পরনিন্দা বা Libel বিষয়ে অভিধান যা বলে: Libel is a method of defamation expressed by print, writing, pictures, signs, effigies, or any communication embodied in physical form that is injurious to a person's reputation, exposes a person to public hatred, contempt or ridicule, or injures a person in his/her business or profession.
পরনিন্দার অন্য অর্থ হতে পারেঃ
১. পরনিন্দা Slander-is an untrue defamatory statement that is spoken orally. মুখে মুখে অপমানকর কথা বলা যা অসত্য।
২. পরনিন্দা Defamation- is a false statement presented as a fact that causes injury or damage to the character of the person it is about. হীন কথা বলা যা কোন মানুষের চরিত্রের ওপর আঘাত হানে।
পরনিন্দা অর্থ হচ্ছে কারো অগোচরে বা আড়ালে তার দোষ অপরের কাছে বলে বেড়ানো যা পরবর্তীতে সে শুনলে অসন্তুষ্ট হয় বা কষ্ট পায়। এক শ্রেণীর লোক আছে যাদের স্বভাবই হচ্ছে পরের নিন্দা করা। আবার এমনও লোক সমাজে আছে যারা পরনিন্দা করে খুব মজা বা আনন্দ পায় এবং পাশাপাশি নিজেকে লোক সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসেবে জাহির করেন। এটা তাদের মজ্জাগত স্বভাব বললে ভুল হবে না। আসলে পরনিন্দা করা বা পরের দোষ-ত্রুটি অন্যের নিকট প্রকাশ করা আমাদের কারোরই উচিত নয়। কারণ পরনিন্দা করা পাপ। আর পরনিন্দা না করা সুন্দর চরিত্রের অন্যতম বিশেষ গুণ। এই পরনিন্দা একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ জীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বা হানিকর। ইসলাম ধর্মে পরনিন্দাকে ব্যভিচার অপেক্ষা মারাত্মক অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। হাদীসে বর্ণিত আছে “পরনিন্দুক বেহেশতে যেতে পারে না”। একমাত্র আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ব্যতীত সকল মানুষেরই কম-বেশি দোষ-গুণ রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে যারা ভাল অর্থাত ইহকাল ও পরকালের চিন্তা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) কে বিশ্বাস করে তাঁরা অন্যের দোষ খুঁজে না বা পরনিন্দা করে না। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সা.) কে বিশ্বাস করে না এবং ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে চিন্তা করে না তারাই অন্যের দোষ খোঁজে এবং পরনিন্দায় লিপ্ত থাকে। বাস্তবিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, যে ব্যক্তি পরনিন্দা করে সমাজে তাকে ভাল চোখেও দেখে থাকে। কিন্তু কেন? বুঝতে হবে, যে ব্যক্তি একজনের নিন্দা অন্যের কাছে বলে বেড়ায় সে ব্যক্তি সকলের নিন্দা সকলের কাছে বলে বেড়ায় কাউকে বাদ দিয়ে নয়। কেননা পরনিন্দা করা তার স্বভাব। “যে ব্যক্তি তোমার নিকট পরনিন্দা করে সে নিশ্চয়ই অন্যের সাক্ষাতে আপনার নিন্দা করবেই করবে।” প্রকৃত পক্ষে পরনিন্দুক গুজবে কান দিয়ে থাকে এবং সেই গুজবকে আরো ছড়িয়ে দেয়। সে প্রতি মুহূর্তে কথা-বার্তায় অন্যদের কঠিন সমালোচনা করে থাকে যা হীনমন্যতারই বহিঃপ্রকাশ।
গীবত,পরনিন্দা বা অন্যের দোষ চর্চা এমন একটি গুনাহ যার ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে অনেক সতর্ক বাণী এসেছে। গীবত ও পরনিন্দা কঠিন বড় একটি গুনাহ। নীচের উপদেশগুলা দেখুনঃ
১) হযরত থানবী (রহ.) বলেন, কারো গীবত করে ফেললে যার গীবত করা হয়েছে তার কাছে গিয়ে জানাবে যে, আমি আপনার গীবত করে ফেলেছি। আমাকে মাফ করে দিন।
২) মুখ খোলার পূর্বে চিন্তা করা যে, যা বলতে যাচ্ছি তাতে গুনাহ হবে না তো?
