Monday, September 28, 2020

সন্তানের স্বাস্থ্য ও লেখাপড়া, বাপের মায়ের মুখে মুখে প্রি-টিনএজারদের তর্ক

 

তেরো বছরের চারু এখন মায়ের মুখে মুখে বেশ তর্ক করে। তাকে পড়তে বসলে বলে, ‘‘এখন পড়ব না। ভাল লাগছে না।’’ কোনও কাজ করতে বারণ করলে আরও চেঁচামেচি করে, ‘‘কেন করব না?’’ একে তো কথা শুনছে না মেয়ে, তারপর মায়ের সঙ্গে মুখে-মুখে তর্ক করছে। চারুকে সামলাতে নাজেহাল তার মা-বাবা। এক দিকে তাঁরা বিরক্ত হচ্ছেন আবার বুঝতে পারছেন, মেয়ের আলাদা মত তৈরি হচ্ছে। কিন্তু কী করলে বা বললে যে মেয়ে সংযত হবে, তা তারা বুঝতে পারছেন না।

এই সমস্যাটি নতুন নয়। ন’-দশ বছর বয়স অর্থাৎ প্রি-টিনএজ থেকে এ ধরনের সমস্যা শুরু হয়। ছেলেমেয়েদের একটা মতামত, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হতে শুরু করে এ সময়ে। তাই মা-বাবাকে অনেক ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে হবে। রেগে গিয়ে চেঁচামেচি করলে আর যাই হোক, সমাধান হবে না। একে একে বুঝতে হবে সমস্যার জায়গা। তবেই সমাধান হবে সহজ।

প্যারেন্টিং কনসালট্যান্টরা বলেন, ‘‘এই সময়ে শিশুদের ব্রেন রিমডেলিং(Remodeling- change the structure or form ) হয়। ব্রেনের প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স(Prefrontal Cortex (PFC) is the cerebral cortex covering the front part of the frontal lobe) আমাদের বোধবুদ্ধি, চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ লজিকাল থিঙ্কিংয়ে সাহায্য করে। এই অংশের ডেভেলপমেন্ট একটু দেরিতে হয়। আর আছে অ্যামিগডালা (Amygdala is a collection of cells near the base of the brain. মানবমস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ন এক অংশ হল অ্যামিগডালা। বাদামের মতো আকৃতির এই জিনিসটিই আমাদের ভয় এবং প্যানিকের জন্য দায়ী। যাঁদের অ্যামিগডালা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা হন অকুতোভয় স্বভাবেরযত রকমের অনুভূতি রয়েছে আমাদের, তার সব কিছুরই ‘স্টোরেজ’ (জমা থাকে) হয় অ্যামিগডালায়)। এই অংশ আগে ডেভেলপ করে যায়, ফলে এর প্রভাবেই শিশুরা একটা কথার হুট করে জবাব দিয়ে দেয়। অনেক বেশি আবেগে চলে। লজিকাল থিঙ্কিং(Logical thinkers observe and analyze phenomena, reactions, and feedback and then draw conclusions based on that input) সেখানে কম। তখন তাদের ব্যবহারে কোনও বাঁধন থাকে না। ফলে সীমাহীন হয়ে যায় বহিঃপ্রকাশ। চট করে রেগে যায়, চিৎকার করে ওঠে, কিছু ক্ষেত্রে জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলেও দিতে পারে। ক্রমশ তেরো, চোদ্দো বছর হলে তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।’’ কিন্তু এই বয়সে যদি তাকে ঠিক মতো সামলানো না যায়, তা হলে পরবর্তী ক্ষেত্রে মা-বাবার থেকে দূরত্ব অবধি তৈরি হতে পারে।

সামলাবেন কী ভাবে?

১. মনে রাখতে হবে, এই বয়সের সন্তানের বুদ্ধি পরিণত নয়। কিন্তু মা-বাবা পরিণত। সুতরাং ছেলেমেয়ে চেঁচামেচি করলেও ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তাঁদের প্রস্তুত থাকতে হবে। সন্তান যতই চেঁচামেচি করুক, মা-বাবাকে শান্ত থাকতে হবে। সন্তান চেঁচিয়ে কথা বললেও আপনি শান্ত গলায় উত্তর দিন। ওরা কিন্তু দেখে শেখে। আগে ওকে চিৎকার করা বন্ধ করতে বলুন। তার পর ধীরে, ঠান্ডা গলায় তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে, সে কী চায়। সে যদি পড়তে না চায়, তাকে কিছুটা সময় ছাড় দিন। দেখুন সে নিজে থেকে পড়া শুরু করে কি না। যদি না করে তখন তাকে ডেকে জানতে চান, সে কেন পড়তে চায় না।

ছেলে বা মেয়ে কোনও বিষয়ে উত্তর দিলে বা উল্টে প্রশ্ন করলে, গোড়াতেই তাকে থামিয়ে দেবেন না। অনেক মা-বাবাই মনে করেন, তাঁদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সন্তান কোনও মতামত দিলে তাকে চুপ করিয়ে দেন। এই মনোভাব বদলানো জরুরি। সন্তান কেন প্রশ্ন করছে, তর্ক কেন করছে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। হতে পারে সে যুক্তিযুক্ত কথা বলছে না। কিন্তু সেটা শুনুন। তাকেই জিজ্ঞেস করুন সে কেন এমনটা বলছে? ওকে যুক্তি দিয়ে ওর কথা বা মত বোঝাতে বলুন। তার পর আপনার যুক্তি দিয়ে যদি তার যুক্তি খণ্ডন করতে পারেন, তা হলেই সমস্যা মিটে যাবে। এতে তার যুক্তিবোধও তৈরি হবে। সে বুঝবে নিজের কোনও মতামত মা-বাবাকে বোঝাতে গেলে তা যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। 

২. অনেক মা-বাবা সন্তানের গায়ে হাত তোলেন। কেউ তিন বছর বয়স থেকে, কেউ পাঁচ বছর বয়স থেকে। কিন্তু ন’-দশ বছর বয়সেও সেই অভ্যেস জারি থাকলে, তা সন্তানের আত্মসম্মানে আঘাত করতে পারে। সে কিন্তু তখন আরওই কথা শুনবে না। বরং তার মনে হবে যে, বড়জোর সে মার খাবে। সে আরও জেদি হয়ে যাবে তার জায়গায়। মা-বাবার কোনও বোঝানোই তখন কাজ করবে না। তাই গায়ে হাত তোলাটা সমাধান নয়।

৩. মনে রাখবেন, এ বয়সে ও যে তর্ক বা ব্যবহার করছে, তা আবেগের বশবর্তী হয়ে করছে। তাই সেটাকেই অস্ত্র করতে হবে। সন্তান খুব খারাপ ভাবে কথা বললে উত্তর দেবেন না। বরং চুপ করে সেখান থেকে চলে যান। তার সঙ্গে কথা বন্ধ রাখুন। ওকে বোঝান যে, ওর ব্যবহারে আপনি দুঃখ পেয়েছেন। এই বয়সের শিশুদের অবলম্বন কিন্তু মা-বাবাই। তাই ওরা মা-বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ফেললেও সেখানেই আশ্রয় খোঁজে। দেখবেন, সে নিজেই হয়তো আপনার পাশে এসে বসবে, কথা বলতে চাইবে। তখন ওকে বলুন, আপনি কতটা কষ্ট পেয়েছেন ওর ব্যবহারে। দেখবেন, ও বুঝবে। ওর মনে থাকবে যে, মা কথা বন্ধ করে দিতে পারে। ওষুধের মতো কাজ করবে এই নীরবতা।

৪. অনেক সময়ে হাজার বুঝিয়েও কাজ হয় না। তখন জোর করলে চলবে না। বরং ওর কথা মেনে নিয়ে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে। পায়েল ঘোষের কথায়, ‘‘হয়তো কোনও পরীক্ষার আগে সন্তান পড়তেই চাইল না, ছেড়ে দিন। সেই পরীক্ষায় খারাপ রেজ়াল্ট করলে সে নিজেই বুঝে যাবে। তখন আপনি বলুন সে কোন জায়গায় ভুলটা করেছে। ওর ভুল থেকেই ওকে শিখতে দিন।’’

টিনএজ বা বয়ঃসন্ধির মতোই প্রি-টিনএজও খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়ে মন ও শরীর প্রস্তুত হয় পরিবর্তনের জন্য। এখন বহির্জগতের প্রভাবও অনেকটাই ওদের জীবনে। সুতরাং নিজস্ব মতামত যে ছোট থেকে তৈরি হবে, তা আশ্চর্যের নয়। কিন্তু সেই মত যেন ঠিক হয়, তা দেখা মা-বাবার দায়িত্ব।  

Source: আনন্দবাজার, উইকিপিডিয়া, সায়েন্সডাইজেষ্ট

খাদ্য, যেগুলো মানসিক চাপ কমায়

 সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলায়। কিন্তু কিছু সমস্যার যেন কোনো সমাধান নেই! কখনোই পিছু ছাড়ে না! ভুলে থাকার চেষ্টা করেও আমরা ভুলতে পারি না। সমস্যার সমাধান না করা গেলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মানসিক চাপ থেকে মুক্তির পথই বা কী? বিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীরের ওপর ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলে মনকেও অনেকটাই বশ মানানো যায়। আর এ ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ কিছু খাবারের বিশেষ পুষ্টি উপাদানগুলো আমাদের স্নায়ুকে শীতল রাখতে সহায়তা করে, সাময়িকভাবে হলেও তা কিছুটা মানসিক চাপ কমায়।

