Sunday, March 21, 2021

জাহেল ও মূর্খ

 ‘জাহেল’ শব্দের অর্থ বিদ্যাহীন ব্যক্তি নয়; বরং যারা মূর্খতার কাজ ও মূর্খতাপ্রসূত কথাবার্তা বলে, যদিও বাস্তবে বিদ্বানও বটে।

মূর্খ মানে অশিক্ষিত বা লেখাপড়া না জানা লোক নয়; বরং যারা জাহেলি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার উদ্যোগ নেয় এবং কোনো ভদ্রলোকের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করে। রহমানের বান্দাদের পদ্ধতি হচ্ছে, তারা গালির জবাবে গালি এবং দোষারোপের জবাবে দোষারোপ করে না। (ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী, বাদাইউত তাফসির)।
কালজয়ীগ্রন্থ ‘পান্দেনামা’র গ্রন্থকার ফরিদুদ্দিন আত্তার (রহ.) বলেন, ‘মূর্খের সঙ্গে তর্কযুদ্ধ করার মানেই হলো পাথরের ওপর হাত দ্বারা আঘাত করা। এতে হাতই ক্ষতবিক্ষত হবে, পাথরের কী হবে? কারণ তা তো নির্জীব।’ তিনি আরো বলেন, ‘বচনবাগিশ আর মূর্খের সঙ্গে খবরদার তর্ক কোরো না। কারণ প্রথমোক্তের কাছে তুমি পরাজিত হবে এবং দ্বিতীয়োক্তের কাছে হবে অপমানিত।’
বিশ্ববিখ্যাত পারস্য কবি আল্লাম শেখ সাদী (রহ.) বলেন, কোনো ‘জ্ঞানী যদি মূর্খের মোকাবেলায় পড়ে তবে তার কাছ থেকে সম্মানের আশা করা ঠিক নয়। আর কোনো মূর্খ যদি জ্ঞানী লোকের মোকাবেলায় জিতে যায়, তবে আশ্চর্যের কিছু নয়। কারণ পাথরের আঘাতে মতির বিনাশ সহজেই হয়ে থাকে।’ তাই বুদ্ধিমানদের উচিত, কখনো নির্বোধের সঙ্গে অযথা তর্কে না জড়ানো। অযথা তর্ক করা যাদের অভ্যাস, তাদের এড়িয়ে চলা জরুরি।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তোমরা মতবিরোধ বা পরস্পরের বিরোধিতা করো না; কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা মতবিরোধের কারণেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। (বুখারি, হাদিস: ৩৪৭৬ ও ২৪১০)
বিশেষত মূর্খদের এড়িয়ে চলতে আদেশ দিয়ে মহাগ্রন্থ আল কোরআন বলে, ‘রাহমান-এর বান্দা তারাই, যারা জমিনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদের (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, ‘সালাম’।
সূত্র: কালের কন্ঠ

No comments:

Post a Comment