Sunday, March 20, 2022

জন্মদিনের কেকের মোমবাতিগুলো ফুঁ দিয়ে না নিভালে হয় না?

 সাম্প্রতিক সময়ে জন্মদিন বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই আয়োজন করা হয়। আর তাতে কেক কাটার সময় মোমবাতিতে ফুঁ দেয়ায়ও যেন অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে আর যাই করুন না কেন, এই লেখাটি পড়ার পর জন্মদিনের কেকে মোমবাতি ব্যবহারের আগে দ্বিতীয়বার ভাবেন।

আমেরিকার ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নেভানোর ফলে কেকের আইসিংয়ে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ 1400 শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তার পর যেহেতু সেই কেক সব অতিথিরাই চেটেপুটে খাচ্ছেন, তাই তাঁদের শরীরেও ঢুকে পড়ছে জীবাণু!
ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর পল ডসন এবং তার সহযোগী কিছু গবেষক এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। তারা একটি ক্ল্যাসিক বেসলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়া গণনা করেছেন। গবেষণায় প্রচুর সংখ্যক ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ মিললেও সবচেয়ে অবাক করেছে যে জিনিসটি তা হলো, ফুঁ ভেদে ভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, এক ফুঁ’য়ে 120 বারের বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, কিছু মানুষ অন্যের তুলনায় বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি করে।
‘জার্নাল অফ ফুড রিসার্চ’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের গবেষণাপত্রে যা লেখা হয়েছে, তা এইরকম — জন্মদিনের কেকের উপরে রাখা মোমবাতি এক ফুঁ দিয়ে নেভানোর নিয়মটা ঠিক কোথায় চালু হয়েছিল, তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। একদল মনে করেন প্রাচীন গ্রিসের শিকারের দেবতা আর্টেমিসের মন্দিরে নাকি প্রথম চালু হয় এই রীতি। অনেকে মনে করতেন, মোমবাতি নেভানোর পর যে ধোঁয়াটা বেরোয়, সেটাই নাকি মানুষের ইচ্ছাগুলোকে ঈশ্বরের দরবারে পৌঁছে দেয়৷
ডক্টর ডসন বলেন, ‘জন্মদিনের কেকে মোমবাতির আসল আনন্দ থেকে বঞ্চিত করার জন্য এই তথ্য ছড়ানো হচ্ছে না।’ তিনি জানান, ‘আমার ধারণা এসব ব্যাকটেরিয়ার কারণে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়বে না। মানুষের মুখ ব্যাকটেরিয়ায় পূর্ণ এবং অধিকাংশই ক্ষতিকারক নয়।’ তবে কেউ অসুস্থ বা কোনো রকমের সংক্রমণের শিকার হয়ে থাকলে তাকে মোমবাতিতে ফুঁ দেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ডক্টর ডসন জানান, তিনি যদি দেখেন কোনো অসুস্থ ব্যক্তি কেকের মোমবাতিতে ফুঁ দিচ্ছেন, সেক্ষেত্রে জন্মদিনের কেক খাওয়া এড়াবেন। সেক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে, ওই ব্যক্তির জন্মদিনের কেকে মোমবাতি না জ্বালানোই ভালো হবে।
সাম্প্রতিককালে গবেষকরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, সম্ভবত মানুষের নিশ্বাসের বায়োএরোসলের মাধ্যমে কেকের সারফেসে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে।
তাহলে কি পরের জন্মদিনে কেকের উপর সাজানো মোমবাতিতে ফুঁ দিবেন? নাকি কোনও বন্ধুবান্ধবের জন্মদিনে গিয়ে কেক খাওয়া বন্ধ করে দেবেন বলে ভাবছেন?
পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও খানিকটা ভেবে নিন না হয়!
আখেরে ভালোই হবে বলে আশা করা যায়।
সূত্র:
femina.in
mayabeejagat
https://bn.quora.com/