১. কাজুবাদাম
কাজুবাদাম গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান দস্তার একটা ভালো উৎস। দুশ্চিন্তা আর বিষাদগ্রস্ততা দূর করতে খুবই কার্যকর এই দস্তা। শরীরে দস্তার চাহিদা পূরণ করতে পারলে, নিয়মিত এই দস্তার জোগান দিতে পারলে স্নায়ুতন্ত্রকে ঠান্ডা রাখার কাজটা অনেক সহজ হয়। আজকাল বাজারের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লার দোকানেও প্যাকেটজাত কাজুবাদাম পাওয়া যায়। নিয়মিত কাজুবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন, মানসিক চাপ মোকাবিলায় নিজেকে প্রস্তুত করুন।
২.ওট
ওট বা জইয়ের দানা খুবই স্বাস্থ্যকর খাবার। প্রচুর আঁশযুক্ত এই খাবার শরীরের নানা চাহিদা মেটায়। বিশেষত মস্তিষ্কে ‘সেরোটোনিন’ নামের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট তৈরিতে খুবই সহায়ক ওট। সেরোটোনিন এমন এক রাসায়নিক যাকে বিজ্ঞানীরা ‘ভালো লাগার’ রাসায়নিক হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। সকালের নাশতায় কিংবা রাতেও নিয়ম করে ওট খেতে পারেন। দুধে ভিজিয়ে হোক বা কেবল পানিতে ভিজিয়ে হলেও ওট খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে অনেক উপকার পাবেন। বড় বিপণিবিতানসহ নানা চেইন শপে টিনজাত ওট পাওয়া যায়।
৩. আখরোট
আখরোটের নানা পুষ্টি উপাদানের মধ্যে আছে আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসহ অন্যান্য পলিফেনোল। এসব উপাদান মস্তিষ্কের চিন্তা ক্ষমতাকে বাড়ায়, প্রখর করে। ফলে নিয়মিত কিছুটা আখরোট খেতে পারলে আপনার চিন্তা ক্ষমতা বাড়বে আর তা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে। বড় বাজারগুলোতে শুকনো খাবারের দোকানে খোলা আখরোটের পাশাপাশি প্যাকেটজাত আখরোটও পাওয়া যায়। কিনে এনে বাড়িতে রেখে দিন, মাঝেমধ্যে খেতে থাকুন। এভাবে শুকনো খাবারের অভ্যাস করাটা খাদ্যাভ্যাসের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
৪. রসুন
রসুনের অনেক গুণ। রসুনের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খুবই সহায়ক। মানসিক চাপে ভুগলে আমরা নানা অনিয়ম করি আর এতে শরীর ভেঙে পড়ে। এই দুর্বলতার সুযোগে শরীরে বাসা বাঁধে নানা অসুখ-বিসুখ। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে রসুন খান। এটা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত রসুন খেলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি মানসিক চাপে থাকা মানুষদের জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক। তাই খাবারদাবারে নিয়মিত কিছুটা রসুন খান, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন।
৫. কমলা লেবু
ভিটামিন-সিসমৃদ্ধ কমলা লেবুর অনেক উপকারের কথা তো আমরা জানিই। মন বিষণ্ন থাকলে, শরীর অবসাদগ্রস্ত হলে খানিকটা কমলা লেবুর রস মুহূর্তেই চাঙা করে দিতে পারে। হাতের কাছের এই ফল কেবল সাময়িক প্রশান্তিই দেয় না, নিয়মিত অল্পস্বল্প কমলা লেবু খান শরীর মন দুই চাঙা থাকবে। শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা কমানো, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো এবং কিডনি ভালো রাখতেও কমলা লেবু খেতে পারেন। শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখাটাও সহজ।
সূত্রঃ এইচটি

হজমের সমস্য?

 রোজ সকালে এই ম্যাজিক ড্রিঙ্কেই সারবে হজমের সমস্যা

জিরা আর জোয়ান এই দুই উপকরণেই আছে বেশ কয়েকটি ঔষধি গুণ।
সারাবছর অল্প বিস্তর ডায়েট মেনে চললেও পুজোর ক’টা দিন ডায়েটকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জমিয়ে উপভোগ করেছেন খাওয়াদাওয়া। মধ্যরাত গড়িয়ে পার্টি, বেলা পর্যন্ত ঘুমনো, ব্রেকফাস্ট বাদ দিয়ে একেবারে লাঞ্চ, চুটিয়ে বাইরে খাওয়া, দিনভর শুয়ে-বসে থাকা আর ঘুরে বেড়ানো এভাবেই অনিয়মে কেটে যাচ্ছে দিনগুলো৷
শুনলে অবাক হবেন, আগে পরিশ্রম করে কোমরের মাপ যতটুকু যা কমিয়েছিলেন, ওই ক’দিনের অনিয়মে সে আবার ফিরে আসতে পারে স্বমহিমায়৷ এমনকি বেড়ে যেতে পারে ওজনও। শুধু তাই নয় গ্যাস-অম্বলের সমস্যাটাও বেশ ভালই জানান দিচ্ছে ওই ক’দিনের অনিয়মে। আর এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে মুড়ি মুড়কির মতো ওষুধ খাচ্ছেন। ভাবছেন এতেই হবে সব সমস্যার সমাধান। অনেকেই সারা বছর ধরে গ্যাস-অম্বলের রোগে ভোগেন। আর সারা বছরই টুকটাক ওষুধ খেয়ে ফেলেন চিকিতসকের পরামর্শ ছাড়াই। আপনার অজান্তেই শরীরে বড় কোনও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো?
বাড়িতে বানানো টোটকাতেই টাটা বাইবাই করুন গ্যাস-অম্বলের সমস্যাকে! দুটি সহজলভ্য উপকরণ দিয়েই বানিয়ে ফেলুন এই ‘ম্যাজিক ড্রিঙ্ক’। এই পানীয় কেবল গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকেই নয় আপনাকে রেহাই দেবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকেও। জেনে নিন কী ভাবে বানাবেন এই পানীয়।
সহজলভ্য উপকরণ দিয়েই বানিয়ে ফেলুন এই ‘ম্যাজিক ড্রিঙ্ক’।
উপকরণ:
জল:১/২ লিটার
জিরা: ২ টেবিলচামচ
জোয়ান: ১ টেবিলচামচ
জিরা আর জোয়ান একসঙ্গে মিশিয়ে জলে ভিজিয়ে রেখে দিন সারা রাত। ভাল করে ছেঁকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে জলটি পান করুন। এ ছাড়াও সকালে চা এর বদলেও এই ‘ম্যাজিক ড্রিঙ্ক’ পান করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে গ্যাসে ফুটিয়ে নিন যতক্ষণ পর্যন্ত জল পরিমাণে অর্ধেক না হয়ে যায়। স্বাদ বাড়ানোর জন্য খানিকটা কুচোনো আদা, লেবু আর মধুও যোগ করতে পারেন। সকালে চায়ের বদলে এই ‘ম্যাজিক ড্রিঙ্ক’ পানের অভ্যাস আপনার পেটের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে দ্রুত।
কী ভাবে কাজ করে এই ‘ম্যাজিক ড্রিঙ্ক’?
জিরা আর জোয়ান এই দুই উপকরণেই আছে বেশ কয়েকটি ঔষধি গুণ।
আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির জন্য দীর্ঘ সময় ধরে এই উপকরণ দু’টির ব্যবহার চলে আসছে। জোয়ানের জল আপনার পাকস্থলী আর জরায়ু পরিষ্কার করতে বিশেষ উপযোগী। এই জল আপনার বিপাক হার বৃদ্ধি করে তারই সঙ্গে পেটের নানা সমস্যা থেকেও রেহাই দেয়। শুধু কি তাই? জোয়ানের জল আপনার ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াকেও তরান্বিত করতে সাহায্য করে। জিরেতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস্, যা আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জিরের জল আপনার খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে আর ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়। আপনার বিপাক হার বাড়াতেও সাহায্য করে। শরীরের টক্সিক উপকরণগুলি বার করতেও জিরের জল বিশেষ কার্যকরী।
তাই এখন খাবারের সঙ্গে নো কমপ্রোমাইজ! একটা পরিকল্পনা করে নিন কখন পেটপুরে খাবেন আর কখন নিজেকে একটু বেশি সংযত রাখবেন৷ নিয়মিত অভ্যাসে গ্রহণ করুন এই ম্যাজিক পানীয়। এখন আর ওষুধের ভরসায় নয় পেটের সমস্যা মোকাবিলা করুন ঘরোয়া টোটকাতেই।
-anandabazar

