Friday, December 30, 2022

কতটুকু নুন খাবেন?

 খাবার লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। সোডিয়াম শরীরের জন্য জরুরি এক উপাদান। শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে, স্নায়ু ও পেশির স্বাভাবিক কাজ চলমান রাখতে সোডিয়াম চাই ঠিকঠাক। তবে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম দেহের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্‌রোগ, কিডনির রোগ, পাকস্থলীর ক্যানসার এবং হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিদিন ঠিক কতটা লবণ গ্রহণ করা উচিত, তার হিসাবটা জানা থাকা প্রয়োজন।

প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ২ হাজার ৩০০ মিলিগ্রামের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। এক চা–চামচ লবণে থাকে ২ হাজার ৩২৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। অর্থাৎ রোজ লবণ খেতে পারবেন এক চা–চামচেরও কিছুটা কম পরিমাণে। রান্না করা খাবারে থাকা স্বাভাবিক মাত্রার লবণ দিয়েই রোজকার সোডিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এর থেকে বেশি লবণ গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। তাই যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:
পাতে বাড়তি লবণ নেবেন না। খাবার টেবিলে লবণের পাত্রও রাখবেন না। রান্নায় অতিরিক্ত লবণ দেবেন না।
লবণ খাবারের স্বাদ বাড়ায়। ফলমূল, সালাদ প্রভৃতি আমরা অনেক সময়ই লবণ দিয়ে খাই। এমন অভ্যাস পরিত্যাজ্য। বরং খাবারকে সুস্বাদু করে তুলতে নানা রকম মসলা, লেবু বা অন্যান্য টক ফলের রস, টাটকা বা শুকনা তৃণ (যেমন ধনেপাতা) প্রভৃতি ব্যবহার করতে পারেন।
রান্নার অনেক পদেই (স্যুপ, স্ট্যু, এমনকি মূল খাবারেও) চাইলে লবণের মাত্রা একটু কমিয়ে দেওয়া যায় (স্বাদ বাড়ানোর বিকল্প পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়)। রেস্তোরাঁয় খেতে গেলেও ফরমাশ দিতে পারেন, যাতে খাবারে লবণের মাত্রা কম রাখা হয়।
সস বা কেচাপ, সয়া সস, পনির, মেয়োনিজ, চিপস, চানাচুর, কাসুন্দি, শর্ষে—সব কটিতেই সোডিয়াম ভরপুর। তাই এগুলো কম খাওয়াই ভালো। ইনস্ট্যান্ট নুডলস, সল্টেড বাটার বা লবণসমৃদ্ধ মাখন, নোনতা বিস্কুট, খোলসযুক্ত মাছ বা প্রাণী, শুঁটকি এবং লবণ দিয়ে সংরক্ষিত অন্যান্য খাবারও (যেমন টিনজাত খাবার) এড়িয়ে চলা উচিত। হট ডগ, সসেজ প্রভৃতিতেও লবণের মাত্রা তুলনামূলক বেশি।
খাদ্য বা খাদ্য উপকরণ কেনার সময় প্যাকেটে লেখা সোডিয়ামের মাত্রা দেখে নিন (এমনকি পাউরুটিতেও)। তাহলে হিসাব করে সোডিয়াম গ্রহণ সম্ভব হবে। বেকিং পাউডার ও বেকিং সোডায় কিন্তু লবণ থাকে। তাই এগুলো দিয়ে তৈরি খাবারও হিসাব করে খেতে হবে। সোডিয়াম নানা রাসায়নিক নামে থাকতে পারে (যেমন মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট)। প্রতি প্যাকেটে কতটি পরিবেশন (সারভিং) হবে, সেটিও লেখা থাকে। প্রতি পরিবেশনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম থাকলে তা একেবারে না কেনাই ভালো।
কেউ কেউ একটু নোনা স্বাদ না হলে খাবার খেতে পারেন না। এমন ব্যক্তি খুব অল্প অল্প করে খাবারে লবণের মাত্রা কমিয়ে আনার অভ্যাস করতে পারেন।
সূত্র: প্র স্বাস্থ্য

