Sunday, November 26, 2017

Figs are good for Health

Figs are among the oldest fruits consumed by humans. Below you’ll find 30 health benefits of the humble fig.
1. Prevents Constipation
2. Lower Cholesterol Levels
3. Prevent Coronary Heart Disease
4. Prevents Breast Cancer
5. Controls diabetes
6. Treat Bronchitis
7. Strengthen Bones
8. Relieve Throat Pain
9. Promote Hair Growth
10. Condition Hair
11. Make Your Skin Soft And Supple
12. Cure Boils And Warts
13. Rejuvenate Your Skin
14. Prevent Wrinkles 
15. Boost up Immune System
16. Keep Insomnia At Bay 
17. A Good Source Of Energy
18. Treat Piles
19. Effective Natural Laxative
20. Improve Liver Health
21. Prevent Macular Degeneration of Retina
22. Prevent Venereal Disease
23. Treat Asthma
24. Increase Sexual Stamina
25. Rich In Antioxidants
26. Strengthen Bones
27. Prevent Breast Cancer
28. Prevent Colon Cancer
29. Cure Anemia
30.Enhance Digestive Health

রাসুলাল্লাহ সা. এঁর মুবারক চেহারা

হালকা গড়ন, চওড়া কাঁধ, প্রশস্ত বক্ষ, সবল মেরুদন্ড, স্বাস্থ্যবান, শক্তিশালী
এবং সুঠাম  সুন্দর দেহ। মাঝারী উচ্চতা, ঈষত কোঁকড়ানো ঘন কালো চুল গুচ্ছাকারে কাঁধ অব্দি ছুঁয়ে যেতো্। পরিণত বয়সেও মাত্র গোটা বিশেক পাকা চুল মাথায় দেখা গেছে। মুখমন্ডল ছিল ডিম্বাকার। প্রশস্ত ও উঁচু কপালের নীচে সুন্দর ও সুদীর্ঘ বাঁকানো বাঁকানো ভ্রুযুগল। গভীর কালো চোখদুটো টানা দীপ্তিময়। নাকটি বড় আকারের ঈগল পাখীর ঠোঁটের মত। তাঁর বাঁকানো দাঁত ছিল সুগঠিত আর ঝকঝকে সাদা। মুখ জুড়ে পৌরুষদীপ্ত শ্মশ্রু(দাড়ী)। গায়ের ত্বক ছিল স্বচ্ছ ও কোমল আর রঙ ছিল উজ্বল রক্তিমাভ গোলাপী। ঘাম দেখা দিলে তা মুক্তার মত আভা ছড়াতো। হাত দুটো ছিল রেশম কোমল মোলায়েম। পদক্ষেপ ছিল দৃঢ় ও স্প্রিংয়ের মত স্থিতিস্থাপক। যখন হাঁটতেন তখন মনে হতো তিনি কোন উঁচু জায়গা থেকে নীচে নামছেন। যখন মুখ ঘোরাতেন তখন গোটা শরীরটাকেই ঘোরাতেন। তাঁকে দেখে মনে হতো সদা চিন্তাশীল, ধ্যানমগ্ন এবং গম্ভীর-একই সাথে সবসময়ই সচেতন। তিনি হাসতেন কিন্তু সেই হাসি কখনোই মুচকী হাসির সীমা ছড়িয়ে যেত না।
সূত্রঃ দি বেনিফ্যাক্টরঃ লেখক সৈয়দ ওয়াহিদ উদ্দিনঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত 

