Wednesday, September 16, 2020

কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস বা অর্শ (ডাক্তারি নাম হেমোরয়েড) ফাইবারেই জব্দ এই মারাত্মক অসুবিধা

 ওষুধ ছাড়াই সুস্থ থাকুন এ ভাবেঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে আস্থা রাখুন ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারে।
শরীর ভাল রাখতে খাওয়াদাওয়ার প্রতি সচেতনতা বেড়েছে।কঠোর নিয়ম মেনে চলতে পারলেও খাবারের পাতে ভিটামিন, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেন অনেকেই। কিন্তু এত কিছু ভাবার মাঝেও বাদ পড়ে যায় অনেক কিছুই। বিশেষত ফাইবার। ডায়েটে ফাইব্রাস ফুড কম পড়ে যাচ্ছে কি না তা আমরা খুব একটা মাথায় আনি না। তাই ফাইবার নিয়ে তেমন সতর্কতাও চোখে পড়ে না।
অথচ এর হাত ধরেই কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হানা দেয় শরীরে। ডায়াবেটিস, থাইরয়েড বা কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি নাজেহাল করে। সে ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারই রুখে দিতে পারে এই সমস্যা। দ্রবণক্ষম ডায়েটারি ফাইবারে আস্থা তাই রাখতেই হয়।
দ্রবণক্ষম বা সলিউবল ডায়েটারি ফাইবার কী?
জলে দ্রবীভূত হয় যে সব ফাইবার, তারাই এককথায় ‘দ্রবণক্ষম ফাইবার’। এ সব খাবার অন্ত্রে দ্রবীভূত হয়ে জেলির ন্যায় একটি থকথকে জিনিসে পরিণত হয় যা মলত্যাগে সাহায্য করে। ওটস, ব্রাউন রাইস, তাল, আলুবোখরা এগুলিতে এমন ফাইবার থাকে। প্রতি দিন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় নাজেহাল হতে হয় এমন মানুষের, জানেন কি, কী কী খাবারে রুখে দিতে পারেন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা, তাও ওষুধের শরণ না নিয়েই?
ওজন কমাতে পাতে রাখুন এ সব খাবার
ফাইবারের জোগান ঠিক রাখতে পাতে রাখুন আমন্ড।
• প্রতি দিনের খাবারের তালিকায় রাখুন ব্রাউন ব্রেড বা ব্রাউন রাইস। এতে ফাইবারের পরিমাণ অন্যান্য খাবারের চেয়ে বেশি। প্রতি দিন তা করতে না পারলে অন্তত আটার রুটি রাখুন পাতে। ভাত থেকেও প্রচুর ফাইবার পাওয়া যায়। কিন্তু ওবেসিটির কারণে ভাত এড়িয়ে আটার রুটিতে আস্থা রাখুন।
• প্রোটিন ডায়েট শরীরের পক্ষে উপকারী। কিন্তু বেশি প্রোটিন খেতে হলে সঙ্গে ফাইবারের মাত্রা বাড়ান। প্রতি দিন সন্ধ্যায় কয়েকটা আমন্ড ও অঙ্কুরিত ছোলা খান। মুগের দানাও খেতে পারেন। কালো বা সবুজ মুগের দানা তেল ছাড়া কড়ায় নেড়েচেড়ে কৌটোবন্দি করে রাখুন। এতে ফাইবারের মাত্রা বেশ বেশি।
• থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে বা ওজন বাড়ার ভয়ে অনেকেই যে কোনও কপি এড়িয়ে চলেন। তাই প্রতি দিনের ডায়েটে পেঁপে, ব্রকোলি, গাজর, বিট বিনস রাখুন ডায়াটে।
• প্রতি দিন একটা করে ফল খান। কোষ্ঠকাঠিন্যের অসুখ থাকলে বেদানা এড়িয়ে চলুন। তার বদলে আপেল, পেয়ারা, কলা খান।
• বিভিন্ন শস্যদানা ও সবজির বীজেও উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকে। প্রতিদিনের খাদ্যে এ সব যোগ করলেও সুফল পাবেন।
• প্রতি দিন টক দই খান। এতে শরীরের টক্সিন দূর হয়।
অর্শ থেকে রেহায় পেতে
অন্যান্য প্রাণীর কী হয় জানা না গেলেও চিকিতসা বিজ্ঞানীরা একটা ব্যাপারে নিশ্চিত যে সুপ্রাচীন কাল থেকেই মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন এবং পাইলসের সমস্যায় ভুগছে। বেশির ভাগ সময়ে নিজেদের দোষেই অসুখ চেপে বসে। তবে একটু সতর্ক হলেই এ রোগের কষ্ট দূর করা যায়।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে কনস্টিপেশন হয় আর পাইলস বা অর্শের অন্যতম কারণ এটাই।