প্রতিবার রাগ মানব মনে কোন না কোন চিহ্ন রেখে যায়

ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ

খুব ছোট্ট এক ছেলে।
প্রচন্ড রাগী ছিল।
একদিন তার বাবা তাকে একটা পেরেক ভর্তি ব্যাগ দিল এবং বলল যে, যতবার তুমি রেগে যাবে ততোবার একটা করে পেরেক আমাদের বাগানের কাঠের বেড়াতে লাগিয়ে আসবে।
প্রথমদিনেই ছেলেটিকে বাগানে গিয়ে ৩৭ টি পেরেক মারতে হলো।
পরের কয়েক সপ্তাহে ছেলেটি তার রাগকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলো, তাই প্রতিদিন কাঠে নতুন পেরেকের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে এলো।
সে বুঝতে পারলো হাতুড়ী দিয়ে কাঠের বেড়ায় পেরেক বসানোর চেয়ে তার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি সহজ।
শেষ পর্যন্ত সেই দিনটি এলো যেদিন তাকে একটি পেরেকও মার‌তে হলো না।
সে তার বাবাকে এইকথা জানালো।
তার বাবা তাকে বললো এখন তুমি যেসব দিনে তোমার রাগকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সেসব দিনে একটি একটি করে পেরেক খুলে ফেলো।
অনেক দিন চলে গেল এবং ছেলেটি একদিন তার বাবাকে জানালো যে সবগুলো পেরেক সে খুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
তার বাবা এবার তাকে নিয়ে বাগানে গেল এবং কাঠের বেড়াটি দেখিয়ে বললো,’তুমি খুব ভাল ভাবে তোমার কাজ সম্পন্ন করেছ,এখন তুমি তোমার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারো কিন্তু দেখো, প্রতিটা কাঠে পেরেকের গর্তগুলো এখনো রয়ে গিয়েছে।
কাঠের বেড়াটি কখনো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না। যখন তুমি কাউকে রেগে গিয়ে কিছু বলো তখন তার মনে ঠিক এমন একটা আঁচড় পড়ে যায়। তাই নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখো।
মানসিক ক্ষত অনেক সময় শারীরিক ক্ষতের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকর হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
আমি এমন একটি বাক্য জানি, যা বললে রাগের প্রতিক্রিয়া চলে যাবে। তখন মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসুল ! তা কি?
তিনি বললেন, ‘সে বলবে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাশ শায়ত্বানির রাঝিম। ’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ ! আমি আপনার কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় চাই। ’
সূত্রঃ আল হাদীস
Upanishad Chatterjee

Wednesday, March 9, 2022

দুশ্চিন্তার প্রভাব দাঁতেও

 Why stress and depression affects dental health

দুশ্চিন্তা দূর করতে অনেকেই অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন। এতেও দাঁতের স্বাস্থ্যের ভীষণ ক্ষতি হয়। মুখে ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে।
কখনও অতিরিক্ত কাজের চাপ, কখনও চাকরির সমস্যা, কখনও সাংসারিক জীবনে অশান্তির, কখনও পরীক্ষার ফল ভাল না হওয়া, কখনও আবার অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ার ভয়— জীবনের যে কোনও স্তরে যে কোনও কারণে ঘিরে ধরতে পারে এই অবসাদ। একাকিত্ব, মানসিক যন্ত্রণা, দুঃখ ধীরে ধীরে রূপ নেয় অবসাদের। যদি সময় মতো এর চিকিতসা না হয় তবে অবসাদ মানুষকে মৃত্যুর দিকেও ঠেলে নিয়ে যেতে পারে।
জানলে অবাক হয়ে যাবেন, অবসাদ ও দুশ্চিন্তার প্রভাব পড়তে পারে দাঁতের স্বাস্থ্যের উপরও। কেন এমনটা হয়?
১) মন ভাল না থাকলে অনেকের রান্না করতে ইচ্ছে করে না। সেই পরিস্থিতিতে রেস্তরাঁর খাবারের উপরেই ভরসা করতে হয়। সে ক্ষেত্রে দোকান থেকে কেনা তেল, ঝাল, মশলা যুক্ত খাবার খেলে মুখের স্বাস্থ্যের বারোটা বাজে।
২) দুশ্চিন্তা হলেই অনেকেই বেশি করে মিষ্টি খেতে শুরু করেন। এর ফলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া এবং ক্যাভিটির সমস্যাও দেখা যায়। এ ছাড়াও অবসাদে ভুগলে অনেকের ক্ষেত্রেই ‘বার্নিং মাউথ সিনড্রোম’ দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে মাড়ি ফুলে যায়, মুখের ভিতর জ্বালা করে।এমনকি জিভের স্বাদও চলে যেতে পারে।
৩) অবসাদের কারণে কোনও কাজই করতে ইচ্ছে করে না। যাঁদের আগে থেকেই দাঁতের সমস্যা আছে, তাঁরা অবসাদের কারণে নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করাতে ভুলে যান। মনে থাকলেও তাঁরা সহজে চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। এতেই সমস্যা আরও বাড়ে।
৪) এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট ওষুধ দেওয়া হয় যার অসংখ্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই প্রকার ওষুধ মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
৫) দুশ্চিন্তা দূর করতে অনেকেই অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন। এতেও দাঁতের স্বাস্থ্যের ভীষণ ক্ষতি হয়। মুখে ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে।
কী করবেন?
প্রথমত দুশ্চিন্তা ও অবসাদ কমাতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রাণায়াম এবং যোগাসন দারুণ উপকারী। সমস্যা বাড়লে অবশ্যই চিকিতসকের পরামর্শ নিন। এর পাশাপাশি দাঁতের স্বাস্থ্যের প্রতিও নজর রাখতে হবে। দিনে অন্তত দু’বার ব্রাশ করুন। ‘মাউথ ওয়াশ’ ব্যবহার করতে ভুলবেন না। চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। ধূমপান ও মদ্যপান বেশি না করাই ভাল। দাঁতে সামান্য সমস্যা দেখা দিলেই দন্ত চিকিতসকের কাছে যান।
-Anandabazar

