Sunday, March 21, 2021

বয়স অনুযায়ী কতটা ঘুমোলে কমতে পারে হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি ?

 ঘুমের ধরন ও সময় যদি ঠিক থাকে, তা হলে কমতে পারে হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি। সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে এক সমীক্ষায়।

নানা স্বাস্থ্যসংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে কয়েক মিলিয়ন মানুষ হার্ট ফেলিওরের শিকার হন। আর এই হার্ট ফেলিওরের পিছনে অন্যতম কারণ হল ঘুমের সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে সমীক্ষার দাবি, ঠিকঠাক ঘুমের ধরন প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রায় ৪২ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয় হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি।
স্বাস্থ্যকর ঘুমের ধরন হল সারাদিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনো, সকালে যথাসময়ে ওঠা, ইনসমনিয়া বা ঘুমের অভাবে না ভোগা। নাক ডাকা বা দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুমোনোর অভ্যাসও স্বাস্থ্যকর নয়।
সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সমীক্ষাটি। ঘুমের সঙ্গে হার্ট ফেলিওরের এই সম্পর্ক খতিয়ে দেখতে প্রায় ব্রিটেনের বায়ো ব্যাঙ্কের ৪,০৮,৮০২ জনের উপরে দীর্ঘ সমীক্ষা চলে। এঁদের বয়সসীমা ৩৭-৭৩ বছর। এর পাশাপাশি হার্ট ফেলিওরের ঘটনাগুলিকেও খতিয়ে দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রায় ১০ বছর সময়কালের মধ্যে ৫,২২১ হার্ট ফেলিওরের কেস নজরে আসে।
স্বাস্থ্যকর ঘুমের অন্যতম প্যারামিটার অর্থাৎ সারাদিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনো, সকালে যথাসময়ে ওঠা, ইনসমনিয়া বা ঘুমের অভাবে না ভোগা, নাক ডাকা, কিংবা দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুমোনোর অভ্যাসের বিষয়গুলি।
ঘুমের সময়কাল অনুযায়ী সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মোট তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলি হল ঘুমোনোর পর্যাপ্ত সময় অর্থাৎ ৭-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমোনো লোকজন, দিনে ৭ ঘণ্টার কম ঘুমোনো লোকজন, দিনে ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমোনো লোকজন।
সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, যাঁরা পর্যাপ্ত সময় ঘুমোচ্ছেন এবং যাঁদের সামগ্রিক ঘুমের ধরন যথাযথ, তাঁদের ক্ষেত্রে ৪২ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি। বিস্তারিত ভাবে মূল্যায়ণ করে দেখা যায়, যাঁরা সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি।
যাঁরা ৭-৮ ঘণ্টা করে ঘুমোচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি। এঁদের মধ্যে যাঁরা দিনে ঘুমোন না এবং নাক ডাকা বা ইনসমনিয়া ভোগেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি অর্থাৎ ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি।
নিউজ১৮ Source

ঘুম নিয়ে হেলা ফেলা করলে সমুহ বিপদ।

 আল কুরআনের অনেক জায়গায় ঘুমের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে। কারণ আল্লাহ পাক জানেন তার বান্দাহর জন্য কি কি দরকার।

ঘুম রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে
আমাদের জীবনকে স্বাস্থ্যকর ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নিজস্ব কিছু কাজ থাকে। সারা দিন কাজ করার পর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর বিশ্রামের দরকার হয়। বিশ্রামের মূল জায়গাটি হলো ঘুম। ঘুম পরিপূর্ণভাবে না হলে মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ হবে না। অন্যদিকে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সারা দিন কাজ করার ফলে মস্তিষ্কে কিছু ওয়েস্ট প্রোডাক্ট তৈরি হয়। এই ওয়েস্ট প্রোডাক্ট ড্রেইন করার সময়টিই হচ্ছে ঘুম। সারা দিনের অনেক কিছুই আমরা মনে রাখতে চাই। সেটিও ঘুমের মাধ্যমে সম্ভব হয়। আমরা সারা দিন যা খাই, তা হজম হয়ে শক্তি হিসেবে জমা থাকে। এই জমা রাখার সময়টি হলো ঘুম।
সবার আগে ঘুমের সময় ঠিক করতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে। দিনের বেলায় কখনো ১৫ থেকে ৪৫ মিনিটের বেশি ঘুমানো যাবে না। চা বা কফি ঘুমাতে যাওয়ার ছয় ঘণ্টা আগে পান করতে হবে। ঘুমের চার ঘণ্টা আগে খাবার খেতে হবে।
ডা. আবু নাইম, সহযোগী অধ্যাপক, নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল
সূত্র: আল কুআন ও প্রথম আলো