আল কুরআনের স্পষ্ট কথা

সূরা আল লাইল আয়াত ০৪-১১
আসলে তোমাদের প্রচেষ্টা নানা ধরনের৷
কাজেই যে (আল্লাহর পথে) ধন সম্পদ দান করেছে
(আল্লাহর নাফরমানি থেকে) দূরে থেকেছে  
এবং সতবৃত্তিতে সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তাকে আমি সহজ পথের সুযোগ - সুবিধা দেবো৷
আর যে কৃপণতা করেছে, আল্লাহ থেকে বেপরোয়া হয়ে গেছে
এবং সতবৃত্তিকে মিথ্যা গণ্য করেছে
তাকে আমি কঠিন পথের সুযোগ - সুবিধা দেবো৷
আর তার ধন - সম্পদ তার কোন কাজে লাগবে যখন সে ধবংস হয়ে যাবে?
সতবৃত্তি এক ধরনের মানবিক প্রচেষ্টা মানুষ যেন অর্থ লিপ্সায় ডুবে না যায়৷ অর্থ - সম্পদ, যে পরিমাণ আল্লাহ তাকে দিয়েছেন, তা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অধিকার আদায়ে, সতকাজে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে সাহায্য করার কাজে ব্যয় করে৷তার মনে যেন আল্লাহর ভয় জাগরুক থাকে৷ সে যেন নিজের যাবতীয় কর্ম , আচার - আচরণ , সামাজিক , অর্থনৈতিক ইত্যাদি জীবনের প্রতিটি বিভাগে আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে এমন প্রত্যেকটি কাজ থেকে দূরে থাকে।সে যেন সতবৃত্তি সতকাজের সত্যতার স্বীকৃতি দেয়৷ কৃপণতাও এক ধরনের মানবিক প্রচেষ্টা। কৃপণতা মানে শুধুমাত্র প্রচলিত অর্থে যাকে কৃপণতা বলা হয় তা নয় অর্থাত এক একটি পয়সা গুণে গুণে রাখা, খরচ না করা, না নিজের জন্য, না নিজের ছেলেমেয়ের জন্য৷ বরং এখানে কৃপণতা বলতে আল্লাহর পথে এবং নেকী কল্যাণমূলক কাজে অর্থ ব্যয় না করা বুঝাচ্ছে
কঠিন পথের সুযোগ - সুবিধা বলার কারণ হচ্ছে এই যে, পথে যে পাড়ি জামাতে চায় সে যদিও বৈষয়িক লাভ, পার্থিব ভোগ - বিলাস বাহ্যিক সাফল্যের লোভে দিকে এগিয়ে যায় কিন্তু এখানে সর্বক্ষণ তাকে নিজের প্রকৃতি, বিবেক, বিশ্ব জাহানের স্রষ্টার তৈরি করা আইন এবং তার চার পাশের সমাজ পরিবেশের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে হয়৷

তার ধন-সম্পদ তার কোন কাজে লাগবেনা মানে হচ্ছে একদিন তাকে অবশ্যি মরতে হবে৷ তখন এখানে আয়েশ আরামের জন্য সে যা কিছু সংগ্রহ করেছিল সব এই দুনিয়াতেই রেখে যেতে হবে৷

Monday, November 13, 2017

সময়: বিনিয়োগ বনাম ব্যয়

যদি দুশ্চিন্তা করে সময় কাটাও তবে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি নিজের উন্নতির জন্য সময় কাটাও সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি গসিপ বা খোশগল্পে সময় দাও সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি ভাল কিছু করবার জন্য সময় দাও তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি কোন কিছুর কারণ খুঁজতে থাকো আর সেটা যদি না পাও তবে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি সঠিক কোন কারণ খুঁজতে সময় দাও তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি অন্যের দোষ খোঁজার জন্য সময় ব্যয় করো তাহলে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি কাউকে সঠিক করার জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি অন্যের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি সম্মান অর্জনের জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি অন্যকে বদলে দেওয়ার জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি নিজেকে বদলে ফেলার জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি প্রতিশোধের নেশায় সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা
যদি ক্ষমা করে দেয়ার মানসে সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

যদি তুমি নিজের ভুলগুলো গ্রহন করার জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে বৃথা সময় ব্যয় করা

যদি তোমার নিজের ভুলগুলো শুধরে নেয়ার জন্য সময় ব্যয় করো তবে সেটা হবে সময়ের বিনিয়োগ

Saturday, November 11, 2017

জিকির বিষয়ে আল কুরআন ও আল হাদীস কি বলে?

জিকির অর্থ আল্লাহর স্মরণ। সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হচ্ছে কুরআন তিলাওয়াত। যিনি কুরআন বুঝে পড়ে  আর সে মতো জীবনযাপন করার চেষ্টা করেন তিনিই সহিহ জিকির করনেওয়ালা বলে বিবেচিত। জিকির সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “হে নবী!তোমার রবকে স্মারণ করো সকাল-সাঁঝে মনে মনে কান্নাজড়িত স্বরে ও ভীতি বিহ্বল চিত্তে এবং অনুচ্চ কণ্ঠে৷ তুমি তাদের অন্তরভুক্ত হয়ো না যারা গাফলতির মধ্যে ডুবে আছে৷”-সূরা আর ‘আরাফ- আয়াত ২০৫
‘(হে নবী), আমার কোনো বান্দা যখন তোমাকে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে (তুমি তাকে বলে দিয়ো) আমি (তার একান্ত) কাছেই আছি; আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিই যখন সে আমাকে ডাকে। (সূরা আল বাকারা: ১৮৬)
‘(হে নবী), চিতকার করে নামাজ পড় না, আবার তা অতিশয় ক্ষণভাবেও নয়, বরং (নামাজ পড়ার সময়) ও দুয়ের মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করো।’ (সূরা বনী ইসরাঈল: ১১০)

