Friday, December 30, 2022

কতটুকু নুন খাবেন?

 খাবার লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। সোডিয়াম শরীরের জন্য জরুরি এক উপাদান। শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে, স্নায়ু ও পেশির স্বাভাবিক কাজ চলমান রাখতে সোডিয়াম চাই ঠিকঠাক। তবে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম দেহের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্‌রোগ, কিডনির রোগ, পাকস্থলীর ক্যানসার এবং হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিদিন ঠিক কতটা লবণ গ্রহণ করা উচিত, তার হিসাবটা জানা থাকা প্রয়োজন।

প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ২ হাজার ৩০০ মিলিগ্রামের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। এক চা–চামচ লবণে থাকে ২ হাজার ৩২৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। অর্থাৎ রোজ লবণ খেতে পারবেন এক চা–চামচেরও কিছুটা কম পরিমাণে। রান্না করা খাবারে থাকা স্বাভাবিক মাত্রার লবণ দিয়েই রোজকার সোডিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এর থেকে বেশি লবণ গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। তাই যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:
পাতে বাড়তি লবণ নেবেন না। খাবার টেবিলে লবণের পাত্রও রাখবেন না। রান্নায় অতিরিক্ত লবণ দেবেন না।
লবণ খাবারের স্বাদ বাড়ায়। ফলমূল, সালাদ প্রভৃতি আমরা অনেক সময়ই লবণ দিয়ে খাই। এমন অভ্যাস পরিত্যাজ্য। বরং খাবারকে সুস্বাদু করে তুলতে নানা রকম মসলা, লেবু বা অন্যান্য টক ফলের রস, টাটকা বা শুকনা তৃণ (যেমন ধনেপাতা) প্রভৃতি ব্যবহার করতে পারেন।
রান্নার অনেক পদেই (স্যুপ, স্ট্যু, এমনকি মূল খাবারেও) চাইলে লবণের মাত্রা একটু কমিয়ে দেওয়া যায় (স্বাদ বাড়ানোর বিকল্প পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়)। রেস্তোরাঁয় খেতে গেলেও ফরমাশ দিতে পারেন, যাতে খাবারে লবণের মাত্রা কম রাখা হয়।
সস বা কেচাপ, সয়া সস, পনির, মেয়োনিজ, চিপস, চানাচুর, কাসুন্দি, শর্ষে—সব কটিতেই সোডিয়াম ভরপুর। তাই এগুলো কম খাওয়াই ভালো। ইনস্ট্যান্ট নুডলস, সল্টেড বাটার বা লবণসমৃদ্ধ মাখন, নোনতা বিস্কুট, খোলসযুক্ত মাছ বা প্রাণী, শুঁটকি এবং লবণ দিয়ে সংরক্ষিত অন্যান্য খাবারও (যেমন টিনজাত খাবার) এড়িয়ে চলা উচিত। হট ডগ, সসেজ প্রভৃতিতেও লবণের মাত্রা তুলনামূলক বেশি।
খাদ্য বা খাদ্য উপকরণ কেনার সময় প্যাকেটে লেখা সোডিয়ামের মাত্রা দেখে নিন (এমনকি পাউরুটিতেও)। তাহলে হিসাব করে সোডিয়াম গ্রহণ সম্ভব হবে। বেকিং পাউডার ও বেকিং সোডায় কিন্তু লবণ থাকে। তাই এগুলো দিয়ে তৈরি খাবারও হিসাব করে খেতে হবে। সোডিয়াম নানা রাসায়নিক নামে থাকতে পারে (যেমন মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট)। প্রতি প্যাকেটে কতটি পরিবেশন (সারভিং) হবে, সেটিও লেখা থাকে। প্রতি পরিবেশনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম থাকলে তা একেবারে না কেনাই ভালো।
কেউ কেউ একটু নোনা স্বাদ না হলে খাবার খেতে পারেন না। এমন ব্যক্তি খুব অল্প অল্প করে খাবারে লবণের মাত্রা কমিয়ে আনার অভ্যাস করতে পারেন।
সূত্র: প্র স্বাস্থ্য

মরিচ যখন লড়াইয়ের হাতিয়ার

 প্রাণিজগতের ওপর মানুষের আধিপত্যের অনেক কারণের একটি হলো হাতিয়ার তৈরির ক্ষমতা। যেদিন মানুষ হাতিয়ার আবিষ্কার করেছে, সেদিন থেকেই সে হাতির চেয়ে শক্তিধর ও চিতার চেয়ে গতিশীল। যদিও এ শক্তি ও গতিকে কেবল নিজের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করেনি মানুষ, করেছে শত্রুকে ঘায়েল করতেও। বস্তুত কাউকে আঘাত করা যায়, এমন যেকোনো কিছুই মানব ইতিহাসে ব্যবহূত হয়েছে অস্ত্র হিসেবে। ফলে খাবার টেবিলের উপাদেয় মরিচটারও টেবিল ছেড়ে যুদ্ধের মাঠে যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।