ওজন ঝরায় আন্ডা

 সাদা বা বাদামী আন্ডা যে কোনটাই পুষ্টিকর!

White Vs Brown Eggs
Weight Loss Tips: White or brown, which type of egg is more beneficial for losing weight
অনেকেরই ধারণা বাদামি রঙের ডিম অধিক পুষ্টি সম্পন্ন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ডিম মাত্রেই পুষ্টির অন্যতম সমৃদ্ধ উতস।
ডিম অনেকেরই পছন্দের খাবার। ডিম যেমন স্বাদের যত্ন নেয়। তেমনই সুস্থ রাখে শরীরও। রূপচর্চাতেও ডিমের ভূমিকা অপরিসীম। বাজারে দু’রকম রঙের ডিম পাওয়া যায়। সাদা আর বাদামি। অনেকেরই ধারণা বাদামি রঙের ডিম অধিক পুষ্টি সম্পন্ন।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, ডিম মাত্রেই পুষ্টির অন্যতম সমৃদ্ধ উতস। ডিমে রয়েছে ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালশিয়াম, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, সেলেনিয়ামের মতো উপকারী কয়েকটি উপাদান। পুষ্টিবিদদের মতে, ডিমের সাদা অংশের তুলনায় কুসুমে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। শুধু সাদা অংশ বা শুধু ডিমের কুসুমের পরিবর্তে তাঁরা গোটা ডিম খাওয়ারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
দীর্ঘ ক্ষণ শরীরচর্চার পরে দুর্বল পেশি সবল করতে ডিম খাওয়া জরুরি। এ ছাড়াও ডিমে থাকা প্রোটিন হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে তোলে। রোজের খাদ্যতালিকায় ডিম রাখলে ওজন কমানোর কাজও সহজ হয়ে যাবে।
তবে বাদামি এবং সাদা রঙের ডিমের মধ্যে পুষ্টিগত দিক থেকে কোনও পার্থক্য নেই। বৈসাদৃশ্য রয়েছে শুধু খোলার রঙে। বাজারে বাদামি ডিমের চেয়ে সাদা ডিম বেশি দেখা যায়। এর কারণ বাদামি ডিম উতপাদন বেশি খরচ সাপেক্ষ। কারণ যে মুর্গি বাদামি ডিম দেয়, তাদের আরও স্বাস্থ্যকর এবং অরগ্যানিক খাবার দেওয়া হয়।
স্বাদ সামান্য আলাদা হলেও গুণাবলীর দিক বাদামি আর সাদা রঙের ডিমে কোনও পার্থক্য নেই। তাই ওজন ঝরানোর ক্ষেত্রে যে কোনও একটি বেছে নিতে পারেন নিশ্চিন্তে।
-anandabazar

