Tuesday, January 18, 2022

মহান আল্লাহর ২০ নিয়ামত

 পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহ পর্যালোচনা করে আমরা যে সব মহা নিয়ামত দেখতে পাই তা হলো-

১. মানবজাতির সৃষ্টির সেরা জীব হওয়া।
২. বাকশক্তি ও বোধশক্তিসম্পন্ন হওয়া।
৩. সুন্দর দেহাবয়ব ও মুখাবয়বসম্পন্ন হওয়া।
৪. আবেগ ও বিবেকসম্পন্ন হওয়া।
৫. বিভিন্ন ভাষাভাষী ও বিভিন্ন জাতিভুক্ত হওয়া।
৬. দৈহিক ও মানসিক বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত থাকা।
৭. কর্মঠ ও কর্মততপর হওয়া।
৮. সর্বদৈহিক সুস্থতার পাশাপাশি আর্থিক সচ্ছলতা লাভ করা।
৯. সুখময় দাম্পত্য জীবন লাভ করা, নেক্কার স্ত্রী ও সন্তান লাভ করা।
১০. সুন্দর, সুরম্য ও পরিচ্ছন্ন আবাসস্থল ও গাড়ির মালিকানা লাভ করা।
১১. বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানী ও চিন্তাশীল হওয়া।
১২. সুখসমৃদ্ধ দেশ ও জাতি গঠনের নিমিত্তে নেতৃত্ব লাভ।
১৩. চিন্তাশীল সৃষ্টিশীল গবেষক হওয়া।
১৪. সাবভৌম রাষ্ট্রে স্বাধীনভাবে চলা বলার অবারিত সুযোগ লাভ করা।
১৫. কোনোরকমের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই স্বীয় ধর্ম, কৃষ্টি কালচার পালনের সুযোগ লাভ করা।
১৬. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সব সুযোগ সুবিধা লাভ করা।
১৭. আত্মিক ও মানসিক শান্তি লাভ করা।
১৮. সব প্রকার হুমকি-ধমকি থেকে সার্বিক নিরাপত্তা লাভ করা।
১৯. নিজের ব্যক্তিত্ব তথা ইজ্জত-সম্মান, যশ-খ্যাতি লাভ করা।
২০. নিজের জীবনকে আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালনা করা।
-onnoekdiganta

ফিতরাত

 শাইখ মুহাম্মদ আকরাম নদভী ফিতরাত শব্দটিকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন Nature হিসেবে, অর্থাৎ প্রকৃতি। এখানে প্রকৃতি অর্থ Environment নয়, বরং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য বুঝানো হচ্ছে। ইসলামে মানুষের এই প্রকৃতির গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামকে ফিতরাতি ধর্মও বলা হয়ে থাকে, যার মানে হচ্ছে এই ধর্মে কোন আর্টিফিশিয়াল ইনফ্লুয়েন্স নেই, যেগুলো অন্যান্য সকল ধর্মে ঢুকে পড়েছে।

ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য তথা প্রকৃতির সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যশীল। এই ইসলামের আকিদা ও বিধান বুঝতে মানুষের কষ্টও কম হয়। যার ফিতরাত নষ্ট হয়ে যায়নি, সে স্বাভাবিকভাবেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে। আল্লাহর রাসুল ﷺ বলেছেন যে প্রত্যেক মানুষই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তিতে পারিবারিক কিংবা পারিপার্শিক ইনফ্লুয়েন্সের কারণে সে প্যাগান বা মুর্তিপুজারি হয়ে যায় ও শির্ক করে বসে।
এই ফিতরাতের উপর জন্মের কারণ হলো আল্লাহ তা’আলা আমাদের কাছে covenant বা ওয়াদা নিয়েছিলেন পৃথিবীতে আমাদের জন্মের আগে, রুহের জগতে। তিনি পিতা আদম আঃ-এর ভেতর থেকে সকল মানুষের রুহ বের করে তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তাদের রব সম্পর্কে। আমাদের রুহ তখন আল্লাহর সামনেই শাহাদাহ দিয়েছিলাম। এই ঘটনার ইশারা কুরআনেও আছে।
ফিতরাত বা প্রকৃতির কিছু উদাহরণ দেয়া যাক। মানুষের প্রকৃতি হলো সে হবে সামাজিক। স্বাভাবিকভাবেই সে সমাজ সৃষ্টি করবে ও একে অন্যের উপর ডিপেন্ড করবে। সে স্বাভাবিকভাবেই অতি প্রয়োজন ছাড়া কারো ক্ষতি করতে চাইবে না, ভদ্র ব্যবহার করবে। স্বাভাবিকভাবেই সে বয়স্কদের সম্মান করেবে। ভাষা সৃষ্টি করে ভাবের আদান-প্রদান করবে। সে ভাষা হবে অত্যন্ত কমপ্লেক্স, অন্যান্য প্রাণীদের মতো না। অন্যান্য প্রাণীরা শুধু বর্তমানে বাঁচে। কিন্তু মানুষ ভবিষ্যতের জন্য বাঁচবে, সে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করবে। সে অতীত মনে রাখবে, অতীত থেকে শিক্ষা নেবে।
মানুষের প্রকৃতি হলো সে কৃতজ্ঞ থাকতে চায়, প্রশংসা করতে চায়। কেউ তার কোন উপকার করলে সে তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেই। সে যত বড় যালিমই হোক না কেন, উপকারীর প্রতি তার অন্তর এক প্রকার নরম হবে। ধন্যবাদ দিলে মানুষ সবসময়ই ভালো বোধ করবে। ধন্যবাদ পেতেও সে পছন্দ করবে।
মানুষের প্রকৃতি হলো সে জন্মের পরপরই মায়ের দুধ খেতে চাইবে, মায়ের কাছেই নিজেকে সেইফ মনে করবে। মা সামনে থেকে চলে গেলে তাকে যতো খেলনাই দেয়া হোক, যতো কিছুই করা হোক, সে মাকেই চাইবে। মনে রাখবেন,
একটি বাচ্চার কাছে মায়ের দুধ যতোটুকু প্রিয় আর প্রয়োজনীয়, সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করা মানুষের প্রকৃতির কাছে তার চাইতেও বেশী প্রিয়।
এজন্যই খাঁটি প্রকৃতির তথা খাঁটি ফিতরাতি মানুষের কাছে স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ দরকার পড়ে না। সে জানেই যে স্রষ্টা একজন আছেন। সে স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ প্রাকৃতিকভাবেই। সে শুধু জানতে চায় কীভাবে স্রস্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।
এজন্য কুরআন খুললেই আমরা সর্বপ্রথম যা দেখি তা হলো “আলহামদুলিল্লাহ”। পিতা আদম আঃ-এর সর্বপ্রথম উচ্চারণ হলো “আলহামদুলিল্লাহ”। আলহামদুলিল্লাহ মানেই তো হলো সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা একমাত্র আল্লাহরই।
একজন ফিতরাতি মানুষকে তো প্রমাণ দেবার প্রয়োজনই নেই যে আল্লাহ আছেন, সৃষ্টিকর্তা আছেন। তাকে শুধু মনে করিয়ে দেয়া লাগে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও অপার অনুগ্রহ যেন সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে। যখন কাউকে দেখেন তার মা’র প্রতি বেয়াদবি করতে, তখন ওই মহিলা যে তার মা এটা কি তাকে প্রমাণ দেন? না, এই প্রমাণ কোন উন্মাদও দিবে না। তাকে শুধু বারবার বলবেন, “আরে, তিনি তো তোমার মা! কীভাবে বেয়াদবি করলে? তিনি তোমার মা!” এটাই বার বার বলবেন, তাকে মনে করিয়ে দেবেন যে তিনি তার মা। ওকে মাতৃত্বের প্রমাণ দিবেন না। ওকে মনে করিয়ে দিবে, তার প্রতি তার মায়ের কতো ভালোবাসা, কতো অনুগ্রহ ছিল। মা তার জন্য কতো কি করেছেন, কতো আদর করেছেন, কতো কষ্ট সহ্য করেছেন। এসব “মনে করিয়ে” দেবেন।
কুরআন খুলে দেখুন, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে দেখুন, কোথাও কি আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ পেশ করা আছে? না, নেই। কুরআনের পাতায় পাতায়, লাইনে লাইনে শুধু আল্লাহর মহিমা, তাঁর অনুগ্রহ “মনে করিয়ে” দেয়া হয়েছে। ‘তিনিই আল্লাহ’, ‘অতএব তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?’ মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে বার বার করে তাঁর পরিচয়, তিনি কি কি করেছেন, কি কি করেন আর কি কি করবেন।
ভাবুন তো ‘যিকর’শব্দটি কুরআনের কতোবার পড়েছেন? যিকর মানে হলো মনে করা, স্মরণ করা। খোদ কুরআনকেই ‘যিকর’ বলা হয়েছে। আর নির্দেশ দেয়া হয়েছে নবীজি ﷺ-কে “ফাযাক্কির ইন্নামা আনতা মুযাক্কির”, তাদের মনে করিয়ে দিন, আপনি তো মুযাক্কির।
কি স্মরণ করিয়ে দিতে বলা হচ্ছে? কুরআন আমাদের কি মনে করিয়ে দিতে চায়? এটাই যে সবকিছুই আল্লাহর, সবকিছুই আল্লাহ করেন। আমাদের প্রতি সকল অনুগ্রহ তাঁরই। আমাদের প্রকৃতিকেই ডাকছেন আল্লাহ।
কুরআন আমাদের ফিতরাতকেই জাগ্রত করার চেষ্টা করছে। সেই ফিতরাত হলো সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ, সবকিছু তাঁরই অনুগ্রহ, আমাদের সকল কৃতজ্ঞতা তাঁর প্রতিই নিবেদিত। আলহামদুলিল্লাহ।
~ইমাম ইবনে তাইমিয়ার "মুকাদ্দিমা ফি উসুলুত তাফসীর" এর ক্লাস অবলম্বনে