১৪৯৪ সাল। আমেরিকার স্থানীয় তাইনো জনগণের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে উপনিবেশ বিস্তারকারী দেশ স্পেন। প্রথম দিকে সাদাসিধা বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও ক্রমে তা নেতিবাচক দিকে মোড় নিতে থাকে। নিজেদের অযোগ্যতায় সৃষ্টি হওয়া সংকটের সমাধানে তারা হামলে পড়ে তাইনো জনগোষ্ঠীর গুদামগুলোয়। শান্ত মানুষ হিসেবে পরিচিত তাইনো জনগণ। এমনকি কলম্বাসও তাদের সততা ও দয়ার্দ্রতার প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি নিজের ডায়েরিতে। কিন্তু যুদ্ধ তো যুদ্ধই। স্প্যানিশদের ইস্পাতের তরবারির সঙ্গে টক্কর দেয়ার মতো কোনো অস্ত্র নেই তাইনোদের। তাই বলে কি দখলদারের হাতে ছেড়ে দেবে পরিস্থিতি? তারা দেখাল নতুন অস্ত্রের সন্ধান, এর আগে যার সঙ্গে পরিচিত নয় স্প্যানিশ শিবির। লাউয়ের খোলসের ভেতর ছাইয়ের সঙ্গে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে ছড়িয়ে দেয়া হলো বাতাসে। পরিণামে যেটা প্রত্যাশিত, সেটাই ঘটেছে। মরিচের সে গুঁড়া গিয়ে লাগল স্প্যানিশ সৈন্যদের চোখ ও ঠোঁটে। কেউ অন্ধ হয়ে গেল, কেউ পড়ে থাকল নিশ্বাস বন্ধ হয়ে। হঠাৎ হতভম্ব হয়ে যাওয়া বাকি সেনাদের জন্য তখন এগিয়ে এসেছে তাইনো আক্রমণকারী। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে না পারলেও মরিচই তৈরি করেছিল ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের দেয়াল। লাউয়ের খোলসের মধ্যে পানি ও মরিচ দিয়ে বোমা বানানোর কৌশল আদি আমেরিকার অন্যান্য সংস্কৃতিতেও দেখা যায়। সে বোমা শত্রুশিবিরে নিক্ষেপ করত অ্যাজটেক ও মায়া সভ্যতার যোদ্ধারা। পানির মধ্যে মরিচ সক্রিয় হয়ে উঠত। সে সক্রিয় উপাদানের মিশেলে তৈরি হওয়া বোমা নিক্ষেপ করার সঙ্গে সঙ্গে ঘটত বিস্ফোরণ। নির্গত হতো ক্ষতিকর গ্যাস। শত্রু শিবির সামনে এগিয়ে আসবে কী! নিশ্বাস নিতে না পেরেই কাবু হয়ে যেত মুহূর্তের মধ্যে। তবে যেখানে এভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চর্চা ছিল না, তারাও পিছিয়ে থাকেনি। সে সংস্কৃতিতে চর্চিত হয়েছে অন্য ঐতিহ্য। মরিচ পুড়িয়ে তার ধোঁয়া প্রবাহ করে কাবু করা হয়েছে শত্রুপক্ষকে। ঔপনিবেশিক পর্তুগিজরা ব্রাজিল ও পেরুতে অভিযান চালানোর সময় এ অদ্ভুত যুদ্ধনীতির সাক্ষী হয়। বিশেষ করে পেরুতে থাকা ইনকা জনগণের মধ্যে মরিচের এ ব্যবহারে মুনশিয়ানা ছিল।
রণাঙ্গনে প্রথম কখন মরিচ নেমেছিল, লিখিত ইতিহাসে তার নিশানা নেই। ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের সময় আদি আমেরিকানরা দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছে মরিচ। ফলে এ কথা দাবি করলে মোটেও ভুল হবে না, ইউরোপীয়রা প্রবেশেরও বহু আগে থেকেই মরিচের সামরিক ব্যবহার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল স্থানীয় জনগণের মাঝে। ১৪৫০-এর দশকেই অ্যাজটেক সাম্রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। বিদ্রোহ করে মূলত কুয়েত লাক্সমান শহরের কয়েকজন গোত্রপতি ও মানুষ। স্থানীয় গভর্নরকে হত্যা করে ফেলে তারা। যথারীতি খাজনার সময় সম্রাট মন্তেজুমার (১৩৯৮-১৪৬৯ খ্রিস্টাব্দ) দরবার থেকে দূত আসে। চুপ করে তাদের আপ্যায়ন করলেন গোত্রপতিরা, যেন কিছুই ঘটেনি এখানে। অঘটন ঘটল রাতে। স্থানীয় গোত্রপতিরা প্রথমে একত্র হলেন। তারপর যে কক্ষগুলোয় খাজনা আদায়কারী দূতেরা ঘুমে বিভোর, সে কক্ষগুলোর বাতাস চলাচল বন্ধ করার ব্যবস্থা করলেন। খুব সাবধানে আগুন দিলেন মরিচের স্তূপে। মরিচপোড়া ধোঁয়া প্রবেশ করল কক্ষে। ঘুমন্ত দূতেরা খুব দ্রুতই ঘুমিয়ে পড়ে চিরতরে। জানা ইতিহাসে প্রথম গ্যাস চেম্বারের উদাহরণ হিসেবে এ মরিচের ব্যবহারকে সামনে আনা যেতে পারে। অবশ্য ছোটখাটো শাস্তিদানের ক্ষেত্রেও মরিচ ছিল প্রশংসনীয় ওষুধ। অবাধ্য সন্তানকে শাস্তি দেয়ার জন্য মরিচের ব্যবহারের বিধান অ্যাজটেক আইন সংহিতা কোডেক্স মেন্দোজায় লিখা রয়েছে। এগারো বছর বয়সের মধ্যে অ্যাজটেক ছেলে ও মেয়েকে কঠোরভাবে নিয়মানুবর্তী হতে হতো। সমসাময়িক স্প্যানিশ লেখকেরা সে চিত্র তুলে ধরেছেন নিজেদের লেখায়। সেখানে পিতা-মাতার সঙ্গে অবাধ্য আচরণ করা সন্তানকে শুকনো মরিচের ধোঁয়া দিয়ে শাস্তি দেয়া হতো। পিতা তার উলঙ্গ পুত্রকে আগুনে পুড়তে থাকা মরিচের ওপর ধোঁয়ার মধ্যে ধরে রাখতেন। মরিচপোড়া ধোঁয়ায় নিশ্বাস নেয়ানোকে গণ্য করা হতো নিষ্ঠুর শাস্তি হিসেবে। ফলে এ শাস্তি কয়েক সেকেন্ডের বেশি হতো না। মেয়েদের জন্য মাত্রাটা ছিল আরো কম। বহু বছর পরেও স্থানীয় আমেরিকানদের মধ্যে জারি ছিল মরিচ ব্যবহারের এ চর্চা। উনিশ শতক পর্যন্ত কয়েক শতাব্দী ধরে চলমান আমেরিকান ইন্ডিয়ান যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে নিয়মিত ব্যবহূত হয়েছে মরিচ। ১৮৮০-এর দশকে স্থানীয় অ্যাপাচি নারী ও শিশুদের উদ্ধার করার জন্য মেক্সিকোর খনিজীবীদের বিরুদ্ধে মরিচ নির্মিত বোমা ছোড়ে যোদ্ধারা। সেখানে মরিচের পাশাপাশি ব্যবহার হয়েছে জ্বলন্ত কাঠ ও পাইনের রস।
বিশ শতক থেকে মানুষ বোমা ও বারুদের ব্যবহারে অসম্ভব আধিপত্য দেখিয়েছে। কেবল তৈরির ক্ষেত্রে না, সে আধিপত্য ছড়িয়ে থেকেছে ব্যবহারের ক্ষেত্রে। খুব অল্প সময়ে কয়েকশ গুণ বেশি আতঙ্ক ছড়াতে সক্ষম এসব বোমা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্ব দেখেছে মানুষের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা। শিল্পোন্নত দেশগুলো পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। প্রতিযোগিতা এতটাই ভয়াবহ রূপ নিল যে পরস্পরের সঙ্গে নানা রকম যুদ্ধবিরোধী চুক্তিতে আসতে হয়েছে দেশগুলোর। তার পরও অস্ত্রের ঝনঝনানি কমেনি। অস্ত্র তৈরি করে মজুদ করা হচ্ছে যথা সময়ে ব্যবহার করার জন্য। সেখানে ভারী মারণাস্ত্রের পাশাপাশি কম মাত্রার অস্ত্রও জায়গা পেয়েছে। ভারী অস্ত্রগুলো যুদ্ধের মাঠে শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবহূত হলেও সমাবেশ ও বিক্ষোভ দমনে ভূমিকা রাখে গবেষণাগারে উৎপাদিত কম মাত্রার রাসায়নিক অস্ত্র। ‘লেস-দ্যান-লিথাল’ বা ‘নন-লিথাল উইপন’ নামে পরিচিত অস্ত্রগুলো প্রস্তুত করা হয় বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিজ্জ উপাদান ঘনীভূত করে। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে থাকে মরিচ। তবে অস্ত্র হিসেবে মরিচের ব্যবহার ভিন্ন মাত্রা পায় ১৯২০-এর দশকে। প্রতিপক্ষকে পর্যুদস্ত করতে এ সময় আমেরিকান আর্মির ‘অ্যাজউড আর্সেনাল ফ্যাসিলিটি’ শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এ ধরনের অস্ত্রকে। তাকে ছাড়িয়ে যায় ১৯২৮ সালে ব্রিটিশ গবেষণায় প্রস্তুতকৃত সিএস গ্যাস। টিয়ার গ্যাস বা কাঁদানে গ্যাস হিসেবে জনপ্রিয় হতে থাকে ব্যবহার। সেখানে যথারীতি কাঁচামাল হিসেবে জায়গা দখল করেছিল মরিচ। পরবর্তী কয়েক দশকজুড়ে সিএস গ্যাসে জয়জয়কার ছিল বিভিন্ন দেশে। ১৯৭০-সালের পর কাঁচামরিচ থেকে ওলেওরেসিন ক্যাপসিকাম (ওসি) প্রস্তুতির পর কিছুটা পরিবর্তন আসে। জনগণের বিশৃঙ্খলা প্রশমনে সিএস গ্যাসের বদলে পুলিশ ‘ওসি’ ব্যবহার করতে থাকে তখন থেকে। তাদের ব্যবহূত স্প্রেতে ১৫ শতাংশ কাঁচামরিচ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপাদান থাকে। বাজারে বিক্রির জন্য যেসব গ্যাস উৎপাদিত হয়, তাতে অবশ্য ১ শতাংশের বেশি থাকে না। নাক, চোখ, ফুসফুস এমনকি ত্বকের ওপরও এ গ্যাসের সরাসরি প্রভাব রয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় লাগতে পারে ৪৫ মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত। বিভিন্ন দেশে মরিচ থেকে তৈরি স্প্রে বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে নব্বইয়ের দশকে। সবার জন্য ব্যবহারে বিধিনিষেধ থাকলেও ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে দুই পক্ষের সংঘাতে এ স্প্রে দৃশ্যমান হয়। ব্যক্তিগতভাবে একদিকে হয়রানিকারীদের বিরুদ্ধে নারীরা ব্যবহার করে। অন্যদিকে লোকালয়ে দুষ্ট কুকুর কিংবা বনে চলাচলের সময় হিংস্র প্রাণীর বিরুদ্ধেও ব্যবহূত হয় প্রায়ই। ১৯৯৭ সালের ‘কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন’-এ এমন অস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যা-ই হোক, ২০১০ সালে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন মরিচ থেকে নতুন এক ধরনের গ্রেনেড তৈরির ঘোষণা দেয়। সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহী দমনে গ্রেনেডটি কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। তৈরি হওয়া বিপুল ধোঁয়া নব্বই মিটার দূর পর্যন্ত কার্যকর থাকতে সক্ষম। এরই মধ্যে এটি কাশ্মীরে আজাদি আন্দোলনকারীদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও এ গ্রেনেড ব্যবহার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
মরিচের সঙ্গে মানুষের দীর্ঘ সম্পর্ক খাবারের টেবিলে। তবে সেটা কেবল একটা দিক। অন্য দিকটা মোটেও সুখকর না। মরিচ সেখানে জড়িত সংঘাত আর রক্তের ইতিহাসে। হয়তো মানুষের ইতিহাসই এমন।
সূত্র: আহমেদ দীন রুমি
বণিক বার্তা

শীতে পায়ের দুর্গন্ধ রোধে করণীয়

 শীতের সময় মোজা দিয়ে জুতা পরায় অনেকের পায়েই দুর্গন্ধ হয়। সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে পা ঘামার কারণে তা জুতা ও মোজায় আটকে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। শীতে পা ঘামার বড় কারণ পা ঢাকা জুতা পরা। তবে শুধু ঘামের জন্যই যে দুর্গন্ধ হয়, তা নয়। পায়ে দুর্গন্ধ হওয়াকে বলা হয় ব্রোমোডোসিস।