৩) মেয়েদের গীবত রোগের বড় চিকিতসা হলো, এক স্থানে জমা না হওয়া। কেননা, তারা বাড়ী একাকী থাকলে গীবত হয় না। কিন্তু যেই বাইরে যায় বা বাড়ীতে অন্য মেয়েরা আসে তখনই গীবত-শেকায়েত শুরু হয়।
৪) ভাল কথাও বেশি না বলা। কেননা, ভাল কথা দীর্ঘ হলে মাঝে মাধ্যে অসতর্কবশত দোষ বের হয়ে যায়।
৫) অপরকে সব সময় নিজের থেকে ভালো মনে করা। ফলে তার দোষ চোখে না পড়ায় পরে তার গীবত হবে না।
৬) যেসব মহিলা গীবতে অভ্যস্ত, তাদের কাছে না যাওয়া। গেলেও গীবত করার সুযোগ না দেয়া।
৭) গীবত করতে মনে চাইলে গীবতের দুনিয়াবী ও পরকালীন পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা করা।
গীবতের পরিণাম সম্পর্কে নবি করিম (সা.) আরো বলেছেন, ‘আগুন যেমন শুকনো কাঠ জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে ফেলে, গীবতও তদ্রূপ মানুষের সওয়াবসমূহ ধ্বংস করে ফেলে।’
ইমাম গাযযালী (রা.) তার ‘কিমিয়ায়ে সা’দাত’ গ্রন্থে গীবতের সংজ্ঞা দিয়ে বলেছেন, অন্যের দেহ, বংশ, বসন-ভূষণ, ভাবভঙ্গি, ক্রিয়াকলাপ, কথোপকথন ও গৃহের কোনো দোষ বের করে কিছু বললেই তাকে গীবত বলে।
১. পরনিন্দা Slander-is an untrue defamatory statement that is spoken orally. মুখে মুখে অপমানকর কথা বলা যা অসত্য।
২. পরনিন্দা Defamation- is a false statement presented as a fact that causes injury or damage to the character of the person it is about. হীন কথা বলা যা কোন মানুষের চরিত্রের ওপর আঘাত হানে।
পরনিন্দা অর্থ হচ্ছে কারো অগোচরে বা আড়ালে তার দোষ অপরের কাছে বলে বেড়ানো যা পরবর্তীতে সে শুনলে অসন্তুষ্ট হয় বা কষ্ট পায়। এক শ্রেণীর লোক আছে যাদের স্বভাবই হচ্ছে পরের নিন্দা করা। আবার এমনও লোক সমাজে আছে যারা পরনিন্দা করে খুব মজা বা আনন্দ পায় এবং পাশাপাশি নিজেকে লোক সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসেবে জাহির করেন। এটা তাদের মজ্জাগত স্বভাব বললে ভুল হবে না। আসলে পরনিন্দা করা বা পরের দোষ-ত্রুটি অন্যের নিকট প্রকাশ করা আমাদের কারোরই উচিত নয়। কারণ পরনিন্দা করা পাপ। আর পরনিন্দা না করা সুন্দর চরিত্রের অন্যতম বিশেষ গুণ। এই পরনিন্দা একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ জীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বা হানিকর। ইসলাম ধর্মে পরনিন্দাকে ব্যভিচার অপেক্ষা মারাত্মক অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। হাদীসে বর্ণিত আছে “পরনিন্দুক বেহেশতে যেতে পারে না”। একমাত্র আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ব্যতীত সকল মানুষেরই কম-বেশি দোষ-গুণ রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে যারা ভাল অর্থাত ইহকাল ও পরকালের চিন্তা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) কে বিশ্বাস করে তাঁরা অন্যের দোষ খুঁজে না বা পরনিন্দা করে না। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সা.) কে বিশ্বাস করে না এবং ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে চিন্তা করে না তারাই অন্যের দোষ খোঁজে এবং পরনিন্দায় লিপ্ত থাকে। বাস্তবিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, যে ব্যক্তি পরনিন্দা করে সমাজে তাকে ভাল চোখেও দেখে থাকে। কিন্তু কেন? বুঝতে হবে, যে ব্যক্তি একজনের নিন্দা অন্যের কাছে বলে বেড়ায় সে ব্যক্তি সকলের নিন্দা সকলের কাছে বলে বেড়ায় কাউকে বাদ দিয়ে নয়। কেননা পরনিন্দা করা তার স্বভাব। “যে ব্যক্তি তোমার নিকট পরনিন্দা করে সে নিশ্চয়ই অন্যের সাক্ষাতে আপনার নিন্দা করবেই করবে।” প্রকৃত পক্ষে পরনিন্দুক গুজবে কান দিয়ে থাকে এবং সেই গুজবকে আরো ছড়িয়ে দেয়। সে প্রতি মুহূর্তে কথা-বার্তায় অন্যদের কঠিন সমালোচনা করে থাকে যা হীনমন্যতারই বহিঃপ্রকাশ।
গীবত,পরনিন্দা বা অন্যের দোষ চর্চা এমন একটি গুনাহ যার ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে অনেক সতর্ক বাণী এসেছে। গীবত ও পরনিন্দা কঠিন বড় একটি গুনাহ। নীচের উপদেশগুলা দেখুনঃ
১) হযরত থানবী (রহ.) বলেন, কারো গীবত করে ফেললে যার গীবত করা হয়েছে তার কাছে গিয়ে জানাবে যে, আমি আপনার গীবত করে ফেলেছি। আমাকে মাফ করে দিন।
২) মুখ খোলার পূর্বে চিন্তা করা যে, যা বলতে যাচ্ছি তাতে গুনাহ হবে না তো?
৩) মেয়েদের গীবত রোগের বড় চিকিতসা হলো, এক স্থানে জমা না হওয়া। কেননা, তারা বাড়ী একাকী থাকলে গীবত হয় না। কিন্তু যেই বাইরে যায় বা বাড়ীতে অন্য মেয়েরা আসে তখনই গীবত-শেকায়েত শুরু হয়।
৪) ভাল কথাও বেশি না বলা। কেননা, ভাল কথা দীর্ঘ হলে মাঝে মাধ্যে অসতর্কবশত দোষ বের হয়ে যায়।
৫) অপরকে সব সময় নিজের থেকে ভালো মনে করা। ফলে তার দোষ চোখে না পড়ায় পরে তার গীবত হবে না।
৬) যেসব মহিলা গীবতে অভ্যস্ত, তাদের কাছে না যাওয়া। গেলেও গীবত করার সুযোগ না দেয়া।
৭) গীবত করতে মনে চাইলে গীবতের দুনিয়াবী ও পরকালীন পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা করা।
গীবতের পরিণাম সম্পর্কে নবি করিম (সা.) আরো বলেছেন, ‘আগুন যেমন শুকনো কাঠ জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে ফেলে, গীবতও তদ্রূপ মানুষের সওয়াবসমূহ ধ্বংস করে ফেলে।’
ইমাম গাযযালী (রা.) তার ‘কিমিয়ায়ে সা’দাত’ গ্রন্থে গীবতের সংজ্ঞা দিয়ে বলেছেন, অন্যের দেহ, বংশ, বসন-ভূষণ, ভাবভঙ্গি, ক্রিয়াকলাপ, কথোপকথন ও গৃহের কোনো দোষ বের করে কিছু বললেই তাকে গীবত বলে।