মরিচ যখন লড়াইয়ের হাতিয়ার

 প্রাণিজগতের ওপর মানুষের আধিপত্যের অনেক কারণের একটি হলো হাতিয়ার তৈরির ক্ষমতা। যেদিন মানুষ হাতিয়ার আবিষ্কার করেছে, সেদিন থেকেই সে হাতির চেয়ে শক্তিধর ও চিতার চেয়ে গতিশীল। যদিও এ শক্তি ও গতিকে কেবল নিজের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করেনি মানুষ, করেছে শত্রুকে ঘায়েল করতেও। বস্তুত কাউকে আঘাত করা যায়, এমন যেকোনো কিছুই মানব ইতিহাসে ব্যবহূত হয়েছে অস্ত্র হিসেবে। ফলে খাবার টেবিলের উপাদেয় মরিচটারও টেবিল ছেড়ে যুদ্ধের মাঠে যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।

১৪৯৪ সাল। আমেরিকার স্থানীয় তাইনো জনগণের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে উপনিবেশ বিস্তারকারী দেশ স্পেন। প্রথম দিকে সাদাসিধা বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও ক্রমে তা নেতিবাচক দিকে মোড় নিতে থাকে। নিজেদের অযোগ্যতায় সৃষ্টি হওয়া সংকটের সমাধানে তারা হামলে পড়ে তাইনো জনগোষ্ঠীর গুদামগুলোয়। শান্ত মানুষ হিসেবে পরিচিত তাইনো জনগণ। এমনকি কলম্বাসও তাদের সততা ও দয়ার্দ্রতার প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি নিজের ডায়েরিতে। কিন্তু যুদ্ধ তো যুদ্ধই। স্প্যানিশদের ইস্পাতের তরবারির সঙ্গে টক্কর দেয়ার মতো কোনো অস্ত্র নেই তাইনোদের। তাই বলে কি দখলদারের হাতে ছেড়ে দেবে পরিস্থিতি? তারা দেখাল নতুন অস্ত্রের সন্ধান, এর আগে যার সঙ্গে পরিচিত নয় স্প্যানিশ শিবির। লাউয়ের খোলসের ভেতর ছাইয়ের সঙ্গে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে ছড়িয়ে দেয়া হলো বাতাসে। পরিণামে যেটা প্রত্যাশিত, সেটাই ঘটেছে। মরিচের সে গুঁড়া গিয়ে লাগল স্প্যানিশ সৈন্যদের চোখ ও ঠোঁটে। কেউ অন্ধ হয়ে গেল, কেউ পড়ে থাকল নিশ্বাস বন্ধ হয়ে। হঠাৎ হতভম্ব হয়ে যাওয়া বাকি সেনাদের জন্য তখন এগিয়ে এসেছে তাইনো আক্রমণকারী। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে না পারলেও মরিচই তৈরি করেছিল ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের দেয়াল। লাউয়ের খোলসের মধ্যে পানি ও মরিচ দিয়ে বোমা বানানোর কৌশল আদি আমেরিকার অন্যান্য সংস্কৃতিতেও দেখা যায়। সে বোমা শত্রুশিবিরে নিক্ষেপ করত অ্যাজটেক ও মায়া সভ্যতার যোদ্ধারা। পানির মধ্যে মরিচ সক্রিয় হয়ে উঠত। সে সক্রিয় উপাদানের মিশেলে তৈরি হওয়া বোমা নিক্ষেপ করার সঙ্গে সঙ্গে ঘটত বিস্ফোরণ। নির্গত হতো ক্ষতিকর গ্যাস। শত্রু শিবির সামনে এগিয়ে আসবে কী! নিশ্বাস নিতে না পেরেই কাবু হয়ে যেত মুহূর্তের মধ্যে। তবে যেখানে এভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চর্চা ছিল না, তারাও পিছিয়ে থাকেনি। সে সংস্কৃতিতে চর্চিত হয়েছে অন্য ঐতিহ্য। মরিচ পুড়িয়ে তার ধোঁয়া প্রবাহ করে কাবু করা হয়েছে শত্রুপক্ষকে। ঔপনিবেশিক পর্তুগিজরা ব্রাজিল ও পেরুতে অভিযান চালানোর সময় এ অদ্ভুত যুদ্ধনীতির সাক্ষী হয়। বিশেষ করে পেরুতে থাকা ইনকা জনগণের মধ্যে মরিচের এ ব্যবহারে মুনশিয়ানা ছিল।