কারণ
পায়ের পাতায় ঘর্মগ্রন্থি বেশি থাকে। তা ছাড়া অনেকের হাইপারহাইড্রোসিসের সমস্যা থাকে। বংশগত কারণ বা হরমোনজনিত পরিবর্তনেও বেশি ঘাম হতে পারে।
পায়ে দুর্গন্ধের জন্য নানা রকম জীবাণুও দায়ী। যেমন কিটোকক্কাস সেডেনটেরিয়াস নামের ব্যাকটেরিয়া ঘামের মধ্যে সালফিউরিক যৌগ তৈরি করে। এতে পচা ডিমের মতো গন্ধ বের হতে পারে।
সিনথেটিক মোজায় দুর্গন্ধ বাড়ে। কারণ, এতে বাতাস চলাচল করতে পারে না। ঘাম শোষণেও অকার্যকর। কৃত্রিম চামড়ার জুতা পরলে দুর্গন্ধ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
করণীয়
পা ও জুতা–মোজা শুকনা রাখতে চেষ্টা করবেন। এতে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণ কমবে।
অ্যালকোহল ওয়াইপস দিয়ে পা পরিষ্কার করুন। সিনথেটিক ও প্লাস্টিকের জুতা এড়িয়ে চলবেন। কৃত্রিম সুতার মোজাও এড়িয়ে চলুন।
রাতে শোয়ার আগে গরম পানিতে অল্প মধু আর গোলাপজল মিশিয়ে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে পায়ে রক্তসঞ্চালন ভালো হবে, ব্যাকটেরিয়া থেকে রেহাই পাবেন।
এপসম সল্ট মেশানো গরম পানিতে পা চুবিয়ে রাখতে পারেন ২০ মিনিট।
জুতার মধ্যে সামান্য বেকিং সোডা মাখিয়ে রাখুন। পরদিন জুতার ওই অংশ ভালো করে মুছে পরিষ্কার করে জুতা পরুন। তবে চামড়ার জুতায় বেকিং সোডা ব্যবহার করা যাবে না।
কেডস ও স্নিকার্সে মাঝেমধ্যে সামান্য লবণ ছিটিয়ে দিন। এক টুকরা কাপড় বা তুলা লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতার মধ্যে রেখে দিন।
ফুটন্ত পানিতে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন দুই মিনিট। টি ব্যাগ ঠান্ডা হলে জুতার মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর ওই টি ব্যাগ সরিয়ে জুতার ভেতরের অংশ ভালো করে মুছে নিন। গন্ধ থাকবে না।
সূত্রঃ ডা. জাহেদ পারভেজ

সয়া বড়ি

 ১. সয়া বড়ির প্রোটিন মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্সকে সতেজ রাখে, তার কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সহজে ক্লান্তি আসে না।

২. সয়া বড়িতে প্রচুর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে। হার্ট ও লিভারকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে এই খাবার। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে সয়া বড়ি।
৩. সয়া বড়িতে থাকা লেসিথিন মস্তিষ্ক গঠনের অন্যতম উপাদান। তাই সয়াবিন খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা তো বৃদ্ধি পায়ই সঙ্গে হাইপোথ্যালামাসকে সক্রিয় রাখে।
৪.সয়া বড়ির অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
৫.সয়া বড়ি বিভিন্ন ধরনের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে, যা অনিদ্রাজনিত অসুখ দূর করে সহজেই।
6. মেয়েদের ডায়েটে সয়া বড়ি রাখা অত্যন্ত কার্যকর। কারণ সয়াবিনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
৭. সয়া বড়িতে অদ্রবণীয় ফ্যাট থাকায় তা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৮. যাদের শরীরে রক্ত কম, তারাও ডায়েট চার্টে রাখুন সয়া বড়ি । সয়াবিন রক্ত পরিশুদ্ধ করতেও কার্যকর।
সূত্র: আনন্দবাজার

বার্নিং ফিট সিনড্রোম

 ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম খুব অপরিচিত কোনো সমস্যা নয়। যাদের ডায়াবেটিস আছে কিংবা অনেক ধুমপান করেন তাদের পায়ে জ্বালাপোড়া হয়। একেই বলা হয় ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম। ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম অনেক কারণে হতে পারে। এমনকি এথলেটদেরও পায়ে ফাঙ্গাস হলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে সচরাচর ডায়বেটিস আক্রান্তরাই এই সমস্যায় বেশি ভোগেন।

ফিট বার্নিং সিন্ড্রোম আছে যাদের তারা এর প্রতিকারে কি করতে পারেন?
ঠাণ্ডা পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন
বরফ ঠাণ্ডা পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলে পায়ের জ্বলুনি কমে অনেকাংশে। তবে যাদের এরিথ্রোমেলালজিয়া(Erythromelalgia)* ধরণের সমস্যা আছে তারা এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই। কারণ এতে ত্বকের ক্ষতি হয়।
*Erythromelalgia is a rare condition that causes episodes of burning pain and redness in the feet, and sometimes the hands, arms, legs, ears and face. Symptoms of erythromelalgia can begin at any age.
আপেল সিডার ভিনেগার
সচরাচর আপেল সিডার ভিনেগার ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। যাদের পায়ে ফাঙ্গাস বা বিভিন্ন ইনফেকশন হয়েছে তারা গরম পানিতে এপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি না থাকলেও কার্যকরী বলে মন্তব্য করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা।
হলুদের সাপ্লিমেন্ট
হলুদে কারকুমিন নামক উপাদান পাওয়া যায়। এটি প্রদাহজনিত সমসয়া দূর করে। হলুদের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারে সহজেই বার্নিং ফিট সিনড্রোমের প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
মাছের তেল
মাছের তেলেও প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করার ক্ষমতা আছে। বিশেষত দেহে ব্যথা কিংবা বেদনানাশে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও মাছের তেল ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি দূরেও কার্যকর।
আদা
যেকোনো প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে আদার জুড়ি নেই। বাজারে আদার তেল পাওয়া যায়। দাম বেশি হলেও তা পায়ে ম্যাসাজ করলে আরাম পাবেন।
ম্যাসাজ করুন
বার্নিং ফিট সিনড্রোমে তাৎক্ষণিক সমাধান না মিললে মাসাজ করুন। এতে পায়ের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং আরাম পাবেন।
-ittefaq

Tuesday, November 29, 2022

ইসলামে গ্রাহক সেবার চরমতম(uttermost) নমুনা নজরুলের কবিতায়

 ভৃত্য চড়িল উটের পৃষ্ঠে উমর ধরিল রশি,

মানুষে স্বর্গে তুলিয়া ধরিয়া ধুলায় নামিল শশী।
জানি না, সেদিন আকাশে পুষ্প বৃষ্টি হইল কিনা,
কি গান গাহিল মানুষে সেদিন বন্দী' বিশ্ববীণা।
জানি না, সেদিন ফেরেশতা তব করেছে কি না স্তব-
অনাগত কাল গেয়েছিল শুধু, 'জয় জয় হে মানব।'
আফসোস হয় আমরা কথাগুলোর যথাযথ প্রয়োগ জানিনা।
ইসলাম? সে তো স্ফুলিঙ্গ। মূহুর্তেই মানুষকে আপন করে।

পজিটিভিটি যখন সংক্রামক!!

 সুখ বেড়ায় না

সুখের মালিক হওয়া যায় না
সুখ কামাই করা যায় না
সুখ পরিধেয় বস্ত্রও নয়
সুখ ভক্ষ্য নয়।
তা হলে সুখ কি?
সুখ হলো এক অতি-জাগতিক (extraterrestrial) অভিজ্ঞতা
প্রতি মূহুর্তে
ভালবাসার অনুভব, মাধুর্য, আর কৃতজ্ঞতার সমন্বয়।

নারীরা পুরুষদের দেখতে পারবে?

 ইসলামের দৃষ্টিতে গাইরে মাহরাম তথা এমন পুরুষ যার সঙ্গে নারীর বিয়ে বৈধ, তার প্রতি নারীর দৃষ্টিপাত কয়েক প্রকার হতে পারে এবং তার বিধানও ভিন্ন ভিন্ন। যেমনঃ

