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদের ন্যায়বিচার পরিত্যাগে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার কোরো, এটাই তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কোরো। তোমরা যা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৮)
৯. রাত জেগে ইবাদত করে যারা
পবিত্র কোরআনে রাতের শেষাংশে ইবাদত করাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা অত্যন্ত ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সতপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫)
আল্লাহ আমাদের এই ৯টি গুণ ধারন করার তাওফীক দিন।
সূত্রঃ কালের কন্ঠ
No comments:
Post a Comment