নতুন দিনের শুরুতে বেশির ভাগ মানুষেরই ঘুম ভাঙে খুশি মনে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রায় এক কোটি বা তারও বেশি মানুষের কাছে সকাল আসে কার্যত বিভীষিকা নিয়ে। প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়ে এঁরা ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন। কেননা, তাঁরা পাইলস বা অর্শ নিয়ে কষ্ট পাচ্ছেন। জেনে রাখুন, আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় এক কোটি মানুষ পাইলসের চিকিতসা করান। আর চিকিতসা করানোর সুযোগ পান না বা হাতুড়ের কাছে যান এমন রোগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এ দেশে প্রায় প্রত্যেক পরিবারেই এক জন অর্শ নিয়ে কষ্ট পান। এই অসুখ কিন্তু বলতে গেলে নিজেদেরই ডেকে আনা। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে কনস্টিপেশন হয় আর পাইলস বা অর্শের অন্যতম কারণ এটাই।
ক্রনিক ডায়ারিয়া হলেও পাইলস হয়
শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যই দায়ী নয়, ক্রনিক ডায়ারিয়া হলেও অর্শের ঝুঁকি বাড়ে। বাড়তি ওজন এই অসুখের আর এক অন্যতম কারণ। এ ছাড়া যাঁরা দীর্ঘ ক্ষণ বাথরুমে বসে চেষ্টা করেন তাদেরও পাইলসের আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়া বংশে থাকলে হেমারয়েডের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি। পাইলসের ডাক্তারি নাম হেমারয়েড। যারা বেশি ওজন তোলেন তাঁদেরও এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। আর হবু মায়েদের নানান শারীরিক বদলের সময় পাইলসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে একটু নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করলে রোগ বাড়তে পারে না।
বাড়তে দেবেন না
গ্রেড-১ থেকে গ্রেড–৪, মোট চারটি স্টেজ আছে পাইলসের। শুরুতে সতর্ক হলে রোগটা বাড়তে পারে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সঙ্কোচবশত প্রথমে অসুখটা চেপে রাখা হয়। ফলে তা ক্রমশ বাড়তে থাকে। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত করা যায় যে আধুনিক চিকিতসা বিজ্ঞান পাইলসকে (ডাক্তারি নাম হেমোরয়েড) জব্দ করতে পারে সহজেই। কিন্তু, অসুখ বেড়ে তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে সার্জারি করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। ডিজিটাল রেক্টাল এগজামিনেশন ও প্রক্টোস্কোপ দিয়ে অর্শরোগ নির্ণয় করা হয়।
দেশে প্রতি বছর প্রায় কয়েক লাখ মানুষ পাইলসের চিকিতসা করান
লেসার সার্জারি করে রোগমুক্তি
প্রাচীন ভারতীয় শল্য চিকিতসার অগ্রদূত আচার্য সুশ্রুতের সময় থেকেই অর্শ সারানোর জন্য অস্ত্রোপচারের সাহায্য নেওয়া হত। নানান বিকল্প পদ্ধতির সাহায্য নিতে গিয়ে অনেকেই অর্শের জ্বালাযন্ত্রণা সমেত অসুখটা বাড়িয়ে ফেলেন। প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে ওষুধ আর লাইফস্টাইল মডিফিকেশন করে রোগের বাড় আটকে দেওয়া যায়। কিন্তু বেড়ে গেলে রাবার ব্যান্ড লাইগেশন ও ইঞ্জেকশনের সাহায্য নেওয়া হয়। এই পদ্ধতি সেই সুশ্রুতের আমল থেকে চলে আসছে। এর পর এলো অর্শকে বাদ দেওয়ার শল্য চিকিতসা। এতে অসুখ সারলেও মল ধরে রাখার সমস্যা হয়। আর সেরে উঠতে অনেক সময় লাগে। তবে সাম্প্রতিক কালে ডপলার গাইডেড হেমারয়েড আর্টারি লাইগেশন (DGHAL)-এর সাহায্যে পাইলসের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায় সহজেই। সার্জারির কথা শুনে ভয়ে রোগ পুষে রাখবেন না।
কী করবেন কী করবেন না
অনেক অসুখের মূলেই আছে ভুল খাওয়াদাওয়ার অভ্যেস। অনেকেই শাকসব্জি প্রায় খান না বললেই চলে। আবার অনেকের জল খেতে অনীহা।
• দিনে ৩–৩.৫ লিটার জলপান দরকার। শীতের সময় কিছুটা কম হলেও চলে।
