অনুপ্রেরণামূলক লেখা
১৮৮১সালে দক্ষিণ আফ্রিকার রেলকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল এক বাঁদর।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার একজন রেলকর্মী ছিল জাম্পার ওয়াইড। সে শারীরিকভাবে ছিল পঙ্গু। এক দূর্ঘটনায় সে তার দুটি পা হারায়।
একদিন স্থানীয় বাজার থেকে প্রয়োজনের কিছু জিনিস আনতে গিয়ে সে এক বাঁদরকে গোরুর গাড়ি চালাতে দেখে। তা দেখে সে মনে মনে বানরের বুদ্ধির বেশ তারিফ করে ও অবাক হয়।
শারীরিক অক্ষমতার জন্য সে একটি সাহায্যকারীর খোঁজে থাকায় সে বাঁদরটির মালিকের কাছে বাঁদরটিকে কিনে নেওয়ার আর্জি জানায়।
প্রথমে রাজি না হলেও পরে দরাদরি করে জাম্পার বাঁদরটিকে কিনে নিতে সক্ষম হয়।
বাঁদরটি কিনে নেওয়ার পর সে জানতে পারে বাঁদরটি এক নম্বরের মাতাল। মদ ছাড়া তাকে দিয়ে কোনো কাজই করানো যায়না।
এই বাঁদরটির নাম ছিল জ্যাক। জাম্পার জ্যাককে সিগনালের ব্যবহার ও লিভার টেনে ট্রেনের পথ নির্দেশ করার সব রকম কায়দা শেখায়। আশ্চর্যভাবে জ্যাক খুব কম সময়ের মধ্যেই এই সকল কায়দা রপ্ত করে ফেলে ও এতোটাই সুষ্ঠুভাবে সব কাজ করতে থাকে যে জাম্পারকে আর কিছু করতেই হতো না।
ভালোই কাটছিলো দিন। একটা সময়ে রেলের বড়ো কর্তাদের কানে জাম্পার ও জ্যাক এর এই কথা পৌঁছায়। তারা ঠিক করেন জাম্পারকে তারা কাজ থেকে বরখাস্ত করবেন।
ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছালে তারা জ্যাককে দূর থেকে তার কাজ করতে লক্ষ্য করেন। তার বুদ্ধি ও কাজে তারা এতোটাই মুগ্ধ ও অবাক হন যে জাম্পারকে বরখাস্ত করা তো দূরের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জ্যাককে জাম্পারের সহায়ক হিসেবে নিযুক্ত করেন। সেই থেকে জ্যাক টানা ৯বছর দক্ষিণ আফ্রিকার রেলকর্মী পদে নিযুক্ত হয়ে নিজের কাজ করে গেছে। এই ক্ষেত্রে এটিও উল্লেখ্য যে এই দীর্ঘ ৯বছরে একটি দিনও তার কাজে কোনো ভুল সে করেনি।
১৮৯০ সালে জ্যাক টিউবারকিউলোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। জ্যাকের খুলিটি এখনও গ্রাহামস্টাউনের অ্যালবামি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত।
No comments:
Post a Comment