রণাঙ্গনে প্রথম কখন মরিচ নেমেছিল, লিখিত ইতিহাসে তার নিশানা নেই। ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের সময় আদি আমেরিকানরা দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছে মরিচ। ফলে এ কথা দাবি করলে মোটেও ভুল হবে না, ইউরোপীয়রা প্রবেশেরও বহু আগে থেকেই মরিচের সামরিক ব্যবহার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল স্থানীয় জনগণের মাঝে। ১৪৫০-এর দশকেই অ্যাজটেক সাম্রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। বিদ্রোহ করে মূলত কুয়েত লাক্সমান শহরের কয়েকজন গোত্রপতি ও মানুষ। স্থানীয় গভর্নরকে হত্যা করে ফেলে তারা। যথারীতি খাজনার সময় সম্রাট মন্তেজুমার (১৩৯৮-১৪৬৯ খ্রিস্টাব্দ) দরবার থেকে দূত আসে। চুপ করে তাদের আপ্যায়ন করলেন গোত্রপতিরা, যেন কিছুই ঘটেনি এখানে। অঘটন ঘটল রাতে। স্থানীয় গোত্রপতিরা প্রথমে একত্র হলেন। তারপর যে কক্ষগুলোয় খাজনা আদায়কারী দূতেরা ঘুমে বিভোর, সে কক্ষগুলোর বাতাস চলাচল বন্ধ করার ব্যবস্থা করলেন। খুব সাবধানে আগুন দিলেন মরিচের স্তূপে। মরিচপোড়া ধোঁয়া প্রবেশ করল কক্ষে। ঘুমন্ত দূতেরা খুব দ্রুতই ঘুমিয়ে পড়ে চিরতরে। জানা ইতিহাসে প্রথম গ্যাস চেম্বারের উদাহরণ হিসেবে এ মরিচের ব্যবহারকে সামনে আনা যেতে পারে। অবশ্য ছোটখাটো শাস্তিদানের ক্ষেত্রেও মরিচ ছিল প্রশংসনীয় ওষুধ। অবাধ্য সন্তানকে শাস্তি দেয়ার জন্য মরিচের ব্যবহারের বিধান অ্যাজটেক আইন সংহিতা কোডেক্স মেন্দোজায় লিখা রয়েছে। এগারো বছর বয়সের মধ্যে অ্যাজটেক ছেলে ও মেয়েকে কঠোরভাবে নিয়মানুবর্তী হতে হতো। সমসাময়িক স্প্যানিশ লেখকেরা সে চিত্র তুলে ধরেছেন নিজেদের লেখায়। সেখানে পিতা-মাতার সঙ্গে অবাধ্য আচরণ করা সন্তানকে শুকনো মরিচের ধোঁয়া দিয়ে শাস্তি দেয়া হতো। পিতা তার উলঙ্গ পুত্রকে আগুনে পুড়তে থাকা মরিচের ওপর ধোঁয়ার মধ্যে ধরে রাখতেন। মরিচপোড়া ধোঁয়ায় নিশ্বাস নেয়ানোকে গণ্য করা হতো নিষ্ঠুর শাস্তি হিসেবে। ফলে এ শাস্তি কয়েক সেকেন্ডের বেশি হতো না। মেয়েদের জন্য মাত্রাটা ছিল আরো কম। বহু বছর পরেও স্থানীয় আমেরিকানদের মধ্যে জারি ছিল মরিচ ব্যবহারের এ চর্চা। উনিশ শতক পর্যন্ত কয়েক শতাব্দী ধরে চলমান আমেরিকান ইন্ডিয়ান যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে নিয়মিত ব্যবহূত হয়েছে মরিচ। ১৮৮০-এর দশকে স্থানীয় অ্যাপাচি নারী ও শিশুদের উদ্ধার করার জন্য মেক্সিকোর খনিজীবীদের বিরুদ্ধে মরিচ নির্মিত বোমা ছোড়ে যোদ্ধারা। সেখানে মরিচের পাশাপাশি ব্যবহার হয়েছে জ্বলন্ত কাঠ ও পাইনের রস।
বিশ শতক থেকে মানুষ বোমা ও বারুদের ব্যবহারে অসম্ভব আধিপত্য দেখিয়েছে। কেবল তৈরির ক্ষেত্রে না, সে আধিপত্য ছড়িয়ে থেকেছে ব্যবহারের ক্ষেত্রে। খুব অল্প সময়ে কয়েকশ গুণ বেশি আতঙ্ক ছড়াতে সক্ষম এসব বোমা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্ব দেখেছে মানুষের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা। শিল্পোন্নত দেশগুলো পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। প্রতিযোগিতা এতটাই ভয়াবহ রূপ নিল যে পরস্পরের সঙ্গে নানা রকম যুদ্ধবিরোধী চুক্তিতে আসতে হয়েছে দেশগুলোর। তার পরও অস্ত্রের ঝনঝনানি কমেনি। অস্ত্র তৈরি করে মজুদ করা হচ্ছে যথা সময়ে ব্যবহার করার জন্য। সেখানে ভারী মারণাস্ত্রের পাশাপাশি কম মাত্রার অস্ত্রও জায়গা পেয়েছে। ভারী অস্ত্রগুলো যুদ্ধের মাঠে শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবহূত হলেও সমাবেশ ও বিক্ষোভ দমনে ভূমিকা রাখে গবেষণাগারে উৎপাদিত কম মাত্রার রাসায়নিক অস্ত্র। ‘লেস-দ্যান-লিথাল’ বা ‘নন-লিথাল উইপন’ নামে পরিচিত অস্ত্রগুলো প্রস্তুত করা হয় বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিজ্জ উপাদান ঘনীভূত করে। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে থাকে মরিচ। তবে অস্ত্র হিসেবে মরিচের ব্যবহার ভিন্ন মাত্রা পায় ১৯২০-এর দশকে। প্রতিপক্ষকে পর্যুদস্ত করতে এ সময় আমেরিকান আর্মির ‘অ্যাজউড আর্সেনাল ফ্যাসিলিটি’ শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এ ধরনের অস্ত্রকে। তাকে ছাড়িয়ে যায় ১৯২৮ সালে ব্রিটিশ গবেষণায় প্রস্তুতকৃত সিএস গ্যাস। টিয়ার গ্যাস বা কাঁদানে গ্যাস হিসেবে জনপ্রিয় হতে থাকে ব্যবহার। সেখানে যথারীতি কাঁচামাল হিসেবে জায়গা দখল করেছিল মরিচ। পরবর্তী কয়েক দশকজুড়ে সিএস গ্যাসে জয়জয়কার ছিল বিভিন্ন দেশে। ১৯৭০-সালের পর কাঁচামরিচ থেকে ওলেওরেসিন ক্যাপসিকাম (ওসি) প্রস্তুতির পর কিছুটা পরিবর্তন আসে। জনগণের বিশৃঙ্খলা প্রশমনে সিএস গ্যাসের বদলে পুলিশ ‘ওসি’ ব্যবহার করতে থাকে তখন থেকে। তাদের ব্যবহূত স্প্রেতে ১৫ শতাংশ কাঁচামরিচ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপাদান থাকে। বাজারে বিক্রির জন্য যেসব গ্যাস উৎপাদিত হয়, তাতে অবশ্য ১ শতাংশের বেশি থাকে না। নাক, চোখ, ফুসফুস এমনকি ত্বকের ওপরও এ গ্যাসের সরাসরি প্রভাব রয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় লাগতে পারে ৪৫ মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত। বিভিন্ন দেশে মরিচ থেকে তৈরি স্প্রে বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে নব্বইয়ের দশকে। সবার জন্য ব্যবহারে বিধিনিষেধ থাকলেও ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে দুই পক্ষের সংঘাতে এ স্প্রে দৃশ্যমান হয়। ব্যক্তিগতভাবে একদিকে হয়রানিকারীদের বিরুদ্ধে নারীরা ব্যবহার করে। অন্যদিকে লোকালয়ে দুষ্ট কুকুর কিংবা বনে চলাচলের সময় হিংস্র প্রাণীর বিরুদ্ধেও ব্যবহূত হয় প্রায়ই। ১৯৯৭ সালের ‘কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন’-এ এমন অস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যা-ই হোক, ২০১০ সালে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন মরিচ থেকে নতুন এক ধরনের গ্রেনেড তৈরির ঘোষণা দেয়। সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহী দমনে গ্রেনেডটি কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। তৈরি হওয়া বিপুল ধোঁয়া নব্বই মিটার দূর পর্যন্ত কার্যকর থাকতে সক্ষম। এরই মধ্যে এটি কাশ্মীরে আজাদি আন্দোলনকারীদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও এ গ্রেনেড ব্যবহার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
মরিচের সঙ্গে মানুষের দীর্ঘ সম্পর্ক খাবারের টেবিলে। তবে সেটা কেবল একটা দিক। অন্য দিকটা মোটেও সুখকর না। মরিচ সেখানে জড়িত সংঘাত আর রক্তের ইতিহাসে। হয়তো মানুষের ইতিহাসই এমন।
সূত্র: আহমেদ দীন রুমি
বণিক বার্তা

