আমার বন্ধুকে লেখা
Tuesday, November 24, 2020
কষ্টের সাথে সুখ
Saturday, November 21, 2020
মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কিস্সা
প্রথমে ভাল করে পড়ে নিন বিশ্ব
স্বাস্থ্য
সংস্থার দেয়া স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা। এর পর সেটাকে ভাল করে বুঝুন। আপনি নিজেই অনুমান অথবা
বাস্তবে প্রমাণ করতে পারবেন কিসে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি সম্ভব।
WHO
definition of health
Health is a state of complete physical, mental and social
well-being and not merely the absence of disease or infirmity.
ইসলাম ধর্মে একটি মশহুর হাদীস
রয়েছে সেটা হলো, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু
আনহু বর্ণনা করেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে লোক
তার রিজিক প্রশস্ত ও আয়ু বাড়াতে চায় সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।’
(বুখারি)
বাংলাদেশের
মানুষের মধ্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির গুরুত্ব
অপরিসীম। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রনালয়ের মতে বাংলাদেশের জনগণের গড় আয়ু একদশক আগেও ৬০ বছর ছিল। বর্তমানে গড় আয়ু বেড়ে
দাঁড়িয়াছে ৭৩ বছর। লক্ষণীয় বিষয় হলো যে, পুরুষের চাইতে নারীর গড় আয়ু বৃদ্ধির হার বেশি।
২০১৬ সালে নারীর গড় আয়ু ছিল ৭২ বছর ১০ মাস ২০ দিন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩
বছর ০৬ মাস। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশাবাদ অনুযায়ী ২০৪০
সালে বৈশ্বিকভাবে মানুষের গড় আয়ু ৮৫ বছর ছেড়ে যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে জ্ঞানী-গুণী
গবেষক, ডাক্তার ও
বিজ্ঞানীদের তথা বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু ও মাতৃমৃত্যু, বাল্যবিবাহ হ্রাস, শিক্ষা, টিকা দেয়া, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য
সচেতনতা, স্বাস্থ্যসম্মত
পায়খানা ব্যবহার, রোগজীবাণু সম্পর্কে সজাগ ও জ্ঞাত হওয়া ইত্যাদি
আমাদের গড় আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও নিম্নলিখিত উপায়ে গড় আয়ু বৃদ্ধি করা সম্ভব:
১। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তবে তা
নিশ্চয় পুষ্টিকর, সুষম, ভেজালমুক্ত ও নিরাপদ হওয়া প্রয়োজন। শুধু
স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্যই জীবনকে দীর্ঘক্ষণ বাঁচাতে ও রোগমুক্ত রাখতে পারে।
খাবার খেতে হবে পরিমাণমতো ও নিয়ম মতো।
২। দেশে
প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে দু'জন দাঁতের রোগে আক্রান্ত। অথচ নিয়মিত দাঁত
ব্রাশের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ দাঁতের রোগ দূর করা সম্ভব। খুব ভালো হয়, রাতে ঘুমের
আগে ব্রাশ করা।
৩। শরীর
সুস্থ রাখতে দৌড় ও যোগব্যায়াম অনস্বীকার্য। কথায় বলে, করো
ব্যায়াম ও যোগ, থাকো নিরোগ। প্রতিদিন সামান্য সামান্য হলেও নিজের
স্বাস্থ্যকে ফিট রাখার জন্য যোগব্যায়াম করা প্রয়োজন। এর ফলে শরীর ও মন ভালো
থাকে। দেহে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। দেহ ও মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম করে
