Wednesday, April 9, 2025

৭ ধরনের বিশ্রাম দরকার সবারই

 “তোমারে জানি নে হে, তবু মন তোমাতে ধায়।

তোমারে না জেনে বিশ্ব তবু তোমাতে বিরাম পায়।।
অসীম সৌন্দর্য তব কে করেছে অনুভব হে,
সে মাধুরী চিরনব–
আমি না জেনে প্রাণ সঁপেছি তোমায়।।
তুমি জ্যোতির জ্যোতি, আমি অন্ধ আঁধারে।
তুমি মুক্ত মহীয়ান, আমি মগ্ন পাথারে।
তুমি অন্তহীন, আমি ক্ষুদ্র দীন– কী অপূর্ব মিলন তোমায় আমায়।”
I do not know you yet, but my mind follows your footsteps,
The world does not know you, and yet it finds solace in you.
Has anyone realized your endless beauty?
That sweetness that is forever new –
But my mind follows your footsteps,
I have surrendered my heart to you without knowing you.
You are the light of lights, while I wait blind in darkness,
You are great and unfettered, while I am enclosed by seas.
But my mind follows your footsteps,
You are without end while I am confined by the minute walls that define me,
Yet you allow me a glimpse of the divine through wondrous union with you.
দিনের ২৪ ঘণ্টার হিসাব করতে গেলে মাঝেমধ্যে কি থমকে যান? বাড়ি থেকে অফিস, অফিস থেকে বাড়ি, বাজার, রান্না, ঘরের কাজ, সন্তান থাকলে তার দেখভাল—এ সব কাজই প্রতিদিনের। এর থেকে পালিয়ে বেড়ানো যায় না। এই কাজগুলোর মধ্যেই আপনাকে সময় বের করতে হবে নিজে ভালো থাকার জন্য। সপ্তাহের ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা কেটে যায় চোখের পলকে। রয়ে যায় ক্লান্ত মন আর শরীর। সুযোগ বুঝে বিশ্রাম নিতে হবে, সাত ধরনের বিশ্রাম। ফলাফল হিসেবে পাবেন সামাজিক, ব্যক্তিগত, মানসিক, শারীরিকভাবে শান্তি আর আরাম। আয়নায় তাকালে জরাজীর্ণ, ক্লান্ত মনের বদলে পাবেন সতেজ অনুভব। আগে যে কাজগুলো বাড়তি আর ঝামেলার মনে হতো, সেগুলো করতেও আর খারাপ লাগবে না।
১. শারীরিক বিশ্রাম
শারীরিক বিশ্রামের প্রয়োজন। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কাজ না করাই ভালো। যদি আট কিলোমিটার দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাহলে চার কিলোমিটারে কমিয়ে আনুন। আবার না দৌড়ে হাঁটতেও পারেন। শরীরের সঙ্গে কথোপকথন থাকা খুব জরুরি। শরীরই বলে দেয় কী চাচ্ছে সে। আট ঘণ্টার ঘুম না হলে ক্লান্ত বোধ করবেন সারা দিন। এ তো গেল অনেকটা নিষ্ক্রিয় শারীরিক বিশ্রাম। পাশাপাশি প্রয়োজন সক্রিয় শারীরিক বিশ্রামও। তালিকায় চলে আসবে যোগব্যায়াম, স্ট্রেচিং আর ম্যাসাজ থেরাপির মতো কর্মকাণ্ডগুলো। এগুলো শরীরে রক্ত ​​সঞ্চালন করে এবং নমনীয়তা ধরে রাখতে ভালো সহায়তা করে।
২. মানসিক বিশ্রাম
ঘুমাতে যাওয়ার আগে সারা দিনের ঘটনাগুলো বারবার মনে পড়া, দুঃস্বপ্ন দেখা বা ঘুম থেকে ওঠার পরও ক্লান্ত অনুভব করেন অনেকে। এই অবস্থা যদি দিনের পর দিন হতে থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে, মানসিকভাবে আপনি ক্লান্ত। প্রয়োজন মানসিক বিশ্রামের। মানসিকভাবে বিশ্রামের অভাব হলে কোনো কাজ করতেও কিন্তু ইচ্ছা করে না। খুব ছোট একটা কাজ করলেই মানসিকভাবে সতেজ বোধ করবেন। এর জন্য চাকরি ছাড়ার বা ছুটিতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। দুই ঘণ্টা পরপর বিশ্রাম নিন। এ সময় চাইলে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ ধ্যান করতে পারেন। এই বিরতিটুকু ধীরগতিতে কাজ করার কথা মনে করিয়ে দেবে। যেসব চিন্তা আপনাকে বিরক্ত করে যাচ্ছে, বিছানার পাশে নোটপ্যাডে সেগুলো লিখে রাখুন। অনেকটা হালকা বোধ করবেন। অনেকের গোসল করার সময় মাথায় ইতিবাচক চিন্তা বা কোনো কাজের বুদ্ধি আসে। এর কারণ, তখন আপনি মানসিকভাবে আরাম বোধ করেন।
৩. সৃজনশীল বিশ্রাম