সহিহ বোখারি ও মুসলিম শরীফে আবু মূসা আশয়ারী রা: থেকে বর্ণিত, লোকেরা কোনো এক সফরে সুউচ্চকণ্ঠে দোয়া করলে নবী সা: তাদেরকে বললেন- হে লোকেরা! তোমরা স্বাভাবিক মৃদুকণ্ঠে তা করো! কেননা তোমরা কোনো বধির বা অনুপস্থিত সত্তাকে ডাকছো না। তোমরা যাঁকে ডাকো তিনি নিকটতম শ্রোতা।

সুতরাং, যেখানে আল্লাহ পাক কুরআনে অনুচ্চ স্বরের জিকিরের কথা বলেছেন, সেখানে উচ্চ স্বরে জিকির করার সুযোগ কোথায় থাকে সে প্রশ্ন বর্তমান যুগের সচেতন মানুষের কাছে।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে দরকার পরিবর্তন

সংকল্প রাখতে যাদের কষ্ট হয় তাঁদের জন্য চাই ছোট ছোট পরিবর্তনঃ
কিছু প্রতিশ্রুতি, কিছু সংকল্প নিজে করুন। মেনে চলুন। সুস্থ, সরল, সজীব হয়ে বাঁচার পথ তো প্রশস্ত হবে। মানছেন তো? তাহলে কয়েকটি নিয়ম পালন করুন। পারবেন অবশ্য। সংকল্প কেবল নয়, মানতে হবে কিছু। খুব সহজ, করেই দেখুন। যাঁরা ধূমপান করছেন। ধূমপান ছাড়ুন। যাঁরা তামাক, জর্দা, গুল চিবান তাঁরাও ছাড়ুন। ধূমহীন তামাকও কম খারাপ নয়। নিজের ক্ষতি করছেন, আবার পাশে যে শিশু, স্বজন, আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব থাকেন তাঁদেরও ক্ষতি করছেন। খুব অন্যায় কাজ। ভাবুন। ছেড়ে দিন। দুম করে ছেড়ে দিন। প্রথমে ক’দিন একটু খারাপ লাগবে, এরপর দেখবেন সয়ে যাবে। আপনি হয়ে উঠবেন সুস্থ, সবল, সুরভিত। সবার হবেন প্রিয়। এদিকে ক্যান্সারের মতো ভয়ংকর রোগ পারবেন ঠেকাতে।
কম খাবেন, তবু থাকবেন সতেজ, সজীব, সবল। খাবার প্লেট হবে নয় ইঞ্চি ব্যাসের। তিনটি ভাগ থাকবে। এক অর্ধেকে থাকবে মৌসুমি শাকসবজি, রঙিন। এক-চতুর্থাংশে শর্করা, (ভাত, গমের রুটি) অপর চতুর্থাংশে আমিষ। মাছ, কচি মোরগ, ডিম। এক গ্লাস দুধ। একটি ফল। সামান্য তেল। প্রচুর পানি পান। দুধ, ফল খেতে পারেন স্ন্যাকসের সময়। খাবার প্লেট হবে ছোট এবং রঙিন। মনোযোগ দিয়ে খাবেন। সময় লাগিয়ে। ভালো করে চিবিয়ে। দেখবেন ভালো হজম হবে। প্রাতরাশ বা ব্রেকফাষ্ট হবে ভারী। দুপুরের খাবার এর চেয়ে কম। রাতের খাবার