শুকরিয়া আদায় করো আর অকৃতজ্ঞ হয়ো না

 লাইন শাকারতুম, লা আজিদান্নাকুম, ওয়ালাইন কাফারতুম ইন্না আজাবি লাশাদীদ।

অর্থ- আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে আমার নিয়ামত পাইয়া নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে, আমি তার নিয়ামত কে আরো বাড়িয়ে দেই। আর যে আমার নিয়ামত কে অস্বীকার করে আমি তার নিয়ামত কে ছিনিয়ে নেই বরং আজাবে গ্রেফতার করি।
শুকরিয়ার একটি গল্প
লোকটির বয়স ৭৮ বছর হয়েছে। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে রিয়াদের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিতসা হিসাবে নাকে ২৪ ঘন্টা অক্সিজেনের নল লাগিয়ে রেখেছিল। এতে বৃদ্ধ সুস্থতা অনুভব করলে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করতে চাইলেন । আর ওই দিকে ডাক্তার রোবটের মত এক চিলতে বিলের স্লিপ তার হাতে ধরিয়ে দিলেন। বিলের কাগজের একবারে নিচের লাইনে চোখ বুলিয়ে বৃদ্ধ হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। ডাক্তার তাকে কাঁদতে বারন করে বললেন — বিলের টাকা নিয়ে চিন্তা করবেন না। বৃদ্ধ জবাব দিলেব,”আমি বিলের টাকা নিয়ে চিন্তা করে কাঁদছিনা।এই টাকা পরিশোধ করার মত আর্থিক স্বচ্ছলতা আমার আছে।আমি কাঁদছি এটা চিন্তা করে যে, ২৪ ঘন্টার এই অক্সিজেনের বিল ৬০০ রিয়াল — আর আমি এই নির্মল অক্সিজেন বিগত ৭৮ বছর হতে আল্লাহর কাছ থেকে সম্পুর্ণ বিনা পয়সায় ভোগ করে আসছি।এর জন্য আমাকে একটি রিয়ালও আল্লাহকে পরিশোধ করতে হয়নি।” লোকটা ডাক্তারকে বললেন,”ডাক্তার সাহেব আপনি কি জানেন, এই হিসাবে আমি আল্লাহর কাছে কত রিয়াল ঋণী”
বৃদ্ধের কথা শুনে ডাক্তার মাথা নিচু করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলেন,”ওয়াইন তাউদ্দু নি’মাতাল্লাহি লা তুহছু হা।” অর্থাত, “আমার নিয়ামত তোমরা গুনে গুনে শেষ করতে পারবে না।” (সূরা ইব্রাহিম -৩৪ নং আয়াত) সূরা আর-রাহমানে আল্লাহ রব্বুল আলামীন বার বার তার নিয়ামতের কথা বলে বলে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন এভাবে,”ফাবি আইয়্যি আ লা ইরব্বুকুমা তুকাজ্জিবান।” অর্থাত, “তোমরা আল্লাহর কোন কোন নিয়ামত কে অস্বীকার করবে?” (সূরা আর -রাহমান) আল্লাহ রব্বুল আলামীন সূরা ইব্রাহীমে বলছেন,” লা ইন শাকারতুম লা আঝিদান্নাকুম।” অর্থাত, “যদি তোমরা আমার নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করো তাহলে আমি তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেবো।” (সূরা ইব্রাহীম-৭ নং আয়াত) তাই আসুন আমরা আমাদের মহান স্রষ্টা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের কাছে আমাদের সব নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করি এবং তার সব আদেশ নিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করি। আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে সেই তওফিক দান করুন। আমীন।।

‘মেয়েলি’ প্রশ্ন

 

Gynecologist’s answer so called embarrassing questions

স্তন-যোনি-ঋতুস্রাব— প্রত্যেকটি শব্দই যেন নিষিদ্ধ। লোকসমাজে তো এ নিয়ে আলোচনা করা যাবেই না, নিজের মনেও যেন এ নিয়ে ভাবা ‘পাপ’।

নারী-শরীর মানেই যেন রহস্য! সমাজ সে ভাবেই দেখে এবং সে ভাবেই দেখতে শেখায়। এমনকি নারী নিজেও তা ভাবতে শেখে, বিশ্বাস করে।

