Tuesday, April 15, 2025

যেসব আমলে অন্তরে প্রশান্তি আসে

 একমাত্র মহান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ মানুষের দুঃখ-দুর্দাশা দূর করতে পারে না। আল্লাহ যদি কাউকে মানসিক প্রশান্তি না দেন, তাহলে দুনিয়ার সবকিছু দিয়েও প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মানসিক প্রশান্তি পেতে মহান আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই।

কুরআন-হাদিসের আলোকে এমন কিছু আমল
১. তাকওয়া অবলম্বন : যেকোনো পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মহান আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। আর তা পেতে প্রয়োজন তাকওয়া অবলম্বন করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর যে কেউ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন এবং তিনি তাকে তাঁর ধারণাতীত উৎস থেকে দান করবেন রিজিক। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করবেনই; অবশ্যই আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন সুনির্দিষ্ট মাত্রা।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)
আল্লাহর ওপর আস্থা : পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট।(সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)
আল্লাহ কারো জন্য যথেষ্ট হলে পৃথিবীর কোনো কিছু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তার অন্তরেও কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তা কাজ করবে না।
২. তাওবা-ইস্তিগফার : পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর বলেছি, তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি মহাক্ষমাশীল, তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান এবং প্রবাহিত করবেন নদীনালা।
(সুরা : নুহ, আয়াত : ১০-১২)।
অর্থাৎ তাওবা-ইস্তিগফারের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, তার রিজিক ও সন্তান-সন্ততিতে বরকত দান করেন, যেগুলো দুনিয়ায় দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ হয়।
৩. নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া : দুশ্চিন্তা ও বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত থাকার জন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয় নামাজের মাধ্যমে। এ কারণে যারা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে চায়, তাদের উচিত নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া। রাসুল (সা.) নিজেও কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ আদায় করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩১৯)
৪. দু‘আ : মানুষ যখন কোনো বিপদে পড়ে, তার উচিত মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দু‘আয় লিপ্ত হওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন তুমি বলো, আমি তো কাছেই আছি। যখন কোনো প্রার্থনাকারী আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। অতএব, তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমাতে বিশ্বাস স্থাপন করুক, যাতে তারা ঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৬)
৫. সুদিনে আল্লাহর ইবাদত : যারা সুদিনে আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহভোলা হয় না, তাদের দুর্দিনেও মহান আল্লাহ তাদের রক্ষা করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে লোক বিপদ-আপদ ও সংকটের সময় আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভ করতে চায়, সে যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দের সময় বেশি পরিমাণে দু‘আ করে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮২)
আর সাধারণত মানুষ আল্লাহর ইবাদতের পরই তাঁর কাছে দোয়া করে।
৬. অধিক দরুদ পাঠ : অধিক দরুদ পাঠের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মানুষের দুশ্চিন্তা দূর করে দেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করবেন, তার দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত করা হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)
May be an image of pitcher plant

No comments:

Post a Comment