১. অপ্রয়োজনীয় দৃষ্টি : গাইরে মাহরাম পুরুষের প্রতি তাকানোর প্রয়োজন না থাকলে নারী তার দৃষ্টি অবনত রাখবে। এটাই তাকওয়া তথা আল্লাহভীতির অনুকূল। মহান আল্লাহর নির্দেশ হলো, ‘আর মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে। ’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩০-৩১)
উম্মে সালামা (রা.) বলেন, একদা আমি নবী (সা.)-এর কাছে ছিলাম এবং তাঁর কাছে মায়মুনা (রা.)-ও ছিলেন। এ সময় ইবনে উম্মু মাকতুম (রা.) এলেন। ঘটনাটি পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পরের। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা তার থেকে আড়ালে চলে যাও। আমরা বললাম, হে আল্লাহ রাসুল! সে কি অন্ধ নয়? সে তো আমাদের দেখতে ও চিনতে পারছে না। নবী (সা.) বললেন, যদিও সে অন্ধ কিন্তু তোমরা উভয়ে কি তাকে দেখছ না? (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪১১২)
২. প্রয়োজনীয় দৃষ্টি : ইসলাম অনুমোদিত প্রয়োজনে নারীরা গাইরে মাহরাম পুরুষের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে পারবে। শর্ত হলো ফিতনার আশঙ্কা না থাকা। এই ক্ষেত্রে দৃষ্টিপাতের সীমা হলো সাধারণভাবে পুরুষের দেহের যতটুকু প্রকাশ পায় ততটুকু। যেমন—চেহারা, মাথা, হাত ও পায়ের তালু ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে ফকিহদের দলিল হলো ফাতিমা বিনতে কায়সের হাদিস। মহানবী (সা.) তাঁকে বলেন, তুমি বরং ইবনে উম্মে মাকতুমের বাড়িতে গিয়ে ইদ্দত পালন করতে থাকো। কেননা সে একজন অন্ধ মানুষ। সেখানে প্রয়োজনবোধে তুমি তোমার পরিধানের (কম প্রয়োজনীয়) পোশাক খুলে রাখতে পারবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৫৮৯)
ফকিহরা বলেন, কারো বাড়িতে অবস্থান করতে হলে কমবেশি তাঁর দিকে তাকানোর প্রয়োজন হয়। যা দ্বারা প্রমাণিত হয়, প্রয়োজনের সময় যতটুকু স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ পায়, নারীরা পুরুষের ততটুকু দেখতে পারবে।
৩. মাহরামের প্রতি দৃষ্টি : নারীরা তাদের মাহরাম তথা এমন পুরুষের প্রতি তাকাতে পারবে যাদের বিয়ে করা হারাম। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা হলো পুরুষের নাভির ওপরাংশ এবং হাঁটুর নিম্নাংশ। কেননা নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশটি সতর আর মাহরাম ও গাইরে মাহরাম কারো সামনে সতর প্রকাশ করা বৈধ নয়। আমর বিন শোয়াইব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, পুরুষের নাভির নিচ থেকে তার উভয় হাঁটু পর্যন্ত হলো সতর। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬৭৫৬)
তবে বর্তমানে মাহরাম পুরুষ যদি ফাসিক হয় এবং তার ভেতর আল্লাহভীতি না থাকে, তাহলে তার থেকেও নারীদের দূরে থাকার পরামর্শ দেন প্রাজ্ঞ আলেমরা। কেননা বর্তমানে মাহরাম পুরুষ দ্বারা নারীর আব্রু বিনষ্ট হওয়ার ঘটনা বিরল নয়।
৪. স্বামীর প্রতি দৃষ্টি : একজন নারী তাঁর স্বামীর সমস্ত শরীরই দেখতে পারে। এমনকি তার লজ্জাস্থানও দেখতে পারবে। তবে ইসলাম স্বামী-স্ত্রী উভয়কে পরস্পরের লজ্জাস্থানের দিকে তাকাতে নিরুৎসাহ করে। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি কখনো নবীজি (সা.)-এর লজ্জাস্থানের দিকে তাকাইনি। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৩১২৩)
৫. যে দৃষ্টিতে ভয় নেই : কখনো নারীর দৃষ্টি গাইরে মাহরামের দিকে হলেও তাতে ভয় থাকে না। যেমন নাবালক ছেলেশিশুর দিকে তাকানো। এমন পরিস্থিতি নারীর দৃষ্টিপাত হারাম বা নিষিদ্ধ হবে না। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন হাবশিরা (বালক) তাদের বর্শা নিয়ে খেলা করছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে নিয়ে পর্দা করে তার পেছনে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং আমি সেই খেলা দেখছিলাম। যতক্ষণ আমার ভালো লাগছিল ততক্ষণ আমি দেখছিলাম। এরপর আমি স্বেচ্ছায় সে স্থান ত্যাগ করলাম। সুতরাং তোমরা অনুমান করতে পারো কোন বয়সের মেয়েরা আমোদ-প্রমোদ পছন্দ করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫১৯০)
৬. যে দৃষ্টিতে ভয় থাকে : যদি পরপুরুষের প্রতি নারীর দৃষ্টিতে জৈবিক কামনা থাকে অথবা কারো প্রতি তাকালে কামনা জেগে ওঠার ভয় থাকে, তবে এমন দৃষ্টি শরিয়তে দৃষ্টি হারাম। এমন পরিস্থিতিতে দৃষ্টি অবনত রাখা আবশ্যক। এ ছাড়া স্বামী ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের সতর দেখাও নারীর জন্য হারাম। চাই জৈবিক চাহিদা থাকুক বা না থাকুক। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘নারী যদি অপরিচিত পুরুষের দিকে জৈবিক চাহিদা নিয়ে তাকায় তবে তা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। পুরুষ যদি নারীর সতর এবং নারী যদি পুরুষের সতর দেখে তবে তাও সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। ’ (আল-মিনহাজ : শরহু সহিহ মুসলিম : ৬/১৮৪)
সূত্র: মুফতি আতাউর রহমান

শরীরচর্চার আগে-পরে এই পাঁচ ভুল করবেন না

 ১. শরীরচর্চার আগে ভারী খাবার

শরীরচর্চার পর পেশি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত রক্তসঞ্চালন হওয়া ভীষণ প্রয়োজন। কিন্তু শরীরচর্চার আগে ভারী খাবার খেলে তা পরিপাক হতে থাকার কারণে পেশিতে এই রক্তসরবরাহ ব্যাহত হয়। এ কারণে শরীরচর্চার পর পেশিতে টান লাগতে পারে (মাসল ক্র্যাম্প), বমিভাবও হতে পারে। তাই ভারী খাবার খাওয়ার পর অন্তত দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে শরীরচর্চা করতে হয়। তবে সবচেয়ে ভালো হলো, শরীরচর্চার আগে হালকা কিছু খাবার খেয়ে নেওয়া। একমুঠো বাদাম হতে পারে শরীরচর্চার আগে দারুণ এক নাশতা।
২. পানির সঙ্গে আড়ি
শরীরচর্চার আগে–মাঝে–পরে পানি না খাওয়া একটি মারাত্মক ভুল। শরীর ঠান্ডা করতে এবং রক্তের সঞ্চালন ঠিক রাখতে পানির কোনো বিকল্প নেই। শরীরচর্চা শুরুর আগে কিছুটা পানি খেয়ে নিন। শরীরচর্চা চলার সময়ও ১৫ মিনিট অন্তর ১৫০-২০০ মিলি পানি খাওয়া উচিত। শরীরচর্চা শেষে ধীরেসুস্থে পানি খেতে হবে আরও বেশ খানিকটা।
৩. ‘ওয়ার্ম আপ’ এবং ‘কুল ডাউন’ না করা
সময় বাঁচাতে গিয়ে ‘ওয়ার্ম আপ’ অর্থাৎ শরীর গরম করে নেওয়ার ধাপটি বাদ দেবেন না। ‘ওয়ার্ম আপ’ করার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, পেশি শিথিল হয়, বিস্তৃত পরিসরে নাড়ানো যায় অস্থিসন্ধি বা জয়েন্ট। তাই ভারী ব্যায়াম (যেমন পেশির স্ট্রেচিং) শুরুর আগে ৫-১০ মিনিট হালকা হাঁটাহাঁটি, জগিং বা ধীরেসুস্থে সাইকেল চালিয়ে ‘ওয়ার্ম আপ’ করে নেওয়া আবশ্যক। শরীরচর্চা শেষে শরীরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ‘কুল ডাউন’ অর্থাৎ হালকাভাবে পেশি স্ট্রেচিং করতে হবে কিছুক্ষণ।
৪. ভুল দেহভঙ্গি
শরীরচর্চার জন্য চাই সঠিক দেহভঙ্গি। নইলে বাড়বে ব্যথা-বেদনা, শরীরচর্চার সুফলটাও সঠিকভাবে পাওয়ার সম্ভাবনা কমবে। ট্রেডমিল ব্যবহারের সময় কিংবা ওজন তোলার সময় ভুল দেহভঙ্গির কারণে ঘটতে পারে দুর্ঘটনাও। ট্রেডমিল ব্যবহারের সময় এর ওপর ঝুঁকে পড়া যাবে না। ওজন তোলার সময় পিঠ সোজা রাখুন, কাঁধ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে ফেলা যাবে না। হাঁটা বা দৌড়ানোর সময়ও বজায় রাখতে হবে সঠিক দেহভঙ্গি।
৫. শরীরচর্চার সময় সামাজিকতা
বন্ধুদের সঙ্গে শরীরচর্চা করতেই পারেন, আবার একই জায়গায় একই সময়ে শরীরচর্চা করতে করতে নতুন বন্ধুও তৈরি হতে পারে। কিন্তু শরীরচর্চার সময় সামাজিকতার দিকে খুব বেশি মনোযোগ না দেওয়াই ভালো। হালকা কথাবার্তা চলতেই পারে, কিন্তু শরীরচর্চায় নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না। তবে শরীরচর্চার আগে বা পরে আলাপ চলতে পারে, ছুটতে পারে হাসির ফোয়ারা।
সূত্র: প্রথম আলো

বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন ‘মাউথওয়াশ’

