আল্লাহপাক আশরাফুল মাখলুখাত মানবজাতিকে একমাত্র তার ইবাদতের জন্য এ পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছেন, উপায়-উপকরণের সমাবেশ ঘটিয়েছেন এ সকল উপায় উপকরণ কখন কিভাবে প্রয়োগ করতে হবে তার সঠিক জ্ঞান ও মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে ঘন করেছেন। আমাদের চারপাশে দৃশ্য-অদৃশ্য যা কিছু আছে, সবই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমাদের প্রয়োজন মেটাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তিনি আল্লাহ তোমাদের জন্য পয়দা করেছেন দুনিয়ার সবকিছু। (আল কোরআন)
আল্লাহর নিয়ামত অসংখ্য ও সীমাহীন। কেউই এর গণনা ও পরিমাণ নির্ণয় করতে পারবে না। এ সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা বলেন “তোমরা যদি আল্লাহর নিয়মতসমূহ গণনা করতে আরম্ভ কর তবে তা শেষ করতে পারবে না । (আল কোরআন)
মাছ যেমন পানিতে ডুবে থাকে তেমনি আমরা আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতে ডুবে আছি। কখনো কারো চোখ, দাঁত কান বা মাথার কার্যকারিতায় সামান্য ব্যাঘাত ঘটলে বুঝাযায় এ সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মূল্য কত তাই আমাদের সর্বাবস্থায় সর্ব সময় আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের কথা স্মরণ করা উচিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন- হে মানবগণ তোমাদের উপর আল্লাহর যে নিয়ামত রয়েছে তা স্মরণ কর। (আল কোরআন)
বড়ই অনুগ্রহকারী কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শোকর গোযরী (কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন) করে না। (আল কোরআন) উপরোক্ত আয়তের প্রথমটিতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ স্মরণ, বুযুর্গগণ বলেছেন, প্রাপ্ত নিয়ামতকে লক্ষ্য না বানিয়ে নিয়ামতদাতাকে লক্ষ্য না বানানোই প্রকৃত শোকর, এটা মানবজাতির হৃদয়ের একটি উন্নততর অবস্থার। তার মর্যাদা যেমন অতি উচ্চ তেমনি অতি মহান সুতরাং যেমন তেমন লোক এরূপ উন্নতস্তরে পৌঁছতে পারে না। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমার বান্দাগণের মধ্যে অতিঅল্প সংখ্যক লোকই শোকর আদায়কারী। (আল কোরআন) শোকর মানব জাতিকে ফেরেশতা স্বভাবে পরিণত করে এমনকি এ গুণটি মৃত্যুর পরে ও আখিরাত পর্যন্ত মানুষের চির সহচর রূপে থাকবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের সর্বশেষ বাক্য বা বাণী হবে বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার জন্যই সমস্ত প্রশংসা” (আল কোরআন)
আল্লাহ তায়ালার শোকর বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ যে কত মহৎ ও উন্নত স্থরের গুণ, তা এর মাধ্যমেও বুঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা একে স্বীয় যিকির অর্থাৎ স্মরণ করার আদেশের সাথে সম পর্যায়ে রেখে এক সঙ্গে উভয় আদেশ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমি ও তোমাদের স্মরণ করব। আর আমার শোকর গুযারি কর আমার প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (আল কোরআন) আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন, আমারই ইবাদত কর এবং আমারই শোকর গুযার হয়ে থাকো” (আল কোরআন)
রাসূলে কারীম সা. বলেন “যে ব্যক্তি আহারের পরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার শোকর আদয় করে তার মর্যদা রোযাদার ও যিকিরকারীর মর্যাদার সমতূল্য” (আল হাদীস)
হযরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন- শোকর ঈমানের অর্ধাংশ” প্রধানত তিনি নিয়মে শোকর আদায় করা যায়।
যথা- (১) অন্তরের দ্বারা (২) মুখের দ্বারা (৩) অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা ।
* আন্তরিক শোকরের পন্থা :
মহান আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতে তুষ্ট থাকলে এবং আল্লাহ তায়ালার প্রতি মনে কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি পোষণ করলে অন্তরের শোকর আদায় হয়।