তোলে। হাঁটা, দৌড়ানো, জগিং করা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি শারীরিক ব্যায়ামের
উদাহরণ।
৪। গত
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (২০১৯)-এর রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও
আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। ২০টি দূষিত শহরের মধ্যে ভারতের ১৫টি
ও ঢাকা অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী দূষণ
কমাতে পারলে বাংলাদেশের গড় আয়ু বাড়বে ১ দশমিক ৩ বছর, ভারতীয়দের বাড়বে ১ বছর করে।
৫। বিয়ে
নিয়ে মার্কিন একদল গবেষক এক চমকপ্রদ তথ্যের অবতারণা করেছেন সম্প্রতি। তাদের
গবেষণায় উঠে এসেছে বৈবাহিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন লাভের অন্যতম পূর্বশর্ত। মাঝ বয়সটিকে
দুশ্চিন্তামূলকভাবে পার করতে একজন সঙ্গী বা সঙ্গিনী অপরিহার্য। আর সেটা
মৃত্যুঝুঁকিতেও অনায়াসে কমিয়ে দিতে পারে। আলিঙ্গন অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। গবেষকরা
বলেছেন, প্রতিদিন ও
রাতে অন্তত ৮ বার আপনার প্রিয়তমের সঙ্গে আলিঙ্গন করুন। আলিঙ্গন শরীরের অসুখ সারায়, একাকিত্ব
দূর করে হতাশা, দুশ্চিন্তা ও স্ট্রোক কমায়। পরিবারের সঙ্গেই মিল মহব্বত
থাকলে দুশ্চিন্তা থাকে না। পরিবারের কোন্দল, অশান্তি ও সন্দেহপ্রবণ হলে আযু বৃদ্ধি রোধ করে
দেয়।
৬। বায়ু
দূষণের কারণে মানুষের আয়ু প্রায় ৩ বছর কমে যায়। এই দূষণের কারণে বছরে প্রায় ৮৮ লাখ
মানুষের অকাল-মৃত্যু হয়। নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা এসব তথ্যে বলেন, যদি জীবাশ্ম
জ্বালানির ব্যবহার শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব হয়, তবে হারিয়ে যাওয়া এই ৩ বছর থেকে ১ বছর ফিরে
পাওয়া সম্ভব হবে, অর্থাৎ আয়ু বৃদ্ধি হবে।
৭। বর্তমান
উন্নত বিশ্বে যে সমস্ত রোগ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে তার মধ্যে আলঝেইমার, ক্যান্সার, কার্ডিওভাসকুলার
ডিজিজ, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং
আত্মহত্যা অন্যতম। এসব কিছুর সঙ্গে রয়েছে ঘুমহীনতার গভীর সম্পর্ক। বিজ্ঞানীরা
বলেছেন, কম ঘুমের
কারণে কমছে মানুষের আয়ু। এ কারণে সুস্থ থাকা এবং দীর্ঘজীবনের জন্য ভালো ঘুমের
প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
৮।
বিজ্ঞানীরা মানুষকে ভালো রাখতে 'হাসি' হাসতে পরামর্শ দেন, তা যে করেই
হোক। কেউ বলেছেন, দুই ঘণ্টা ঘুমালে শরীরে যে সুস্থতা আসে, পনেরো
মিনিট হাসলে তার চেয়ে বেশি সুস্থতা আসবে। হৃদকম্পন ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়ে হার্টে রক্ত সঞ্চালনের নালি
পরিষ্কার হবে। আর্টারিতে বিশুদ্ধ রক্তবাহী নালী ব্লকের
সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। দশ থেকে ১৫ ক্যালরি খরচ হয়ে শরীর হালকা করে দেবে।
৯। যদি
শীর্ষ ধনীদের আয়ের ১ শতাংশ সম্পদ করারোপ করা হয় তাহলে বছরে ৪১ বিলিয়ন ডলার আসতো।
এই অর্থ দিয়ে স্কুলে যাচ্ছে না এমন শিশুদের শিক্ষা দেয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে ৩০
লাখ মৃত্যু এড়ানো যেতো।
১০। রাশিয়ার
বিজ্ঞানীরা মানুষের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া টেনে ধরার পদ্ধতির সন্ধান পাওয়ার দাবি
