Saturday, March 2, 2019

জ্ঞান অর্জন


'জ্ঞান প্রতিটি মানুষের হারানো সম্পদ। তাকে যেখানে পাও সেখান থেকেই কুড়িয়ে নাও।' 'জ্ঞান প্রতিটি মানুষের হারানো সম্পদ। তাকে যেখানে পাও সেখান থেকেই কুড়িয়ে নাও।'
পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম বাণীই হলো_ 'পড়'। আর এ পড়ার আদেশ বাস্তবায়ন করতেই মানবতার মুক্তিদূত বিশ্বনবী (সা.) গড়ে তুলেছেন একটি সুশিক্ষিত জাতি। যে জাতির জীবনকালকে আজো মানুষ অকপটে সোনালি যুগ বলে স্বীকৃত দিতে বাধ্য হচ্ছে।
বিশ্ব মানবতার মুক্তিদূত মহানবী (সা.) নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনে জীবনের চরম শত্রুকেও শিক্ষকের মর্যাদায় সমাসীন করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেননি। বদরের যুদ্ধে কাফেরদের ৭০ নেতা মুসলমানদের হাতে বন্দি হয়। রসুল (সা.) তাদের এই শর্তে মুক্ত করে দেন যে, তাদের প্রত্যেকেই দশজন করে নিরক্ষর মুসলমানকে অক্ষরজ্ঞান দান করবে।
বিশুদ্ধ ভাষা শেখার জন্য জ্ঞান অর্জন তথা জ্ঞানী হওয়ার বিকল্প নেই।
বিশ্ব সভ্যতার নির্মাতা রসুল (সা.) জ্ঞান অর্জনকে প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ ঘোষণা করেন। হাদিস শরিফে এসেছে, জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রতিটি মুসলমানের ওপর ফরজ।
বিশ্বনবী (সা.)-এর আনিত শিক্ষাদর্শন গ্রহণ করার গুরুত্বারোপ করে মহান আল্লাহ কোরআনে কারিমে ঘোষণা করেন : বলুন, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান? (সূরা জুমার ৩৯)
এ কথা অকপটে বলা যায় যে, জ্ঞানীর মর্যাদা সর্বোচ্চে। জ্ঞানীর মর্যাদা সম্পর্কেই বলা হয়েছে যে, 'বিদ্বানের কলমের কালি শহীদের রক্ত অপেক্ষা শ্রেয়।' শিক্ষিত দেশ ও জাতি গঠনে মহানবী (সা.) যেমন গুরুত্বারোপ করেছেন, অন্য কোনো বিজ্ঞ কিংবা প্রাজ্ঞ এমনকি অন্য কোনো নবীও স্বজাতিকে শিক্ষিত করতে তেমন গুরুত্বারোপ করে যাননি।
জ্ঞান মানুষের পরম বন্ধু। একজন ভালো বন্ধু যেমন মানুষের জীবনের নানা বাঁকে তার যে কোনো সমস্যায় সাহায্যের হাত নিয়ে সামনে দাঁড়ায়, তেমনি জ্ঞানও মানুষের সুখ-দুঃখে করণীয় নির্ধারণে সাহায্য করে। শুধু সাহায্যই নয়, তাকে তার অজান্তেই জীবনসমস্যার সমাধান বাতলে দেয়, উত্তরণের পথ দেখায়, নবচেতনায় উজ্জীবিত করে; পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে তার চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ করে।
একদা খলিফা হারুনুর রশিদ অশ্বারোহণ করে কোথাও যাচ্ছিলেন। পথে সেই যুগের প্রখ্যাত ভাষাবিদ আবুল হাসান আলী বিন হামজা আল কেসায়ীকে দেখতে পেলেন। তাকে দেখামাত্রই বাহন থেকে নেমে এসে বিনয়ের সঙ্গে মোসাফাহা করে নিবেদন করলেন, 'জনাব! আপনি তো কখনো আমার দরবারে আসেন না।' জবাবে পন্ডিতপ্রবর বললেন, 'পড়াশোনা করে আর সময় করে উঠতে পারি না'। খলিফা বললেন, 'এত বইপুস্তক পড়াশোনা করার ফায়দা কী?' ইমাম কেসায়ী সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলেন, 'আপাতত নগদ ফায়দা তো এতটুকু দেখছি যে, মহাপরাক্রান্ত খলিফাও বাহন থেকে অবতরণ করে হস্ত চুম্বন করতে বাধ্য হয়েছেন!'
সূত্র: অনেকগুলো

No comments:

Post a Comment