 বহু মানুষ ব্যক্তিগত ভাবে এখন ভেষজ ও আয়ুর্বেদিক উপাদান কাজে লাগাতে বেশি পছন্দ করেন। যাঁরা বাজারজাত মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে চান না, তাঁরা বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন প্রাকৃতিক মাউথওয়াশ।

বাড়িতে তৈরি মুখ পরিষ্কার করার এই দ্রবণে কোনও কৃত্রিম রাসায়নিক যেমন থাকে না, তেমনই থাকে না অ্যালকোহল।
কী ভাবে বানাবেন?
উপকরণ:
লবঙ্গ: ৪-৫টি
গোলমরিচ: ৪-৫টি
জল: ২ কাপ
প্রণালী:
একটি পাত্রে জল নিয়ে তাতে গোলমরিচ ও লবঙ্গ দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ভাল করে এক বার ফুটলে পাত্র নামিয়ে নিন। মিনিট পাঁচেক নাড়িয়ে ঠান্ডা করে নিন। ব্যস; তাতেই কেল্লাফতে। মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়া নির্মূল করাই হোক, বা দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভাল রাখা— মুখ গহ্বর ভাল রাখতে এই প্রাকৃতিক মাউথওয়াশের জুড়ি মেলা ভার।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
দাঁত মাজার পর দ্রবণটি মুখে নিয়ে ভাল করে কুলকুচি করে ফেলে দিতে হবে। এ ভাবে দিনে দু’বার মুখ সাফ করতে হবে। বাড়িতে তৈরি মুখ পরিষ্কার করার এই দ্রবণে কোনও কৃত্রিম রাসায়নিক যেমন থাকে না, তেমনই থাকে না অ্যালকোহল। ফলে যাঁদের মুখ স্পর্শকাতর, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই মিশ্রণ অত্যন্ত কার্যকরী। কৃত্রিম মাউথওয়াশে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ অনেক সময়ে মুখের লালা গ্রন্থির ক্ষরণ কমে যায়। একে বিজ্ঞানের ভাষায় জেরোস্টোমিয়া বলে। বাড়িতে তৈরি এই মাউথওয়াশে এই ধরনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
-আনন্দবাজার থেকে

একাকীত্ব

 আপনার যত সময় বা বয়স বেড়ে চলবে, ততই আপনার একাকীত্ব অনুভব হবে। আর এটাই স্বাভাবিক। একারণেই আমাদের উচিত বৃদ্ধ মানুষদের সঙ্গ দেওয়া। কারণ তারা একাকীত্বে ভোগেন।

সবথেকে বেশি আঘাত করে, সেই মানুষের দেওয়া একাকীত্বটা যার সঙ্গ আপনাকে কাল পর্যন্ত বিশেষ ভাবে শক্তি জুটিয়েছে কিন্তু আজ সে আপনাকেই অপ্রয়োজনীয় মনে করছে।
একাকীত্ব ধমনির অসুখ এবং হার্ট অ্যাটাক এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।
একাকীত্ব কক্ষনোই আপনার কতজন বন্ধু বা কতজন আত্মীয় আছে তার উপর নির্ভর করে না। আপনার অনেক বন্ধু এবং আত্মীয় থাকলেও আপনি একাকীত্ব অনুভব করতে পাড়েন। এটা সম্পূর্ণভাবে অনুভূতির ব্যাপার। যখন আপনি মনে করেন আপনার কেউ নেই, তখনই আপনার একাকীত্ব অনুভব হয়।
একাকীত্বের জন্যই পৃথিবীর অনেক রিলেশনশিপ ভেঙ্গে যায়।
-সংগৃহীত

উত্তম জীবন বা ‘হায়াতে তায়্যিবা’

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, উত্তম জীবনের অর্থ হালাল উপার্জন।

আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) অর্থ করেছেন পরিতৃপ্তি।
আলী ইবনে আবি তালহা (রহ.) বলেছেন, সৌভাগ্য।
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) উল্লিখিত মতগুলো উদ্ধৃত করে বলেন, ‘হায়াতে তায়্যিবা’ এর সবটিকেই বোঝায়। কেননা হাদিসের বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হয় মানুষের জীবনের জন্য স্বস্তিকর, তৃপ্তিকর ও আরামপ্রদ সব কিছুই উত্তম জীবনের অন্তর্ভুক্ত।
-তাফসিরে ইবনে কাসির
মুমিন দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম জীবন প্রত্যাশা করে। শুধু প্রত্যাশা করে না; বরং এ জন্য সে যথাযথ চেষ্টাও করে। কেননা মহান আল্লাহ ‘উত্তম জীবন’কে তাঁর অনুগ্রহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা তিনি ঈমান ও ভালো কাজের প্রতিদান হিসেবে দিয়ে থাকেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন পুরুষ ও নারীদের কেউ ভালো কাজ করলে আমি তাকে নিশ্চয়ই পবিত্র (উত্তম) জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।
ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন পুরুষ ও নারীদের কেউ ভালো কাজ করলে আমি তাকে নিশ্চয়ই উত্তম জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৭)
সূত্র: মুফতি আবদুল্লাহ নুর

আসা যাওয়া, খালি হাতেই

 কোন এক কালে প্রভাবশালি এক বাদশাহ ছিলেন। তিনি যখন অনুধাবন করতে পারলেন তার মৃত্যুর সময় নিকটবর্তি হয়ে গেছে তখন তার প্রধান উজিরকে ডেকে পাঠালেন।

উজিরকে উদ্দেশ্য করে বললেন- আমি তোমাকে তিনটি উপদেশ করে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর পর তুমি তা পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করবে।
উজির সম্মানসূচক জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে তাকলে বাদশাহ বললেন –
উপদেশগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনো –
আমি যখন মারা যাব তখন আমার মরদেহের পালকিটা যেন ওইসব বিজ্ঞ আর বড় বড় ডাক্তার বয়ে নিয়ে যায়, যারা আমার জীবদ্দশায় দেশ সেরা ছিল। আর আমার চিকিৎসা করেছিল।
আমার মৃত্যুর পর আমার বাড়ি থেকে কবরস্থান পর্যন্ত পুরো রাস্তায় যেন আমার সব সোনা রুপা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যেগুলো আমি জীবদ্দশায় সংরক্ষিত করে রেখেছিলাম।
আমার মৃত্যুর পর আমার দুইহাত যেন আমার কাফনের বাইরে রাখা হয়।
উজির অবাকদৃষ্টিতে বাদশাহকে জিজ্ঞাসা করলেন – বাদশাহ মহোদয়, উপদেশগুলো আমি যথাযথভাবে পালন করব, ইন শা আল্লাহ। তবে এর পেছনে রহস্যটা কী? তা জানতে আগ্রহ হচ্ছে।
বাদশাহ বললেন –
১. মানুষ যাতে একথা বুঝে যে, মৃত্যু থেকে কেউ রেহাই পাবে না। এমনকি বড় বড় ডাক্তার; যাদের উপর আমরা আস্থা করি তাদেরও আমাদের বাঁচানোর ক্ষমতা নেই।
২. মানুষ যেন একথা বুঝতে পারে যে, সারা জীবনে সে যে সম্পদ কামাই করেছে সেসবও তাকে বাঁচাতে পারবে না। সবকিছুই এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে।
৩. মানুষ যেন একথা বুঝতে পারে যে, যেভাবে খালি হাতে দুনিয়াতে এসেছিল সেভাবেই খালি হাতে ওপারে যেতে হবে।
ধনসম্পদ আপনজান কেউই তার সাথে ওপারে যাবে না। যাবে শুধু আমলনামা, যা সে কামাই করেছে।
-সংকলিত।