করেছেন। তারা এমন এক ট্যাবলেট আবিষ্কার করেছেন, যা মানুষের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত
করবে। এটি প্রয়োগ করে মানুষের আয়ু ১২০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। ১৩ জুলাই, ২০২০ ইং
তারিখের 'দৈনিক
যুগান্তর' পত্রিকা শিরোনাম
ছিল- 'মানুষের আয়ু
বাড়ানোর ওষুধ আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা।'
১১।
গ্রীসের ছোট্ট দ্বীপ ইকারিয়া যেখানে মানুষ মরতে ভুলে যায়। এই দ্বীপের আয়তন মাত্র ২৫৪ বর্গকিলোমিটার। বাস করেন
হাজার দশেক মানুষ। এই দ্বীপের মানুষ অমরত্বের স্বাদ নিয়ে বাস করছে পৃথিবীতে। কারণ
সেখানকার মানুষের গড় আয়ু ১০০ বছর। রোগ-ব্যাধি বলতে তাদের কিছুই নেই। এখানকার
বাসিন্দারা ১০০ বছরেও লাঠিনির্ভর নন
বা কারো মাথা তিনটে নয়। তাই এ দ্বীপের
বাসিন্দারা ভুলতে বসেছেন 'মৃত্যুকে।' ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ইং দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা থেকে জানা যায় যে, উন্নত দেশের যে ২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করেছে সাধারণ
অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। এতে ২০১৪ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির
লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল বেড়ে
দাঁড়াবে ৮০ বছরে।
১২।
মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনকরণের ফলে আয়ু বৃদ্ধি করা যায়। যেমন- কিডনি, লিভার, চোখ
ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো মানুষের মাথাও প্রতিস্থাপন সম্ভব!
বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ মনে করেন, কখনই
জীবিত মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। তবে যুক্তরাজ্যের নিউরোসার্জন ক্লস
ম্যাথুর দাবি- এটা সম্ভব এবং তা হতে পারে আগামী ১০ বছরের মধ্যে। আইসিডিডিআরবি
পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়- শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ শারীরিক অসুস্থতার কারণে
চিকিৎসাসেবা নিতে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যান এবং মাত্র শতকরা ১৫% ভাগ মানুষ
শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে যান।
১৩. মানুষকে
দান করুন। স্বাস্থ্যের ওপর এর ইতিবাচক ফল রয়েছে।
১৪. রাগ থেকে
সম্পূর্ণ বিরত থাকুন। স্বাস্থ্যের ওপর এর ইতিবাচক ফল রয়েছে।
১৫. সব সময়
ইতিবাচক থাকুন। স্বাস্থ্যের ওপর এর ইতিবাচক ফল রয়েছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য
সংস্থার মতে, একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করার জন্য
ছয়টি বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি। এটা হলো- প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, চিকিৎসাসহ পর্যাপ্ত জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম, তথ্য-উপাত্ত, সেবাদানের সঠিক নির্দেশিকা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা।
দেশের
সিংহভাগ মানুষ গ্রামে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেন। ধাবমান শ্রেণি শহরের
মানুষগুলোর মতো তারা কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হয় না। তারা