মানবদেহের অঙ্গ বিচারের মুখোমুখি হবে

 আল্লাহ তায়ালা বিচার দিবসে দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গকে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। যেমন তিনি ইরশাদ করেন- যে ব্যাপারে তোমার জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয়, কান, চোখ ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে (সূরা বনি ইসরাইল-৩৬)। বিচার দিবসে কানকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবন কী কী শুনেছ? চোখকে প্রশ্ন করা হবে তুমি সারা জীবন কী কী দেখেছ? অন্তঃকরণকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি সারা জীবনে মনে মনে কী কী কল্পনা করেছ এবং কী কী বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছ? যদি কান দিয়ে দীনবিরোধী কথাবার্তা ও হারাম গানবাদ্য শোনে কিংবা চোখ দিয়ে বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেয় অথবা অন্তরে কুরআন-সুন্নাহপরিপন্থী বিশ্বাস লালন করে থাকে; তবে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে।

অঙ্গ হবে কৃতকর্মের সাক্ষী : বিচার দিবসে হিসাব-নিকাশের জন্য উপস্থিতির সময় প্রথমে সব ব্যক্তি যা ইচ্ছা বলার স্বাধীনতাপ্রাপ্ত হবে। পাপীরা যখন তাদের অপকর্মের কথা অস্বীকার করবে, আল্লাহ তায়ালা তখন তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবেন, যাতে তারা মুখে কোনো কথা বলতে না পারে। অতঃপর তাদের হাত, পা ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে রাজসাক্ষী করে কথা বলার যোগ্যতা দেয়া হবে। তারা পাপীদের সব অপকর্মের সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবো; তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে (সূরা ইয়াসিন-৬৫)।
Source: Kaler Kantha

দাঁত মাজা

 দাঁত মাজা বিলাসিতা বা বাবুগিরি নয়। ট্রেনে বাসে এই সুন্দর কথাটি হরহামেশাই আমরা শুনি। আসলে দাঁত মাজা একটি স্বাস্থ্যকর বিষয়।

