Sunday, March 20, 2022

জন্মদিনের কেকের মোমবাতিগুলো ফুঁ দিয়ে না নিভালে হয় না?

 সাম্প্রতিক সময়ে জন্মদিন বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই আয়োজন করা হয়। আর তাতে কেক কাটার সময় মোমবাতিতে ফুঁ দেয়ায়ও যেন অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে আর যাই করুন না কেন, এই লেখাটি পড়ার পর জন্মদিনের কেকে মোমবাতি ব্যবহারের আগে দ্বিতীয়বার ভাবেন।

আমেরিকার ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নেভানোর ফলে কেকের আইসিংয়ে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ 1400 শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তার পর যেহেতু সেই কেক সব অতিথিরাই চেটেপুটে খাচ্ছেন, তাই তাঁদের শরীরেও ঢুকে পড়ছে জীবাণু!
ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর পল ডসন এবং তার সহযোগী কিছু গবেষক এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। তারা একটি ক্ল্যাসিক বেসলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়া গণনা করেছেন। গবেষণায় প্রচুর সংখ্যক ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ মিললেও সবচেয়ে অবাক করেছে যে জিনিসটি তা হলো, ফুঁ ভেদে ভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, এক ফুঁ’য়ে 120 বারের বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, কিছু মানুষ অন্যের তুলনায় বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি করে।
‘জার্নাল অফ ফুড রিসার্চ’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের গবেষণাপত্রে যা লেখা হয়েছে, তা এইরকম — জন্মদিনের কেকের উপরে রাখা মোমবাতি এক ফুঁ দিয়ে নেভানোর নিয়মটা ঠিক কোথায় চালু হয়েছিল, তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। একদল মনে করেন প্রাচীন গ্রিসের শিকারের দেবতা আর্টেমিসের মন্দিরে নাকি প্রথম চালু হয় এই রীতি। অনেকে মনে করতেন, মোমবাতি নেভানোর পর যে ধোঁয়াটা বেরোয়, সেটাই নাকি মানুষের ইচ্ছাগুলোকে ঈশ্বরের দরবারে পৌঁছে দেয়৷
ডক্টর ডসন বলেন, ‘জন্মদিনের কেকে মোমবাতির আসল আনন্দ থেকে বঞ্চিত করার জন্য এই তথ্য ছড়ানো হচ্ছে না।’ তিনি জানান, ‘আমার ধারণা এসব ব্যাকটেরিয়ার কারণে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়বে না। মানুষের মুখ ব্যাকটেরিয়ায় পূর্ণ এবং অধিকাংশই ক্ষতিকারক নয়।’ তবে কেউ অসুস্থ বা কোনো রকমের সংক্রমণের শিকার হয়ে থাকলে তাকে মোমবাতিতে ফুঁ দেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ডক্টর ডসন জানান, তিনি যদি দেখেন কোনো অসুস্থ ব্যক্তি কেকের মোমবাতিতে ফুঁ দিচ্ছেন, সেক্ষেত্রে জন্মদিনের কেক খাওয়া এড়াবেন। সেক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে, ওই ব্যক্তির জন্মদিনের কেকে মোমবাতি না জ্বালানোই ভালো হবে।
সাম্প্রতিককালে গবেষকরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, সম্ভবত মানুষের নিশ্বাসের বায়োএরোসলের মাধ্যমে কেকের সারফেসে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে।
তাহলে কি পরের জন্মদিনে কেকের উপর সাজানো মোমবাতিতে ফুঁ দিবেন? নাকি কোনও বন্ধুবান্ধবের জন্মদিনে গিয়ে কেক খাওয়া বন্ধ করে দেবেন বলে ভাবছেন?
পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও খানিকটা ভেবে নিন না হয়!
আখেরে ভালোই হবে বলে আশা করা যায়।
সূত্র:
femina.in
mayabeejagat
https://bn.quora.com/

No comments:

Post a Comment