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিবর্তনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এমনকি অভিজ্ঞ ডাক্তারের
সানি্নধ্যেই যেতে পারে না। মানুষেরা ভালো চিকিৎসা ও নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে পালন
করলে, দলিত ও বঞ্চিতদের এবং প্রান্তিক জনগণ প্রাপ্ত
হলে বেশিদিন বেঁচে রাখা সম্ভব হবে বলে অনেকে মনে করেন।
চলমান সময়ে-
১। ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন। ঘরের মধ্যে প্রচুর
আলো-বাতাস প্রবেশ করতে দিন। বাড়ির আশপাশে বদ্ধ ড্রেন, ছোট ডোবা না রাখাই উত্তম। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা
ফেলবেন না যাতে অস্বাস্থ্যকর দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।
২।
নিয়মিত গোসল/স্নান করুন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড় পরুন। অন্যের ব্যবহৃত
জিনিসপত্র যেমন- চিরুনি, টুথব্রাশ, টুপি, রুমাল, গামছা বা তোয়ালে, জামা-কাপড় প্রভৃতি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩। মাছি
বসা খাবার, পচা ও বাসি খাবার, অনেকক্ষণ বাইরে রেখে দেয়া খোলা খাবার, অপরিষ্কার হাতে পরিবেশন করা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে
হবে। হাত সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধৌত করে খাবার গ্রহণ করলে বহু রোগ-জীবাণু
থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। টয়লেট ব্যবহারের পর যেকোনো খাবার বা নাক-মুখ ও ঠোট
স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকলে এবং হাত ও পায়ের নখ যথাযথভাবে কেটে ফেলতে হবে।
৪।
মানুষের শরীরকে ভালো রাখার আরো একটি পন্থা হলো- সময়মতো প্রকৃতির ডাকে সাড়া
দেয়া। মল-মূত্র চাপ পড়লেই স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিনে যাওয়া। শরীরের মধ্যে আটকিয়ে
রাখা মানেই রোগ-বালাইকে আমন্ত্রণ জানানো।
স্বাস্থ্যই
সম্পদ ও স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্যকে যদি ভালো রাখতে পারি, তাহলে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ও দীর্ঘায়ু লাভ করা
সম্ভব। রোগ হয়ে গেলে তার চিকিৎসা করার চেয়ে, রোগ যেন না হয়, সে চেষ্টা করাই ভালো। অর্থাৎ রোগ নিরাময়ের চেয়ে রোগ
প্রতিরোধই শ্রেয়। কিছু উপরোক্ত উদাহরণ সাধারণ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনেক রোগ
প্রতিরোধ করতে পারে এবং মানুষ দীর্ঘসময় আয়ু নিজেই তৈরি করতে এবং বেশীদিন
বাঁচতে পারে।
দেখি কী করলে আরও কিছু বছর বেশি বাঁচা যায়?
১.গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের
পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়ামে
বার্ধক্য-প্রক্রিয়ার গতি কমানো যায়। ব্যাপক পরিসরে পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, দিনে মাত্র পাঁচ মিনিট (১০ মিনিটে প্রতি মাইল গতিতে) দৌড়ালে অস্বাভাবিক
মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা যায়। তাঁদের অকাল মৃত্যুঝুঁকি অন্তত
এক-তৃতীয়াংশ কমে। তাঁদের আয়ু যাঁরা মোটেও ব্যায়াম করেন না, তাঁদের চেয়ে গড়ে অন্তত তিন বছর বেশি বলে নিরীক্ষায় জানা গেছে (নিউইয়র্ক টাইমস, জুলাই ৩০,
২০১৪)।
২.ওজন বাড়তে দেবেন না। সহজ হিসাব হলো, সেন্টিমিটারে উচ্চতা বের করে ১০০ বিয়োগ করলে প্রাপ্ত সংখ্যাটিই হবে আপনার
