Saturday, May 24, 2025

কাঁচা আম খাও

 গ্রীষ্মকালে শরীর হাইড্রেটেড ও ঠান্ডা রাখা অত্যন্ত জরুরি। এ সময় অতিরিক্ত ঘাম, পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু স্বাস্থ্যকর পানীয় ও খাবার রাখা প্রয়োজন, যা শরীর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি পুষ্টিও জোগায়। এ সময় কাঁচা আম শুধু রসনা তৃপ্ত করার উপাদান নয়, এটি এক অনন্য স্বাস্থ্যকর ফল। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ ও ঘরোয়া চিকিৎসায় কাঁচা আম ব্যবহৃত হয়ে আসছে রোগ প্রতিরোধে ও শরীর সুস্থ রাখতে। কাঁচা আম খাওয়ার অনেক উপকারিতা।

গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত তাপ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কাঁচা আম শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং সূর্যের অতিরিক্ত তাপ থেকে সৃষ্ট হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে থাকা টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড শরীরকে ক্ষারীয় রাখে, যা তাপজনিত ক্লান্তি ও পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে।
কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি শ্বেত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে, যা বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কাঁচা আমে থাকা এনজাইম হজমে সাহায্য করে। এটি যকৃতের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং পিত্তরস নির্গত হতে সাহায্য করে, যা চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে।
যাঁরা অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য কাঁচা আম অনেক উপকারী। লিভার ডিটক্সিফিকেশন করে বা যকৃতের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, ফলে টক্সিন পরিষ্কার হয় এবং লিভার ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
কাঁচা আমের আয়রন ও ভিটামিন সি রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন সি, এ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় কাঁচা আম ত্বককে উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
পাকা আমে চিনি বেশি থাকে, কাঁচা আমে তা কম। তাই এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে, ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কাঁচা আম চিবানোর সময় লালা নিঃসরণ বাড়ে, যা মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এটি মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, মুখের দুর্গন্ধ ও সংক্রমণরোধে সহায়ক। বলা যায়, দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
কাঁচা আমে ক্যালরি কম কিন্তু ফাইবার বেশি। ফলে এটি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় খাওয়া কমে যায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও পলিফেনল থাকার কারণে কাঁচা আম শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
কিছু সাবধানতাঃ
অতিরিক্ত কাঁচা আম খেলে গ্যাস, পেটব্যথা বা পেটের সমস্যা হতে পারে।
খালি পেটে কাঁচা আম না খাওয়াই ভালো।
যাঁদের টনসিল বা গলাব্যথা হয়, তাঁদের কাঁচা আম না খাওয়াই ভালো।
সোর্সঃ ফারজানা ওয়াহাব, পুষ্টিবিদ, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা
May be an image of fruit

No comments:

Post a Comment