নেতা: ইসলামী রূপ

 সাহাবিদের সঙ্গে নবীজি (সা.)-এর আচরণ

মহান আল্লাহ রাসুল (সা.)-এর মধ্যে আমাদের জন্য রেখেছেন উত্তম আদর্শ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যারা মহানবী (সা.)-এর আদর্শ অনুকরণ করতে পারবে, আল্লাহ ও রাসুলের আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে পারবে, তারাই সফলকাম হবে।
মহানবী (সা.) যেমন একজন শ্রেষ্ঠ নবী ছিলেন, তেমনি তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা। তাই যারা নেতৃত্বের গুণ অর্জন করতে চায়, তাদের জন্যও মহানবীর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তিনি দেখিয়ে গেছেন নেতৃত্বের বলে অন্যের ওপর অহেতুক অত্যাচারের খড়্গ না চালিয়েও ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী নেতা হওয়া যায়।
সাহাবায়ে কেরামের প্রতি রাসুল (সা.) অত্যন্ত সদয় ছিলেন। তাঁর নম্র আচরণে মুগ্ধ হয়েই অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। দুই জাহানের বাদশা হয়েও তিনি এতটাই সাধাসিধে জীবন যাপন করতেন যে যে কেউ খুব সহজে তাঁর কাছে যেতে পারত। তিনি সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আউফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) জিকির অত্যধিক পরিমাণে করতেন এবং অনর্থক কাজ একেবারেই করতেন না; আর নামাজ দীর্ঘ করতেন ও খুতবা সংক্ষেপ করতেন। তিনি বিধবা ও গরিবদের সঙ্গে চলা-ফেরায় সংকোচ বোধ করতেন না; যাতে তিনি তাদের প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন। (নাসায়ি, হাদিস : ১৪১৪)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর গৃহে প্রবেশ করতে কোনো দিন আমাকে বাধা প্রদান করেননি এবং যখনই আমাকে দেখেছেন, মুচকি হাসি দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮২২)
তাঁর সঙ্গে কেউ কথা বলতে গেলে তিনি তাঁকে খুব গুরুত্ব দিতেন। পারস্পরিক আলোচনার সময় অন্যের কথা মনোযোগসহ শুনতেন। অপরজন চেহারা না ফেরানো পর্যন্ত তিনি তার দিক থেকে চেহারা ফেরাতেন না। আর কেউ তাকে কানে কানে কিছু বলতে চাইলে, তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি মাথা সরাতেন না। (সহিহুল জামে : ৪৭৮০)
অথচ আমরা কারো সঙ্গে কথা বলার সময় নিজের দৃঢ় ব্যক্তিত্ব প্রদর্শন করতে গিয়ে তার সঙ্গে এমন আচরণ করে বসি যে অনেক ক্ষেত্রে আগন্তুকের জন্য তা অপমানের পর্যায়ে চলে যায়। ইসলাম এ ধরনের কাজকে পছন্দ করে না।
পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বাধিক প্রভাবশালী নেতা ছিলেন রাসুল (সা.)। তাঁর উপমা তিনি নিজেই। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নেতা হয়েও তিনি তাঁর সঙ্গীদের ছোটখাটো কাজেও আত্মনিয়োগ করতে সংকোচ করতেন না। বারাআ (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) খন্দক যুদ্ধের দিন মাটি বহন করেছিলেন। এমনকি মাটি তাঁর পেট ঢেকে ফেলেছিল অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) তাঁর পেট ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল। (বুখারি, হাদিস : ৪১০৪)