আদর্শ ওজন। আর দেখতে হবে আপনার পেটের পরিসীমা (ভুঁড়ির বেড়) যেন উচ্চতার অর্ধেকের
বেশি না হয়।
৩.পরিমিত খাবার খাবেন। শাকসবজি থাকবে বেশি। দিনে অন্তত পাঁচ
রঙের পাঁচ রকমের ফল খাবেন পরিমিত মাত্রায়। রান্নার জন্য সূর্যমুখী বা সয়াবিন তেলের
সঙ্গে জলপাই তেল (অলিভ অয়েল) সমান অনুপাতে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এটা অসম্পৃক্ত
চর্বির আদর্শ সংমিশ্রণ। ভাজা-পোড়া খাবারে ক্ষতিকর চর্বি (ট্রান্সফ্যাট) থাকে, যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে (হার্ভার্ড মেডিকেল পাবলিকেশন্স)। সম্পৃক্ত
চর্বিযুক্ত প্রাণিজ গোশতের চেয়ে মাছ ভালো। চিনির চেয়ে গুড় ভালো।
৪.প্রতিদিন অন্তত সাত ঘণ্টার ঘুম দরকার। দুপুরে অন্তত ১৫-২০
মিনিটের হালকা ঘুম খুব উপকারী। এতে আয়ু বাড়ে। কয়েক বছর আগে ইউনিভার্সিটি অব এথেন্স
ও হার্ভার্ডের স্কুল অব পাবলিক হেলথের একদল গবেষক দুপুরে সামান্য ঘুমান এমন ২৩
হাজার গ্রিক নাগরিকের ওপর দীর্ঘ ছয় বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখেছেন, তাঁদের কারও হৃদরোগ,
ক্যানসার বা স্ট্রোক হয়নি। তাঁদের সিদ্ধান্ত দুপুরের
সামান্য ঘুম আপনার জীবন রক্ষা করতে পারে, আয়ু বাড়াতে পারে।
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ শত কাজের মধ্যেও প্রতিদিন দুপুরে
১৫ মিনিটের জন্য হলেও ঘুমিয়ে নেন। তাঁর বয়স এখন প্রায় ৯৫।
৫. সিগারেট পান একেবারে নিষেধ। ধূমপানে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের
ধূমপান ছাড়ার বছর দুয়েকের মধ্যে হৃদরোগের আশঙ্কা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে, ধূমপানের সঙ্গে যুক্ত ক্যানসারের আশঙ্কা প্রতিবছর কমতে থাকে। ১৫ বছরের মধ্যে
ধূমপানের সব ধরনের ক্ষতি দূর হয়ে যায়। সুতরাং আজই ধূমপান বাদ দিন।
শেষে বলি-
পৃথিবীতে
কুসংস্কার ও বিজ্ঞানের মধ্যে লড়াই চলতেই থাকবে এটিই বাস্তব সত্য। বিজ্ঞানের নতুন
নতুন আবিষ্কার তথা তথ্যপ্রযুক্তি, জ্ঞান, ওষুধ, যন্ত্রপাতি
ইত্যাদি প্রকৃতি ও জীবনের কল্যাণে মানুষের আয়ু বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। বাস্তবাদীরা বলেন, বিজ্ঞানের
সুফল বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী সকলেই পাচ্ছেন। অপরদিকে কুসংস্কার, অবাস্তব, বিজ্ঞানবিরোধী
প্রচার ও অন্ধবিশ্বাসীদের প্রথা ভবিষ্যতে ভেঙে পড়বে। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা একদিন
কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে এবং বিশ্বের সকল মানুষের অবাস্তব ধ্যান-ধারণা পাল্টে
দিবে বলে আমাদের ধারণা। বিজ্ঞান যেহেতু সকলের কল্যাণে নিয়োজিত, তাই বিজ্ঞান পড়া ও বিজ্ঞান মনস্ক হওয়া আবশ্যক। বিজ্ঞানের
অগ্রযাত্রা সকল মানুষের কল্যাণে ও মঙ্গলে দীর্ঘায়ু প্রাপ্তিতে ভবিষ্যতে ব্যয়িত
হবে।
তথ্য
সূত্র:
বিভিন্ন
পত্রিকা
https://www.bangladiet.com/
ইসলামডটনেট
Thursday, November 5, 2020
সতকর্মশীলরা খুবই দামী জিনিস
জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চিত চাবি কোনটি?
রাতে মাছ খাবেন না
হাইলাইটস
খাই খাই ভাব? সারাক্ষণ?
হাইলাইটস
একাকীত্ব? তাহলে বন্ধু বেছে নাও
The language of friendship is not words but meanings.