শীতে পায়ের দুর্গন্ধ রোধে করণীয়

 শীতের সময় মোজা দিয়ে জুতা পরায় অনেকের পায়েই দুর্গন্ধ হয়। সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে পা ঘামার কারণে তা জুতা ও মোজায় আটকে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। শীতে পা ঘামার বড় কারণ পা ঢাকা জুতা পরা। তবে শুধু ঘামের জন্যই যে দুর্গন্ধ হয়, তা নয়। পায়ে দুর্গন্ধ হওয়াকে বলা হয় ব্রোমোডোসিস।

কারণ
পায়ের পাতায় ঘর্মগ্রন্থি বেশি থাকে। তা ছাড়া অনেকের হাইপারহাইড্রোসিসের সমস্যা থাকে। বংশগত কারণ বা হরমোনজনিত পরিবর্তনেও বেশি ঘাম হতে পারে।
পায়ে দুর্গন্ধের জন্য নানা রকম জীবাণুও দায়ী। যেমন কিটোকক্কাস সেডেনটেরিয়াস নামের ব্যাকটেরিয়া ঘামের মধ্যে সালফিউরিক যৌগ তৈরি করে। এতে পচা ডিমের মতো গন্ধ বের হতে পারে।
সিনথেটিক মোজায় দুর্গন্ধ বাড়ে। কারণ, এতে বাতাস চলাচল করতে পারে না। ঘাম শোষণেও অকার্যকর। কৃত্রিম চামড়ার জুতা পরলে দুর্গন্ধ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
করণীয়
পা ও জুতা–মোজা শুকনা রাখতে চেষ্টা করবেন। এতে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণ কমবে।
অ্যালকোহল ওয়াইপস দিয়ে পা পরিষ্কার করুন। সিনথেটিক ও প্লাস্টিকের জুতা এড়িয়ে চলবেন। কৃত্রিম সুতার মোজাও এড়িয়ে চলুন।
রাতে শোয়ার আগে গরম পানিতে অল্প মধু আর গোলাপজল মিশিয়ে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে পায়ে রক্তসঞ্চালন ভালো হবে, ব্যাকটেরিয়া থেকে রেহাই পাবেন।
এপসম সল্ট মেশানো গরম পানিতে পা চুবিয়ে রাখতে পারেন ২০ মিনিট।
জুতার মধ্যে সামান্য বেকিং সোডা মাখিয়ে রাখুন। পরদিন জুতার ওই অংশ ভালো করে মুছে পরিষ্কার করে জুতা পরুন। তবে চামড়ার জুতায় বেকিং সোডা ব্যবহার করা যাবে না।
কেডস ও স্নিকার্সে মাঝেমধ্যে সামান্য লবণ ছিটিয়ে দিন। এক টুকরা কাপড় বা তুলা লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতার মধ্যে রেখে দিন।
ফুটন্ত পানিতে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন দুই মিনিট। টি ব্যাগ ঠান্ডা হলে জুতার মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর ওই টি ব্যাগ সরিয়ে জুতার ভেতরের অংশ ভালো করে মুছে নিন। গন্ধ থাকবে না।
সূত্রঃ ডা. জাহেদ পারভেজ