Friday, November 18, 2022

বিষাক্ত মানুষ

 নিরাপদ দূরত্ব থাকুন বিষাক্ত মানুষ থেকে

A toxic person is anyone whose behavior adds negativity and upset to your life.
Cut Them Off of Your Life
১. সকল ক্ষেত্রে প্রমাণ নির্ভর যুক্তি উপস্থাপন, কথায় কথায় নিতি আদর্শের বুলি আওড়ানো, বাক পটিয়সি এবং এই পৃথিবীতে সে বা তারাই একমাএ নিখুঁত মর্মে নিজেকে জাহির, তাদের চেহারা, প্রতিভা, ভাবমূর্তি সেরা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার বেপরোয়া মনোভাব, চরম হিপোক্রেসি এবং যখন তখন যাকে তাকে দমিয়ে নামিয়ে নিজেকে আপগ্রেড করার নির্লজ্জ ভুমিকায় অবতীর্ণ মানুষগুলো নিশ্চিতভাবে বিষাক্ত মানুষ।
২. আত্মীয়, সজ্জন, ঘনিষ্ঠ বন্ধু, এমনকি বাবা, মা, স্ত্রীর সম্পর্কেও মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন বক্তব্য দ্বারা বিভ্রান্তির সৃষ্টি পারস্পরিক অবনতিশীল সম্পর্কের তৈরি - এই মানুষগুলো ভয়ংকর রকম বিষাক্ত।
৩. অযাচিত প্রশংসা, অপ্রয়োজনীয় তারিফ, তোষামোদী এবং অতি উৎসাহি ভুমিকা দ্বারা তুষ্ট করার প্রচেষ্টা এবং তাদের উদ্দেশ্য সাধন না হওয়া পযর্ন্ত সকল অনাদর, অবহেলা, উপেক্ষা হাসিমুখে মেনে নেওয়া এবং পরবর্তীতে সুযোগ মতো পিঠে ছুরি মেরে সটকে পড়া- বিষাক্ত মানুষ।
৪. বন্ধুর লেবাসে গভীর সক্ষতা গড়ে তুলে যাবতীয় গোপনীয়তা, দুর্বলতা সংগ্রহ করে পরিণামে সেগুলো অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার এবং আত্মস্বার্থ চরিতার্থ- বিষাক্ত মানুষ।
৫. মুখে তারা সবকিছু উজাড় করে দিয়ে দেবে, প্রতিনিয়ত Emotionally ব্লাকমেইলিং এবং তাদের সকল দায়িত্বহীন ভূমিকা, কর্তব্যকর্মে অবহেলা কিংবা অবান্তর কর্মকাণ্ডকেও যুক্তি দ্বারা বৈধকরণের প্রচেষ্টা এবং প্রকারান্তরে তাদের নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি; এগুলো বিষাক্ত চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।
৬. সকল বিষয়ে এটা ঠিক নয়, ওটা ভুল, সে ছাড়া অন্যেরা কুৎসিত, অবান্তর তথা এই জাতীয় নেতিবাচক কথাবার্তা এবং চিন্তা চেতনা দ্বারা প্রভাবিত করে প্রকৃত বন্ধু এবং সহযোগীদের সাথে দূরত্ব বাড়িয়ে সুযোগের সৃষ্টি করে নিজেদের মতলব হাসিলের প্রচেষ্টা - এগুলোও বিষাক্ত চরিত্রের নমুনা।
৭. যারা অল্পতেই অস্বস্তির সৃষ্টি করে এই মানুষগুলো ভয়ংকর রকম বিষাক্ত।
সূত্র: কনস্ট্রাকশন ইন্জিনিয়ার M MD R Tanim
Own study
Reader's Digest

সুখ

 আল্লাহতে সমর্পিত বান্দা হলে “সুখ” ধরা দেবেই

সুখ হলো মনের একটা অনুভূতি। কোন কিছু থাকা বা না থাকার সাথে এর সম্পর্ক নেই।
মানুষ অতীতের সুখ বোঝে, ভবিষ্যতে সুখ খোঁজে। আর বর্তমানের সুখ চেনেই না।
Bonus Reading
সুখের সন্ধান পাওয়া যায় একমাত্র ইসলামে। ইসলাম কথাটির অর্থ - আত্মসমর্পণ। আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ। যে লোকটি তেমন আত্মসমর্পণ করতে পারে, তার কোন অতৃপ্তি থাকে না। সে হয় প্রকৃত সুখী, প্রকৃত শক্তিশালী।
নিজ পাঠ
বিএন.কোরা.কম

ইম্প্রেসিভ

 শুনশান রেল স্টেশন। দিনের শেষ ট্রেনটি প্লাটফর্ম ছেড়ে চলে গেছে। এক বৃদ্ধা বসেই আছেন। জানেন না পরের ট্রেনটি আসবে পরের দিন। এক কুলির নজর গেল সেদিকে।

- মাইজি, তুমি কোথায় যাবে?
- দিল্লি যাব বাবা ছেলের কাছে।
- আজকে তো ট্রেন আর নেই মাইজি।
বৃদ্ধার অসহায় দৃষ্টি। কুলিটির বোধহয় দয়া হল।
- মাইজি তোমাকে ওয়েটিং রুমে রেখে আসি। আমার সঙ্গে চল।
- তাই চল বাবা। কি আর করব!
- তোমার ছেলে বুঝি দিল্লিতে থাকে?
- হ্যাঁ বাবা।
- কি করে?
- রেলে কি যেন একটা কাজ করে!
- নামটা বল দেখি। যোগাযোগ করা যায় কিনা দেখছি।
- ও তো আমার লাল। সবাই ওকে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বলে ডাকে যে।
তিনি তখন ভারতীয় রেলওয়ের ক্যাবিনেট মিনিস্টার। মুহূর্তের মধ্যে গোটা স্টেশন তোলপাড়। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলো শ্যালোঁ (saloon car)। বৃদ্ধা অবাক। তাঁর ছেলের এত ক্ষমতা!
লাল বাহাদুর কিছুই জানতেন না। সমস্ত আয়োজন করেছিল ভারতীয় রেল।
পরিশেষে একটিই কথা, এমন মা না হলে অমন ছেলে হয়! ****এই রকম নেতা এখন দুর্লভ, এরা ক্ষমতা প্রতিপত্তির জন্য পদে বসেন নি, এরাই পদকে অলংকৃত করেছেন।
ছেলের দেখা পাওয়ার পর তিনি ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন - "বেটা , তু রেল মে কেয়া কাম করতে হো , এ লোগ পুছা তো ম্যায়নে কুছ নেহি বোলপায়া ।"
তার উত্তরে ছেলে বলেছিলেন - " ছোটিসি কাম মা "।
-Adapted

ভোরে এক ঘন্টা হাঁটা

 “This early piece of the morning is mine.” – Wallace Stegner

খুব ভালো হয় যদি এটা আপনি নিজে পরীক্ষা করে দেখেন। একদিন ভোরবেলা হেঁটে আসবেন। তারপরের দিন ভোরবেলা পড়তে বসেন। পার্থক্যটা নিজে বুঝতে পারবেন। অন্য কারো কথায় অভিজ্ঞতাটা ঠিক বোঝা যাবেনা এক্ষেত্রে।যেটা আপনার ভালো লাগবে, আপনি সেটাই বেছে নেবেন।
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, সুবিখ্যাত বিজ্ঞানী " মিসাইল ম্যান" ডঃ এ পি জে আব্দুল কালাম " My Journey Transforming Dreams into Actions" বইয়ে এই বিষয়ে তাঁর বাবার প্রাতঃভ্রমনের অভ্যাস সম্পর্কে কিছু বক্তব্য লিখেছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী তাঁর বাবা প্রাতঃভ্রমনের ফলে নিজের এক উন্নত ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলেছিলেন। যে উন্নত ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন রাষ্ট্রপতির জীবন দর্শনে অনেকাংশেই প্রভাব ফেলে।সুতরাং তাঁর মতে প্রাতঃভ্রমনের উপকারীতা অনস্বীকার্য।
ছোট থেকে বেশ কিছু কথা শুনে আসছি। যেমন ভোরবেলা পড়াশোনা করলে সেটাই নাকি আসল পড়াশোনা হয়। কারণ সকালে মাথা পরিষ্কার থাকে, পরিবেশ শান্ত থাকে, যা পড়া হয়,সেটাই একেবারে মস্তিষ্কের অন্তঃস্থলে প্রবেশ করে পাকাপোক্ত বাসা বেঁধে ফেলে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা হল (ভুল হতে পারে) - ভোরবেলা পড়তে বসলেই ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে , হাঁই তুলে তুলে গাল-গলা ব্যাথা করে সময়ই শুধু নষ্ট করতাম। একবাক্যও পড়া হত না। আমি রাতভোর পড়তাম। কারণ নিশুতি রাতে শান্ত নিরিবিলিতে পড়তে সুবিধা হত। এটা যদিও যার যার নিজস্ব পছন্দ ও সুবিধার ব্যাপার। কিন্তু আমার মতে বই পড়ার সদিচ্ছা থাকলে, সারাদিনের যে কোনো সময়েই পড়া যায়। প্রাতঃভ্রমণ নির্দিষ্ট সময়ে ভোরবেলা করতে পারলে তা জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সারারাত ঘুমের পরে, সকালে সমস্ত ক্লান্তি দুর হয়ে আমাদের যে শারীরিক শক্তি সঞ্চিত হয়, তা প্রাতঃভ্রমণের জন্য অনুকূল অবস্থা তৈরি করে।
সকালের সদ্যজাগ্রত প্রকৃতি আমাদের অন্যপ্রকারের মানসিক শক্তির যোগান দেয়। ভোরবেলার পাখির কলতান, হালকা সূর্যের আলো, ঠাণ্ডা নরম হাওয়ার স্পর্শে শরীর ও মনে সুস্থতার বোধ হয়।
সকালে ভ্রমণ সারাদিন কাজ করার উৎসাহ ও শক্তি বৃদ্ধি করে। কিন্তু দিনশেষে সারাদিনের কাজকর্মের ক্লান্তি ভ্রমণের ইচ্ছা নষ্ট করে দেয়। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আর ভ্রমণ করাই হয় না।
বর্তমানে আমরা বড় বেশী কূপমণ্ডূকতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছি। সামাজিকতাহীন হয়ে পড়ছি। এই পরিস্থিতিতে সকাল বেলা কিছু চেনা পরিচিত মানুষের মুখ দর্শনও জীবনে নতুন আলোর সঞ্চার করে। সারাদিন একটা ভালোলাগায় ভরে থাকে।
এছাড়া একমাত্র ভোরবেলাতেই আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি সংশ্লেষিত হয়। দিনের অন্য সময় এটা সম্ভব নয়।
সকালে ভ্রমণের সময় আমি একটা জিনিস করি। যেটা মন তরতাজা করে দেয়।প্রথমে খালি পায়ে কাঁকরের ওপর দিয়ে খানিকক্ষণ হাঁটি। তারপর খালি পায়ে নরম শিশিরে ভেজা ঘাসের ওপর হাঁটি।খুব আরাম লাগে। এটা মন ভালো করার একধরনের থেরাপিও বলা যায়। এটা দিনের অন্য কোনো সময়ে আর করা যায় না।
তাই সকালে একঘণ্টা বই পড়া আর সকালে একঘণ্টা প্রাতঃভ্রমণের মধ্যে আমি প্রাতঃভ্রমণকেই বেছে নেব।
ধার: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
নিজ পাঠ