• রোজকার ডায়েটে রাখুন পাঁচ রকমের শাকসব্জি। আলু-পেঁয়াজ ছাড়া সময়ের সব রকমের সব্জি খেতে হবে। ঢ্যাঁড়শ কনস্টিপেশন কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তাঁরা নিয়ম করে দুবেলা ঢ্যাঁড়শ খেলে সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।
• পালংশাক, নটেশাক সমেত সময়ের শাক থাকুক মধ্যাহ্নভোজনে।
• কুমড়ো, লাউ, পটল-সহ সময়ের সব্জি খেতে হবে। খোসা সমেত সব্জি খাওয়া উচিত।
• শসা খান খোসা সমেত। কলা, পেয়ারা, লেবু, আম, জামসহ বেশির ভাগ ফলেই ফাইবার আছে। নিয়ম করে দিনে ৩/৪টি ফল খেলে ভাল হয়।
• বাথরুমে গিয়ে অনেক ক্ষণ বসে চাপ দেবেন না। এতে সমস্যা বাড়ে।
• নিয়মিত ব্যায়াম করে ওজন ঠিক রাখুন। বাড়তি ওজন পাইলসের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
• ভারী জিনিস তুলবেন না।
• ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ছেড়ে দিতে হবে।
• মদ্যপানে সমস্যা বাড়ে।
• ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন।
• কাবাবের নামে ঝলসানো মাংস খাবেন না।
• ময়দার খাবার খেলে সমস্যা বাড়ে। চাউমিন ময়দায় তৈরি হয়। মোমোও তাই। সুতরাং এই ধরনের খাবার বাদ দিন।
• কেক, বিস্কুট মাত্রা রেখে খান। পরিবর্তে খই, ওটস খেতে পারেন।
• কনস্টিপেশন হলে তা সারাবার চেষ্টা করুন।
• পাইলস হলে এটা ওটা করে সময় নষ্ট না করে শুরুতেই চিকিতসকের পরামর্শ নিন।
পাইলস একটি আতঙ্ক: এর অবসান চান অনেকেই
গোড়াতেই সচেতন না হলে এই অসুখ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হজমের তেমন সমস্যা না থাকলেও হজমজাত বর্জ্য নিষ্কাশনের সময়ে কিন্তু তাঁদের বেশ বেগ পেতে হয়। মলত্যাগের প্রক্রিয়া মসৃণ হয় না। কোনও কোনও সময়ে তা হয়ে ওঠে যন্ত্রণাদায়ক। এই জাতীয় যে কোনও সমস্যাকেই হেমোরয়েডস বা সহজ ভাষায় পাইলসের গোত্রে ফেলে দেন অনেকে। কিন্তু আসলে হেমোরয়েডসের বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, যার প্রত্যেকটির উপসর্গ কাছাকাছি হলেও চিকিতসা আলাদা আলাদা।
বিশেষ ভাবে চিনে নিন পাইলসের লক্ষণগুলিঃ
পাইলসের লক্ষণগুলি অনেকেই হয়তো জানেন, নেপথ্যের কারণ নয়। দীর্ঘকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদের পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ ছাড়া যাঁদের মলত্যাগের সময়ে অকারণ বেগ প্রদানের বদভ্যেস রয়েছে, তাঁরাও এই রোগ বাধিয়ে ফেলতে পারেন। মলদ্বারে ব্যথা বা মলত্যাগের সময়ে কাঁচা রক্ত পড়তে শুরু করলেই চিকিতসকের কাছে যাওয়া দরকার। সাধারণ রোগীর পক্ষে পাইলস, ফিসার, ফিসচুলা ইত্যাদির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ, প্রতিটিই পায়ুদ্বার সংক্রান্ত। উপসর্গও প্রায় একই ধরনের। প্রতিটির ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিতসা শুরু করতে হবে। আবার বেড়ে গেলে অস্ত্রোপচারও করাতে হতে পারে। সম্পূর্ণ নিরাময়ের পরেও কখনও কখনও ফিরে আসতে পারে তা।
পাইলসের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে শুধু রক্তক্ষরণ হতে পারে, ব্যথা নয়। তবে মাত্রা বেড়ে গেলে পাইলস মলদ্বারের বাইরে বেরিয়ে আসে। এই বাইরে বেরিয়ে আসার লক্ষণটি ফার্স্ট ডিগ্রি পাইলসের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এটি অসুখের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়। সেকেন্ড ডিগ্রি পাইলসে মলত্যাগ করার সময়েই শুধু লাম্প বেরিয়ে আসে। থার্ড বা ফোর্থ ডিগ্রির ক্ষেত্রে অপারেশন ছাড়া খুব বেশি রাস্তা খোলা থাকে না। আবার থ্রম্ব্রোজড হেমোরয়েডসের ক্ষেত্রে রক্তনালী আক্রান্ত হয়। ব্যথার মাত্রাও বেশি।
সাবধানের মার নেই