হালকা। সকালে খাবেন মহারাজের মতো। দুপুরে যুবরাজের মতো। রাতে কাঙালের মতো। তিনটি বেলা খাবার। দুটো নাশতা। নাশতা মানে একটি ফল। দুটো ক্র্যাকারস বা এক গ্লাস দুধ। খাবার হবে পরিমিত, সুষম। ‘চিনি কম খান, নুন কম খান, রেস্তোরাঁয় যাওয়া কমান, ঘরের রান্না করা খাবার হোক পছন্দ’ নতুন বছরের সংকল্প—ব্যায়াম করুন। যাঁরা শুরু করেননি, তাঁরাও শুরু করুন। সহজ ব্যায়াম হাঁটা। সপ্তাহের পাঁচটি দিন কেবল আধঘণ্টা জোরে হাঁটুন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাঁটলে বন্ধন আরও মজবুত হবে। বন্ধুদের নিয়েও হাঁটতে পারেন। মজা পাবেন।
দৈনন্দিন কাজেও সক্রিয়তা যোগ করুন। সিঁড়ি বেয়ে হাঁটুন। হেঁটে বাজারে যান। গাড়ি পার্ক দূরে করে হেঁটে অফিসে যান। সাঁতার কাটুন। সাইকেল চালান। মেয়েদের জন্য ভালো ব্যায়াম দড়ি লাফ। এ ছাড়া একটু ভারোত্তোলন। বেশি ওজন নয়, এমন ভার তুলুন। আর দিনের যেকোনো সময় পাঁচবার সম্ভবত উঠবস। সকালে উঠে খালি পেটে দুই গ্লাস জল। লেবুজল খেলে আরও ভালো। এরপর শ্বাসক্রিয়ার ব্যায়াম। পেট ফুলিয়ে শ্বাস নিন আর ছাড়ুন। ১০বার, শরীর হবে সতেজ। “যোগ” চমতকার ব্যায়াম-“নামাজ”ও ভাল। নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। আট ঘণ্টা, সকাল সকাল শুতে যাবেন, সকাল সকাল উঠবেন। ঘুমের ঘর হবে শীতল, অন্ধকার, কেবলই শয্যা, হালকা সংগীত, সবচে ভাল হয়ে গভীর মনযোগ দিয়ে ধর্ম গ্রন্থের ২টো লাইন ভাল করে ভাল করে বুঝে পড়লে। কোনো টিভি নয়, কোন ট্যাবলেট নয়, কোন কম্পিউটার নয়, নয় কোন ফেসবুক।
প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করুন। স্বেচ্ছাসেবী যেকোনো কাজ। বন্ধুকে ফোন করুন। সপ্তাহে এক দিন আড্ডা। ছোটবেলার বন্ধুদের নিয়ে। একদিন পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া। এই তো মাত্র নিয়ম। খুব বেশি হলো? সংকল্প করেই দেখুন। সব ক’টি না হোক, দু-একটি? অন্তত মাসের শেষে বা বছর শেষে বলতে পারবেনতো, কেমন ভালো বোধ করছেন? কেমন আছেন? ভালো আছি। সত্যি করে বলতে পারা, কম কাজের হলো?