অশ্বগন্ধা

অশ্বগন্ধা কোলেস্টেরল কমায়

অশ্বগন্ধা অনিদ্রা দূর করে

অশ্বগন্ধা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

অশ্বগন্ধা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

অশ্বগন্ধা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

অশ্বগন্ধা থাইরয়েডের সমস্যা দূর করে

অশ্বগন্ধা চোখের সমস্যা দূর করে

অশ্বগন্ধা আর্থ্রাইটিস সারাতে কাজ করে

অশ্বগন্ধা স্মৃতি শক্তি বাড়ায়

অশ্বগন্ধা পেশী মজবুত করে

অশ্বগন্ধা ইনফেকশন থেকে রক্ষা পেতেও কাজ করে

অশ্বগন্ধা হার্টের জন্য ভালো

অশ্বগন্ধা শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

অশ্বগন্ধা বার্ধ্যকের ছাপ দূর করে

অশ্বগন্ধা ক্ষত সারায়

অশ্বগন্ধা খুশকি কমায়

-https://bn.quora.com/
-নিজ পাঠ

ঘুমবার সহজ উপায়গুলো

 ঘুমকে অস্বীকার করার উপায় নেই। যখন আমরা মানসিক অস্থিরতায় থাকি তখন ঘুমের প্রয়োজনীতা কার্যকরভাবেই দেখা দেয়। আর ঘুমের সাথে বুদ্ধিমত্তার যোগাযোগও ঘনিষ্ট।

১. টেষ্ট ইওর পিলো
বালিশটা দেখে নাও নিদ যাবার আগে।
অনেকে ইটের মতন শক্ত বালিশে মাথা রেখে ঘুমায়। এটা স্বাস্থসম্মত নয়।
অনেকে এ রকম শক্ত উঁচু বালিশে মাথা রাখে। এটাও নয় স্বাস্থসম্মত নয়। অপেক্ষাকৃত নরম বালিশে ঘুম সুখের হয়। কেউ যদি চিৎ হয়ে ঘুমায় তার উচিৎ কম উঁচু বালিশ সিলেক্ট করা। আবার কেউ কাৎ হয়ে ঘুমালে তার উচিত অপেক্ষাকৃত উঁচু ও নরম বালিশ ব্যবহার করা। এ পরামর্শ স্লিপ স্পেশালিষ্ট ও সাইকোলজিস্ট ডা. মাইকেল জে. বৃয়াসের।
২. সকালে গায়ে এক ঘন্টা রোদ লাগাও
এ সময় রোদ লাগালে ব্রেন মেলাটোনিন উতপাদনের সুইচ বন্ধ রাখে একই সাথে কধন মেলাটোনিন তৈরীর টাইমার চালু করতে হবে তা নিয়ন্ত্রন করে ব্রেন। সকালে ১৫-৩০মিনিট সরাসরি সূর্যের আলোতে থাকো। এর পরে বাইরে কাজের সময় ১৫ মিনিট করে রোদ লাগালেই চলবে। ডা. মাইকেল জে.বৃয়াসের এগুলো জানিয়েছেন।
৩. শোবার আগে নোনা স্বাদের স্ন্যাক্স খাওয়া মানা
শোবার আগে এ রকম খাবার খেলে বেশী বাথরুমে যেতে হয়। আবার রাতের শেষের দিকে Bathroom Trip দরকার হলে (নকচ্যুরিয়া-Nocturia) ফিরে এসে আবারও নিদ যাওয়া অনেকেরই পক্ষে কষ্টকর। এ পরামর্শ
সাইকিয়াট্রিষ্ট ডা. Rafael Pelayoর।
৪. ডিনারের আগে ঝগড়া-ঝাটি মিটিয়ে ফেলো
স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য বা পারিবাররিক ভারী ভারী কথাগুলো বা বিতন্ডা ডিনারের অনেক আগেই সেরে ফেলা ভালো। আমার এক ভগ্নিপতি বলতেন, “তোরা ‘আসরের নামাযের পরে আর ঝগড়া করিসনে যেনো।” কথাটার যুক্তি আছে বৈ কি! ভারী ভারী কথাগুলো বা বিতন্ডা সেরে ফেললে রাতের ঘুমের ডিষ্টার্ব হয় না। এ পরামর্শ ক্যালিফের্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রির প্রফেসর অ্যাশলে ম্যাশনের। কিন্ত ডিনারের পরে এ রকম আরগুমেন্ট আর ঝগড়া-ঝাটি শুরু হলে কখন যে শেষ হবে বলা মুশকিল। আমরা বাংগালীরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ঝগড়া-ঝাটির রেশ রেখেই দেই। এতে ঘুমের ১২টাই বাজে।
সহায়তাঃ AARP BULLETIN, Dec 2021
রিডার্স ডাইজেষ্ট
Self Study

Thursday, September 29, 2022

Seeds of Peace

 Ignorance makes you believe that life functions haphazardly.

অজ্ঞতা তোমাকে বিশ্বাস করাতে চাইবে যে তোমার জীবনটা চলছে এলোমেলোভাবে।
Wisdom teaches you that everything that happens in this theatre of life has profound significance.
প্রজ্ঞা তোমাকে জানিয়ে দেবে যে এই জীবনের রঙ্গমঞ্চে সব কিছুই চলছে এক গভীর তাতপর্য নিয়ে।
What you see today is not the fruit of chance but a fruit from seeds planted in the past.
আজ তুমি যা দেখছো তা কিন্তু কোন ঘটনাচক্রের ফসল নয় বরং তুমি যে চারা অতীতে রোপন করেছিলে তারই ফসল। এটা শান্তির ফসল।

সন্তানের সুন্দর ও অর্থবোধক নাম রাখুন

 সুন্দর অর্থপূর্ণ ও রুচিসম্পন্ন নামকরণের বিষয়ে ইসলামের রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সন্তানদের তার পিতার নামেই ডাকো, সেটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত।’ (সূরা আল আহজাব : ৫)
হজরত ইবনে আব্বাস রা: বলেন, একদা সাহাবারা হজরত রাসূলুল্লাহ সা:-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, হুজুর! পিতার হক সম্পর্কে তো আমরা আপনার কাছ থেকে জানলাম। পিতার ওপর সন্তানের হক কী এ ব্যাপারে আমাদের জানান। উত্তরে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করলেন, পিতা সন্তানের অর্থপূর্ণ ভালো নাম রাখবে এবং তাকে সুশিক্ষা দিবে। (সুনানে বায়হাকি)
হজরত আবু ওহাব জুশানি রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমরা নবীদের নামে নিজেদের নাম রাখবে। তবে আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম নাম হলো- আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান।’ (সুনানে আবু দাউদ)
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘যার সন্তান জন্মগ্রহণ করে সে যেন সন্তানের সুন্দর নাম রাখে ও সুশিক্ষা দেয় এবং প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাকে বিয়ে দেয়।’ (সুনানে বায়হাকি)
হজরত আবু দারদা রা: হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের পিতার নামে ডাকা হবে। অতএব তোমাদের নামগুলো অর্থবোধক রাখো। ’ (সুনানে আবু দাউদ)
বিখ্যাত দার্শনিক ও ইসলামী স্কলার ইবনে কাইয়্যুম জাওচি রহ: তার কিতাব ‘তুহফাতুল মাওদুদ বি আহকামিল মাওলুদ’ এ লিখেছেন, ‘নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবেই মানুষের ভালো-মন্দ আচরণ, চরিত্র ও কর্মধারা প্রভাবিত হয়। মন্দ নামেরও মন্দ প্রভাব রয়েছে।’
ব্যক্তির নাম তার স্বভাব চরিত্রের ওপর ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ বিষয়ে হাদিসে চমৎকার নির্দেশনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে শায়েখ আবু বকর আবু যায়েদ রহ: বলেন, ঘটনাক্রমে দেখা যায়, ব্যক্তির নামের সাথে তার স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের মিল থাকে। এটাই আল্লাহ তায়ালার হেকমতের দাবি। যার নামের মধ্যে গাম্ভীর্যতা আছে তার চরিত্রে গাম্ভীর্য পাওয়া যায়। খারাপ নামের অধিকারী লোকের চরিত্রও খারাপ হয়ে থাকে। ভালো নামের অধিকারী ব্যক্তির চরিত্রও ভালো হয়ে থাকে।
ইমাম মালেক রহ:-এর প্রসিদ্ধ হাদিসের কিতাব ‘মুয়াত্তায়’ বর্ণিত আছে। হজরত ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ রা: হতে বর্ণিত, হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব রা:-এর কাছে জুহারনা গোত্রের এক ব্যক্তি এলো। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার নাম কী? সে বলল, জামরা (অগ্নিস্ফুলিঙ্গ)। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কার পুত্র? সে বলল, ইবনে শিহাব (অগ্নিশিখার পুত্র)। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, কোন গোত্রের? সে বলল, হারাকা (প্রজ্বলন)। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার বাড়ি কোথায়? সে বলল, হারাকা (অগ্নিগর্ভে)। সর্বশেষে ওমর রা: জিজ্ঞাসা করলেন, কোন অংশে? সে বলল, বিজাতিল লাজা (শিখাময় অংশে)। হজরত ওমর রা: তাকে বললেন যাও, তোমার গোত্রের লোকদের কাছে গিয়ে দেখ, তারা ভস্মীভূত হয়েছে! লোকটি বলল, তাদের কাছে এসে দেখলাম সত্যিই তারা সবাই ভস্মীভূত হয়েছে।
-নয়া দিগন্ত সূত্র