দাঁত মাজার নিয়ম না মানলে তাড়াতাড়ি 'ফোকলা' হবার সম্ভাবনা!
দাঁত মাজার সময় এই ভুলগুলো এড়িয়ে কী ভাবে নিজের ওরাল হেল্থ বজায় রাখা যায়, দেখে নেওয়া যাক এক এক করে!
•এফডিআই ওয়ার্ল্ড ডেন্টাল ফেডারেশনের হাত ধরে ২০১৩ সাল থেকে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড ওরাল হেল্থ ডে উদযাপন। সত্যি কথা বলতে কী, তার প্রয়োজনীয়তাও আছে। সচেতনতার অভাবে অনেকেই নিজেদের দাঁতের স্বাস্থ্যের যত্ন নেন না। ভারতে চলতি বছরের এই দিনটির থিম ঘোষণা হয়েছে বি প্রাউড অফ ইয়োর মাউথ- যা ঝকঝকে, সুন্দর দাঁত ছাড়া সম্ভব নয়। তার জন্য আবার প্রয়োজন ঠিক করে দাঁত মাজা। কিন্তু আমরা অনেকেই দাঁত মাজার ক্ষেত্রে ৬টি মারাত্মক ভুল করে থাকি।
•১. ভুল টুথব্রাশ ব্যবহার করা-মানে টুথব্রাশের ব্রিসলের আয়তন নিয়ে সচেতন না হওয়া! কারও মুখের ভিতরটা ছোট হয়, কারও আবার বড়। টুথব্রাশের মাপ সেই মতো নির্ধারণ করা উচিত। না হলে কখনই দাঁত মাজার কাজটা সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদিত হবে না।
•২. পুরনো টুথব্রাশ ব্যবহার করা-আমরা অনেকেই মাসের পর মাস একটাই টুথব্রাশ ব্যবহার করে যাই! মনে করি যে ব্রিসলগুলো ঠিক থাকলে কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু এটি ভুল ধারণা, টুথব্রাশ যত পুরনো হতে থাকে, তত তার দাঁত পরিষ্কার করার ক্ষমতা চলে যায়। তাই প্রতি তিন বা চার মাস অন্তর টুথব্রাশ বদলানো দরকার।
•৩. দাঁত মাজার সময়-ঠিক কতটা সময় নিয়ে দাঁত মাজা উচিত? আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন জানাচ্ছে যে এক্ষেত্রে পাক্কা ২ মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করতেই হবে- তাও দিনে দু'বার করে! এই সময়টা না দিলে দাঁত পরিষ্কার থাকবে না।
•৪. সামনে-পিছনে একটানে দাঁত মাজা-আমরা অনেকেই দাঁত মাজার সময়ে সামনের সারিটায় এক টানে ব্রাশ ঘষি, তার পর আবার একই ভাবে পিছনের সারিটা ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে ফেলি। কিন্তু তাতে দাঁত থেকে পুরো ময়লা ওঠে না। তাই ডেন্টিস্টদের মতে ছোট ছোট গোল স্ট্রোকে হাত ঘুরিয়ে দাঁত মাজা উচিত- সামনে এবং পিছনে দুই পাটিতেই!
•৫. মাড়ির যত্ন না নেওয়া-মাড়িতে যদি ময়লা জমতে থাকে, তাহলে দাঁত ঝকঝকে থেকেও কোনও লাভ নেই, সে দাঁতে পোকা হবে বা তা ক্ষয়ে যাবে। তাই ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে মাড়ির সারিতে ব্রাশ বুলিয়ে দাঁত মাজলে তা পরিষ্কার থাকবে, আমরাও সমস্যা থেকে রেহাই পাবো।
•৬. খেয়ে উঠেই দাঁত মাজা-ডাক্তারেরা বলছেন যে আমরা যা খাই, তার অনেকগুলোই অ্যাসিডিক গোত্রের। ফলে খেয়ে উঠে সঙ্গে সঙ্গে দাঁত মাজলে ওরাল ক্যাভিটির মধ্যে একটা অ্যাসিডিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আবার, খাওয়ার পরেই দাঁত মাজলে জমে থাকা খাবারের টুকরো বেরোয় না, কেবল দাঁতের এনামেল এই অ্যাসিডিক প্রতিক্রিয়ায় ক্ষয়ে যায়। তাই খাওয়ার অন্তত মিনিট পনেরো পরে দাঁত মাজা উচিত।
-নিউজ ১৮ Source

জাহেল ও মূর্খ

 ‘জাহেল’ শব্দের অর্থ বিদ্যাহীন ব্যক্তি নয়; বরং যারা মূর্খতার কাজ ও মূর্খতাপ্রসূত কথাবার্তা বলে, যদিও বাস্তবে বিদ্বানও বটে।