সূত্রঃ ডা.শুভাগত চৌধুরী

Thursday, November 9, 2017

আর কুরআন ও মানব প্রকৃতি

মানুষ অকৃতজ্ঞ এক জাতি: আল কুরআন কী বলে?
আল্লাহ মানুষ থেকে কী আশা করেন! আল্লাহ আশা করেন যে মানুষ সব সময় আল্লাহর শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) আদায় করবে। বিষয়ে বেশ কয়েকটি আয়াত আছে-
* আর আল্লাহ তোমাদের মাতৃগর্ভ থেকে এমন অবস্থায় বের করেছেন যে তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদের শোনার জন্য কান দিয়েছেন, দেখার জন্য চোখ দিয়েছেন এবং তোমাদের দিয়েছেন একটি দিল, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা বা শোকর প্রকাশ করতে পার। (সুরা নাহল : ৭৮)
* আর তিনি তোমাদের দিয়েছেন চোখ, কান হৃদয়। তোমরা (মানুষেরা) এর জন্য খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (সুরা সাজদা : )
* আর আমি তো তোমাদের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং তার মধ্যে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থাও করেছি। তোমরা খুব অল্পই কৃতজ্ঞতা আদায় করো। (সুরা আরাফ : ১০)
* তিনিই (আল্লাহ) তোমাদের কান, চোখ মন দিয়েছেন (অথচ) তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকো। (সুরা মুমিনুন : ৭৮)
* তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন আর তোমাদের দিয়েছেন দেখা শোনার শক্তি এবং একটি অন্তর। অথচ তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (সুরা মূলক : ২৩)
* তুমি কি তাদের দেখনি, যারা মৃত্যুভয়ে হাজারে হাজারে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। ...পরে তিনি (আল্লাহ) তাদের জীবিত করেছিলেন। আল্লাহ (সব সময়) মানুষকে অনুগ্রহ করে থাকেন। অথচ মানুষদের মধ্যে অনেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। (সুরা বাকারা : ২৪৩)
* যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা বানায়, কিয়ামতের দিন সম্পর্কে তারা কী জানে। আল্লাহ তো মানুষকে অনুগ্রহই করেন। কিন্তু মানুষের বেশির ভাগই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। (সুরা ইউনূস : ৬০)
আয়াতগুলো অনেকটা ইতিবাচক শব্দ হিসেবে পবিত্র কোরআনে উল্লিখিত হয়েছে। আবার ইতিবাচক নেতিবাচকের মাঝামাঝিও অনেক আয়াত বিষয়ে রয়েছে। যেমন-
* আমি তাকে (মানুষকে) পথের নির্দেশ দিয়েছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে। (সুরা দাহর : -),
* ... তিনি (আল্লাহ) তোমাদের তাঁর কিছু নিদর্শন দেখাতে পারেন। প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। (সুরা লোকমান : ৩১-৩২)
* ... আল্লাহ কি কৃতজ্ঞ লোকদের সম্বন্ধে ভালো করে জানেন না? সুরা আনআম : ৫৩) তবে পবিত্র কোরআনে মানুষের 'শুকরিয়া' চরিত্র বিষয়ে বেশির ভাগই নেতিবাচক অর্থাৎ মানুষ যে 'অকৃতজ্ঞ' চরিত্রের, সেই ভাষ্যটিই বেশি ফুটে উঠেছে :
* মানুষ তো তার প্রতিপালকের প্রতি অকৃতজ্ঞ। (সুরা আদিয়াত : )
* নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল। কিন্তু (মানুষের) অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ। (সুরা নমল : ৭৩)
* মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ। (সুরা বনি ইসরাইল : ৬৭)
* যদি আমি মানুষকে আমার দয়া দেখাই এবং পরে (কখনো) এই দয়া থেকে বঞ্চিত থাকে, তখনই সে হতাশ অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে। (সুরা হুদ : )
* আমি (আল্লাহ) যখন মানুষকে দয়া দেখাই, তখন সে খুব আনন্দিত হয়ে পড়ে। আর যখন নিজের কৃতকর্মে তার বিপদ ঘটে, তখন মানুষ হয়ে পড়ে অকৃতজ্ঞ। (সুরা শূরা : ৪৮)
* মানুষ (আল্লাহর) বান্দাদের মধ্য থেকে কাউকে কাউকে তাঁর (আল্লাহর সত্তার) অংশ গণ্য করে থাকে। মানুষ তো স্পষ্টই অকৃতজ্ঞ। (সুরা জুখরুফ : ১৫)
* তিনি (আল্লাহই) তো তোমাদের জীবন দান করেছেন। তারপর তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। আবার তিনিই তোমাদের জীবিত করবেন। মানুষ খুবই অকৃতজ্ঞ। (সুরা হজ্জ : ৬৬)