চতুর্থ ধরনের বিশ্রাম হলো সৃজনশীল বিশ্রাম। এ ধরনের বিশ্রাম বিশেষ করে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাঁদের সমস্যার সমাধান করতে হয় অথবা নতুন ধারণা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হয়। সৃজনশীল বিশ্রাম আমাদের প্রত্যেকের ভেতরের বিস্ময়কে জাগিয়ে তুলতে সহায়তা করে। প্রথমবার যখন গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, সমুদ্র বা জলপ্রপাত দেখেছিলেন, সেই সময়টার কথা কি মনে পড়ে? বাইরের সৌন্দর্য যখন উপভোগ করবেন, তখনই সৃজনশীল বিশ্রাম পাবেন। এটি হয়তো কোনো পার্কে বসে পড়ন্ত বিকেলের রোদ দেখেও পেতে পারেন। কিন্তু সৃজনশীল বিশ্রাম কেবল প্রকৃতির প্রশংসা করার বিষয়ে সীমাবদ্ধ নয়, শিল্পকে উপভোগ করার বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত। আপনার পছন্দের জায়গা বা শিল্পকর্মের ছবি লাগিয়ে রাখতে পারেন কাজের জায়গায়। ফলে সৃজনশীল কাজের অণুপ্রেরণা পাবেন।
৪. আবেগীয় বিশ্রাম
আপনি কেমন আছেন? এর সত্যিকার উত্তর যদি দিতে পারেন, তাহলে আপনার আবেগীয় বিশ্রামের প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি অন্যদের খুশি করার প্রবণতাও কম থাকবে। আবেগীয়ভাবে বিশ্রামপ্রাপ্ত ব্যক্তির মধ্যে সাহস থাকবে সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।
৫. সামাজিক বিশ্রাম
আবেগীয় বিশ্রামের প্রয়োজন হওয়া মানে সামাজিকভাবেও আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন। কিছু সম্পর্ক আছে যা আমাদের প্রেরণা দেয়, কিছু সম্পর্ক আমাদের কষ্ট দেয় বা নিরুৎসাহিত করে। এই দুই ধরনের সম্পর্কের মধ্যে যখন আমরা পার্থক্য করতে পারি না, তখনই আমাদের সামাজিক বিশ্রাম প্রয়োজন। নিজের আশপাশে ইতিবাচক মনোভাব এবং যাঁরা আপনাকে সহায়তা করতে চান, তাঁদের রাখুন। যদি তাঁরা দূরে থাকেন, তাহলে ভার্চ্যুয়ালি যোগাযোগ রাখুন। ভিডিও চ্যাট করুন। তিনিও বুঝবেন, আপনি সামাজিকভাবে তাঁকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
৬. ইন্দ্রিয়ের (আরাম) বিশ্রাম
পাঁচটি ইন্দ্রিয় পাঁচটি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে যেন সারাক্ষণ। কিন্তু কোনটিকে বেশি আরাম দেবেন? চোখের সামনে সব সময় তো মুঠোফোন, ল্যাপটপ বা টেলিভিশন চলছে। বাড়িতে, রাস্তায় কিংবা কাজের জায়গায় কানজোড়া বিশ্রাম পায় না। জিবের মাধ্যমে খাবারের স্বাদ নিচ্ছেন। জেগে থাকলে কাজের জন্যই প্রয়োজনে কিছু না কিছু স্পর্শ করা হয়েই থাকে। নাক তো চারপাশের সুঘ্রাণ ও দুর্গন্ধ নিয়েই যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে এসব ইন্দ্রিয়কে বিশ্রাম দিন। চোখের সামনে থেকে সরিয়ে রাখুন ডিজিটাল সামগ্রী। শব্দে অস্থির হয়ে গেলে কিছুটা সময় কাটান এমন জায়গায়, যেখানে শব্দ কম। মাঝেমধ্যে কোনো কিছু স্পর্শ না করে এই ইন্দ্রিয়কেও বিশ্রাম দিতে পারেন। আর প্রিয় ঘ্রাণ নেওয়ার মধ্য দিয়ে নাকের কিছুটা বিশ্রাম হতে পারে। বেলি ফুলের সময় এখন। সেটাই নাহয় হাতে জড়িয়ে নিলেন কিছুক্ষণের জন্য।
৭. আধ্যাত্মিক বিশ্রাম
এটি শারীরিক ও মানসিকতার বাইরে গিয়ে নিজেকে নিজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সহায়তা করবে। বিষয়টি আধ্যাত্মিকই বটে। কিছুটা সময় নিয়ে ভাবুন, আপনি জীবন থেকে কী চান? আপনার মন ভালো রাখতে কোন বিষয়গুলোর প্রয়োজন অনুভব করেন? কেউ কেউ মনে করেন জীবন নিয়ে অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী না হলেও হবে, বিবাহিত জীবন শান্তিপূর্ণভাবে থাকুক। কেউ কেউ মনে করেন, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা বা দাতব্য কাজে অংশগ্রহণ করাটাই শান্তির কাজ। আধ্যাত্মিক বিশ্রামের জন্য প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে পারেন, ধ্যান করতে পারেন; অর্থাৎ কী আপনাকে আনন্দ দেয়, তা পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য সময় নিন। আপনি নির্ধারণ করতে পারেন কী আপনাকে সত্যিকারভাবে আনন্দ দেয়।
সূত্র: টুইক ইন্ডিয়া
No photo description available.
thers

No comments:

Post a Comment