রুই মাছ

 চাই রুই মাছ, ঝালে কিংবা ঝোলে

ঝাল হোক কিংবা ঝোল, রুই মাছের জুড়ি নেই। করোনা আবহে রোগ প্রতিরোধের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে বলেছেন প্রত্যেকে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে প্রোটিনের। রুই মাছেও রয়েছে ভরপুর প্রোটিন।
মেডিসিনের চিকিৎসকরা এই প্রসঙ্গে বলেন, বাড়ির খাবার ভাত-মাছের ঝোল যদি নিয়মিত খেতে পারেন, এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না। প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাছ খাওয়া যেতেই পারে।
ডায়েট করছেন যারা, তারাও মাংসের পরির্বতে রুই মাছ খেতে পারেন, মত পুষ্টিবিদদের। এই মাছে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায় যাদের অতিরিক্ত মেদ রয়েছে, তাঁরা নিয়মিত এই মাছ খেতে পারেন। মাছের তেলে থাকা ওমেগা থ্রি নামক অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড যা রক্তের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল LDL ও VLDL কমায় এবং উপকারী কোলেস্টেরল এইচডিএলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে হৃদযন্ত্রে চর্বি জমতে পারে না। আমেরিকার স্কুল অব নিউট্রিশনের জার্নাল অনুযায়ী, এই মাছ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা কমাতেও সাহায্য করে।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল ইনফর্মেশন বলছে, ওমেগা থ্রি রক্তের অণুচক্রিকাকে বা প্লাটিলেটকে জমাট বাঁধতে দেয় না, ফলে রক্তনালিতে জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোক হতে পারে না। স্ট্রোক প্রতিরোধে রুই মাছের ভূমিকার কথা উল্লেখ রয়েছে বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্রেও। পুষ্টিবিদগণ এই প্রসঙ্গে বলেন, ভাল মানের প্রোটিনের অন্যতম উৎস এই মাছ।
কী কী থাকে এই মাছে
রুই মাছের পুষ্টিগুণঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম রুই মাছে আছে-
• আমিষ–১৬.৪ গ্রাম
• চর্বি–১.৪ গ্রাম
• ক্যালসিয়াম-৬৮০ মিলিগ্রাম
• ফসফরাস – ২২৩ মিলিগ্রাম
আরো আছে
ভিটামিন এ, ডি, ই রয়েছে রুই মাছে।
ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, লোহা-খনিজে ভরপুর এই মাছ।
এই পুষ্টিবিদের মত, ‘‘রুই মাছে কোলিন নামের একটি পদার্থ থাকে। এই এসেনশিয়াল নিউট্রিয়েন্টসটি সম্প্রতি আবিষ্কার হয়েছে, এটি ডিএনএ সংশ্লেষে(সিনথেসিস) সাহায্য করে। স্নায়ুতন্ত্র, ফ্যাটের বিপাক ক্রিয়া এবং পরিবহণে সাহায্য করে।’’
কতটা খেতে হবে এই মাছ?
ব্যালান্সড ডায়েট বা ভারসাম্য রেখে খাওয়ার বিষয়ে জোর দিতে বলছেন এই পুষ্টিবিদ। তাঁর মত, ৫০-৭৫ গ্রাম মাছ প্রতিদিন খাওয়া জরুরি। অর্থাৎ মাছের একটা বড় টুকরোই যথেষ্ট।
রুই মাছ (Labeo rohita)
Hamilton, 1822
রুই বাংলাদেশের বহুল পরিচিত মাছগুলোর মধ্যে একটি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Labeo rohita (ল্যাবিও রোহিটা)। মাছের দেহ অনেকটা তাঁতের মাকুর মতো। মাথা ও লেজ ক্রমশ সরু। প্রস্থ থেকে উচ্চতা বেশি। চলনের সময় পানির ভেতর গতি বাধাপ্রাপ্ত হয় না বলে এ ধরনের আকৃতিকে স্ট্রিমলাইনড বলে। শরীরের দুপাশ সমানভাবে চ্যাপ্টা এবং সারা শরীর রূপালী আঁশ দিয়ে আবৃত থাকে। আঁশগুলো মসৃণ ও সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো থাকে। ধুসর বর্ণের পাখনার এই মাছের পৃষ্ঠদেশের আঁশের কেন্দ্র লালাভ এবং প্রান্ত কালো বর্ণের হয়ে থাকে। আঁশের কেন্দ্রের এই লালাভ বর্ণ প্রজনন ঋতুতে আরও গাঢ় ও উজ্জ্বল হয়। এছাড়াও অধিক জলজ উদ্ভিদময় পরিবেশে বেড়ে ওঠা মাছের পৃষ্ঠদেশের বর্ণ সবুজ-লালাভ হতে পারে। এদের পিঠ ও পিঠের নিচের দিকটা বাদামী রঙের এবং পেট রুপালী সাদা রঙের হয়৷ মুখ নিচের দিকে নামানো থাকে এবং পুরু ঠোট ভিতরের দিকে ভাঁজ হয়ে থাকে৷ মুখের উপরে ঠোঁটে এক জোড়া গোঁফ থাকে।
রুই মাছ সর্বোচ্চ ২০০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।এরা সবোর্চ্চ ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে রুই মাছের নাম বলা হয়ে থাকে রোহু। স্থানীয় নাম রুই, রোহিতা, রুহিত, রাউ, নলা, গরমা, নওসি।
সূত্রঃ
-ইকথায়োলজি
-zoologybdall
-আনন্দবাজার

রসুন বনাম অসুস্থতা থেকে মুক্তি

 


বহু বয়স্ক মানুষই কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যেস বজায় রাখেন। কতটা লাভবান হন তাঁরা, জানলে আপনিও হাঁটবেন এই পথেই।
কাঁচা রসুনের গুণের তুলনা করতে শব্দ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। একে মহৌষধ বললেও ভুল হবে না।
চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে কাঁচা রসুনঃ
১. রক্তের উচ্চচাপ দূর করে।
২. কোলেস্টরেল কমায়।
৩.হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যায় রসুন খেলে।
৪. শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকলে দিনের বেলায় এক দু’কোয়া কাঁচা রসুন খেলে ম্যাজিকের মতো ফল পাওয়া যাবে।
৫. খারাপ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে কাঁচা রসুন।
৬. যক্ষা থেকে করে রক্ষা কাঁচা রসুন।
৭. নিয়মিত খেলে বাড়ে হজম শক্তি।
৮. চিকিৎসকরা দেখিয়েছেন, কাঁচা রসুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ক্যানসারকে দূরে রাখে।
৯. কোষ্ঠকাঠিন্য কমে
১০. পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দূর হয় কাঁচা রসুন খেলে
১১. কাঁচা রসুন দাঁতের ব্যথায় কাজ দেয়
১৩. ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করে
১৪. কৃমি ধ্বংস করে
১৫. অনিদ্রা দূর হয়
১৬. আঁচিলের সমস্যা দূর করে কাঁচা রসুন
১৭. ত্বককেও তরতাজা রাখে
১৮. রক্ষা করে চর্মরোগের হাত থেকে
তাই রসুন হোক আমাদের নিয়মিত ইলাজ ওপরের ১৮টি শারীরিক সমস্যা সারানোর জন্য।
News18

দই, কেন আর কি জন্য খাবো

 নিয়ন্ত্রণে গ্যাস-অম্বল-ডায়াবিটিস-রক্তচাপ, কেন রোজ দই খেতে হবে? কতটা?

রোজের ডায়েটে থাকুক পরিমিত টক দই।
রোজকার ডায়েটে দই রাখলে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যায়।
অনেক বাঙালিরই জন্মগত সমস্যা বোধহয় অ্যাসিডিটি। তাই বেশিরভাগ বাড়ির মাসকাবারি বাজারেও নাকি থাকে অ্যান্টাসিড আর লিভারের সমস্যার ওষুধ। কিন্তু মুড়ি-মুড়কির মত ওষুধ যে কোনও কাজেই লাগে না সেই নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে কজন!
এখনকার করোনা কালে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (এমন ধরনের ওষুধ যার প্রধান কাজ হলো পাকস্থলীর প্যারাইটাল কোষ থেকে এসিড নিঃসরণ কমানো।) জাতীয় অ্যান্টাসিড খেলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরে না। পেটের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের একটা উপায় আছে নিজেদের নাগালের মধ্যেই, বললেন মেডিসিনের চিকিৎসকরা।
নিয়ম করে দই খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যার পাশাপাশি সামগ্রিক ভাবে ভাল থাকা যায়। প্রো-বায়োটিক খাবারের প্রসঙ্গে প্রথমেই আসে দই এর প্রসঙ্গ। দইয়ে থাকে বেশ কিছু উপকারি জীবাণু যারা আমাদের নানান অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করে সুস্থ থাকতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় বললেন দীপঙ্কর বাবু। উপকারি জীবাণুদের মধ্যে আছে ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলাস, ল্যাকটোকক্কাস ল্যাকটিস, ল্যাকটোকক্কাস কেমোরিস ইত্যাদিরা।
দইয়ে আছে স্ট্রেপটোকক্কাস থার্মোফিলাস ল্যাকটোব্যাসিলাস বুলগারিকাস নামক জীবাণু। এরা সকলেই আমাদের নানা অসুখের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। অর্থাৎ শরীরে কোনও ক্ষতিকর জীবাণু অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ করে দইয়ে থাকা সৈনিক জীবাণুরা যুদ্ধ শুরু করে দেয়। আর বেশিরভাগ সময়েই তারা জিতে যায় বলে আমরা ভাল থাকি। এই কারণেই রোজকার খাবারের তালিকায় দই রাখার পরামর্শ চিকিৎসক তথা পুষ্টিবিদদের। টক দইয়ে আছে বেশ কিছু ভিটামিন মিনারেলস যা আমাদের ভাল থাকতে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদরা জানান যে ভিটামিন বি-২, ভিটামিন বি-১২, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকায় দইয়ের পুষ্টি মূল্য এত বেশি। উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে দই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় বলে জানালেন ইন্দ্রাণী। দইয়ে থাকা পটাশিয়াম রক্তে সোডিয়াম শোষণের মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। সোডিয়াম ব্লাড প্রেশার বাড়ায়।এই উপাদান কম থাকলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিমন্ত্রণ বাড়িতে খাবার পর শেষ পাতে দই খাবার প্রচলন ছিল। খাবার হজম করতে দইয়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা জেনেই এই প্রচলন। তবে হ্যাঁ, রং দেওয়া বা প্রচুর চিনি দেওয়া দই নয়, শরীর সুস্থ রাখতে বাড়িতে পাতা টক দই ভাল। দইয়ের উপাদান রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ভাল বা বন্ধু কোলেস্টেরল এইচডিএলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে পারে দই।
একই সঙ্গে দইয়ের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ককে আচমকা রক্ত বন্ধ হয়ে স্ট্রোক ও রক্তক্ষরণ থেকে বাঁচায়। কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে রোজ ৫০-১০০ গ্রাম করে বাড়িতে পাতা টক দই খেতে পরামর্শ দিচ্ছেন ইন্দ্রাণী ঘোষ। এর ফলে মেটাবলিক সিনড্রোম অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ওজন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত দই খেলে অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ স্বাভাবিক হয়, একথা সকলের জানা যে ইনসুলিনই আমাদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং রোজকার ডায়েটে দই রাখলে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যায় বলে জানালেন ইন্দ্রাণী।
দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস জাতীয় বন্ধু জীবাণুরা আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছে খাবার চট করে হজম করতে সাহায্য করে। যাঁরা অ্যাসিডিটি, হজমের অসুবিধা বা অন্যান্য পেটের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য দই অত্যন্ত উপকারি। কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়ারিয়ার পাশাপাশি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের সমস্যা দূর করতে কার্যকর এই ম্যাজিক ফুড। যাঁদের চট করে ঠান্ডা লেগে সর্দি জ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সমস্যা হয় তাঁদের জন্যেও দই অত্যন্ত উপকারী, বললেন পুষ্টিবিদরা।
দাঁত ও হাড় মজবুত করতেও দই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। অন্ত্র পরিষ্কার করে শরীরকে টক্সিন মুক্ত রাখে টক দই। ফলে ত্বক ও চুল হয় ঝকঝকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। এমনকি ওজন স্বাভাবিক রাখতেও বাড়িতে পাতা দই অত্যন্ত দরকারি। দইয়ের ঘোল বা রায়তা কিংবা স্যালাডে দই মিশিয়ে খেতে পারেন অনায়াসে। যে কোনও ভাবেই এক কাপ দই রাখুন রোজকার খাবারের তালিকায়।
- anandabazar

