Monday, October 5, 2020

অভিযোগমুক্ত থাকুন, জীবনটাকে করুন অন্যরকম উপভোগ্য

 

Be an Action Taker

তুমি যে নিঃশ্বাস এখনই নিলে তার জন্য অবশ্যই কৃতজ্ঞ থাকো। ভেবে দেখো আরেক জনের বেলায় সেই নিঃশ্বাসই শেষ নিঃশ্বাস হয়েছে আর সে এখন মৃত। তাই তুমি অভিযোগবিহীনভাবে বেঁচে থাকো। তোমার এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কী হতে পারে?”- অজ্ঞাত


কেনো অভিযোগ করবো?

ভাগ্য কখনো আমার সহায় নয়, আমার কোনো বন্ধু নেই, কেউ আমাকে ভালোবাসে না, অফিসে কর্তাব্যক্তি সব সময় আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, আমার স্ত্রী আর ছেলে মেয়েরা শুধু আমাকেই সারাক্ষণ দোষারোপ করে—আমাদের এ ধরনের অভিযোগের যেন কোনো শেষ নেই। কারণ, সমাধান খুঁজে বের করার চেয়ে অভিযোগ করাটা অনেক বেশি সহজ। আসলে, আমরা এভাবে নিজেদের ধারণার ওপর ভিত্তি করে একধরনের ‘বাস্তবতা’ তৈরি করছি। এসব প্রবণতা খুবই নেতিবাচক। অভিযোগ করার প্রবণতা থেকে ২৪ ঘণ্টা নিজেকে দূরে রাখার কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। এতে আপনি পেতে পারেন অনেক প্রশান্তি।

অভিযোগ নিয়ে যত কথা জীবনে চলতে-ফিরতে নানা বিষয় নিয়ে আমরা অভিযোগ করে থাকি। কখনো কখনো মনে হয়, এসব অভিযোগ খুবই যৌক্তিক। কিন্তু কেন? অসন্তোষ থেকেই আসে অভিযোগ। কোনো কাজের লক্ষ্যমাত্রা, সময়সীমা, প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া ইত্যাদি বিষয় রয়েছে অভিযোগ করার মতো। আগামী দিনেও অসংখ্য অসন্তোষ ও অভিযোগ থাকবে, তা ধরে নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। কেন আমরা অভিযোগ করি?

প্রথমত, অনেকেই বুঝতে পারে না যে তারা কত বেশি অভিযোগ করে। কারণ, ব্যাপারটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। অনেক বাজে অভ্যাসের মতো এটি নিজে টের পাওয়া যায় না। দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ মানুষের ধারণা, অভিযোগ দিয়ে শুরু করলে কথাবার্তা জমে ভালো। আর নিজের বিশ্বাসের পক্ষে অন্যের সমর্থন পাওয়ার জন্যও কেউ কেউ অভিযোগ করেন।

অভিযোগ করলে কী হয়?

এটা মানুষকে কাজ বা সক্রিয়তা থেকে বিরত রাখে। অজুহাত দেখিয়ে ঢিমেতালে কাজ করার প্রবণতার সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত। এভাবে অনেক দায়িত্ব এড়ানো যায়। মনে হয় যেন অভিযোগ না থাকলে আলাপের প্রসঙ্গই ফুরিয়ে যাবে। কারণ, আমাদের সব কথাবার্তায়ই কিছু দ্বন্দ্ব, কিছু অসন্তোষ এবং কিছু বিরক্তির প্রকাশ ঘটে।

অভিযোগবিহীন থাকা সম্ভব?

অভিযোগ একেবারে বর্জন করে থাকাটা তাই বেশ কঠিন। কিন্তু অসম্ভব তো নয় নিশ্চয়ই। চেষ্টা করেই দেখুন। বদলে ফেলুন দৃষ্টিভঙ্গি। ব্যাপারটা বেশ উত্তেজনা এনে দেবে আপনার জীবনে। অভিযোগ করার প্রবণতা বন্ধ করার একমাত্র উপায় হলো নিজের মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ তৈরি করা। এর মানে শুধু ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা নয়, বরং নিজের জীবনের প্রাচুর্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