অকৃতজ্ঞ মানুষের জন্য আল কুরআনের বার্তা
মানুষ আল্লাহর অনুগ্রহের পরও অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়লে আল্লাহর মনোবেদনার কারণ ঘটে। তখন তার জন্য রয়েছে আল্লাহর কাছ থেকে সমূহ বঞ্চনা, শাস্তি গজব। আল্লাহপাক বলেছেন-
* আমি অকৃতজ্ঞ ছাড়া আর কাউকে শাস্তি দিই না। (সুরা সাবা : ১৭)
* তোমরা (মানুষরা) অকৃতজ্ঞ হলে জেনে রাখো, আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি তাঁর বান্দাদের অকৃতজ্ঞতাকে পছন্দ করেন না। (সুরা জুমার : )
* মনে রেখ... তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদের প্রতি নেয়ামত আরো বাড়বে আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠিন। (সুরা ইব্রাহিম : )
* ... তোমাদের যা প্রয়োজন, তিনি (আল্লাহ) তোমাদের তা দিয়েছেন। তোমরা আল্লাহর দানকে গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। অকৃতজ্ঞ মানুষ অতিমাত্রায় সীমালঙ্ঘনকারী। (সুরা ইব্রাহিম : ৩৪)
* আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করেন। তিনি কোনো বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে ভালোবাসেন না। (সুরা হজ্জ : ৩৮)
* মানুষ কি মনে করে যে তাকে এমনি এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে? সে কি স্খলিত শূক্রবিন্দু ছিল না? (সুরা কিয়ামা : ৩৬)
* তোমরা (মানুষরা) কি মনে করো যে আল্লাহ তোমাদের এমনি ছেড়ে দেবেন? (সুরা তওবা : ১৬)
* সে (মানুষ) কি মনে করে যে কেউ কখনো তাকে কাবু করতে পারবে না? ...সে কি মনে করে যে তাকে কেউ দেখেনি? আমি তাকে কি দুটো চোখ, জিহ্বা আর ঠোঁট দিইনি? দুটো পথই কি আমি তাকে দেখাইনি? (সুরা বালাদ : -১১)
* যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে তারা আমার আয়ত্তের বাইরে থেকে যাবে? (সুরা আনকাবুত : )
* ... মানুষ তা- পায়, যা সে করে। তার কাজের পরীক্ষা হবে, তারপর তাকে পুরো প্রতিদান দেওয়া হবে। (সুরা নাজম : ৩৯-৪১)
এরপর আল্লাহ তায়ালা সরাসরি শাস্তির প্রকৃতি কী হবে, তাও মানুষকে জানান দিয়ে রাখছেন। আল্লাহ বলছেন,
* 'আমি অকৃতজ্ঞদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি শেকল বেড়ি এবং লেলিহান আগুনের শিখা।' (সুরা দাহর : )
* অকৃতজ্ঞ অবস্থায় তুমি কিছুকাল জীবন উপভোগ করে নাও, তুমি হবে একজন জাহান্নামী। (সুরা জুমার : )
* ... তোমাদের একদল প্রতিপালকের শিরক করে ... ভোগ করে নাও শিগগিরই জানতে পারবে। (সুরা নাহল : ৫৫)
* ... এভাবে আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে প্রতিফল দিয়ে থাকি। (সুরা ইউনুস : ১৪)
* (সে) মানুষ ধ্বংস হোক যে এত অকৃতজ্ঞ। (সুরা আবাসা : ১৭)
মানব চরিত্রে সুবিধাবাদ: আল কুরআন বী বলে?
মানুষের চরিত্রের একটি বড় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আছে যে মানুষ খুব দ্রুত তার অবস্থান বদল করে। যখন বিপদ-আপদে পড়ে, তখন এক রকম কথা বলে আবার বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে গেলে তার আসল চরিত্র প্রকাশ পায়। মানুষের এই সুবিধাবাদী চরিত্র সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে প্রচুর আয়াত রয়েছে। যেমন-
. সে (মানুষ) যখন বিপদে পড়ে, তখন সে খুব হা-হুতাশ করে। আর যখন তা কেটে যায়, তখন সে কৃপণ হয়ে যায়। (সুরা মা'আরিজ : ২০-২১)
. সমুদ্রের মাঝখানে যখন তোমরা বিপদে পড়ো, তখন তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য যাদের ডাকো তাদের ভুলে যাও। তারপর যখন আল্লাহ তোমাদের সৈকতে এনে উদ্ধার করেন, তখন তোমরা আল্লাহর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। (সুরা বনি ইসরাইল : ৬৭)
. মানুষ যখন কষ্টের সম্মুখীন হয়, তখন শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে আমাকে (আল্লাহকে) ডাকতে থাকো। যখন সে কষ্ট চলে যায়, তখন মানুষ এমন একটা ভাব করে, যেন সে কখনো আমাকে ডাকেইনি। (সুরা ইউনুস: ১২)