তোমার জিহ্বার শ্রেষ্ঠ ব্যবহার

 তোমার জিহ্বার শ্রেষ্ঠ ব্যবহার

নিমগ্ন থেকে বারবার মুখে নাও প্রিয়তমের নাম
রাতের নিবিড় নির্জনতায়
তাই হবে তোমার সর্বোত্তম প্রার্থনা
বন্ধুর কাছে পৌঁছার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথ মেলে
নিঃস্বার্থ সেবায় আর তার সৃষ্টির জন্য উদারতায়।

তোমার রবকে স্মরণ করো

তোমার রবকে স্মরণ করো সকাল-সাঁঝে মনে মনে কান্নাজড়িত স্বরে ও ভীতি বিহ্বল চিত্তে এবং অনুচ্চ কণ্ঠে৷ তুমি তাদের অন্তরভুক্ত হয়ো না যারা গাফলতির মধ্যে ডুবে আছে৷ -সূরা আল ‘আরাফ আয়াত ২০৫

ব্যাখ্যা: স্মরণ করা অর্থ নামায এবং অন্যান্য ধরনের স্মরণ করাও৷ চাই মুখে মুখে বা মনে মনে যে কোনভাবেই তা হোক না কেন৷ সকাল -সাঁঝ বলতে নির্দিষ্টভাবে এ দুটি সময়ও বুঝানো হয়ে থাকতে পারে৷ আর এ দু সময়ে আল্লাহর স্মরণ বলতে বুঝানো হয়েছে নামাযকে৷ পক্ষান্তরে সকাল সাঁঝ কথাটা সর্বক্ষণ অর্থেও ব্যবহৃত হয় এবং তখন এর অর্থ হয় সবসময় আল্লাহর স্মরণে মশগুল থাকা৷ আল কুরআনের এ ভাষণটির উপসংহারে সর্বশেষ উপদেশ হিসেবে এটা বলা হয়েছে৷ এর উদ্দেশ্য বর্ণনা প্রসংগে বলা হয়েছে তোমাদের অবস্থা যেন গাফেলদের মত না হয়ে যায়৷ দুনিয়ায় যা কিছু গোমরাহী ছড়িয়েছে এবং মানুষের নৈতিক চরিত্রে ও কর্মকাণ্ডে যে বিপর্যয়ই সৃষ্টি হয়েছে তার একমাত্র কারণ হচ্ছে, মানুষ ভুলে যায়, আল্লাহ তার রব সে আল্লাহর বান্দা, দুনিয়ায় তাকে পরীক্ষা করার জন্যে পাঠানো হয়েছে এবং দুনিয়ার জীবন শেষ হবার পর তাকে তার রবের কাছে হিসেব দিতে হবে৷ কাজেই যে ব্যক্তি নিজেও সঠিক পথে চলতে চায় এবং দুনিয়ার অন্যান্য মানুষকেও তদনুসারে চালাতে চায় সে নিজে যেন কখনো এ ধরনের ভুল না করে, এ ব্যাপারে তাকে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে৷ এ জন্যেই নামায ও আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে সব সময় স্থায়ীভাবে আল্লাহর প্রতি আকৃষ্ট থাকার ও তাঁর সাথে সম্পর্ক রাখার জন্যে বার বার তাকীদ করা হয়েছে৷
وَاذْكُر رَّبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ وَلَا تَكُن مِّنَ الْغَافِلِين

তৃপ্তি (পরম)

 তৃপ্তি (পরম)

Contentment
তৃপ্তিকে বুঝতে হলে পয়লা অতৃপ্তিকে জানতে হবে। কারণ, এরা পরস্পরের কন্ট্রা।
এই কন্ট্রা বা বিপরীত নিয়ে কবি বলেন,
‘তপনের ছটা না ফুরাতো যদি ফুরালে দিনের নাট,
তবে কি প্রদোষে ফুটিয়া উঠিত ফুল্ল তারার হাট?’ আমার মতে এটি অসম্ভব সুন্দর বর্ণনা।
অতৃপ্তি হলো যখন আগ্রহ বা ব্যগ্রতা Desire- নিয়তই বেড়ে চলে। আগ্রহ বা ব্যগ্রতা মাল্টিপ্লায় হতেই থাকে। এক ব্যগ্রতা যখন মিটে যায় অন্য ব্যগ্রতা তখন সৃষ্টি হয়। এভাবে এমন এক অবস্থা চলে আসে যখন ব্যগ্রতাকে আর রোখা য়ায় না।
আসলে ব্যগ্রতাটা হলো একটি ফাঁদের (Trap) মত। যখন অসীম ব্যগ্রতার সৃষ্টি হয় তখন সম্পর্ক বা রিলেশনশীপ ভঙ্গুরতা (Fragile) প্রাপ্ত হয়। জন্ম হয় অস্থিরতার আর রাগের মত অনন্য এক বিষের। এর ফলে জন্মে স্বার্থপরতা আর পার্থিব সম্পদ গ্রহণের মত বিশেষ লোভ। আরো জন্ম হয় অহংকারের।
এই ব্যগ্রতা যখন আরো বাড়তে থাকে মনটা আর সুস্থির(tranquil) থাকতে পারে না। কারণ এসময় প্রাচুর্য আর নেগেটিভ চিন্তাগুলো মনের শান্তি পুরোপুরি বিনষ্ট করে ফেলে।
অতৃপ্তি বা ব্যগ্রতা তথা Desire আছে বলেই- মানুষ ছটফট করে, একখানে থাকে না, দাঁড়ায়- হাঁটে ও দৌড়ায়!
অতৃপ্তি বা ব্যগ্রতা মানুষকে কুচুটে, কলহপ্রিয়, পরশ্রীকাতর এবং বিভেদকামী বানায়। অতৃপ্তি মানুষকে স্বপ্ন দেখায় কোন বিরাট প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হবার, মার্সিডিস বেঞ্জের মালিক হওয়ার, প্রাসাদোপম বাসগৃহের মালিক হওয়ার, জগৎজোড়া নাম যশ অর্জন করার।
অতৃপ্তি বা ব্যগ্রতা নিয়ে বিখ্যাত শিখ কলামিষ্ট খুশওয়ান্ত সিং-এর একটি প্রাজ্ঞ উপদেশ: “এই দুনিয়াতে তোমার থেকে অনেক ধনী, পেশায় সফল বহু মানুষ আছে এবং থাকবে। অনেকের স্ত্রী তোমার স্ত্রীর থেকে সুন্দরী। এদেরকে হিংসে করে কোন লাভ হবে না – নিজের জীবনটা অনর্থক তিক্ত হয়ে উঠবে কেবল। ঈর্ষা, অতৃপ্তি বা আগ্রহের ব্যাপারটাকে মন থেকে ছেঁটে ফেল।”
এই ‘অতৃপ্তি’ বা আগ্রহের ব্যাপারটাকে সামনে রেখে কালজয়ী লিরিসিষ্ট সলিল চৌধুরী তাঁর লেখা একটি গানের ৪টি লাইনে বলেছেন:
“নিজের ছায়ার পিছে, খুঁজে খুঁজে মরি মিছে,
একদিন চেয়ে দেখি আমি তুমি-হারা, আমি তুমি-হারা (ব্রকেন রিলেশনশীপ)
আর কত কাল আমি রব দিশাহারা।
আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুব তারা-”
আগ্রহ যাদের আছে তারা “নিজের ছায়ার” পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন দিশাহীন ভাবে, সব সময় যেন এই বেড়ানোটা কোনদিনই শেষ হবার নয় -অ্যান এন্ডলেস জার্নি!
তাহলে আগ্রহের বা ব্যগ্রতার ফাঁদ থেকে কি বের হওয়া যাবে না? তৃপ্তিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না? তৃপ্তি ব্যাপারটাই কি ধোঁয়াশাময়?
হ্যাঁ যাবে। মানুষকে তখন ধর্মের দিকে বা মননশীল আধ্যাত্মিকতার দিকে দ্রুত চলে যেতে হবে। খেয়ালে রাখুন ‘মননশীল’(চিন্তাশক্তি জাগায় এমন বুদ্ধিগত, চিন্তাশক্তি সম্পন্ন) কথাটার দিকে। এর ফলে মানুষ নেগেটিভ দিককে সনাক্ত করতে শিখবে খুবই সহজে। মননশীল আধ্যাত্মিকতা মানুষের চিন্তার ভাবধারা বা প্যাটার্ন পুরোপুরি বদলে দিতে সক্ষম। মননশীল আধ্যাত্মিকতার ভেতর দিয়ে যখন কোন মানুষ তার মনের গভীরে ঢুকে পড়ে, তখন তার ভেতরের অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে শুরু করে। আর তখনই মিটে যেতে শুরু করে পার্থিব সকল চাওয়া পাওয়া আর আগ্রহ। ‘তৃপ্তি’ নির্ধারণের জন্য একটি হায়ারার্কি বা শ্রেণীবিন্যাস আছে। ঐ Hierarchyটির দিকে দৃষ্টপাত করা যায়। একেবারে উপরে হল Self-Actualization –বা আত্মোপলব্ধি (Abraham Maslowর hierarchy of needs), যা দেহ মনের সমস্ত চাহিদার পরিতৃপ্তির পর চলে আসে। সর্বোচ্চ এই স্তরে খুব অল্প মানুষই ওঠেন। তাই পূর্ণ তৃপ্তি অধরাই থেকে যায় সিংহভাগ মানুষের। তবে, পূর্ণ তৃপ্তি পেলে চলে আসে অবারিত শান্তি। আর মননশীল আধ্যাত্মিকতা সেই তৃপ্তি বা শান্তি দিতে পুরোপুরি সক্ষম।
আল কুরআন(আধ্যাত্মিকতা)পুরোপুরি ধারন করলে মননশীল আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে মানুষ অবশ্যই Self-Actualization – বা আত্মোপলব্ধি ঘটাতে পারে যেমন ঘটিয়েছিলেন আমাদের প্রিয় নবী(সা.)।
এটাই পরম তৃপ্তি বা Contentment.
সূত্রঃ নিজের মাথা

সর্ষেকে অবহেলা করবেন না

 সর্ষে কেবল কবুতরের খাবার নয়!