আবার মুসলিম সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে তিনি কখনো কখনো কঠোরও হয়েছেন। মুসলিম বাজারে মানসম্মত খাবার বিক্রয় হচ্ছে কি না তা নজরদারি করতে তিনি নিজেই বাজারে গিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) খাদ্য শস্যের একটি স্তূপের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। তিনি স্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলেন ফলে হাতের আঙুলগুলো ভিজে গেল। তিনি বলেন, হে স্তূপের মালিক, এ কী ব্যাপার? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল, এতে বৃষ্টির পানি লেগেছে। তিনি বলেন, সেগুলো তুমি স্তূপের ওপরে রাখলে না কেন? তাহলে লোকেরা দেখে নিতে পারত। জেনে রাখো, যে ব্যক্তি ধোঁকাবাজি করে, আমার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৫)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) রাসুল (সা.)-এর গৃহকর্মী ছিলেন। তিনি কারি, মুফতি ও মুহাদ্দিস সাহাবি ছিলেন। হিজরতের ১০ বছর আগে মদিনাতে তাঁর জন্ম। তাঁর বয়স যখন ৮-৯ বছর তখন তাঁর মা ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী ও পুত্রকে ছেড়ে সিরিয়া চলে যান এবং সেখানেই কুফরি অবস্থায় মারা যান। স্বামীর ইন্তেকালের পর পুত্র আনাসের লালন-পালনের কথা ভেবে উম্মে সুলাইম কিছুকাল অন্যত্র বিবাহ বসেননি। পরবর্তী সময়ে সাহাবি আবু তালহা আনসারি (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
রাসুল (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন, তখনই আনাস (রা.) রাসুল (সা.)-এর সাক্ষাত করে সাহাবিয়্যাতের মর্যাদা লাভ করেন। তখন তাঁর বয়স ১০ বছর। কিছুদিন পর তাঁর মা তাঁকে হাতে নিয়ে উপস্থিত হলেন রাসুল (সা.)-এর দরবারে। বলেন, আনসারদের নারী-পুরুষ প্রত্যেকেই আপনাকে কিছু না কিছু হাদিয়া দিয়েছে; আমি তো কিছু দিতে পারিনি। আমার আছে এই ছেলে। সে লিখতে জানে। আপনার খেদমতের জন্য একে কবুল করে নিন। সেদিন থেকে আনাস (রা.) রাসুল (সা.)-এর খেদমতে আত্মনিয়োগ করেন এবং রাসুল (সা.)-এর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একটানা ১০ বছর খেদমত আঞ্জাম দেন। (আনসাবুল আশরাফ ১/৫০৬; উসদুল গাবাহ ১/১৫২)
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ১০ বছর ধরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সেবা-যত্ন করেছি। তিনি আমার প্রতি কখনো ‘উহ্’ শব্দটিও উচ্চারণ করেননি (অসন্তোষ প্রকাশ করেননি)। তিনি আমার কোনো কাজে কখনো অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেননি যে এটা তুমি করলে কেন অথবা কোনো কাজ ছুটে যাওয়ার কারণেও তিনি বলেননি যে এটা তুমি কেন করলে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সবচেয়ে উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মানুষ। আমি রেশম এবং পশম মিশিয়ে বানানো কাপড়ও নিজ হাতে ছুয়ে দেখেছি এবং খাঁটি রেশমি কাপড়ও ছুয়েছি; কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতের চেয়ে বেশি নরম ও মসৃণ কোনো কিছু স্পর্শ করিনি। আমি মৃগনাভির গন্ধও গ্রহণ করেছি এবং আতরের গন্ধও গ্রহণ করেছি; কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শরীরের ঘামের চেয়ে বেশি সুগন্ধি কোনো কিছুতে পাইনি। (তিরমিজি, হাদিস : ২০১৫)