মহানবী (সা.)-এর অপছন্দনীয় শব্দ ও বাক্য

 মহানবী (সা.) যেসব শব্দ ও বাক্য পছন্দ করতেন না তার অন্যতম হচ্ছে, ‘খাবুসাত নাফসি’ অর্থাতআমার চরিত্র নোংরা হয়ে গেছে। এর পরিবর্তে তিনি ‘লাকিসাত নাফসি’ বলার উপদেশ দিয়েছেন। উভয় বাক্যের অর্থ কাছাকাছি। আর তা হচ্ছে অভ্যাস ও চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে।

নবী (সা.) ‘খাবুসা’ শব্দটি প্রয়োগ করা অপছন্দ করেছেন। কারণ তা কদর্যতা ও নোংরামির মাত্রাতিরিক্ত অর্থ প্রকাশ করে।
মহানবী (সা.) আঙুর ফলকে ‘কারাম’ বলতেও নিষেধ করেছেন। কারণ কারাম হচ্ছে মুমিনের গুণ।
মহানবী (সা.) কাউকে এমন কথা বলতে নিষেধ করেছেন যে ‘মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে’। নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এরূপ বলল, মূলত সে যেন লোকদের ধ্বংস করে দিল। এমনি ‘লোকেরা নষ্ট হয়ে গেছে, জামানা খারাপ হয়ে গেছে’ বলাও অপছন্দনীয়।
রাসুল (সা.) ‘তারকার প্রভাবে বৃষ্টিপ্রাপ্ত হয়েছে’ বলতেও নিষেধ করেছেন।
মহানবী (সা.) ‘আল্লাহ যা চান’ এবং ‘তুমি যা চাও’ বলতেও নিষেধ করেছেন।
কেননা এতে (এবং) শব্দের মাধ্যমে বান্দা ও আল্লাহর ইচ্ছাকে সমান করে দেওয়া হয়। তাই (এবং) শব্দ পরিহার করে অতঃপর শব্দটি প্রয়োগ করতে হবে। অর্থাত এভাবে বলতে হবে যে আল্লাহ যা চান অতঃপর সে যা চায়।
রাসুল (সা.) আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করল সে শিরক করল। ’ (মুসনাদে আহমাদ)
এমনি শপথের মধ্যে এ কথাও বলা নিষিদ্ধ যে সে যদি এমন করে তাহলে ইহুদি হয়ে যাবে।
মহানবী (সা.) রাজা-বাদশাহকে মালিকুল মুলক তথা শাহানশাহ বা রাজাধিরাজ বলতে নিষেধ করেছেন। চাকর ও খাদেমকে আমার বান্দা বা আমার বান্দি বলাও নিষিদ্ধ। বাতাসকে গালি দেওয়া, জ্বরকে দোষারোপ করা, মোরগকে গালি দেওয়ার ব্যাপারেও নিষিদ্ধতা বর্ণিত হয়েছে।
আইয়্যামে জাহেলিয়াত তথা অন্ধকার যুগের সব আহ্বান ও স্লোগানকে তিনি বর্জন করার আদেশ দিয়েছেন। মুসলিমদের গোত্র, বংশ ও জাতীয়তাবাদের দিকে আহ্বান করতে এবং এর ভিত্তিতে বিভক্ত হতে নিষেধ করেছেন।
তিনি বেশির ভাগ মুসলমানের কাছে পরিচিত ‘এশা’ সালাতের নাম বর্জন করে ‘আতামাহ’ রাখাকে অপছন্দ করেছেন। গ্রাম্য লোকেরা সে সময় এশার সালাতকে আতামার সালাত বলত। কিন্তু বেশির ভাগ মুসলমান তখন এশার সলাত বলত। তাই রাসুল (সা.) গ্রাম্য লোকদের অভ্যাস মোতাবেক এশার সালাতের নাম বর্জন করে ‘আতামার সালাত’ বলা অপছন্দ করেছেন।
এমনি কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া, তিনজন একসঙ্গে থাকলে একজনকে বাদ দিয়ে দুজন মিলে গোপনে আলাপ করা এবং নারীকে তার স্বামীর কাছে অন্য নারীর সৌন্দর্য বর্ণনা করতে নিষেধ করেছেন।
মহানবী (সা.) ‘হে আল্লাহ, তুমি ইচ্ছা করলে আমাকে ক্ষমা করো’—এভাবে দোয়া করতে নিষেধ করেছেন এবং আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে দৃঢ়তার সঙ্গে চাওয়ার আদেশ করেছেন। তিনি বেশি বেশি শপথ করা, আল্লাহর চেহারার উসিলায় কিছু চাওয়া থেকে নিষেধ করেছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনাকে ইয়াসরিক বলতে নিষেধ করেছেন। রাসুল (সা.) বিনা প্রয়োজনে কোনো লোককে এ কথা জিজ্ঞেস করতে নিষেধ করেছেন যে কেন সে তাঁর স্ত্রীকে প্রহার করেছে। তবে প্রয়োজনবশত জিজ্ঞেস করা যেতে পারে।
রাসুল (সা.) ‘আমি পূর্ণ রমজান মাস সিয়াম রেখেছি এবং পূর্ণরাত তাহাজ্জুদ সালাত পড়েছি’—এমন কথা বলতে নিষেধ করেছেন।
যেসব বিষয় ইঙ্গিতের মাধ্যমে বলা উচিত, তা সুস্পষ্ট করে এবং খোলাখুলিভাবে বলা নবীজি (সা.)-এর অপছন্দনীয় কথা-বার্তার অন্তর্ভুক্ত।
রাসুল (সা.) এমন কথা বলতে নিষেধ করেছেন যে ‘ওই আল্লাহর শপথ! যার সিলমোহর আমার মুখের ওপর আছে। ’ কেননা কাফিরের মুখের ওপরও আছে আল্লাহর সিলমোহর।
জোরপূর্বক আদায়কৃত সম্পদকে হক বা অধিকার বলা অন্যায়। আল্লাহর রাস্তায় ও আল্লাহর আনুগত্যে খরচ করার পর এ কথা বলা নিষিদ্ধ যে আমি এত এত সম্পদ নষ্ট করেছি, দুনিয়াতে আমি অনেক সম্পদ খরচ করেছি ইত্যাদি।
ইজতেহাদি মাসআলায় (গবেষণালব্ধ ইসলামী বিধানের ক্ষেত্রে) মুফতির জন্য এ কথা বলা নিষিদ্ধ যে আল্লাহ এটাকে হালাল করেছেন অথবা আল্লাহ এটাকে হারাম করেছেন।
কোরআন ও সুন্নাহর কোনো দলিলকে মাজাজ (রূপকার্থবোধক) বলা ঠিক নয়। এভাবে দার্শনিকদের সন্দেহযুক্ত কথাকে অকাট্য যুক্তি বলা অযৌক্তিক।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যেসব কাজ (সহবাস বা অন্য বিষয়) হয় তা মানুষের মধ্যে বলে বেড়ানো নিষিদ্ধ। যেমনটি করে থাকে নির্বোধ ও নিম্ন শ্রেণির লোকেরা।
‘আমি, আমার, আমার কাছে’ ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করা থেকে সতর্ক থাকা উচিত। কেননা এই তিনটি শব্দ বলার কারণেই ইবলিস, ফেরাউন ও কারুন ধ্বংস হয়েছে। ইবলিস বলেছিল, ‘আমি তার (আদম) থেকে শ্রেষ্ঠ। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ আগুন থেকে। আর তাঁকে সৃষ্টি করেছ মাটি থেকে। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : : ১২)
ফেরাউন বলেছিল, ‘মিসরের রাজত্ব কি একমাত্র আমার নয়?’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৫১)
কারুন বলেছিল, ‘এই ধন আমার নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছি। ’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৭৮)
জাদুল মাআদ অবলম্বনে