. তারা যখন নৌকায় ওঠে... এবং যখন এর ওপর ঝড়ো বাতাস বইতে থাকে... তখন তারা আল্লাহকে ডেকে বলে, 'তুমি এর থেকে আমাদের বাঁচাও, আমরা শোকর বান্দা হব' তারপর তাদের আল্লাহ যখন বাঁচিয়ে দেন তখন তারা আবার অনাচার করতে থাকে। (সুরা ইউনুস : ২১-২৩)
. যদি তার (মানুষের) ওপর আপতিত দুঃখ-কষ্টের পরে তাকে সুখ-ভোগ করাই, তখন সে বলতে থাকে আমার বিপদ দূর হয়ে গেছে। তখন (মানুষ) আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় এবং অহংকার করে। (সুরা হুদ : -১১)
. ধৈর্যশীল মানুষের জন্য... নির্দশন রয়েছে। যখন সমুদ্রের ঢেউ মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঢেকে ফেলে, তখন মানুষ 'আল্লাহ আল্লাহ' বলে ডাকতে থাকে। ... যখন (আল্লাহ) তাদের সৈকতে ফিরিয়ে এনে উদ্ধার করেন, তখন দেখা যায় কোনো কোনো মানুষ সরলপথে চলে। (সুরা : লোকমান : ৩১-৩২)
. মানুষকে যখন দুঃখদৈন্য স্পর্শ করে, তখন সে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। এরপর আল্লাহ যখন তাকে দয়া করে তখন মানুষ ভুলে যায় যে বিপদে পড়ে সে এর আগে আল্লাহকে ডেকেছিল। (সুরা জুমার : )
. মানুষ কষ্টের সময় আমাকে (আল্লাহকে) ডাকে। যখন আল্লাহর অনুগ্রহে কষ্ট থেকে মুক্তি লাভ করে, তখন (মানুষ) বলতে থাকে সে নিজের চেষ্টায়ই থেকে মুক্তি লাভ করেছে। (সুরা জুমার : ৪৯)
. ধন-সম্পদ প্রার্থনার জন্য মানুষের কোনো ক্লান্তি থাকে না। ... যখন আমি তাকে দয়া করে সুখের স্বাদ দিই, তখন মানুষ বলতে থাকে- 'এটা তো আমার প্রাপ্যই ছিল। আমি তো মনে করি না কিয়ামত বলে কিছু আছে। ... আবার যখন মানুষ বিপদে-আপদে অমঙ্গলে পড়ে যায়, তখন আবার দীর্ঘ প্রার্থনায় বসে যায়।' (সুরা হা-মিম-সাজদা : ৪৯-৫১)
১০. ওরা (মানুষ) যখন পানিপথে চলতে থাকে, তখন পবিত্র মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। আর আমি (আল্লাহ) যখন তাদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিই, তখন মানুষ শিরক করা শুরু করে। আর এভাবেই মানুষ আমার (আল্লাহর) দান অস্বীকার করে। (সুরা আনকাবুত : ৬৫-৬৬)
১১. আল্লাহ যখন মানুষকে দয়া এবং সম্মানিত করেন, তখন মানুষ বলে আমার আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন। আর যখন আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য উপকরণ কমিয়ে দেন, তখন মানুষ বলতে থাকে, আল্লাহ আমাকে হেয় করে দিয়েছেন। (সুরা ফাজর : ১৫-১৬)
আল্লাহর কাছে মানুষের মর্যাদা
বাস্তবিক এই যে মানুষের এসব নেতিবাচক দিক পবিত্র কোরআনে নানাভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর কথা সত্যও যে এই নেতিগুণ প্রবণতা মানুষের মাঝে বেশি করেই আছে। কোরআনে মানুষের এই নেতিগুণের উল্লেখের আসল তাতপর্য হলো, মানুষ যাতে এর থেকে সাবধানে থাকে। কারণ 'মানুষ তো ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থানে আছে' (সুরা আসর : )
অবশ্য মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কথাও কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। সুরা বাকারায় একটি আয়াতই জন্য যথেষ্ট যে আল্লাহ তায়ালা ব্যাপারে সনদ দিচ্ছেন যে... 'এমন মানুষও (আল্লাহর রাজ্যে) আছে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যারা জীবন সমর্পণ করে দিতে পারে। (সুরা বাকারা : ২০৭)
তাই মানুষ হলো এই জমিনে আল্লাহ তায়ালার খলিফা বা প্রতিনিধি। (সুরা ফাতির : ৩৯)
শুধু তাই নয়, আকাশ পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষের অধীন করে দিয়েছেন। (সুরা লুকমান : ২০)

এসব আয়াতের উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে মানুষের মর্যাদা অনেক বড়। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ তো আল্লাহ তায়ালার কাছে অলংকৃত হয়েই আছে। (শেষ)
রেফারেন্স: ড. আবদুল হান্নান