দীর্ঘ দেহবিশিষ্ট লোককে লম্বু, খর্ব লোককে বামুন, কালো লোককে নিগ্রো, উজ্জ্বল লোককে সাদা, টেরা ইত্যাদি বললে দেহ সম্পর্কে গীবত হয়ে যায়। কোনো ব্যক্তিকে কোনো হীন পেশাদারের সন্তান বললে তার বংশ সম্বন্ধে গীবত হয়ে যায়। কাউকে নিন্দুক, মিথ্যাবাদী, গর্বিত, কাপুরুষ, অলস ইত্যাদি বললে তার প্রকৃতি সম্পর্কে গীবত করা হয়। কাউকে বিশ্বাসঘাতক, আমানত খেয়ানতকারী, অসংযমী, অতিরিক্ত আহারকারী, হারামখোর, অধিক নিদ্রা যায়, পোশাক পরিচ্ছদ পরিষ্কার রাখে না, আয় অনুযায়ী ব্যয় করে না ইত্যাদি তার ক্রিয়াকলাপ সম্বন্ধে গীবত। কারো সম্পর্কে যদি বলা হয়, তার পোশাক বেসামাল, আস্তিন ঢিলা, আচল দীর্ঘ তা হলে তার বসন-ভূষণ সম্পর্কে গীবত করা হলো। গীবত কেবল মুখ দ্বারাই হয় না। চোখ, হাত এবং ইঙ্গিত দ্বারাও গীবত হয়ে থাকে। সব ধরনের গীবতই হারাম। হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি একদিন মহানবির নিকট ইশারায় প্রকাশ করেছিলাম যে, অমুক মহিলা বেটে। নবী করিম (সা.) বললেন, হে আয়েশা তুমি গীবত করলে।’
গীবত করা যেমন নিষেধ তেমনি গীবত শোনাও নিষেধ। যে গীবত শুনে, সেও গীবতের পাপের অংশীদার হয়ে যায়। গীবত শোনাও যে পাপ তার সমর্থনে হাদিস হচ্ছে- ‘একদিন হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমর (রা.) একসাথে সফর করছিলেন। এমন সময় একজন অপরজনকে বললেন, ‘অমুক ব্যক্তি অতিরিক্ত নিদ্রা যায়।’ তারপর তারা রুটি খাবার জন্য তরকারি চাইলে, নবী করিম (সা.) বললেন, ‘তোমরা উভয়েই তো তরকারি খেয়েছো।’ তারা বললেন, কি খেয়েছি আমরা জানি না। নবী করীম (সা.) বললেন, ‘তোমরা নিজের ভাইয়ের মাংস খেয়েছো’। এ হাদিস থেকে জানা যায়, ‘অমুক ব্যক্তি অতিরিক্ত নিদ্রা যায়’ কথাটি একজন বলেছেন অন্যজন শুনেছেন। অথচ নবী করীম (সা.) উভয়কে গীবতের অপরাধী করলেন।
গীবত বা পরনিন্দাকে নবী করিম (সা.) অত্যন্ত কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন এবং এর পরিণাম সম্পর্কে তার উম্মাহকে অবহিত করেছেন। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘ঈসা ইবনে মালিকিনা আসলামী নবি করিম (সা.)-এর নিকট এসে চতুর্থবারের মতো ব্যভিচারের স্বীকারোক্তি দেয়ায়, তিনি তাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যার আদেশ দেন। অতঃপর নবি করিম (সা.) ও কতিপয় সাহাবা (রা.) তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তখন তাদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠলেন, এই বিশ্বাসঘাতকটা কয়েকবারই নবী করিম (সা.)- এর নিকট আসে এবং প্রত্যেকবারই রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ফিরে যেতে বলেন, অতঃপর যেভাবে কুকুর হত্যা করা হয়, তেমনি তাকে হত্যা করা হয়। নবী করীম (সা.) এ কথা শুনে মৌনতা অবলম্বন করেন। এরপর তারা যখন একটি মৃত গাধার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন এবং গাধাটি ফুলে যাওয়ায় এর পাগুলো উপরের দিকে উঠেছিলো, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমরা দুজনে এটা খাও। তারা বললেন, গাধার মৃত দেহ খেতে বলেছেন হে রাসুল! তিনি বললেন, কেনো তোমাদের ভাইয়ের সম্মানহানীর মাধ্যমে ইতিপূর্বে তোমরা যা অর্জন করেছো, তা এর তুলনায় অধিক বেশি গর্হিত!’