সয়া বড়ি

 ১. সয়া বড়ির প্রোটিন মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্সকে সতেজ রাখে, তার কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সহজে ক্লান্তি আসে না।

২. সয়া বড়িতে প্রচুর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে। হার্ট ও লিভারকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে এই খাবার। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে সয়া বড়ি।
৩. সয়া বড়িতে থাকা লেসিথিন মস্তিষ্ক গঠনের অন্যতম উপাদান। তাই সয়াবিন খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা তো বৃদ্ধি পায়ই সঙ্গে হাইপোথ্যালামাসকে সক্রিয় রাখে।
৪.সয়া বড়ির অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
৫.সয়া বড়ি বিভিন্ন ধরনের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে, যা অনিদ্রাজনিত অসুখ দূর করে সহজেই।
6. মেয়েদের ডায়েটে সয়া বড়ি রাখা অত্যন্ত কার্যকর। কারণ সয়াবিনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
৭. সয়া বড়িতে অদ্রবণীয় ফ্যাট থাকায় তা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৮. যাদের শরীরে রক্ত কম, তারাও ডায়েট চার্টে রাখুন সয়া বড়ি । সয়াবিন রক্ত পরিশুদ্ধ করতেও কার্যকর।
সূত্র: আনন্দবাজার

বার্নিং ফিট সিনড্রোম

 ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম খুব অপরিচিত কোনো সমস্যা নয়। যাদের ডায়াবেটিস আছে কিংবা অনেক ধুমপান করেন তাদের পায়ে জ্বালাপোড়া হয়। একেই বলা হয় ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম। ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম অনেক কারণে হতে পারে। এমনকি এথলেটদেরও পায়ে ফাঙ্গাস হলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে সচরাচর ডায়বেটিস আক্রান্তরাই এই সমস্যায় বেশি ভোগেন।

ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম আছে যাদের তারা এর প্রতিকারে কি করতে পারেন?
ঠাণ্ডা পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন
বরফ ঠাণ্ডা পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলে পায়ের জ্বলুনি কমে অনেকাংশে। তবে যাদের এরিথ্রোমেলালজিয়া(Erythromelalgia)* ধরণের সমস্যা আছে তারা এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই। কারণ এতে ত্বকের ক্ষতি হয়।
*Erythromelalgia is a rare condition that causes episodes of burning pain and redness in the feet, and sometimes the hands, arms, legs, ears and face. Symptoms of erythromelalgia can begin at any age.
আপেল সিডার ভিনেগার
সচরাচর আপেল সিডার ভিনেগার ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। যাদের পায়ে ফাঙ্গাস বা বিভিন্ন ইনফেকশন হয়েছে তারা গরম পানিতে এপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি না থাকলেও কার্যকরী বলে মন্তব্য করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা।
হলুদের সাপ্লিমেন্ট
হলুদে কারকুমিন নামক উপাদান পাওয়া যায়। এটি প্রদাহজনিত সমসয়া দূর করে। হলুদের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারে সহজেই বার্নিং ফিট সিনড্রোমের প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
মাছের তেল
মাছের তেলেও প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করার ক্ষমতা আছে। বিশেষত দেহে ব্যথা কিংবা বেদনানাশে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও মাছের তেল ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি দূরেও কার্যকর।
আদা
যেকোনো প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে আদার জুড়ি নেই। বাজারে আদার তেল পাওয়া যায়। দাম বেশি হলেও তা পায়ে ম্যাসাজ করলে আরাম পাবেন।
ম্যাসাজ করুন
বার্নিং ফিট সিনড্রোমে তাৎক্ষণিক সমাধান না মিললে মাসাজ করুন। এতে পায়ের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং আরাম পাবেন।
-ittefaq