ভিটামিন ও একাধিক খাদ্য উপদানে ভরপুর সমৃদ্ধ সর্ষে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে বহু জটিল সমস্যা রুখতে অব্যর্থ ওষুধ
শরীর রাখে তরতাজা, এনার্জি পাওয়া যায় কাজে
সর্ষের বীজে প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম আছে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি সর্ষে থাকে তবে শ্বাসকষ্ট জনিত অসুস্থতা কমায়৷
সর্দি বা বুক ধড়ফড়ানির মত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়৷ সর্ষেতে ভিটামিন এ, সি কে আছে৷ সর্ষে শরীরে প্রচুর পরমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রস্তুত করে৷
শরীরে ক্যান্সারের কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করে সর্ষে৷ শরীরে রক্তপ্রবাহ ঠিক রেখে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় সর্ষে৷
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সর্ষে৷ আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, তামা-সহ একাধিক উপকারী খনিজ আছে যা সত্যিই শরীরকে ভাল রাখে৷
বাঙালির ঘরে ঘরে অত্যন্ত পরিচিত সর্ষের তেল, এমন কোনও বাড়ি নেই যে ব্যবহৃত হয়না৷ এছাড়াও রান্না বিভিন্ন পদে ফোড়নে সর্ষের এক আলাদা গুরুত্ব রয়েছে৷
News18

গরম জলেই ওজন কমে

 মানব শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে কম তাপমাত্রার জল খেলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য শরীরকে অনেক বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়৷ ফলে পুষ্টির ঘাটতি হতে শুরু কর দ্রুত৷ স্থুলতা সেই অপুষ্টির ফল৷

পর্যাপ্ত জল খাওয়ার উপকারিতা অনেক৷ এবং স্রেফ জলেও যে ওজন কমে যায় অনেকখানি, এটাও প্রমাণিত৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যখনই জল তেষ্টা পাবে, ঈষত্ উষ্ণ গরম জল খেলে ১২ কেজি পর্যন্ত ওজন ঝরে যায় এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে৷ জলে ওজন কমাতে গেলে, যখনই তেষ্টা পাবে, গরম জল খেতে হবে৷
মানব শরীরে ঠান্ডা ও গরম, দুই রকম জলের প্রভাব আলাদা৷ গরমে অনেকেই ফ্রিজের ঠান্ডা জল অনেকখানি খেয়ে নেন৷ এটা খুবই ক্ষতিকর৷ চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঠান্ডা জল আসলে হজম শক্তি কমিয়ে দেয়৷ ফলে বদহজমের জেরে শরীরে মেদ জমতে থাকে দ্রুত৷ তাই হয় স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল খান৷ ওজন কমাতে চাইলে সব সময়ই গরম জল৷
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খাওয়ার সময় ফ্রিজের ঠান্ডা জল খেলে খাবারে থাকা চর্বি কঠিন আকার ধারণ করে পেটে গিয়ে৷ ফলে অনাবশ্যক চর্বি জমা হতে থাকে৷
গরম জল খেলে শরীরের সব কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ কিডনি তো ভাল থাকেই, হার্টও ভাল রাখে৷ ফলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক থাকে৷
News18

Everybody needs somebody- A Story

 Lonely tree was growing among hot sands of dead desert. Prickly sands covered the Wood. The Sun mercilessly burned its bark. But the Tree kept on living in spite of all.

One day a Hawk flew over the desert. The Hawk saw the Tree and sat on its branch. He looked around the desert and said:
"You are a strange Tree, why do you keep on living among these dead hot sands? Who needs it?
"You". The Tree answered.
"Me?" the Hawk was surprised, "I don't need you."
The Tree told, "But if not me, you would have to sit on the hot sand instead of my branches. If not me, someone, seeing you sitting on the tree alone, would say that nobody needs you, too and would ask you what you live for. Sitting on my branches you, Hawk, think that I need you.
The Hawk thought about it and had to agree with the Tree. If there was no Tree, the hawk would feel himself alone and useless among this vast desert.
Everybody needs somebody. Allah has created everything with a purpose. What we need to do is to synchronize our minds and souls with the vision of Allah, instead of finding faults in people, events and circumstances.

ফুলের মূল্য

 সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষের কাছে ফুলের কদর অনাদিকালের। সকল বাঙালির জীবনে সব সময় না হইলেও, উত্সব-আয়োজনে ফুল ছাড়া চলে না। বাঙালি হিন্দুর পূজায়-পার্বণে ফুল অপরিহার্য। ফুল চাই বিবাহ অনুষ্ঠানেও। ফুল সাফল্যের প্রতীক, সম্মানের প্রতীক, ভালবাসার তো বটেই। একটি কিংবা একমুঠো ফুল যাহাকে উপহার দেওয়া হয় এবং যিনি দেন মুগ্ধতায় আপ্লুত হন উভয়ই। ফুলের শোভা ও ঘ্রাণ আকুল করে মন। প্রস্ফুটিত কুসুম আনিয়া দেয় চিত্ত প্রশান্তি, সৃষ্টি করে অনাবিল আবহ, যদিও ফুল কীটদুষ্ট হইয়া থাকে। ফুল লইয়া এ যাবত্ কত গান আর কত কবিতা রচিত হইয়াছে তাহার কোনো ইয়ত্তা নাই।

“পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না । পরের জন্য তোমার হৃদয় কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও”
ফুল ফোটে, সে তার রুপে- গন্ধে ভ্রমর, প্রজাপতি প্রভৃতিকে আকৃষ্ট করে, মধুদানে তৃপ্ত করে। ফুলের সৌন্দর্য সৌরভ মানুষ উপভোগ করে, মানুষ তার রূপে মুগ্ধ হয়, গন্ধে হয় আমোদিত। অপরের জন্যই ফুল ফোটে অপরের জন্যে সৌন্দর্য ও সৌরভ বিলিয়ে দিয়েই ফুল সার্থকতা অর্জন করে। তেমনি মনুষ্য জীবনের সার্থকতা অপরের সুখ শান্তি ও কল্যাণের জন্য নিজেকে উপসর্গ করার মধ্যে দিয়ে। তাই মানুষের হৃদয় কুসুমকেও পরের জন্য প্রস্ফুটিত হওয়া উচিত।
অপরের মঙ্গল বিধানে নিজের চিন্তা ও কর্মের বিস্তারেই মনুষ্য হৃদয়ের বিকাশ ঘটে। প্রকৃত মানুষের ধর্ম নিজেকে নিয়ে বিব্রত থাকা নয়। সমাজের জন্য কাজ করা যে এরূপ না করে সে মনুষ্য ধর্ম ভ্রষ্ট হয়। এই পৃথিবীতে আজও বহু মানুষ আছে যারা নিজেদেরকে অপরের জন্য অর্পণ করতে সব সময় প্রস্তুত। অপরের শান্তির জন্য তারা নিজেদের কথা ভাবে না। কিন্তু এই সমস্ত মানুষের সংখ্যা খুবই কম। মানুষের জন্যে কল্যাণ কর্মের থেকে মহৎ কিছু নেই। যে ব্যাক্তি অন্যের সুখ-দুঃখ উপলব্ধি করে তার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে সে সকলের কাছে শ্রদ্ধেয় হয়ে থাকে। এতেই তার জীবন চরিতার্থ হয়। তাই প্রতিটি মানুষের আদর্শ হওয়া উচিত জনসেবা ও জনকল্যাণ। মানুষ যদি সদ গুনের অধিকারী হয় এবং পরার্থে ত্যাগ স্বীকার করে তাহলে মানবসমাজ শান্তিময় হয়ে ওঠে ।
লোকহিতৈষণার থেকে পুণ্যকর্ম এই পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না। পৃথিবীর জ্ঞানী গুণী মনীষীরা নানাভাবে এই লোক কল্যাণের আদর্শ প্রচার করেছেন। মানুষ যে মহৎ গুণের অধিকারী তার সেই চরিত্র তার মূল্য অপরের স্বীকৃতিতে। মনুষ্য জাতির কল্যাণ সাধনে যে ব্যাক্তি দুঃখ-দুর্দশা সহ্য করেও নিজেকে বিলিয়ে দেন তিনি চিরকাল এই পৃথিবীতে বরণীয় ও স্মরণীয় হয়ে থাকেন। যেদিন এই পৃথিবীর সমস্ত মানুষ অপরের দুঃখে কাতর হবে এবং সহানুভূতি ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে সেদিন এই পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হবে।
ফুল নিয়ে কথা বলতে কবিও থেমে নেই-
১. পথের ধারে নামহারা ফুল ফোটে কত
রাত্রি-দিনে
যে তারে চিনতে পারে দাম দিয়ে তারে
কেনে।
২. যদি জোটে মোটে একটি পয়সা
খাদ্য কিনো গো ক্ষুধার লাগি।
দুটি যদি জোটে অর্ধেকে তার
ফুল কিনো হে অনুরাগী।
বাজারে বিকায় ফল তণ্ডুল
সে শুধু মিটায় দেহের ক্ষুধা।
হৃদয় প্রাণের ক্ষুধা নাশে ফুল
দুনিয়ার মাঝে সেই তো সুধা।