গীবত পরিহার করে চলা কঠিন কোনো কাজ নয়। নবি করিম (সা.) এটাকে কোনো কঠিন কাজ বলে মনে করেননি। হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর সাথে ছিলাম। তিনি এমন দুটি কবরের পাশে উপনীত হলেন যেগুলোর অধিবাসিরা আজাবে লিপ্ত ছিল। তিনি বললেন, ‘এরা কোনো কঠিন বা গুরুতর ব্যাপারে শাস্তি পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে একজন লোক গীবত করে বেড়াতো, আর অপরজন পেশাব হতে সতর্ক থাকতো না। অতঃপর তিনি একটি কিংবা দু’টি তাজা খেজুরে ডাল এনে তা ভেঙে কবরের উপর গেড়ে দিতে নির্দেশ দিয়ে বললেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এ ডাল দুটি তাজা থাকবে কিংবা শুকিয়ে যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের শাস্তি হালকা করে দেয়া হবে।’
গীবত পরিহার করে চলা কঠিন কোনো কাজ নয়। নবি করিম (সা.) এটাকে কোনো কঠিন কাজ বলে মনে করেননি। হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর সাথে ছিলাম। তিনি এমন দুটি কবরের পাশে উপনীত হলেন যেগুলোর অধিবাসিরা আজাবে লিপ্ত ছিল। তিনি বললেন, ‘এরা কোনো কঠিন বা গুরুতর ব্যাপারে শাস্তি পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে একজন লোক গীবত করে বেড়াতো, আর অপরজন পেশাব হতে সতর্ক থাকতো না। অতঃপর তিনি একটি কিংবা দু’টি তাজা খেজুরে ডাল এনে তা ভেঙে কবরের উপর গেড়ে দিতে নির্দেশ দিয়ে বললেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এ ডাল দুটি তাজা থাকবে কিংবা শুকিয়ে যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের শাস্তি হালকা করে দেয়া হবে।’
ইমাম গাযযালী (রা) তার রচিত কিমিয়ায়ে সাদাত নামক গ্রন্থে গীবত থেকে বাঁচার কিছু উপায় ও প্রতিষেধক বর্ণনা করেছেন। তিনি গীবতকে একটি রোগ বা অসুখ বলে আখ্যায়িত করে এ রোগের জ্ঞানমূলক ও অনুষ্ঠানমূলক দুটি ওষুধের কথা বলেছেন-
এক. জ্ঞানমূলক ওষুধ হচ্ছে- পবিত্র কুরআন ও হাদিসে গীবতের ক্ষতি ও অনিষ্ট সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার মর্ম উপলব্ধি করে তার ওপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা। দ্বিতীয়ত নিজের দোষ অনুসন্ধান করা। নিজের দোষ বের হওয়ার পর মনে করতে হবে, আমার ন্যায় অন্যেরও দোষ থাকা অসম্ভব নয়। নিজে যেহেতু দোষ থেকে বাঁচতে পারিনি, সেহেতু অন্যের দোষ দেখে এতো বিস্মিত হওয়ার কি আছ।
এক. জ্ঞানমূলক ওষুধ হচ্ছে- পবিত্র কুরআন ও হাদিসে গীবতের ক্ষতি ও অনিষ্ট সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার মর্ম উপলব্ধি করে তার ওপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা। দ্বিতীয়ত নিজের দোষ অনুসন্ধান করা। নিজের দোষ বের হওয়ার পর মনে করতে হবে, আমার ন্যায় অন্যেরও দোষ থাকা অসম্ভব নয়। নিজে যেহেতু দোষ থেকে বাঁচতে পারিনি, সেহেতু অন্যের দোষ দেখে এতো বিস্মিত হওয়ার কি আছ।
দুই. মানুষ যেসব কারণে গীবত করে তার প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মানুষ যেসব কারণে গীবত করে ইমাম গাযযালী (রা.) এর সংখ্যা আটটি উল্লেখ করেছেন-
১. ক্রোধ, কেউ কারো প্রতি ক্রোধাম্বিত হলে সে তার গীবতে লিপ্ত হয়। সুতরাং ক্রোধ দমন করলেই এসব গীবত থেকে বাঁচা যায়।
২. কারো সন্তুষ্টি লাভের জন্য ওই ব্যক্তির শত্রুদের গীবত করা হয়। এ অবস্থায় মনে করতে হবে কোনো মানুষের সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহতালার অসন্তুষ্টি অর্জন করা নির্বুদ্ধিতা ও মূর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়।
