Monday, April 23, 2018

ইসলাম ও বহুবিবাহ


সমগ্র ইতিহাস জুড়ে বিভিন্ন সভ্যতায় ও জাতিতে বহু বিবাহের কারণ কি? এটা কি বলা যায় যে ইসলাম বহুবিবাহ চালু করেনি এটাকে শুধু স্বীকৃতি দিয়েছে? বহুবিবাহের ব্যাপারে আল কুরআনের আয়াত আছে কি?
সমাজ বিজ্ঞানী হামুদাহ আবদ আল- আতিসহ অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন যে বহুবিবাহ কোন সমাজ বিরোধী বা অবিবেচক কাজ ছিল না। বরং এক জটিল বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া যার বিভিন্ন রকম কারণ রয়েছে। হামুদাহ আবদ আল আতির লেখা The Family structure in Islam বইয়ে তিনি এর কয়েকটি সম্ভাব্য করণ চিহ্নিত করেছেনঃ
ব্যক্তিগত
১. কোন বিবাহিত মানুষ অপর মহিলার প্রতি এতটা আকৃষ্ট হয়ে পড়লো যে সে তাকে বিয়ে করতে চাইলো।
২. প্রথম স্ত্রীর শারীরিক বা অন্য কোন সমস্যা দেখ দিল যে সে স্বামীর দৈহিক চাহিদা পূরণে অক্ষম হলো।
৩. সাংস্কৃতিক কারণ যেমন- প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের একাধিক স্ত্রী রাখার রীতি অন্য ব্যক্তিদের বহু বিবাহে প্রভাবিত করতে পারে।
৪. কোন কোন সমাজের গরীব লোকের ১ম বা একমাত্র স্ত্রী হওয়ার চেয়ে ধনী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্ত্রী হতে চাইতো। 
জনসংখ্যাগত
১. পুরুষের তূলনায় নারীর সংখ্যাসাম্য ব্যহত হলে যে সব সমাজে অনেক নারীর বিয়ে না হতে পারে এবং এক্ষেত্রে তারা বহুবিবাহকে তারা উত্তম বিকল্প পথ বলে মনে করতে পারে।(যুদ্ধ বা অন্য কোন কারণে এরকম অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে)    
জৈবিক
পুরুষের যৌনপ্রকৃতি তূলনামূলকভাবে বহুবিবাহের দিকেই বেশী।
সামাজিক
১. কোন কোন সমাজে বহুবিবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে ঐক্য. সমঝোতা এবয় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।
২. কোন কোন ২য় বিয়ে বা তৃতীয় স্ত্রী বাড়ীর তথা গৃহস্থালীর কাজে ১মা স্ত্রীর সহায়ক হয়।
৩. যে সব মমাজে শিশু মৃত্যুর হার বেশী সে সব সমাজের পুরুষের মাঝেও এই বহুবিবাহের প্রবণতা লক্ষ্যকরা যায়।    
হামুদাহ আবদ আল আতি বলেন, এসব কারণ পরস্পর যুক্ত হয়ে অন্যন্য সামাজিক ফ্যাক্টর যেমন ঐতিহ্য, নৈতিকতা, রীতি এবং আইন ইত্যাদির সাথে মিশে বহুবিবাহকে বাস্তবতা দিয়েছে।
ইসলাম বহুবিবাহকে অনুমতি দিয়েছেঃ
ইসলাম বহুবিবাহ প্রথা উদ্ভাবন বা চালু করেনি। এটা আগে থেকেই চালু ছিল। বরং ইসলামই একমাত্র তৌহিদবাদী ধর্ম যা বহুবিবাহকে কিছু কঠোর শর্ত আরোপ করে সীমাবব্ধ করেছে। ইসলামে বহুবিবাহ অত্যাবশ্যকীয় কোন কাজ নয় আবার নির্দেশীত কোন কাজও নয় শুধু বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে সুযোগ মাত্র। ।
এখানে আরো একটি কথা বলা আবশ্যক যে, ইসলামে অনুমোদিত অনেক কাজও ইসলামের অন্য আইন ভংগ হওয়ার পেক্ষিতে অননুমোদিত হয়ে যেতে পারে। যেমন কেউ যদি এই মতলবে ২য় বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় যে সে ১ম স্ত্রীর সাথে সুব্যবহার করবে না তাহলে তার জন্য ২য় বিয়ে অনুমোদিত নয়। (কারণ এখানে অবিচার সম্পৃক্ত) যদিও নীতিগতভাবে বহুবিবাহ অনুমোদিত। বলে রাখা ভাল যে সব সময় এসব মৌলিক নীতিমালার আলোকে ইসলামের নীতির বিচার করতে হবে।   
আল কুরআন ও বহুবিবাহ
আল কুরআনের ৪ নং সূরার ৩ নং আয়াতে যা বলা হয়েছে তা থেকে দেখা যায়-