বিশেষজ্ঞের মতে, মানুষ যেহেতু দু’পেয়ে প্রাণী, তাই অভিকর্ষের প্রভাবে শরীরের অভ্যন্তরীণ নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে এমনিই টান পড়ে। পাইলসের ভয় থেকে মুক্ত থাকার জন্য খেয়াল রাখা উচিত, যাতে মল কিছুতেই শক্ত না হয়। এর জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ ডায়েট অনুসরণ করা প্রয়োজন। জলও প্রচুর পরিমাণে খাওয়া দরকার, যাতে মলের প্রকৃতি নরম থাকে। মলত্যাগের অভ্যেস যেন মসৃণ হয়। অর্থাত ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া থাকলে, তা সারিয়ে তোলা দরকার। মলত্যাগের সময়ে অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার অভ্যেসও বন্ধ করতে হবে। তবে এ ছাড়াও অনেক সময়ে অতিরিক্ত মেদবৃদ্ধি, ভারী জিনিস তোলা বা গর্ভাবস্থার কারণেও পাইলসের শিকার হতে পারেন।
উপসর্গের কথা
সাধারণত হেমোরয়েডসের উপসর্গ বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ, দু’ভাবেই প্রকট হয়ে ওঠে। আলাদা ভাবে হোক কিংবা একসঙ্গে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর চিকিতসাও দেরি করে শুরু করার প্রবণতা দেখা যায়। পায়ুদ্বারের বিভিন্ন অসুখের ক্ষেত্রে উপসর্গ পৃথক। পাইলস এদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত অসুখ। এর মূল লক্ষণগুলি হল—
• পায়ুদ্বারকে ঘিরে শক্ত, যন্ত্রণাদায়ক লাম্প অনুভূত হবে প্রথম দিকে।
• মলত্যাগের সময়ে কাঁচা রক্ত পড়বে, সঙ্গে ব্যথা। অনেক সময়ে ব্যথা না-ও হতে পারে।
• মলদ্বারের ভিতরের লাইনিংয়ে চাপ এবং প্রদাহজনিত কারণে তা কালচে রক্তাভ দেখাবে। সংক্রমণের ভয়ও থাকে।
• অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অ্যানিমিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
প্রতিকারের উপায়
পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা হলে প্রথমেই চিকিতসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এ ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে অনেকেই চেপে যান প্রথমে, যা অসুখের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। চিকিতসকেরা রোগ নির্ণয় করে প্রক্টোস্কোপির মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে চিকিতসা শুরু করতে পারেন। প্রথম পর্যায়ে মলম, ইনজেকশন বা রাবার ব্যান্ড লাইগেশনের সাহায্যেই রোগ নিরাময় করা সম্ভব। অসুখের মাত্রা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্য শল্যচিকিতসা ছাড়া উপায় নেই। তবে সব ক’টি ক্ষেত্রেই রোগটি ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে, যদি না সাবধানে থাকা যায়।
লাইফস্টাইল বদলে ফেলুন
পাইলস বা পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও অসুখের জন্য পরোক্ষ ভাবে দায়ী অনিয়মিত লাইফস্টাইলও। ডায়েটে যেমন ফাইবারযুক্ত ফল, সবুজ আনাজপাতি, তুষযুক্ত দানাশস্য বেশি করে রাখতে হবে, তেমনই জল খাওয়ার অভ্যেসও বাড়াতে হবে। এড়িয়ে চলতে হবে ক্যাফিন জাতীয় পানীয়, তেল-ঝাল মশলাযুক্ত রান্না। পাইলসের রোগীদের পক্ষে শুকনো লঙ্কা বিষতুল্য। ভারী জিনিস তোলাও কিন্তু বারণ।
পায়ুদ্বার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে কখনও কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওবেসিটি। মেদবৃদ্ধির কারণেও হেমোরয়েডসের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও এক্সারসাইজ়ের মাধ্যমে মলত্যাগের অভ্যেস নিয়মিত করে তুলতে পরামর্শ দেন চিকিতসকেরা।
পায়ুদ্বারে রক্তক্ষরণের সমস্যা সমূল নিরাময় না হলে তা ডেকে আনতে পারে রক্তাল্পতার মতো অসুখও। তাই নিয়ন্ত্রিত জীবনচর্যা আর ব্যালান্সড ডায়েটের মাধ্যমে মলত্যাগের সুঅভ্যেস গড়ে তুললেই প্রতিহত করা যায় পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও অসুখ। মলত্যাগের তৃপ্তি যেন আতঙ্কে পরিণত না হয়, তা সুনিশ্চিত করুন আগেভাগেই।
-ভিনদেশী ম্যাগাজিন থেকে

No comments:

Post a Comment