কীভাবে বর্জন করবেন অভিযোগ

কী কী নেই খোঁজার চেষ্টা না করে খুঁজে দেখুন কত কিছু আছে আপনার জীবনে-পরিবার, বন্ধুবান্ধব, চাকরি, একদল সহকর্মী, কাপড়চোপড়, জুতা-স্যান্ডেল, বইপত্র ইত্যাদি। তাই কেন বা কোন যুক্তিতে আপনার এত অভিযোগ বহাল থাকবে? আপনি তো আর আলাস্কায় থাকেন না, যেখানে সূর্যের আলোর ক্ষতিকর রশ্মি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে হয়। এই তো শেষ নয়। আপনি নিয়মিত খেতে পাচ্ছেন, ঘুমাতে পারছেন, মাথার ওপর ছাদ পাচ্ছেন—তাহলে কী নিয়ে অভিযোগ করবেন? আপনার চেয়ে অনেক প্রতিকূল অবস্থায়, অনেক বেশি সমস্যা নিয়ে কত মানুষ বেঁচে আছে, তাদের দিকে একবার খেয়াল করে দেখুন। মনে হবে, আপনার অভিযোগগুলে কত নাজুক ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। অফিসের চা-টা ভালো নয় বলে অভিযোগ করছেন? অন্যভাবে ভেবে দেখুন, একজন চাওয়ালা তো অন্তত আছে আপনার কর্মস্থলে।

অন্য রকম একটা দিন

গুরুত্বপূর্ণব্যাপার হলো, নিজের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে আপনাকে সচেতন হতে হবে। দিন কেটে যাচ্ছে আর প্রতিদিনই আপনি কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করছেন। নিজেই ভাবছেন, এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু পারছেন না। অভিযোগ বর্জন করার মধ্যে যে আনন্দ পাওয়া যায়, তা সংক্রামক। এটা আপনার সুখের শক্তি, প্রতিরোধহীনতা এবং উৎসাহের প্রতিফলন ঘটায়। তাই একটানা ২৪ ঘণ্টা অভিযোগমুক্ত থেকে দেখুন, ভালো লাগবে। প্রশান্তি অর্জনের জন্য নিজেকেই নিজে ধন্যবাদ দেবেন।

কোটেশনগুলো মনযোগে পড়ুন। কার কোটেশন এগুলো তার নাম জানা যায় নি। তবে লেখাগুলো খুবই সুন্দর।

১. অভিযোগ কোন কর্মকৌশল হতেই পারে না।

২. অভিযোগ হলো প্রগতির অন্তরায়।

৩. ২৪ ঘণ্টা অভিযোগমুক্ত থেকে দেখুন, ভালো লাগবে। প্রশান্তি অর্জনের জন্য নিজেকেই নিজে ধন্যবাদ দেবেন।

৪. কৃতজ্ঞ থাকো সেইটাই অনেক কল্যাণকর আর কোন অভিযোগ করোনা।।

৫. সূখী সে ই মানুষ যে তার প্রতিটি ক্ষণ গুণে গুণে চলে আর কোন অভিযোগ করেনা আর বলে “আমি যা পেয়েছি সেইটুকুতেই খুশী আমার মন।”

৬. আমাদের এই দুনিয়াটা আরো অনেক সুন্দর হতো যদি মানুষেরা তাদের কাজগুলোকে ভালবেসে ব্যস্ত থাকতো আর যা তারা ভালবাসেনা তা নিয়ে অভিযোগ করা বন্ধ করে দিতো।

৭. কঠোর প্রশিক্ষণ নাও আর অভিযোগ বা অযুহাত বা ছল ছুঁতো দেখানো বন্ধ করে দাও চিরতরে। দেখবে জীবনটা আসলেই সুন্দর।

৮. তুমি যে নিঃশ্বাস এখনই নিলে তার জন্য অবশ্যই কৃতজ্ঞ থাকো। ভেবে দেখো আরেক জনের বেলায় সেই নিঃশ্বাসই শেষ নিঃশ্বাস হয়েছে আর সে এখন মৃত। তাই তুমি অভিযোগবিহীনভাবে বেঁচে থাকো। এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কী হতে পারে?

৯. যদি তুমি অভিযোগ করতে মাত্র ৫ মিনিট সময় ব্যয় করো তাহলে মনে রাখো ওই ৫ মিনিটিই তুমি বৃথা ব্যয় করলে।

১০. সময়গুলো কাজের ভেতর দিয়েই কাটাও আর অভিযোগ করে সময়গুলো হেলায় হেলায় নষ্ট করোনা। সময় খুবই রূঢ়।

সূত্রঃ আজকের বিচিন্তা ও ডিএনএ

No comments:

Post a Comment