৩. নিজের দোষ হতে বাঁচার জন্য অপরের দোষ উদঘাটন, নিজের দোষ ঢাকার জন্য অপরের দোষ প্রকাশ করে আল্লাহতালার অসন্তুষ্টি অর্জন করা কখনো সঙ্গত হতে পারে না। এটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪. নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের জন্য অন্যের নিন্দা করা। অনেকে নিজেকে জ্ঞানী হিসেবে উপস্থাপনের জন্য বলে থাকে, অমুকে এ ব্যাপারে কিছুই বোঝে না। এসব উক্তিতে মূর্খ ও দুর্বলেরা তার ভক্ত হলেও জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানেরা তার ভক্ত হয় না। মূর্খ ও দুর্বলদের কাছে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার জন্য পরম পরাক্রমশালী আল্লাহতা’আলার বিরাগভাজন হওয়া কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৫. নিজের যোগ্যতা দিয়ে যারা মান-সম্মান অর্জন করেছে, ঈর্ষাপরায়ণ ব্যক্তির কাছে তা সহ্য হয় না। কারণে-অকারণে সে ওই সম্মানিত ব্যক্তির দোষ অম্বেষণ করতে থাকে এবং ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়। এসব ব্যক্তি দুনিয়াতে ঈর্ষার অনলে দগ্ধ হয়, আর আখিরাতে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হয়। হিংসুকের হিংসায় সম্মানিত ব্যক্তির সম্মান এতোটুকুও লাঘব হয় না। ক্ষতি হিংসুকেরই হয়।
(৬) অনেক সময় মানুষ মজা করা কিংবা অন্যকে অপদস্থ করার উদ্দেশ্যে তার ক্রিয়াকলাপ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসে মত্ত হয়। উপহাসকারী যদি বুঝত যে তার এই উপহাস তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা হলে সে উপহাসকারী না হয়ে হাস্যাস্পদ হওয়ার প্রত্যাশা করতো, কেনো না হাশরের দিন হাস্যাস্পদের পাপের বোঝা উপহাসকারীর কাঁধে চড়িয়ে দেয়া হবে।
(৭) অনেক সময় পরহেজগার ব্যক্তিরাও পাপের আলোচনা করতে গিয়ে পাপীর নামও উল্লেখ করে ফেলেন। লক্ষ্য করেন না যে, এটা গীবতের মধ্যে গণ্য হয়ে যায়। সুতরাং পাপাচার নিয়ে আলোচনা করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কখনো কারো নাম উচ্চারিত না হয় এবং কারো প্রতি ইঙ্গিত করা না হয়।
(৮) মূর্খতা মানুষের জন্য বড় অভিশাপ। অনেকে জানেই না যে, কোন্ কথা গীবতের মধ্যে পড়ে, আর কোন্ কথা গীবতের মধ্যে পড়ে না। তবে অনিষ্টকর ব্যক্তির ক্ষতি হতে জনসাধারণকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে অনিষ্টকারীর নাম নেয়া বৈধ। এটা গীবতের মধ্যে পড়ে না। অনুরূপভাবে বিচারকের সামনে সাক্ষী হিসেবে পাপীর নাম নেয়া গীবত নয়। যারা প্রকাশ্যভাবে পাপ করে এবং পাপকে দোষের মনে করে না তাদের নাম নেয়া গীবত নয়।
পরনিন্দা ও পরনিন্দুক সম্পর্কে যা করা প্রয়োজন তা হচ্ছে :
(১) ধৈর্য্য ধরতে হবে।
(২) নিজের মনকে স্থির করতে হবে।
(৩) বাস্তবতা ও অনুমানের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে হবে।
(৪) অন্যদের সম্পর্কে আরো উদারতা প্রদর্শন করতে হবে।
(৫) শোনা কথা যাচাই-বাছাই না করে বিশ্বাস করা যাবেনা। অর্থাৎ গুজবে কান দেয়া যাবে না।
(৬) আলোচনায় পরনিন্দার চেয়ে নিজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
(৭) অযৌক্তিকতার আশ্রয় নেয়া যাবে না।
(৮) নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দর গ্রহণযোগ্য ভাবে তুলে ধরতে হবে।
Source: Many
১. ক্রোধ, কেউ কারো প্রতি ক্রোধাম্বিত হলে সে তার গীবতে লিপ্ত হয়। সুতরাং ক্রোধ দমন করলেই এসব গীবত থেকে বাঁচা যায়।
