Tuesday, June 6, 2017

কোন কাজটি কোন বয়সে করলে লাভজনক

একজন ব্যক্তির মাসিক বৈধ ইনকাম পাঁচ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ব্যক্তির মাসিক বৈধ ইনকাম এক লাখ টাকা; উভয়েই কোনো অবৈধ ইনকাম করেন না। প্রথম ব্যক্তি বৈধ ইনকাম থেকে প্রতি মাসে পাঁচশত টাকা গোপনে দান-খয়রাত করেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা দান খয়রাত করেন। প্রথম ব্যক্তি তার ইনকামের দশ ভাগের এক ভাগ এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি তার ইনকামের পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগ দান-খয়রাত করছেন। উভয়েই বাকি টাকা দিয়ে কষ্টে-সৃষ্টে হোক বা আরাম আয়েশে হোক সংসার চালান। জ্ঞানী বিশ্লেষকগণের মতে, প্রথম ব্যক্তির দান-খয়রাতের মূল্য এবং প্রথম ব্যক্তির থেকে ত্যাগ স্বীকারের মূল্য, দ্বিতীয় ব্যক্তির তুলনায় অনেক বেশি। তরুণ বয়সে অনেক কিছু করা যায় যথা পাঠ্যসূচির লেখাপড়া, টিউশনি করে নিজের খরচ জোগাড়ের চেষ্টা করা, পিতা-মাতার খেদমত করা, শিশুসন্তান, স্ত্রীর পরিবারের অন্যদের যত করা, হাটবাজার করা, আত্মীয়স্বজনের খবরাখবর রাখা, স্টেডিয়ামে অথবা টিভির পর্দায় খেলাধুলা দেখা, ফেসবুকের মাধ্যমে অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পুরুষ বা মহিলা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারা অথবা শারীরিকভাবে একত্র হয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারা ইত্যাদি। আবার এও করা যায়, সময়মতো মসজিদে যাওয়া নামাজ-কালাম পড়া; একটু সময় করে কুরআন শরিফ পড়া এবং একটু সময় করে অর্থ বোঝার চেষ্টা করা; রাতে টেলিভিশনে সময় ব্যয় না করে একটু ইবাদত বন্দেগি করা। রাতে ঘুমের এবং সকালবেলা ঘুমের থেকে ওঠার জন্য তিনটি রাস্তা আছে। প্রথম রাস্তা হলো দেরিতে ঘুমানো এবং দেরিতে ওঠা, নামাজ কাজা করা। দ্বিতীয় রাস্তা হলো, দেরিতে না ঘুমানো, ফজরের নামাজের সময় উঠে যাওয়া তারপর দিনের কাজ শুরু করা। তৃতীয় রাস্তা অধিকতর কষ্টকর। রাতে সাংসারিক সব কাজ শেষ করতে সময় লাগে বিধায় বিলম্বে ঘুমাতে যাওয়া কিন্তু ভোররাতে ওঠা, ইবাদত বন্দেগি করা, সকালের নামাজ পড়া অতঃপর একটু কুরআন তেলাওয়াত করা অতঃপর প্রস্তুত হওয়া এবং অফিসে যাওয়া বা দিনের কাজ শুরু করা। তৃতীয় ব্যক্তি আরাম করলেন কম। অনেক তরুণকে বলতে শুনি বয়স হলে, পেনশনে গেলে তখন তো সংসারের কাজ বেশি থাকবে না, তখন ইবাদত বন্দেগি বেশি করব। কথাটি এরূপ কল্পনা ভ্রান্ত। যখন বয়স হবে তখন শরীরে কান্তি দ্রুত আসবে, মনের কান্তি দ্রুত আসবে। আরো একটি মজার কথা আছে। টেলিভিশনে প্রোগ্রাম ভালো লাগে না, মোবাইল ফোনে বন্ধুর সাথে আড্ডা মারা যাচ্ছে না, সেজন্যই প্রবীণ ব্যক্তি ইবাদতে সময় দেবে, এটি ইবাদতের প্রতি সম্মান নয়। তরুণদের আহ্বান জানাচ্ছি : অনেক কিছু আরামদায়ক এবং আনন্দদায়ক করার সুযোগ আপনার সামনে আছে; সেখান থেকে কিছু অংশ বাদ দিন; তাহলেই আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন। ভবিষ্যতে যখন প্রবীণ হবেন, তখন শরীরের অবস্থা কেমন হবে বা সংসার এবং জগতের পরিবেশ কেমন হবে সেটি আপনি জানেন না। সবচেয়ে বড় কথা আপনি যে প্রবীণ হবেনই হবেন তথা আপনার হায়াত ততদিন থাকবে এই নিশ্চয়তা কে দেবে
তাই  সময়কে ব্যবহার করুন; পুঁজি সঞ্চয় করুন। 

No comments:

Post a Comment