জীবনে পরিবর্তন আনো

 রিস্ক নিলে না তো নিজেকে রিস্কের ভেতরে ঠেলে দিলে।

১. স্বপ্ন দেখতে জানলে জীবনের কাঁটাগুলোও ধরা দেয় গোলাপ হয়ে।
-Theodore Zeldin
২. তুমি যদি এখন থেকেই তোমার স্বপ্নগুলো সত্যি করার পেছনে ছুটে না চলো, একদিন তোমাকে কাজ করতে হবে অন্যদের অধীনে- তাদের স্বপ্নগুলো সত্যি করার জন্য। -Anonymous
৩. তোমার স্বপ্ন আর তোমার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে কেবল একটি জিনিস- সেটি হচ্ছে অজুহাত! যে মুহূর্ত থেকে তুমি নিজেকে অজুহাত দেখানো বন্ধ করে কাজ শুরু করবে সে মুহূর্ত থেকে তোমার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকবে না- সেটি বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করবে! -Jordan Belfort
৪. জীবনকে ভালবাসুন। ভালবাসতে ভালবাসুন। ভালবাসায় কিছু উন্মাদনা থাকবেই। কিন্তু সব উন্মাদনায়ই কিছু আন্তরিকতা মিশে থাকে।
-Petrach
৫. দুঃসময়ের অন্ধকার কখনো কখনো আমাদের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটির দ্বার খুলে দেয়।-Anonymous
৬. জীবন মানে নিরন্তর ছুটে চলা.. পদে পদে বাধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতায় রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হওয়া, সে ক্ষত মুছে আবার প্রবল আগ্রাসে ঝাঁপিয়ে পড়া.. সংগ্রাম এবং সাফল্য – এই তো জীবন! -Roy T. Bennett
৭. আমরা অনেকসময় ভুলে যাই একটু আন্তরিকতার ছোঁয়া, একটা প্রাঞ্জল হাসি, কিছু সুন্দর কথা, সুন্দর ব্যবহারের কী অসম্ভব ক্ষমতা রয়েছে একটা মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার! -Anonymous
৮. বাঁচার মতো বাঁচতে জানলে জীবনটা অসম্ভব রোমাঞ্চকর একটি অভিযান, আর একদম ঝুঁকিহীন জীবন সে তো মুরগির খোঁয়াড়ে ধুঁকে ধুঁকে টিকে থাকা। -Anonymous
৯. ঘুমিয়েই কি কেটে যাবে একটি জীবন? জীবন হোক কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর, ছুটে চলার নিরন্তর অনুপ্রেরণা। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কবরের জীবন চিরকাল পড়ে রয়েছেই। -হযরত আলী (রাঃ)
১০. জীবনটা উপভোগ করতে হয় প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে, প্রতিটি ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতি আনন্দে উপলক্ষ্যে। যত বেশি হাসবে, যত কম অভিযোগ করবে, জীবনটা ততোই ভরে উঠবে সুখে, পরিতৃপ্তিতে। -Anonymous
তথ্যসূত্রঃ টেন মিনিট স্কুল ব্লগ/কোরা.কম
নিজ পাঠ

