Tuesday, December 22, 2020

সম্পর্ক: উপহার সম্পর্ক মজবুত করে

 জীবন চলার ক্ষেত্রে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। কোনো সম্পর্ক রক্তের, কোনো সম্পর্ক আত্মার। এই সম্পর্কগুলো কখনো ভাঙে, কখনো বা মজবুত হয়। দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়। সম্পর্ক ভাঙা যাবে না। যত সম্পর্ক হয় তা আরো মজবুত করতে হবে। সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখতে বা আরো মজবুত করতে নিজেদের মধ্যে কিছুর আদান-প্রদান হওয়া জরুরি। দেওয়া-নেওয়ার মাধ্যমে সম্পর্ক সুন্দর হয়, মহব্বত বাড়ে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা পরস্পর হাদিয়ার আদান-প্রদান করো, তাহলে মহব্বত বৃদ্ধি পাবে। (ইমাম বুখারি রচিত আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৯৪)

নিস্বার্থভাবে, বিনিময় ছাড়া, চাওয়া ছাড়া ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের মধ্যে যে আদান-প্রদান হয় তা-ই হাদিয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা যদি খুশি হয়ে তোমাদের দিয়ে দেয়, তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ করো।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪)
আল্লাহ তাআলা এখানে খুশি হয়ে দিলে তা ভোগ করার জন্য বলেছেন। এটিই হাদিয়া। হাদিয়া অল্প হলেও রাসুল (সা.) গ্রহণ করার জন্য বলেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, হে মুসলিম রমণীরা! তোমাদের প্রতিবেশীর জন্য সামান্য উপহার বা হাদিয়াও তুচ্ছ জ্ঞান কোরো না। যদিও তা বকরির পায়ের খুর হয়। (বুখারি, হাদিস : ২৪২৭)
কারণ আগেই বলা হয়েছে, হাদিয়ার দ্বারা নিজেদের মধ্যে মহব্বত বাড়ে। হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়। যেমন—রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা পরস্পরে হাদিয়া বিনিয়ম করো, এর দ্বারা অন্তরের সংকীর্ণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৯২৫০)
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, ইসলামে হাদিয়া জায়েজ, বৈধ। শুধু বৈধ নয়, বরং তাতে রয়েছে সওয়াব বা পুণ্য। হাদিয়া দেওয়া-নেওয়া উভয়টি মুস্তাহাব বা সুন্নত। রাসুল (সা.) হাদিয়া দিয়েছেন এবং নিয়েছেন। রাসুল (সা.)-এর জন্য হাদিয়া হালাল ছিল আর সদকা হারাম ছিল।
পরস্পর মহব্বত সৃষ্টি হয়, হাসাদ দূর হয় হাদিয়ার মাধ্যমে। তাই আমাদের মাঝে হাদিয়ার প্রসার ঘটানো উচিত। এ হাদিয়া বৈধ হওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত রয়েছে—(ক) যা হাদিয়া দেবে তা হালাল হতে হবে। হারাম জিনিস হাদিয়া দেওয়া যাবে না। (খ) হাদিয়া সম্পূর্ণ নিজের সম্মতিতে দিতে হবে। কেননা কোনো মুসলিমের সম্মতি ছাড়া সম্পদ ব্যবহার করা হালাল হবে না। (সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ১১৩২৫)
(গ) পার্থিব উদ্দেশ্য সামনে রেখে হাদিয়া দেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে এটি ঘুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই শর্তগুলোর প্রতি লক্ষ রেখে হাদিয়া দিলে এর দ্বারা সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন আরো সৌহার্দপূর্ণ হবে।
সত্র: কালের কন্ঠ

No comments:

Post a Comment