* মৌখিক শোকরের পন্থা :
সকল অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের কথা কৃতজ্ঞ ভরে প্রকাশ করলে, প্রত্যেক অবস্থায় নিয়ামত পেয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে এবং মহান নিয়ামত দাতা আল্লাহ তায়ালার দানের প্রতি লক্ষ করে মৌখিক শোকর আদায় হয়।
* অঙ্গ প্রত্যঙ্গের শোকরের পন্থা :
মানব দেহের অন্তরগত প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ করুণাময় আল্লাহ তায়ালার এক একটি অমূল্য দান এবং মহানিয়ামত। ইহকালে ফেরেশতা সুলভ মহান গুণরাশি অর্জন ধর্মীয় কার্যবলী সম্পন্ন করা এবং পরকালের সঞ্চয় কামাই করার নিমিত্তেই মানবের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সৃষ্টি করা হয়েছে।
ও প্রিয় কাজকর্মে নিয়োজিত রাখলে এতে আল্লাহ তায়ালা শোকর করা হয় আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত নিয়ামতকে তারই পছন্দনীয় কাজে ব্যয় করার নামই শোকর। মানব জীবনে প্রতিটি নিয়ামত ও আরাম আয়েশ যত ছোটই হোক না কেন পরকালে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। (আল কোরআন)
প্রখ্যাত তাবেয়ি হযরত আবু হাছিম রা. বলেন, শরিরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ আল্লাহ তায়ালা এক একটি অসাধারণ নেয়ামত মানুষের কর্ত্যব হচ্ছে প্রতিটি নিয়ামতের শোকর আদায় করা যেমন চোখের শোকর হচ্ছে ভালো যা কিছু তা দেখবে। এবং মন্ধ সব কিছু থেকে চোখ কে ফিরিয়ে রাখবে। কানের শোকর হচ্ছে উত্তম ও ভালো কথা শোনবে, কখনো অবৈধ্য কোন কিছু শোনবে না। হাতের শোকর হচ্ছে যা নিজের নয় তা স্পর্শ না করা, এবং হাতের মাধ্যমে কার হক নষ্ট না করা। হাতের দ্বারা সৎ কাজ করা এবং কোনো পাপের কাজ না করা। ফেরেশতা মাটির দেহে রুহুফুকে দেয়ার পর হযরত আদম আ. মুখ থেকে সর্ব প্রথম যে কথাটি বের হয়েছিল তা হল আলহামদুলিল্লাহ। জান্নাত থেকে বহিষ্কার হয়ে পৃথিবীর মাটিতে পা স্পর্শ করেই উচ্চারণ করলেন আলহামদুলিল্লাহ। এই ঘটনা এটাই শিক্ষাদেয় যে সুখ দুখের সর্বাবস্থায় আমাদের শোকর আদায় করতে বলা হয়েছে। আমাদের আল্লাহ পাক রাবুলআলামীন শোকরের গুরুত্ব বোঝার আমল করার তাওফিক দান করুন।-আমীন
Source: The Inqilab BD
আল্লাহর নিয়ামত অসংখ্য ও সীমাহীন। কেউই এর গণনা ও পরিমাণ নির্ণয় করতে পারবে না। এ সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা বলেন “তোমরা যদি আল্লাহর নিয়মতসমূহ গণনা করতে আরম্ভ কর তবে তা শেষ করতে পারবে না । (আল কোরআন)
মাছ যেমন পানিতে ডুবে থাকে তেমনি আমরা আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতে ডুবে আছি। কখনো কারো চোখ, দাঁত কান বা মাথার কার্যকারিতায় সামান্য ব্যাঘাত ঘটলে বুঝাযায় এ সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মূল্য কত তাই আমাদের সর্বাবস্থায় সর্ব সময় আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের কথা স্মরণ করা উচিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন- হে মানবগণ তোমাদের উপর আল্লাহর যে নিয়ামত রয়েছে তা স্মরণ কর। (আল কোরআন)
বড়ই অনুগ্রহকারী কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শোকর গোযরী (কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন) করে না। (আল কোরআন) উপরোক্ত আয়তের প্রথমটিতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ স্মরণ, বুযুর্গগণ বলেছেন, প্রাপ্ত নিয়ামতকে লক্ষ্য না বানিয়ে নিয়ামতদাতাকে লক্ষ্য না বানানোই প্রকৃত শোকর, এটা মানবজাতির হৃদয়ের একটি উন্নততর অবস্থার। তার মর্যাদা যেমন অতি উচ্চ তেমনি অতি মহান সুতরাং যেমন তেমন লোক এরূপ উন্নতস্তরে পৌঁছতে পারে না। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমার বান্দাগণের মধ্যে অতিঅল্প সংখ্যক লোকই শোকর আদায়কারী। (আল কোরআন) শোকর মানব জাতিকে ফেরেশতা স্বভাবে পরিণত করে এমনকি এ গুণটি মৃত্যুর পরে ও আখিরাত পর্যন্ত মানুষের চির সহচর রূপে থাকবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের সর্বশেষ বাক্য বা বাণী হবে বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার জন্যই সমস্ত প্রশংসা” (আল কোরআন)