নারী-শরীর মানেই যেন রহস্য! সমাজ সে ভাবেই দেখে এবং সে ভাবেই দেখতে শেখায়। এমনকি নারী নিজেও তা ভাবতে শেখে, বিশ্বাস করে। স্তন-যোনি-ঋতুস্রাব— এ সবই নিষিদ্ধ। কোনও সভ্য সমাজে জনসমক্ষে এ নিয়ে কথা বলা যাবে না। নারী-শরীর মানেই লজ্জা। শৈশব পেরিয়ে যেই একটি মেয়ে কৈশোরে পা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে সমাজ তার ঘাড় ধরে শেখাতে বসে, কোন কথা বলা যাবে, কোন কথা বলা যাবে না। সেই পাঠ্যক্রমে এক বার চোখ বোলালেই যে কেউ শিখে যায় যে, নিজের শরীর নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নই নিষিদ্ধ। অথচ বেড়ে ওঠার সময়ে সকলের মনেই হাজার প্রশ্ন ওঠে। সেই প্রশ্ন মনেই থেকে যায়। বয়স বাড়লেও চিন্তা-ভাবনার পরিসর অজান্তেই বাড়া বন্ধ করে দেয়। তাই অনেক সময়ে অনেক জরুরি প্রশ্ন মনে এলেও তা অবচেতনে ঠেলে দেয় মেয়েরা।

নারীমন কি কোনও দিন নিজের শরীরে নিজে খোলামেলা চিন্তা-ভাবনা করতে শিখবে না? লাজলজ্জা ভুল নিজের শরীরকে চিনতে শিখবে না?  
কিছু জরুরি অথচ ‘নিষিদ্ধ’ প্রশ্ন উত্তর দিলেন ভারতীয় স্ত্রীরোগ চিকিৎসক ভিমি বিন্দ্রা এবং কৃষ্ণাবেণী নয়নী।

স্তনবৃন্তের লোম থাকা কি স্বাভাবিক? না কি আমিই অদ্ভুত?

ঋতুস্রাব কমে যাওয়া মানেই কি প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাওয়া?

সাধারণত প্রত্যেক নারীর ঋতুস্রাব চলে ৩ থেকে ৭ সাত দিন পর্যন্ত। তার শরীর থেকে ৮০ মিলি রক্তক্ষয় হয়। এর চেয়ে কম বা বেশি রক্তক্ষয়, দুই-ই কোনও রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। মানসিক চাপ, হরমোনের তারতম্য কিংবা থাইরয়েড, পিসিওডি-র মতো রোগ থাকলে রক্তক্ষয় কমে যেতে পারে। বয়সের সঙ্গেও তা কমতে পারে। তাতে প্রজনন ক্ষমতা কমতেও পারে, না-ও পারে। হঠাৎ যদি কখনও দেখেন, ঋতুস্রাব অনেকটাই হালকা হয়ে এসেছে, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

ঋতুস্রাবের সময়ে এত ব্রণ হয় কেন?

সব মেয়ের ঋতুচক্রের বিভিন্ন সময়ে শরীরে হরমোনের নানা রকম তারতম্য চলে। ঋতুস্রাবের ঠিক আগে হঠাৎই ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন কমে যায়। এতে ত্বক বেশি পরিমাণে সেবাম তৈরি করে এবং কোষগুলি অনেক সময়ে তাতে বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যাক্টেরিয়া সহজেই জন্মাতে পারে। তার থেকেই ব্রণ হয়। তবে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্রণ কমবেশি হতে পারে এক এক জনের ক্ষেত্রে। ত্বকের সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যা একটু কমতে পারে।

ঘরোয়া টোটকায় কি ঋতুস্রাবের সময় পিছিয়ে দেওয়া সত্যিই সম্ভব?

ঘরোয়া টোটকা বা অতিরিক্ত শরীরচর্চায় ঋতুস্রাবের সময় পিছিয়ে দেওয়া যায়, এমন ভ্রান্ত ধারণা অনেকেরই রয়েছে। অনেকে দাবি করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছু টোটকা কাজও দেয়। কিন্তু এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বা গবেষণাপত্র নেই। ঋতুস্রাবের সময়ে পিছিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়লে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে হরমোনের ওষুধ খেতে হবে।

যোনিদ্বারের মাংসপেশি কি আগের মতো টানটান থাকে না অতিরিক্ত সঙ্গমের ফলে?