মূর্খ মানে অশিক্ষিত বা লেখাপড়া না জানা লোক নয়; বরং যারা জাহেলি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার উদ্যোগ নেয় এবং কোনো ভদ্রলোকের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করে। রহমানের বান্দাদের পদ্ধতি হচ্ছে, তারা গালির জবাবে গালি এবং দোষারোপের জবাবে দোষারোপ করে না। (ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী, বাদাইউত তাফসির)।
কালজয়ীগ্রন্থ ‘পান্দেনামা’র গ্রন্থকার ফরিদুদ্দিন আত্তার (রহ.) বলেন, ‘মূর্খের সঙ্গে তর্কযুদ্ধ করার মানেই হলো পাথরের ওপর হাত দ্বারা আঘাত করা। এতে হাতই ক্ষতবিক্ষত হবে, পাথরের কী হবে? কারণ তা তো নির্জীব।’ তিনি আরো বলেন, ‘বচনবাগিশ আর মূর্খের সঙ্গে খবরদার তর্ক কোরো না। কারণ প্রথমোক্তের কাছে তুমি পরাজিত হবে এবং দ্বিতীয়োক্তের কাছে হবে অপমানিত।’
বিশ্ববিখ্যাত পারস্য কবি আল্লাম শেখ সাদী (রহ.) বলেন, কোনো ‘জ্ঞানী যদি মূর্খের মোকাবেলায় পড়ে তবে তার কাছ থেকে সম্মানের আশা করা ঠিক নয়। আর কোনো মূর্খ যদি জ্ঞানী লোকের মোকাবেলায় জিতে যায়, তবে আশ্চর্যের কিছু নয়। কারণ পাথরের আঘাতে মতির বিনাশ সহজেই হয়ে থাকে।’ তাই বুদ্ধিমানদের উচিত, কখনো নির্বোধের সঙ্গে অযথা তর্কে না জড়ানো। অযথা তর্ক করা যাদের অভ্যাস, তাদের এড়িয়ে চলা জরুরি।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তোমরা মতবিরোধ বা পরস্পরের বিরোধিতা করো না; কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা মতবিরোধের কারণেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। (বুখারি, হাদিস: ৩৪৭৬ ও ২৪১০)
বিশেষত মূর্খদের এড়িয়ে চলতে আদেশ দিয়ে মহাগ্রন্থ আল কোরআন বলে, ‘রাহমান-এর বান্দা তারাই, যারা জমিনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদের (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, ‘সালাম’।
সূত্র: কালের কন্ঠ