২. কারো সন্তুষ্টি লাভের জন্য ওই ব্যক্তির শত্রুদের গীবত করা হয়। এ অবস্থায় মনে করতে হবে কোনো মানুষের সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহতালার অসন্তুষ্টি অর্জন করা নির্বুদ্ধিতা ও মূর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়।
৩. নিজের দোষ হতে বাঁচার জন্য অপরের দোষ উদঘাটন, নিজের দোষ ঢাকার জন্য অপরের দোষ প্রকাশ করে আল্লাহতালার অসন্তুষ্টি অর্জন করা কখনো সঙ্গত হতে পারে না। এটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪. নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের জন্য অন্যের নিন্দা করা। অনেকে নিজেকে জ্ঞানী হিসেবে উপস্থাপনের জন্য বলে থাকে, অমুকে এ ব্যাপারে কিছুই বোঝে না। এসব উক্তিতে মূর্খ ও দুর্বলেরা তার ভক্ত হলেও জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানেরা তার ভক্ত হয় না। মূর্খ ও দুর্বলদের কাছে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার জন্য পরম পরাক্রমশালী আল্লাহতা’আলার বিরাগভাজন হওয়া কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৫. নিজের যোগ্যতা দিয়ে যারা মান-সম্মান অর্জন করেছে, ঈর্ষাপরায়ণ ব্যক্তির কাছে তা সহ্য হয় না। কারণে-অকারণে সে ওই সম্মানিত ব্যক্তির দোষ অম্বেষণ করতে থাকে এবং ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়। এসব ব্যক্তি দুনিয়াতে ঈর্ষার অনলে দগ্ধ হয়, আর আখিরাতে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হয়। হিংসুকের হিংসায় সম্মানিত ব্যক্তির সম্মান এতোটুকুও লাঘব হয় না। ক্ষতি হিংসুকেরই হয়।
(৬) অনেক সময় মানুষ মজা করা কিংবা অন্যকে অপদস্থ করার উদ্দেশ্যে তার ক্রিয়াকলাপ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসে মত্ত হয়। উপহাসকারী যদি বুঝত যে তার এই উপহাস তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা হলে সে উপহাসকারী না হয়ে হাস্যাস্পদ হওয়ার প্রত্যাশা করতো, কেনো না হাশরের দিন হাস্যাস্পদের পাপের বোঝা উপহাসকারীর কাঁধে চড়িয়ে দেয়া হবে।
(৭) অনেক সময় পরহেজগার ব্যক্তিরাও পাপের আলোচনা করতে গিয়ে পাপীর নামও উল্লেখ করে ফেলেন। লক্ষ্য করেন না যে, এটা গীবতের মধ্যে গণ্য হয়ে যায়। সুতরাং পাপাচার নিয়ে আলোচনা করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কখনো কারো নাম উচ্চারিত না হয় এবং কারো প্রতি ইঙ্গিত করা না হয়।
(৮) মূর্খতা মানুষের জন্য বড় অভিশাপ। অনেকে জানেই না যে, কোন্ কথা গীবতের মধ্যে পড়ে, আর কোন্ কথা গীবতের মধ্যে পড়ে না। তবে অনিষ্টকর ব্যক্তির ক্ষতি হতে জনসাধারণকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে অনিষ্টকারীর নাম নেয়া বৈধ। এটা গীবতের মধ্যে পড়ে না। অনুরূপভাবে বিচারকের সামনে সাক্ষী হিসেবে পাপীর নাম নেয়া গীবত নয়। যারা প্রকাশ্যভাবে পাপ করে এবং পাপকে দোষের মনে করে না তাদের নাম নেয়া গীবত নয়।
পরনিন্দা ও পরনিন্দুক সম্পর্কে যা করা প্রয়োজন তা হচ্ছে :
(১) ধৈর্য্য ধরতে হবে।
(২) নিজের মনকে স্থির করতে হবে।
(৩) বাস্তবতা ও অনুমানের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে হবে।
(৪) অন্যদের সম্পর্কে আরো উদারতা প্রদর্শন করতে হবে।
(৫) শোনা কথা যাচাই-বাছাই না করে বিশ্বাস করা যাবেনা। অর্থাৎ গুজবে কান দেয়া যাবে না।
(৬) আলোচনায় পরনিন্দার চেয়ে নিজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
(৭) অযৌক্তিকতার আশ্রয় নেয়া যাবে না।
(৮) নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দর গ্রহণযোগ্য ভাবে তুলে ধরতে হবে।
Source: Many
No comments:
Post a Comment