ইসলামের নবী মুহাম্মদ(সা.) লাউ খেতেন

 ওজন কমানো থেকে হার্টের সমস্যার সমাধান, হাজার অসুখের একটাই দাওয়াই-- লাউ

শুধু খেতেই ভাল নয়, স্বাস্থ্যের জন্য জন্যও লাউ খুব উপকারি
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার একজন দর্জি রসুল (সা.)-কে খাবারের দাওয়াত করে। আমিও মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে সেই খাবারে অংশগ্রহণ করি। রাসুল (সা.)-এর সামনে বার্লির রুটি এবং গোশতের টুকরা ও কদু মেশানো ঝোল পরিবেশন করে। আমি দেখেছি, রাসুল (সা.) থালা থেকে খুঁজে খুঁজে কদু(লাউ) নিয়ে খাচ্ছেন। আর আমিও সেদিন থেকে কদুর প্রতি আসক্ত হয়ে উঠি। (মুসলিম, ২০৬১; বুখারি, ৫০৬৪)
মুগ ডাল দিয়ে লাউয়ের ডালনা হোক কী লাউ চিংড়ি...বাঙালির হেঁশেলে লাউয়ের বড় কদর! বাদ যায় না লাউয়ের পাতা, ডগাও! তবে শুধু খেতেই ভাল নয়, স্বাস্থ্যের জন্য জন্যও লাউ খুব উপকারি। কাজেই সুস্থ থাকতে নিয়মিত লাউ খাওয়ার অভ্যেস করুন! কারণ-
লাউয়ে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি ও প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। কাজেই ওজন কমাতে এক্সপার্ট। সকালে খালিপেটে কাঁচা লাউয়ের রস খেয়ে দেখুন। এক মাসে ৫ কিলো পর্যন্ত ওজন কমবে!
ডায়াবিটিক রোগিদের জন্যও উপকারি। বিশেষ করে, যাদের সুগার রয়েছে, তাঁদের ঘনঘন গলা শুকিয়ে আসে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত লাউ খেয়ে দেখবেন! ভাল ফল পাবেন।
লাউ রক্তের কোলেস্টেরল কমতে সাহায্য করে। লাউয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। কাজেই হার্টের জন্য উপকারি।
জন্ডিস ও কিডনির সমস্যা হলে লাউ খান। উপকার পাবেন।
লাউ রয়েছে দ্রবণীয়, অদ্রবণীয় ফাইবার ও জল। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ও অ্যাসিডিটির মোকাবিলা করে। যাঁদের পাইলসের সমস্যা আছে তাঁদের জন্য লাউ আদর্শ!
লাউয়ের ৯৬% উপাদান জল। কাজেই, ঘাম, ডায়েরিয়া, হাই ব্লাড প্রেশার বা অন্য কোনও অসুস্থতার কারণে আমাদের শরীর থেকে যে জল বের হয়ে যায়, নিয়মিত লাউ খেলে সেই জলের ঘাটতি মেটে।
ইউরিন ইনফেকশনে খুব উপকারি, শরীরও ঠান্ডা রাখে। হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে লাউয়ের বিকল্প খুব কম আছে।
লাউ পাতার তরকারি মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে, ইনসোমনিয়া বা ঘুমে সমস্যার সমাধান করে। লাউ দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে।
লাউ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেট পরিষ্কার রাখে আর পেট পরিস্কার থাকার কারণে ত্বকও ভাল থাকে! ব্রণর সমস্যা গায়েব হয় কিছুদিনের মধ্যেই! যাঁদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত, তাঁরা নিয়মিত লাউ খেলে উপকার পাবেন!
-News18

সোনার টুকরো পেতে চাও? তাহলে চুপ রও।

 চুপ থাকা নিয়ে চমৎকার একটি মিশরীয় প্রবাদ আছে- *‘কোলাহল যদি রূপার তৈরি হয়, নীরবতা তবে সোনার তৈরি* !’ আরবী প্রবাদটাও অসাধারণ- ‘তুমি তখনি কথা বলো, যখন তা চুপ থাকার চেয়েও সুন্দর!’

চুপ থাকাকে কেন এতো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? কারণ জিহ্বা দ্বারা সংশ্লিষ্ট গুনাহগুলো আমাদের ভালো আমলগুলোকেও নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা সারাদিনে যত কথা বলি, তার বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয়, মিথ্যাচার ও গিবতে পরিপূর্ণ। অথচ মুখ নিঃসৃত প্রতিটি শব্দই লিপিবদ্ধ হচ্ছে।
মহান আল্লাহ বলেন : ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।’ (সূরা কাফ : ১৮)
হাশরের ময়দানে দেখা গেল- আমাদের পূণ্যের চেয়ে পাপের পাল্লা ভারি। অবাক কান্ড! কখনো কারো ক্ষতি করিনি, কারো প্রতি অন্যায় করিনি, তারপরো এ অবস্থা কেন? তখন উত্তর আসবে, এগুলো তোমার মুখ নিঃসৃত পাপের ফল! এজন্যই আল্লাহর রাসূল (সা.) বলে গেছেন : ‘অধিকাংশ মানুষ জিহ্বা দ্বারা সংঘটিত পাপের কারণে জাহান্নামে যাবে।’ (তিরমিযি : ১৬১৮)
তাহলে করণীয়? এর সমাধানও রাসূলুল্লাহ (সা.) দিয়ে গেছেন- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।’ (মিশকাত, ৪২৪৩)
জেনে নেওয়া যাক জিহ্বা দ্বারা সৃষ্ট কবিরা গুনাহসমূহ : ১. মিথ্যা কথা বলা,
২. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া,
৩. মিথ্যা শপথ করা,
৪. গিবত করা,
৫. পরনিন্দা করা,
৬. অভিশাপ দেওয়া,
৭. খোঁটা দেওয়া,
৮. চোগলখোরি করা।
যেমন হওয়া উচিত আমাদের কথা বলার নীতি-
১. কথা বলার আগে সালাম দেওয়া। (সূরা নূর : ৬১)
২. সতর্কতার সঙ্গে কথা বলা (কেননা প্রতিটি কথা রেকর্ড হয়) (সূরা ক্বফ : ১৮)
৩. সুন্দরভাবে ও উত্তমরূপে কথা বলা। (সূরা বাক্বারাহ : ৮৩; বুখারী, ১৪১৩)
৪. অনর্থক ও বাজে কথা পরিহার করা। (সূরা নূর : ৩; বুখারী, ৩৫৫৯)
৫. কন্ঠস্বর নিচু করে কথা বলা। (সূরা লুকমান : ১৯ সূরা হুজুরাত : ২-৩)
৬. বুদ্ধি খাটিয়ে কথা বলা। (সূরা নামল : ১২৫)
৭. সঠিক কথা বলা ও পাপ মোচনের দুয়ার উন্মুক্ত করা। (সূরা আহযাব : ৭১-৭২)
৮. গাধার মতো কর্কশ স্বরে কথা না বলা। (সূরা লুকমান : ১৯; তিরমিযী, ৪৮৫৯)
৯. উত্তম কথা বলে শত্রুকেও বন্ধুতে পরিণত করা ( সূরা হা-মীম সাজদাহ : ৩৪)
১০. উত্তম কথায় দাওয়াত দেওয়া। (সূরা হা- মীম সাজদাহ : ৩৪)
১১. ঈমানদারদের কথা ও কাজ এক হওয়া। (সূরা ছফ:২)
১২. পরিবারের সদস্যদের প্রতি ক্ষমার নীতি অবলম্বন করা । (সূরা আরাফ : ১৯৯)
১৩. মেয়েরা পর-পুরুষের সঙ্গে আকর্ষণীয় ও কোমল ভাষায় কথা না বলা। (সূরা আহযাব : ৩২)
১৪. ছেলেরা পর-নারীর সঙ্গে আকর্ষণীয় ও কোমল ভাষায় কথা না বলা
১৫. মূর্খ ও অজ্ঞদের সাধ্যমত এড়িয়ে চলা। (সূরা ফুরকান : ৬৩)
১৬. হাসি মুখে কথা বলা
আমরা আমাদের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি তো? নাকি জিহ্বাই আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে?

'সুপারহিট' পানীয়

 এতদিন যা হয়নি, তা হয়েছে লকডাউনের দীর্ঘ সময়ে। আগে যে সব খাবার খুব একটা খাওয়া হত না, তারাই ঢুকে পড়েছে রান্নাঘরে। সচেতন হয়েছেন সবাই। নিজে হাতে কেটে-বেটে রান্না করা শুধু নয়, কোন উপাদান কতটুকু মেশালে কতটা পুষ্টি বাড়বে, সে হিসেবও এখন সবার নখদর্পণে। গৃহিনী থেকে কর্তা, বয়ঃসন্ধির ছেলে-মেয়ে থেকে বয়স্ক মানুষরাও সচেতন খাদ্য-পানীয় নিয়ে। বিশেষ করে করোনা আবহে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক পানীয়, যা বাড়িতেই বানাতে পারবেন আপনি।