দাম্পত্য প্রেম: ইসলাম যা শিখিয়ে দিতে পারে

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক যেমন হওয়া উচিত?

husband wife relationship
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে (স্ত্রী) সৃষ্টি করেছেন; আর (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। (সুরা নিসা : আয়াত ১)
উল্লেখিত আয়াতে কারিমা থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে স্বামী- স্ত্রীর মাধ্যমেই বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন। আর মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং তাদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্কটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জেন রেখ, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের ওপর অধিকার আছে। আর তোমাদের স্ত্রীদেরও অধিকার আছে তোমাদের ওপর।
পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে অন্য হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের প্রতি কল্যাণকামী হও।’
স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক বা ভালোবাসা কেমন হবে?; দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক কেমন হবে; তার বিবরণ ফুটে ওঠেছে স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পারিবারিক জীবনে। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলা করতেন। একবার তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে ইচ্ছা করে হেরে যান। কিছুদিন পর পুনরায় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হেরে যান।
অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! আজ আমি তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি, তুমি আমার সঙ্গে পারনি। এটা হলো প্রথম প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বদলা।
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় স্ত্রীদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনি ও আন্যান্য আলোচনা করতেন। এমনকি প্রত্যেক স্ত্রীও বিশ্বনবিকে পালাক্রমে নতুন নতুন কিসসা-কাহিনি শুনাতেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নিজেও তাঁদেরকে কিসসা শুনাতেন।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে এমনভাবে হাসতেন, কথা বলতেন ও বসে থাকতেন, আমাদের মনেই হতো না যে তিনি একজন মহান রাসুল।
তিনি কখনো তাঁর স্ত্রীদের ভৎসনা, তিরস্কার করতেন না এবং তাদের সঙ্গে কটাক্ষ ভাষায় কথা বলতেন না। বরং মায়া-মমতায় মন জুড়ানো আকর্ষণীয় কথা বলতেন। তাঁর কথার ভাবভঙ্গিতে স্ত্রীদের মন জুড়িয়ে যেতো।
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের কোনো কথা তাঁর মনের বিপরীত হলে তাদের সে কথা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে অন্য চিন্তা করতেন। তিনি স্ত্রীগণকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের চুমু দিতেন এবং কখনো কখনো তাদের উরুতে মাথা রেখে শুয়ে বিশ্রাম নিতেন।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা পাত্রের যে স্থানে মুখ দিয়ে পানি পান করতেন, বিশ্বনবিও সে স্থানে মুখ দিয়েই পানি পান করতেন।
আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাড়ের যে জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন হজরত আশয়া রাদিয়াল্লাহু আনহাও হাড়ের ঐ জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন।’
এ থেকেও প্রমাণিত হয় যে, বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীদের সঙ্গে কত মধুর সম্পর্ক ছিল।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি মনে মুচকি হাসতে হাসতে গৃহে প্রবেশ করতেন এবং দরদমাখা কণ্ঠে সালাম দিতেন। বিশ্রামের সময় বিছানার ব্যাপারে কোনো দোষ ধরতেন না, এমনকি বিছানা যেভাবে পেতেন তার উপরই শুয়ে পড়তেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম স্বামী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে। আমি আমার স্ত্রীদের সঙ্গে সবার চাইতে ভাল ব্যবহার করি।
বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনের আলোকে বুঝা যায় যে, সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপনে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে বিকল্প নেই। জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ আবশ্যক কর্তব্য।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের প্রত্যেকের দাম্পত্য জীবনকে সুখ ও শান্তিময় করে গড়ে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবনের মতো করেই রাঙিয়ে নেয়া জরুরি।
আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে তাঁর মতো করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন।
-দেশনিউজ২৪

Saturday, January 1, 2022

হতাশা ও আমরা

 Depression ও আমরা

বলা হয় মানুষ আর আল্লাহর মধ্যেকার দুরত্বের নাম Depression.