আল্লাহ তায়ালার শোকর বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ যে কত মহৎ ও উন্নত স্থরের গুণ, তা এর মাধ্যমেও বুঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা একে স্বীয় যিকির অর্থাৎ স্মরণ করার আদেশের সাথে সম পর্যায়ে রেখে এক সঙ্গে উভয় আদেশ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমি ও তোমাদের স্মরণ করব। আর আমার শোকর গুযারি কর আমার প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (আল কোরআন) আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন, আমারই ইবাদত কর এবং আমারই শোকর গুযার হয়ে থাকো” (আল কোরআন)
রাসূলে কারীম সা. বলেন “যে ব্যক্তি আহারের পরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার শোকর আদয় করে তার মর্যদা রোযাদার ও যিকিরকারীর মর্যাদার সমতূল্য” (আল হাদীস)
হযরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন- শোকর ঈমানের অর্ধাংশ” প্রধানত তিনি নিয়মে শোকর আদায় করা যায়।
যথা- (১) অন্তরের দ্বারা (২) মুখের দ্বারা (৩) অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা ।
* আন্তরিক শোকরের পন্থা :
মহান আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতে তুষ্ট থাকলে এবং আল্লাহ তায়ালার প্রতি মনে কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি পোষণ করলে অন্তরের শোকর আদায় হয়।
* মৌখিক শোকরের পন্থা :
সকল অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের কথা কৃতজ্ঞ ভরে প্রকাশ করলে, প্রত্যেক অবস্থায় নিয়ামত পেয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে এবং মহান নিয়ামত দাতা আল্লাহ তায়ালার দানের প্রতি লক্ষ করে মৌখিক শোকর আদায় হয়।
* অঙ্গ প্রত্যঙ্গের শোকরের পন্থা :
মানব দেহের অন্তরগত প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ করুণাময় আল্লাহ তায়ালার এক একটি অমূল্য দান এবং মহানিয়ামত। ইহকালে ফেরেশতা সুলভ মহান গুণরাশি অর্জন ধর্মীয় কার্যবলী সম্পন্ন করা এবং পরকালের সঞ্চয় কামাই করার নিমিত্তেই মানবের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সৃষ্টি করা হয়েছে।
ও প্রিয় কাজকর্মে নিয়োজিত রাখলে এতে আল্লাহ তায়ালা শোকর করা হয় আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত নিয়ামতকে তারই পছন্দনীয় কাজে ব্যয় করার নামই শোকর। মানব জীবনে প্রতিটি নিয়ামত ও আরাম আয়েশ যত ছোটই হোক না কেন পরকালে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। (আল কোরআন)
প্রখ্যাত তাবেয়ি হযরত আবু হাছিম রা. বলেন, শরিরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ আল্লাহ তায়ালা এক একটি অসাধারণ নেয়ামত মানুষের কর্ত্যব হচ্ছে প্রতিটি নিয়ামতের শোকর আদায় করা যেমন চোখের শোকর হচ্ছে ভালো যা কিছু তা দেখবে। এবং মন্ধ সব কিছু থেকে চোখ কে ফিরিয়ে রাখবে। কানের শোকর হচ্ছে উত্তম ও ভালো কথা শোনবে, কখনো অবৈধ্য কোন কিছু শোনবে না। হাতের শোকর হচ্ছে যা নিজের নয় তা স্পর্শ না করা, এবং হাতের মাধ্যমে কার হক নষ্ট না করা। হাতের দ্বারা সৎ কাজ করা এবং কোনো পাপের কাজ না করা। ফেরেশতা মাটির দেহে রুহুফুকে দেয়ার পর হযরত আদম আ. মুখ থেকে সর্ব প্রথম যে কথাটি বের হয়েছিল তা হল আলহামদুলিল্লাহ। জান্নাত থেকে বহিষ্কার হয়ে পৃথিবীর মাটিতে পা স্পর্শ করেই উচ্চারণ করলেন আলহামদুলিল্লাহ। এই ঘটনা এটাই শিক্ষাদেয় যে সুখ দুখের সর্বাবস্থায় আমাদের শোকর আদায় করতে বলা হয়েছে। আমাদের আল্লাহ পাক রাবুলআলামীন শোকরের গুরুত্ব বোঝার আমল করার তাওফিক দান করুন।-আমীন
Source: The Inqilab BD
No comments:
Post a Comment