ওষুধ-ভ্যাকসিনের যা পরিস্থিতি, বাঁচতে গেলে তো লড়তে হবে রোগ প্রতিরোধ শক্তি দিয়েই। তাই রসনার চেয়ে বেশি কদর পুষ্টিগুণের। বিদেশি ভাল-মন্দের বদলে গুরুত্ব পাচ্ছে বাঙালির ঘরোয়া খাবার।
সকালের চায়ের বদলে মানুষ মজে উঠেছেন উষ্ণ গরম হলুদ-দুধে। কেউ বেছেছেন ভেষজ চা, প্যাকেটজাত নয়, প্যাকেটের খাবার যে পুষ্টিতে একটু হলেও খাটো তা জানার পর সবাই ঝুঁকেছেন টাটকা উপাদানের দিকে।
হলুদ-দুধ
যে উপাদানের জন্য হলুদের এত নাম-ডাক, কারকিউমিন, তাকে পুরোদস্তুর ব্যবহার করে দুধ। ডাবল টোনড নয়, সরে মাখামাখি গাঢ় দুধ। কারণ এমনিতেই হলুদে কারকিউমিন থাকে খুব কম, মোটে ৩ শতাংশ। তার উপর চিবিয়ে জল দিয়ে খেলে, বেশিরভাগ শোষিত হয় না। সে জন্যই মালাই দুধ। কারকিউমিন ফ্যাটে দ্রবীভূত হয়। ফ্যাটজাতীয় খাবারের সঙ্গে খেলে উপকার বেশি।
গোলমরিচ দিয়ে বাটার সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে দুধ খান। কারণ গোলমরিচে আছে পিপারিন, যা কারমিউমিনের শোষণ প্রায় ২০০০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু হঠাৎ হলুদ খাবেন কেন?
এত দিন তো না খেয়ে বেশ চলছিল। তার মানে কি সে করোনা ঠেকায়? একদম না। কারকিউমিন শরীরে অহেতুক প্রদাহের প্রবণতা কমায়। এর হাত ধরে বেশ কিছু ক্রনিক অসুখ-বিসুখের প্রকোপ কমে। ক্রনিক রোগের প্রকোপ কম মানে শরীর সুস্থ থাকা। শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে। বাড়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা। ব্যথা-বেদনা কমে। জীবাণু নাশ করে। দুধের গুণ মিশে ভারী হয় উপকারের পাল্লা।
তবে গুঁড়ো হলুদ নয়। কারণ এতে ভেজাল হিসেবে থাকতে পারে বিষাক্ত রং, বার্লি, ময়দা ইত্যাদি। কাঁচা হলুদ খান ভাল করে ধুয়ে। শুকনো গোটা হলুদও খেতে পারেন, বাটার সুবিধা থাকলে।
কতটা খাবেন?
দিনে ২৫০ মিলিগ্রাম খেলে সব দিক বজায় থাকে। যদিও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন প্রদাহ কমানোর উপকার পেতে গেলে দিনে ৫০০-১০০০ মিলি গ্রামখাওয়া দরকার। সহজ হিসেবে, সকালে-রাতে এক চা-চামচ করে খান। রান্নায় ব্যবহার করুন।
হলুদে ক্ষতি?
রক্ত পাতলা রাখে বলে গর্ভাবস্থায় খুব বেশি না খাওয়াই ভাল।যাঁদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা আছে, তাঁরাও খাবেন রয়েসয়ে। কারণ হলুদে ২ শতাংশ অক্সালেট আছে, যার প্রভাবে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
সকালে খালি পেটে খাবেন। এরপর আধ ঘণ্টা আর কিছু খাবেন না। রাতে শোওয়ার আগে হলুদ-দুধ খেতে পারেন। যদি দুধ-হলুদ সহ্য হয়, ঘুম ভাল হবে।
ভেষজ চা
তুলসি চা
বাড়িতে গাছ থাকলে তুলসি পাতা দিয়ে বানাতে পারেন। করোনা না হোক, সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ কম থাকবে। নিয়মিত খেলে প্রদাহের প্রবণতা কমবে, বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
কীভাবে বানাবেন?
এক বাটি জলে এক মুঠো তুলসি পাতা ফুটতে দিন। টগবগ করে ফুটলে আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ফোটান। এরপর এতে মেশান এক চামচ মধু আর দু-চামচ লেবুর রস। মধু দেবে এনার্জি, লেবুর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগবে। ইচ্ছে হলে ধনে ও আদাও মেশাতে পারেন। শুকনো কাশির প্রকোপ কম থাকবে। কমবে প্রদাহের প্রবণতা।
এক লিটার জলে দু-চামচ আদা কুচি, চার চামচ ধনে ও এক মুঠো তুলসি পাতা দিয়ে কম আঁচে ভাল করে ফোটান, যতক্ষণ না জল অর্ধেক হয়ে যায়। এবার ছেঁকে নিয়ে মধু ও লেবু মিশিয়ে খান।
কারা খাবেন না
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত তুলসি চা না খাওয়াই ভাল। কারণ তুলসিতে আছে ইস্ট্রাজল যা জরায়ুর সংকোচন বাড়াতে পারে।
যাঁরা ডায়াবিটিসের ওষুধ খান বা ইনসুলিন নেন, তাঁরা নিয়মিত খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। কারণ তুলসি রক্তে সুগারের মাত্রা কমায়।
রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ খেলেও সাবধান। কারণ তুলসিও রক্ত পাতলা রাখে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে, যাঁদের নিয়মিত অ্যাসিটামিনোফেন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খেতে হয়, তাঁরা তুলসি না খাওয়াই ভাল। কারণ দুইয়ের মিলিত প্রভাবে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
দারুচিনির চা
দারুচিনি, গোলমরিচ, লেবুর রস ও মধু দিয়েও বানাতে পারেন ভেষজ চা। এক চামচ দারুচিনির গুড়ো, সিকি চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো, এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধু-র মধ্যে এক কাপ ফুটন্ত জল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ছেঁকে নিন। দারুচিনির কিউমারিন, গোলমরিচের পিপারিন প্রদাহের প্রবণতা কমাবে, বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। লেবুর ভিটামিন সি-এর কাজও তাই। সঙ্গে যুক্ত হবে মধুর এনার্জি। চাঙ্গা থাকার অব্যর্থ পানীয়। কিউমারিন বেশি খাওয়া ঠিক না। লিভারের ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিকদের সাবধানে থাকতে হবে।
চায়ের সঙ্গে “টা”
সাধারণ চায়ে ক্যাফেইন, ট্যানিন ইত্যাদি থাকে বলে খালি পেটে খেলে কারও কারও অম্বল হয়। কেউ এতে যোগ করছেন আদা, কেউ বা দারুচিনির গুঁড়ো। ভেষজ চায়ে যে কোনও ভয় নেই। তার উপর সকালে হলুদ-দুধ খেয়েছেন। কাজেই “টা” না খেলে ক্ষতি নেই। বিস্কুট জাতীয় কিছু বেশি না খাওয়াই ভাল। কিন্তু অভ্যাস বলে কথা। সে ক্ষেত্রে কল বেরনো ছোলা বা মুগ খেতে হবে।
প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজের দৌলতে পুষ্টির পাশাপাশি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। লেবুর রস মিশিয়ে নিলে স্বাদ বাড়বে, বাড়বে পুষ্টিও। সব রকম বাদাম খেতে পারেন। চিনে বাদাম খেলেও উপকার হবে। পেট ভরা থাকবে অনেকক্ষণ।
ফলের সঙ্গে দইয়ের ঘোল
রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ওজন বাড়লে করোনার জটিলতা বাড়ে। অতএব ফলের রস বাদ। ফল ও দই দিয়ে স্মুদি বানিয়ে খান। দইয়ের ঘোল বানিয়ে খান। চিনির বদলে মেশান মধু। দইয়ের প্রি-বায়োটিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। ফলেরও আছে এই গুণ, সঙ্গে অঢেল পুষ্টি। এর মধ্যে যদি একটু দারুচিনির গুড়ো, গোলমরিচ ও গুড় বা মধু মেশান, জলখাবার আর খেতে হবে না। রোগ ঠেকানোর পাশাপাশি ঝড়বে মেদ, চাকচিক্য বাড়বে ত্বকের, চুলের।
রোজ রোজ স্মুদি না খেয়ে মাঝে মাঝে রায়তা খেতে পারেন। সব রকম ফল, গোলমরিচ ও রসুন মিশিয়ে। রসুনের গুণের কথা তো জানাই আছে। অ্যালিসিন নামের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের প্রভাবে সে সর্দি-কাশি ঠেকায়, প্রেশার-সুগার-হৃদরোগ ও কোলেস্টেরলকে বশে রাখে। বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তবে বেশি নয়, দু-তিন কোয়াই যথেষ্ট।
কী খেয়াল রাখবেন
অন্য কিছু খেতে চান? খান। তবে প্যাকেটের খাবার নয় কিন্তু। ঘরে যা বানাবেন, সেটাই খান। শাক-সব্জি তো ভাল করে ধুয়েই ঘরে তুলছেন, কাজেই কিছু সব্জির অন্তত খোসা ফেলবেন না। বেশি ফাইবার পাবেন। তাতে ওজন ঠিক থাকবে। পেট পরিষ্কার থাকবে। সাশ্রয়ও হবে। এ সবের সঙ্গে চাই একটা কি দুটো ডিম, শরীরের অবস্থা বুঝে। সুষম আহারে সুস্থ থাকুন ভাল থাকুন।
-আনন্দবাজার ও অন্যান্য

দিনে ঘুমায় রাতে জাগে, তার রোগ সকলের আগে

 আমার দাদা একথা প্রায়ই আমাদের শোনাতেন। দাদা ছিলেন আমার কাছে গ্রেট মোটিভেশনাল ম্যান, একজন অভিভাকবক ও বিশেষ মাপের চিকিতসক।