আমি সালাত আদায় করবো আর আমার মধ্যে Depression থাকবে এমনটা হতে পারেনা।

আমি নবীর অনুসরণ করবো আর আমার মধ্যে Depression থাকবে এমনটা হতে পারেনা।

আমি আল কুরআন পড়বো আর আমার মধ্যে Depression থাকবে এমনটা হতে পারেনা।

ইসলামে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে সেগুলো অনেক প্রশান্তির-সেখানে
Depression-এর কোন নাম নিশানা ছিলনা।

খাদিজা(রা:) খুব ধনী ঘরের মেয়ে ছিলেন। বিলাসিতার মধ্যেই বড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। নবিজী(স:) এর ইসলাম প্রচারের কারণে অন্যান্য গোত্র যখন কুরাইশদের অবরোধ দিল তখন নবীজি আর খাদিজা (রা:) এর গোত্রের শিশুদের আড়াই বছর তীব্র কষ্টে থাকতে হয়েছিলো। এমনকি ক্ষুধার তাড়নায় গাছের পাতা পর্যন্ত খেয়েছিলেন।

হযরত বিলাল (রা) ছিলেন হাবশী ক্রীতদাস। ইসলাম কবুলের অপরাধে তাকে মরুভূমির রোদে ফেলে রাখা হতো, তার গায়ের চর্বি গলে যেতো।তারপরও তার মুখে লেগে থাকতো প্রশান্তি। রোদের তেজ তাঁর কালিমার তেজের কাছে পরাজিত হতো।

ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা তাঁর জীবনে আট বছর জেল খেটেছেন। জেলেই মরেছেন। অথচ তিনি কী বলেছিলেন? বলেছিলেন, দুনিয়াতেও একটা জান্নাত আছে, আমি আমার হৃদয়ে সে জান্নাতের খোঁজ পেয়েছি।

এই ৩টি ঘটনা থেকে কি আমরা বুঝতে সক্ষম হই না যে তাঁরা কি তেজী ঈমানের অধিকারী ছিলেন? সেখানে কি Depression ছিল? ছিল কেবল তেজী ঈমান!! আল্লাহু অকবর।

পার্থিব জিনিস থেকে কি Depression-এ মুক্তি মেলে?

গান শোনা, মুভি দেখা, মোটিভেশনাল বই পড়া বা মানুষের সাথে আড্ডা দিয়েই যদি ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি মিলত তবেঃ

লিনকিন পার্ক ব্যান্ডের গায়ক চেস্টার চার্লস বেনিংটন আত্মহত্যা করলেন কেন? তিনি ছিলেন যৌন নিপীড়নের শিকার!(https://roar.media/)

কিংবা অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত সুইসাইড করলেন কেন? মানসিক অবসাদের ইঙ্গিত? বা অনেকেই মনে করছেন, কিশোর বয়সে হারানো মায়ের শূন্যতা তাঁর জীবনে বড় হয়ে উঠেছিল কি?

মোটিভেশনের ফেরিওয়ালা ডেল কার্নেগি আত্মহত্যা করেছিলেন কেন?

চার্লি চ্যাপলিন । সর্বকালের সেরা কমেডিয়ান। পৃথিবীর নানান প্রান্তের মানুষকে হাসানো মানুষটির বোকা হাসির আড়ালে কী ব্যথা লুকিয়ে ছিলো, কেউ জানলো না। নিজেকে শেষ করে দিলেন।
তাহলে সমাধান কী?

