শুনবেন এর জন্যই যে, আপনার ব্রেইনটি একটি অসীম
ক্ষমতাসম্পন্ন রেকর্ডার বা রিসিভার। যত শুনবেন তত আপনি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবেন।
মেগাবাইট, গিগাবাইট নয়, টেরাবাইটের বহু বেশি আপনার ব্রেইনের ক্ষমতা। আর এর জন্যই
সৃষ্টিকর্তা মানুষকে রিসিভিং, হিয়ারিং এবং আন্ডারস্ট্যান্ডিং ক্ষমতা বহুগুণ বেশি
দিয়েছেন। অর্থাত মানুষকে ইনফরমেশন থ্রো করার চেয়ে ইনফরমেশন গ্রহণ করার যন্ত্র বহু
গুণ বেশি দিয়েছেন। যেমন মানুষের কান দুটি তথ্য গ্রহণের জন্য, চোখ দুটি তথ্য
গ্রহণের জন্য, নাকের ছিদ্র দুটি ঘ্রাণের তথ্যের জন্য, মোট হলো ছয়টি। একটি মুখের
দুটি কাজ যাকে আধা আধা ভাগ করুন তথ্য প্রকাশের জন্য মুখ (০.৫) অন্যদিকে জিহ্বা
দিয়ে স্বাদ গ্রহণের জন্য (০.৫)। সুতরাং তথ্য গ্রহণ ও প্রকাশের জন্য অনুপাত
দাঁড়াচ্ছে (৬.৫:০.৫) এটিকে ২ দিয়ে গুণ করে একক করলে ১৩:০১ হয়। সুতরাং সৃষ্টিকর্তা
বা আহসানুল খালিক্কীন মানুষকে এমনভাবে তৈরি করেছেন যে, মানুষ ১৩টি কথা শুনবে এবং
একটি কথা বলবে সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু আমরা করি তার উল্টো। ১৩টা কথা বলছি এবং ১টি
কথা শুনছি। অনেকে আছেন যারা ১৪টা কথাই বলছেন কিন্তু একটিও শুনছেন না। তবে এটা সত্য
যে, কথা শোনা খুব কঠিন কাজ। আপনি ইচ্ছা করলেই সেটা পারবেন না। যদি পারতেন তবে পৃথিবীর
সফল, জনপ্রিয় এবং সেরা ব্যক্তিদের কাছাকাছি আপনি পৌঁছে যেতেন। সফল জনপ্রিয়
ব্যক্তিরা শোনার ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন। এটি একটি সাধনা, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এবং গভীর
ধৈর্যের বিষয়। কারো কথা শোনা মানে কি? অন্যের কথা শোনা মানে হলো অন্যকে দাম দেয়া,
গুরুত্ব দেয়া, মর্যাদা দেয়া, সম্মান দেখানো। ঠিক তেমনই অন্যের কথা না শোনা মানে
তাকে গুরুত্ব না দেয়া, মর্যাদা ও সম্মান না দেখানো, পাত্তা না দেয়া বা মূর্খ মনে
করা।
আমরা সবাই বলছি
বেশি, শুনছি কম। অথচ
বলার চেয়ে শোনার
মধ্য দিয়ে সমস্যা
সমাধানে অতুলনীয় ক্ষমতার অধিকারী হওয়া
যায়।
ভালো শ্রোতা সহজেই
অন্যের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি
করতে পারেন, ধৈর্যশীল ও
পছন্দের মানুষে পরিণত
হন।
নীচের বিষয়গুলো খেয়াল করুনঃ
১. কথা হোক চোখে
চোখে:
মনোযোগের প্রধান বাহক
হচ্ছে চোখ। চোখ
দেখে একজন মানুষের প্রায়
সবকিছুই আন্দাজ করা
যায়। শ্রোতার কথা
মনোযোগ দিয়ে শুনছেন
কিনা, তাও আপনার
চোখ দেখেই বোঝা
যাবে। সুতরাং বক্তার
চোখে চোখ রেখে
কথা শুনুন।
২. কথা শেষ হতে
দিন:
বক্তা যখন কথা
বলেন, তার মাঝখানে হঠাত
থামিয়ে দিয়ে কিছু
বলবেন না। বলার
আগে তার বক্তব্য শেষ
হতে দিন।
৩. বক্তার স্বাচ্ছন্দ্য:
বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগ্রহ
প্রকাশ করতে গিয়ে
অতিরিক্ত কথা বলা
ঠিক নয়। বক্তার
স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করাই
ভালো শ্রোতার কর্তব্য।
৪. মুখোমুখি:
কথা শোনার সময়
এমনভাবে বসা উচিত,
যাতে বক্তার চেহারা
ঠিকমতো দেখা যায়।
আর বক্তাও যেন
শ্রোতার চেহারা দেখতে
পান।
৫. হাওয়া দিন:
আলাপ চলাকালে মাঝে
মধ্যে ছোট ছোট
প্রাসঙ্গিক শব্দ উচ্চারণ করে
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করুন।
অনেকটা পালে হাওয়া
দেয়ার মতো। যেমন
‘তাই নাকি?’, ‘বলেন
কি!’ ইত্যাদি। এতে
শ্রোতার মনোযোগ বুঝতে
পারেন বক্তা।
৬. ভালো স্মরণশক্তি:
একজন ভালো শ্রোতা
ভালো স্মরণশক্তির অধিকারীও হন।
বক্তা মাঝে মধ্যেই
কথা বলতে গিয়ে
কী প্রসঙ্গে আলোচনা
করতে চাইছিলেন, তা
ভুলে যান। তখন
শ্রোতাকে মনে করিয়ে
দিতে হয়। তাছাড়া
আলোচনা শেষ হওয়ার
পরও নানা কারণে
কী বিষয়ে কী
আলোচনা হলো, তা
পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন পড়ে।
৭. যখন ভালো না
লাগে:
যদি এমন হয়
যে, বক্তার কথা
শুনতে ভালো লাগছে
না; না শুনেও
উপায় নেই। এটাও
প্রমাণ করতে হবে
যে, আপনি মনোযোগ
দিয়ে শুনছেন না,
তাহলে প্রথমত এমনভাবে বসুন,
যাতে আপনার মুখে
সরাসরি আলো না
পড়ে। তখন কাজ
হবে তার চোখে
চোখ রেখে মাঝে
মধ্যে বিরস চাহনি
করা।
শেষমেষ বলা যায় যে আমাদের কান ২টি আর মুথ ১টি। তাই ২ কানে
শোনার গুরত্ব ১টি মুখে বলার চেয়ে ঢের বেশী। এটা আমরা এখন থেকেই প্রাকটিস শুরু করি
আর ভাল মানুষের কাতারে আমাদের জায়গা করে নিই।
Listening skills are an important part of effective
communication. Hearing is the physical ability, while listening is
a skill. Listening skills allow
one to make sense of and understand what another person is saying.
সূত্র: একাধিক
No comments:
Post a Comment