কেন তিনি একথা বলতেন?
আমরা জানি সেই আপ্তবাক্য বা presumptive truth-
“Early to bed and early to rise makes a man healthy, wealthy and wise”
পবিত্র কুরআনেও ঘুমের বিষয়ে বলা হয়েছে বিশেষভাবে সূরা আন নাবায়-“ওযাআলনা নাউমুকুম সুবাতা- WAJA'ALNA NAUMAKUM SUBATA- AND MADE YOUR SLEEP FOR REST” ঘুম হলো প্রশান্তিকারক।
কি বিষ্ময়কর! আল্লাহ নিজে ঘুমান না। তন্দ্রাও তাঁকে স্পর্শ করেনা। LAA TAAKHUZUHOO SINATUNW WA LAA NAWM- NO SLUMBER CAN SEIZE HIM NOR SLEEP অথচ তিনি তাঁর বান্দাদের দিলেন ঘুমের মত এক অফুরন্ত পুরস্কার আর অফুরন্ত শান্তি। কেন দিলেন?
Early to bed and early to rise makes a man healthy, wealthy and wise এ কথাটির প্রয়োগ তেমন না থাকলেও এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য কিন্তু আমাদের উপর ঠিকই কুপ্রভাব ফেলছে। হ্যাঁ, রাত জাগা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। কেন স্বাস্থ্যকর নয় অর্থাৎ রাত জাগলে কী কী সর্বনাশ হতে পারে তা জেনে নিইঃ
১) মানসিক রোগঃ যারা রাতে ঠিকমত ঘুমায় না বা রাত জেগে থাকে তাদের মধ্যে বিষণ্নতা (Depression), অস্থিরতা (Anxiety), বিরক্তি (Irritability), হ্যালুসিনেশনসহ (Hallucination) নানাবিধ মানসিক রোগ বাসা বাধে।
২) স্মৃতি বা মেমোরী কমে যায়ঃ আমরা সারাদিন যা শিখি বা জানি তা ব্রেনে স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে ঘুম অপরিহার্য্য।ঘুমের মধ্যে স্মৃতির Consolidation প্রক্রিয়ায় স্থায়ীরূপ লাভ করা সহজ হয়। রাতে ঠিকমত না ঘুমালে বা অপর্যাপ্ত ঘুমালে অর্জিত তথ্য স্মৃতিতে স্থায়ীরূপ লাভ নাও করতে পারে।
৩) সতর্ক থাকার সক্ষমতা হ্রাস পায়ঃ কেউ যদি রাতে মাত্র দেড় ঘন্টা কম ঘুমায় তাহলে পরের দিন তার সতর্ক (Alertness) থাকার সক্ষমতা ৩২% কমে যায়। অসতর্কতার কারণে অনেক দূর্ঘটনাও ঘটে থাকে।এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব মেডিক্যাল রেসিডেন্ট(medical residents ) রাতে ৪ ঘন্টার কম ঘুমায় তারা যারা ৭ ঘন্টার বেশী ঘুমায় তাদের তুলনায় ২গুণ বেশী ভুল করে।
৪) সড়ক দূর্ঘটনাঃ রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়ার পরিণতিতে ড্রাইভিং এর সময় তদ্রা, মনোযোগের অভাব, বিরক্তি, স্মতি বিভ্রাটজনিত সমস্যা, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াশীলতার ঘাটতি হয়।
৫) মেজাজজনিত সম্পর্কের অবনতিঃ রাত জাগা মানুষদের দিনের বেলায় অস্থিরতা, বিরক্তি, অস্বস্থি বিরাজ করায় এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিষন্নতা কাজ করায় কিংবা কথা ভুলে যাওয়ার প্রবণতার কারণে আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক সুস্থভাবে বজায় রাখা কঠিন হতে পারে।
৬) ভুল স্মৃতি বা False Memory তৈরি হওয়াঃ যারা রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান না তাদের ভুল স্মৃতি তৈরি হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
৭) আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়ঃ যে সকল মানসিক রোগে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে তাদের বেশীর ভাগেরই অন্যতম উপসর্গ রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়া।
৮) হার্টের সমস্যাঃ যারা রাতে ৬ঘন্টার কম ঘুমায় তাদের উচ্চ রক্তচাপে ভোগার বা নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা খুব বেশী। তাছাড়া রাতজাগা রোগীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের প্রবনতা বেশী দেখা যায়।
৯) ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স।অর্থাৎ নিঃসুত ইনসুলিনের প্রতি কোষের সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ায় তা ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।গবেষণায় দেখা গেছে পরপর ৪ রাত ঠিকমত না ঘুমালে ইনসুলিনের প্রতি কোষের সংবেদনশীলতা ১৬% কমে যায় যা ওজন বৃদ্ধি, প্রি-ডায়াবেটিক ও ডায়াবেটিক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় এবং নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসকে অনিয়ন্ত্রিত করতে পারে।
১০) ওজন বৃদ্ধিঃ রাত জেগে থাকলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।আর এই গ্লুকোজের রেসপন্সে বেশী করে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়।কিন্তু রাতের বেলা মাংসপেশীর নড়াচড়া কম থাকায় বা খাদ্যের চাহিদা কম থাকায় ইনসুলিন এই গ্লুকোজকে ফ্যাট কোষে চর্বি হিসাবে জমা হতে সাহায্য করে। তাছাড়া রাত জেগে থাকলে ক্ষুধা নিবারণকারী লেপটিনের(Leptin) মাত্রা কমে যায় এবং ক্ষুধা উদ্রেককারী গ্রেলিনের (Ghrelin) মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে সামগ্রিক ক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ওজন বাড়ে।
১১) দেহের বৃদ্ধি কমে যেতে পারেঃ ঘুমের মধ্যে দেহের বৃদ্ধির জন্য দায়ী Growth Hormone এর নিঃসরণ বেশী হয় এবং এসময় দেহের বৃদ্ধির হারও বেশী থাকে।
১২) ব্রেস্ট ও ওভারীর ক্যান্সারঃ মার্কিন এক গবেষণায় জানা গেছে যেসব কর্মজীবি নারীরা রাত জেগে কাজ বা শিফটিং ডিউটি করেন তাদের স্তন ও ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি যারা শুধু দিনের বেলায় কাজ করেন তাদের তুলনায় যথাক্রমে ৩০% ও ৪৯% বেশী।
১৩) পেটের সমস্যাঃ যারা রাত জাগেন তাদের মধ্যে বুক জ্বালাপোড়া করা, পেপটিক আলসার, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম(IBS), ডায়ারিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১৪)ক্ষত সারানোঃ শরীরিক ক্ষত দ্রুত সারাতে (Healing) গভীর ঘুমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
১৫) রিপ্রডাকশন ও সেক্সঃ রাত জাগা মহিলাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা,অকালে সন্তান প্রসব, কম ওজনের সন্তান হওয়া, ব্যাথাযুক্ত মাসিক এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সন্তান না হওয়ার মত সমস্যা হতে পারে।
১৬) শরীর ব্যাথা ও ম্যাজম্যাজ করাঃ যাদের রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না তাদের শরীরে ব্যাথা বা ম্যাজম্যাজভাব লেগেই থাকে।চিকিৎসা শাস্ত্রে শরীর ব্যাথার Fibromyalgia নামক রোগটি বা রোগটির উপসর্গের তীব্রতা রাত জাগা মানুষদের মধ্যে তুলনামূলক বেশী দেখা যায়।
১৭) ক্লান্তিবোধঃ ঘুমের মাধ্যমে দেহ বিশ্রাম নেয় পরবর্তী সময়ের জন্য দেহকে পূর্ণ কার্যক্ষম করে তোলার জন্য।
১৮) মাইক্রো স্লিপ (Micro sleep)-মাইক্রোস্লিপ হলো কোনরকম পূর্বাভাস ছাড়াই হঠাৎ করে কয়েক সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ডের জন্য ঘুমিয়ে পড়া এমনকি কাজ করা অবস্থায়ও। যারা রাত জাগেন, শিফটিং ডিউটি করেন এবং পর্যাপ্ত ঘুমাননা তাদের মধ্যে মাইক্রোস্লিপের প্রবণতা বেশী দেখা যায়।
১৯)রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসঃ দীর্ঘদিন ধরে রাত জাগার কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
২০) প্রদাহ বৃদ্ধিঃ যারা রাত জেগে কাজ করেন তাদের রক্তে প্রদাহ নির্দেশক (inflammatory makers) যেমন interleukin 6 (IL-6), tumor necrosis factor-alpha (TNF-α) এবং C-reactive protein (CRP) বেশী থাকে।
২১) মাথাব্যাথাঃ যারা রাতে ঠিকমত ঘুমান না তাদের মাথাব্যাথা হওয়ার ও মাইগ্রেনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশী দেখা যায়।
২২) মৃগীরোগ ও খিঁচুনী বেড়ে যায়ঃ গবেষণায় দেখা গেছে রাত জাগা মৃগীরোগীদের খিঁচুনীতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা রাতে স্বাভাবিকভাবে ঘুমায় এমন মৃগীরোগীদের তুলনায় বেশী।
২৩) ডার্ক সার্কল ও ব্যাগি আইঃ যারা ক্রমাগত রাত জাগে তাদের চোখের চারপাশে কালো দাগ বা ডার্ক সার্কল তৈরি হয়। কারো কারো চোখের নিচটা ফুলে উঠে(Baggy eye)।
২৪) অঞ্জনি(STYE): যারা রাত জাগে বেশী তাদের চোখের পাতায় অঞ্জনি (STYE) হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।
২৫) জিন/ দেহ ঘড়িতে বিশৃঙ্খলাঃ মানবদেহে এমন কতকগুলো জিন আছে যাদের কার্যকারিতা দিবরাত্রি চক্র (Circadian Rhythm) মেনে চলে। এদের সংখ্যা আনুমানিক প্রায় ১৫০০। রাত জাগার কারণে এসব জিন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব জিন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেহে নানা রকম জটিলতা স্থায়ীরূপ নিতে পারে।
২৬) নৈতিকতার স্খলন/অধঃপতনঃ যারা রাত জাগেন ও পর্যাপ্ত সময় ঘুমান না তাদের নৈতিকতার বিচারবোধ হ্রাস পেতে পারে। নৈতিকতার বিচারবোধ হ্রাস পাওয়ায় তার দ্বারা অহেতুক অনৈতিক কাজ সম্পন্ন হতে পারে।
২৭) অতিরিক্ত হাই তোলাঃ যারা রাত জাগেন তাদের মধ্যে দিনের বেলা অতিরিক্ত হাই তোলার প্রবণতা দেখা যায়।
আমাদের উচিত হবে ঘুমকে যথাযথ মূল্যায়ন করা।
সূত্র -আল কুরআন/কোরডটকম/ডেইলীহান্ট/সায়েন্টিফিকআমেরিকান
Like
Comment
Share