আল্লাহ্ তাআলা, ইসলাম, ঈমান আর ডিপ্রেশন এক অন্তরে একসঙ্গে থাকতে পারে না! যদি আপনার মনে বিন্দুমাত্র ডিপ্রেশন থাকে, তার মানে আপনার হৃদয়ে আল্লাহ্ নাই, ওখানে শয়তান বাসা বেঁধেছে ধরেই নেয়া যায়।

قَالَ وَمَن يَقْنَطُ مِن رَّحْمَةِ رَبِّهِ إِلَّا الضَّالُّونَ
ইবরাহীম বললো, পথভ্রষ্ট লোকেরাই তো তাদের রবের রহমত থেকে নিরাশ হয়৷ -সূরা আল-হিজর, ৫৬
Qaala wa mai yaqnatu mir rahmati Rabbiheee illad daaaloon

ডিপ্রেশনে পড়ে যারা আত্মহত্যা করে, মোটা দাগে দেখা যায় যে, এরা অজ্ঞেয়বাদী, না হয় অবিশ্বাসী। কোনো মুসলিম যদি ডিপ্রেশনের স্বীকার হন, তাহলে আপনার ঈমান নিয়ে ভেবে দেখার সময় এসেছে।

স্ত্রী ভাল নয় এ জন্য Depressed?

হযরত লূত (আ) এর স্ত্রীও ভালো ছিলো না।

হযরত আছিয়া (আ) এর স্বামী ছিলেন ফেরাউন। ফেরাউনকে ঈশ্বর না মানার অপরাধে তাঁকে টুকরো করে কেটে গরম তেলের মধ্যে ডোবানো হয়েছিল।
হযরত আছিয়া (আ) এর হৃদয়ে আল্লাহ ছিলেন। তাই তিনি Depressed হন নি। কেবল এক আল্লাহতেই ভরসা করেছিলেন।

আরও শুনতে চান?
হযরত নুহ (আ) বহু বছর দাওয়াত দিয়ে আশি জনকে দাওয়াত কবুল করাতে পেরেছিলেন। হযরত নুহ (আ) Depressed হন নি। কেবল এক আল্লাহতেই ভরসা করেছিলেন।

আপনজনের কাছ থেকে কষ্ট পেয়েছেন?
ইউসুফ (আ) এর ভাইয়েরা তাকে কুয়ার মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে গেলো। ব্যবসায়ীর বৌ জুলেখার সাথে ব্যভিচার না করায় উল্টো অপবাদ দিয়ে সাত বছরের জেল দেওয়া হলো!!
ইউসুফ (আ) Depressed হন নি। কেবল এক আল্লাহতেই ভরসা করেছিলেন।

আল্লাহ্‌র রহমত হতে তোমরা নিরাশ হয়ো না। কারণ আল্লাহর রহমত হতে কেউই নিরাশ হয় না, কাফির সম্প্রদায় ছাড়া ।’ (সূরা ইউসুফ, ৮৭)

وَلَا تَيْأَسُوا مِن رَّوْحِ اللَّهِ ۖ إِنَّهُ لَا يَيْأَسُ مِن رَّوْحِ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ
wa laa tai'asoo mir rawhil laahi innahoo laa yai'asu mir rawhil laahi illal qawmul kaafiroon

"নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে" (সূরা আল ইন'শিরাহ, ৬)
إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
Inna ma'al 'usri yusra

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি লাভের জন্য মানুষ তথা মুসলমানকে আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস রেখে তার দিকেই ফিরে আসতে হবে।
তাহলেই Depression থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডিপ্রেশনের একমাত্র চিকিৎসা হলো আল্লাহর দিকে ফেরত আসা।
জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই অন্তরের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়। [সূরা আর রাদ:২৮]

যে অন্তরে রাহমানুর রাহীমের ভালোবাসা থাকে, যে হৃদয়ে আল্লাহ্ থাকেন, সে হৃদয়ে ডিপ্রেশন থাকতে পারে না। কোনোভাবেই না।

Source: আল কুরআন/নয়া দিগন্ত/কোরা.কম এবং আরো