সঙ্গম নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা চারদিকে রয়েছে। অনেকেই ভয় পান, বেশি যৌন মিলনে হয়তো মাংসপেশি আলগা হয়ে যাবে। কিন্তু মেয়েদের যৌনাঙ্গ যথেষ্ট ইলাস্টিক। মানে সঙ্গমের সময়ে বা যৌন উত্তেজনায় তা যেমন বিস্তৃত হয়, সঙ্গমের পর ফের আগের আকারেই ফিরে যায়।

শৈশব পেরিয়ে যেই একটি মেয়ে কৈশোরে পা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে সমাজ তার ঘাড় ধরে শেখাতে বসে, কোন কথা বলা যাবে, কোন কথা বলা যাবে না।

স্তনবৃন্তে লোম কিংবা ফাটা? এগুলি কি স্বাভাবিক?
স্বাভাবিক—

১। একটি স্তন সামান্য বড়

২। স্তন বা স্তনবৃন্তে লোম

৩। একটি স্তন সামান্য ঝুলে থাকে

৪। ঋতুস্রাবের সময়ে বা আগে স্তনে যন্ত্রণা

চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে যখন—

১। স্তনের কোনও অংশ উঁচু হয়ে বা ফুলে রয়েছে, যা আগে ছিল না।

২। স্তনবৃন্তে ঘোলাটে তরল রস বা রক্তক্ষয়।

৩। বগল বা স্তন ফুলে থাকা

৪। স্তনবৃন্তের চারপাশে অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক বা ফাটল

৫। অতিরিক্ত চুলকানি

৬। স্তন গরম হয়ে যাওয়া বা জ্বালাভাব

যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করতে কি বিশেষ সাবান প্রয়োজন?

যোনি এবং যোনিদ্বারের পার্থক্য প্রথমেই জানতে হবে। শরীরের ভিতরের অংশ যোনি। যা নিজে থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়। আলাদা করে কোনও রকম সাবান দিলে জ্বালাভাব বা অন্য সমস্যা হতে পারে। যোনিদ্বার প্রত্যেক দিন পরিষ্কার করা উচিত ঈষদুষ্ণ জল এবং হালকা সাবন দিয়ে। কিন্তু বাজারচলতি বিভিন্ন সুগন্ধি দেওয়া সাবান বা তরল একদমই ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ যে কোনও রকমের রাসায়নিক এখানকার মাংসপেশিতে জ্বালাভাব বা অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।

মা না হয়েও কি স্তনদুগ্ধ তৈরি হতে পারে?

যিনি সন্তানের জন্ম দেননি, তাঁরও স্তনে স্তনদুগ্ধের মতো তরল তৈরি হতে পারে। একে বলা হয় গ্যালাক্টোরিয়া। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, হরমোনের তারতম্য বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা প্রতিক্রিয়া হিসাবে এমন হতেই পারে। সব সময়ে কোনও শারীরিক জটিলতার ইঙ্গিত না হলেও, কখনও কখনও স্তনের টিস্যু নষ্ট হয়ে গেলে বা লিভার বা কিডনির কোনও সমস্যা হলে এমন হতে পারে। তাই পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

স্তন টিপলে কি আকারে বড় হয়ে যায়?

কমবয়সিদের মধ্যে এমন গুজব রটেই থাকে। স্তন টিপলে কখনওই তার আকার বদলায় না। যৌন উত্তেজনা হতে পারে মাত্র। ওজন বাড়লে, অন্তঃসত্ত্বা হলে বা সন্তানকে স্তনপান করালে তবেই স্তনের আকার বড় হয়। তা ছাড়া, শুধু স্তন প্রতিস্থাপনেই স্তনের আকার বড় হতে পারে।

কোন ধরনের যোনিস্রাব স্বাভাবিক, কোনটি উদ্বেগজনক?

অনেক ধরনের যোনিস্রাব স্বাভাবিক এবং তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। যেমন—

১। স্বচ্ছ এবং জলের মতো (মাঝেমাঝে বাড়তেই পারে)

২। সাদা (ঋতুস্রাবের আগে এবং পরে স্বাভাবিক)। কিন্তু তা ছানার মতো হলে ইস্টের সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। সঙ্গে চুলকানি থাকলে অবশ্যই পরীক্ষা করান।

৩। স্বচ্ছ ইলাস্টিকের মতো (প্রজননের সময়ে স্বাভাবিক)

৪। বাদামি (ঋতুস্রাবের পর এক-দু’দিন স্বাভাবিক। অন্য সময়ে হলে চিকিৎসককে জানানো প্রয়োজন)

যেগুলি অস্বাভাবিক—

১। হলুদ বা সবুজ (যৌনরোগের ইঙ্গিত)

২। রক্তের মতো বা বাদামি (ঋতুস্রাবের এক দু’দিন পর ছাড়া এমন যোনিস্রাব ক্যানসার, ফাইব্রয়েড বা কোন সিস্টের ইঙ্গিত হতে পারে।

Ref: nandabazar.com