‘মাল’বিষয়ে আল্লাহ ও রাসুলের (সা.)বাণী

 সম্পদকে আরবিতে বলা হয় ‘মাল’।

মহানবী সা: বলেছেন, তিন ধরনের মালই তার আসল মাল-
১. যা সে ভক্ষণ করেছে;
২. যা সে নষ্ট করেছে ও
৩. যা সে দান সদকা করেছে।
তাই আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় করো’ (সূরা মুনাফিকুন-১০)।
অর্থের মোহ মানুষের শত্রু : আল্লাহ তায়ালা সূরা আত তাকাসুরে বলেছেন, ‘পার্থিব অর্থ লাভ করার মোহ তোমাদেরকে উদাসীন ও গাফেল করেছে। আজীবন সম্পদ বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থাকো। এমনকি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এ চিন্তায় রত থাকো। হজরত হাসান বসরি রহ: বলেছেন, ‘মানুষকে সম্পদ ও সন্তানের মোহ স্র্রষ্টার আনুগত্য করা থেকে গাফেল রাখে।’ আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি একটি পরীক্ষা’ (সূরা আত-তাগাবুন-১৫)। মহানবী সা: বলেন, ‘তুমি যে শত্রুকে হত্যা করতে পারার কারণে সফল হলে কিংবা সে তোমাকে হত্যা করলে তুমি জান্নাত লাভ করলে সে তোমার আসল শত্রু নয়। বরং তোমার আসল শত্রু তোমার ঔরসজাত সন্তান এবং তোমার ওই সম্পদ যার তুমি মালিক হয়েছ (তিবরানি)। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু’ (সূরা আত তাগাবুন- ১৪)। আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন, ‘অতএব তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত না করে। আল্লাহর ইচ্ছা হলো এগুলো দ্বারা দুনিয়ার জীবনে তাদের আজাবে নিপতিত রাখা এবং প্রাণবিয়োগ হওয়া কুফরি অবস্থায়’ (সূরা আত-তাওবা-৫৫)।
সম্পদ বাহ্যিক চাকচিক্য মাত্র : সম্পদ মূলত সৌন্দর্য ও চাকচিক্য মাত্র। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘মানবকুলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী, সন্তান-সন্ততি, রাশিকৃত স্বর্ণ-রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্ব, গবাদিপশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মতো আকর্ষণীয় বস্তুসামগ্রী। এ সবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ্যবস্তু’ (সূরা আল-ইমরান-১৪)।
সম্পদের লোভ ক্ষতিকর : সম্পদ বৃদ্ধির লোভ আজীবন থাকে। মহানবী সা: বলেছেন, ‘আদম সন্তান বৃদ্ধ হয়, কিন্তু দু’টি জিনিস অবশিষ্ট থাকে, তা হলো- লোভ ও আশা’ (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘যদি কোনো আদম সন্তানের স্বর্ণের একটি উপত্যকা থাকে, সে দু’টি থাকা পছন্দ করবে, তার মুখ কবরের মাটি ছাড়া পূর্ণ হবে না’ (সহিহ বুখারি)। সম্পদের লোভ ব্যক্তিকে দ্বীনি কার্যক্রম থেকে বিরত রাখে এবং অন্যায় কজ করতে বাধ্য করে। মহানবী সা: বলেছেন, ‘আদম সন্তান বলে- আমার মাল, আমার মাল! হে আদম সন্তান! ওই মালই তোমার যা তুমি খেয়ে শেষ করেছ অথবা পরিধান করে নিঃশেষ করেছ কিংবা তুমি দান করে ব্যয় করেছ, আর অন্য যা কিছু রেখে এসেছ তা তুমি অন্যের জন্য রেখেছ’ (সহিহ মুসলিম)।
সম্পদের হিসাব নেয়া হবে : আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমার আল্লাহর নিয়ামতসমূহ গণনা করতে থাকো, তাহলে সেগুলো গণনা করে শেষ করতে পারবে না’ (সূরা ইবরাহিম-৩৪)। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর অবশ্যই সে দিন তোমাদের এ নিয়ামতগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’ (সূরা আত-তাকাসুর-৮)। হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা: বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এখানে আসেন। আমরা তাকে খাওয়ার জন্য তাজা খেজুর এবং পান করার জন্য ঠাণ্ডা পানি দিলাম। তিনি তখন বলেন, এগুলো এমন সব নিয়ামতের অন্তর্ভুক্ত যেগুলো সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’ (মুসনাদ আহমদ, নাসায়ি, ইবনে জারির)। নিয়ামতসমূহের মধ্যে অসংখ্য নিয়ামত এমন যা আল্লাহ তায়ালা সরাসরি মানুষকে দান করেন। আর অসংখ্য নিয়ামত এমন যা মানুষকে দান করা হয় তার নিজের উপার্জনের মাধ্যমে। নিজের উপার্জিত নিয়ামতসমূহ মানুষ কিভাবে উপার্জন করেছে এবং কোন পথে ব্যয় করেছে সে সম্পর্কে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। যেসব সরাসরি লাভ করেছে সেগুলো সে কোন পথে ব্যয় করেছে সে প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে। বিচার দিবসে তিন বস্তুর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না
১. যে বস্তু দিয়ে সতর ডেকেছে;
২. যে খাদ্য খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছে এবং
৩. যে গৃহে আশ্রয় নিয়ে গরম ও ঠাণ্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করেছে।
সাহাবায়ে কিরাম মহানবী সা:কে জিজ্ঞেস করেন- কোন নিয়ামত প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হবে? তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন-
১. পেট ভরে আহার করা;
২. ঠাণ্ডা পানি পান করা;
৩. আশ্রয় নেয়া গৃহ;
৪. সুস্বাস্থ্য’
৫. নিদ্রার প্রশান্তি। অন্য বর্ণনা মতে, নিয়ামত হলো- নিরাপত্তা ও সুস্থতা।
আলী ইবনে আবু তালহা হজরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণনা করেন- তিনি বলেন, উত্তম নিয়ামত হলো-
১. শারীরিক সুস্থতা,
২. শ্রবণশক্তি ও
৩. দৃষ্টিশক্তি।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই কর্ণ, চক্ষু, অন্তঃকরণ সব কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। মহানবী সা: বলেন, বিচার দিবসে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘আমি তোমাকে ঘোড়া ও উটের ওপর আরোহণ করিয়েছি, নারীর সাথে বিয়ের ব্যবস্থা করেছি এবং তোমাকে নেতৃত্ব দান করেছি, তুমি এসবের কি শুকরিয়া করেছ’ (ইবনে কাসির)?
-নয়া দিগন্ত সূত্র