তাকওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একটি সুপরিচিত উদাহরণ হচ্ছে এরকম : আপনি সুতির কাপড় পরে একটি ফুলের বাগান দিয়ে হাঁটছেন। ফুলের বাগানের গাছগুলো ঘন ঘন লাগানো; বেশির ভাগ গাছ ও ফুল কাঁটাওয়ালা; মৃদুমন্দ বাতাস বইছে যেই বাতাসের কারণে আপনার কাপড় যেমন হালকাভাবে উড়ছে তেমনই ফুলগাছের কাঁটাওয়ালা ডালগুলোও মৃদুভাবে হেলছে ও দুলছে; বাগানের এক পাশ থেকে অপর পাশে যাওয়ার জন্য চিহ্নিত যেই পথ সেটি অতি সরু; ওই সরু পথটির উভয় পাশ থেকে কাঁটাওয়ালা ফুলগাছের ডালাপালা এসে সরু পথটিকে প্রায় ঢেকে ফেলেছে; এই সরু পথটিকে অনুসরণ করেই আপনাকে বাগানের অপর পাশে যেতে হবে; আপনি এমনভাবে বাগান পার হবেন যে, সুগন্ধিযুক্ত ফুল যেন আপনার গায়ে লাগতে পারে কিন্তু ফুলগাছের কাঁটা যেন আপনার কাপড়ে না লাগে। এটার নামই তাকওয়া।
অর্থাৎ পৃথিবীতে এমনভাবে জীবনযাপন করতে হবে যে, পৃথিবীর কাদামাটি পানি বাতাস আগুন জীবজন্তু বৃÿলতা সবকিছুর মধ্য দিয়েই এমনভাবে জীবনযাপন করতে হবে যে, এগুলোর সুগন্ধিযুক্ত অংশ বা বৈধ অংশ বা পবিত্র অংশ আপনার জীবনকে ধন্য করতে পারে কিন্তু এগুলোর মন্দ বা দুর্গন্ধযুক্ত অংশ যেন আপনার জীবনকে কলুষিত করতে না পারে। অর্থাৎ সমাজে বসবাস করতে হবে : চোর-ডাকাত, ঘুষখোর-সুদখোর, সাধু-সন্ন্যাসী, নামাজী-বেনামাজী, ক্রেতা-বিক্রেতা, মহাজন-ঋণ গ্রহীতা, শিল্পপতি-শ্রমিক, মনোযোগী-অমনোযোগী ছাত্র, অধিনায়ক-সৈনিক, মন্ত্রী-মন্ত্রীর তোষামোদকারী ইত্যাদি সবার মধ্য থেকেও যেন নিজের চিন্তা ও আচরণকে কলুষমুক্ত রাখা যায়। এটার নাম তাকওয়া। তাকওয়া বা পবিত্রতা অর্জন শুধু রমজানুল মোবারকের জন্য প্রযোজ্য নয়; সারা বছরের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এর প্রশিÿণের জন্য সর্বোত্তম সময় বিবেচিত হয়েছে নির্ধারিত হয়েছে পবিত্র রমজান মাস।
No comments:
Post a Comment