১. বহুবিবাহ মুসলনমানদের জন্য “আবশ্যক” কোন কিছু নয়
২. একের অধিক বিয়ে শর্তযুক্ত (Conditional)  
৩. সর্বোচ্চ ৪জন স্ত্রী বিয়ে করার সীমা নির্ধারিত করা হয়েছে যদিও এর আগে এর কোন সীমা ছির না।
৪. উক্ত আয়াতে এক বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই একধিক বিয়ে করার কথা বলা হয়েছে: কোন মুসলমানের সাথে বা তত্ববধানে থাকা এতিমদের সাথে যথাযথ ব্যবহার প্রসঙ্গে।   
উক্ত আয়াত নাযিলের ব্যাখ্যা
হযরত আয়িশা রা.) উক্ত আয়াত নাযিলের পটভুমি প্রসঙ্গে বলেন, কয়েকজন এতিম বালিকার তত্ববধায়ক এক পুরুষকে নির্দেশনা দিতেই উক্ত আয়াত নাযিল হয়। আয়াতটি নাযিল হয় ওহুদ যুদ্ধের পরক্ষণেই। ওহুদ যুদ্ধে অনেক মুসলমান শহীদ হন। এতে তাঁদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। তাদের খাদ্য আশ্রয় ছাড়াও পারিবারিক পরিবেশ থাকায়ও জরুরী ছিল। এ কারই তাদেরকে বিভিন্ন অভিভাবকের কাছে রাখা হয়েছিল। এমনি কয়েক এতিম বালিকার তত্ববধায়ক পুরুষ একটি বালিকাকে তার প্রাপ্য মোহরানার চেয়ে কম মোহরানা দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইল। এই আয়াত মুসলমানদেরকে সাবধান করে বল্লো এতিমদের প্রতি ন্যায়বান থাকতে আর ন্যায্য মোহরানা না দিতে পারলে তাদের বিয়ে না করতে। সর্বোচ্চ ৪ বিয়ে করার অনুমোদন দেয়া হয়। একজন ব্যিাখ্যাত তাফসীরকারক তাঁর আল কাশফ আল তাফসীর গ্রন্থে বলেন, যারা সন্দিহান যে আরেক বিয়ে না করলে তার দ্বারা ব্যভিচার সংঘটিত হতে পারে তাদের জন্যই এ সুযোগ রাখা হয়েছে। আল কুরআনে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয় যে, এতিমদের সাথে অবিচার করা যাবে না অন্য দিকে ব্যভিচারের বিষয়ে ইসলামের শক্ত অবস্থান একজন সত্যিকারের মুসলমানকে ভীত করে দেয় এবং তখন বহুবিবাহ এ দু’টির ভেতর সামঞ্জস্য বিধান করেছিল। অবশ্য এ আয়াতে এটাও সতর্ক করা হয়েছে যে, যারা দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায় তাদের অবশ্যিই উভয় স্ত্রীর সাথে সমব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
রেফারেন্স: আল কুরআন থেকে:
১. আর যদি তোমরা এতিমদের (মেয়েদের) সাথে বেইনসাফী করার ব্যাপারে ভয় করো, তাহলে যেসব মেয়েদের তোমরা পছন্দ করো তাদের মধ্যে থেকে দুই, তিন বা চারজনকে বিয়ে করো৷ কিন্তু যদি তোমরা তাদের সাথে ইনসাফ করতে পারবে না বলে আশংকা করো, তাহলে একজনকেই বিয়ে করো৷ অথবা তোমাদের অধিকারে সেসব মেয়ে আছে তাদেরকে বিয়ে করো৷ বেইনসাফীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এটিই অধিকতর সঠিক পদ্ধতি৷
Wa in khiftum allaa tuqsitoo fil yataamaa fankihoo maa taaba lakum minan nisaaa'i masnaa wa sulaasa wa rubaa'a fa'in khiftum allaa ta'diloo fawaahidatan aw maa malakat aimaanukum; zaalika adnaaa allaa ta'ooloo

মুফাস্‌সিরগণ এর তিনটি অর্থ বর্ণনা করেছেনঃ
একঃ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ জাহেলী যুগে যেসব এতিম মেয়ে লোকদের অভিভাবকত্বাধীন থাকতো তাদের সম্পদ ও সৌন্দর্যের কারণে অথবা তাদের ব্যাপারে তো উচ্চবাচ্য করার কেউ নেই, যেভাবে ইচ্ছা তাদের দাবিয়ে রাখা যাবে এই ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেক অভিভাবক নিজেরাই তাদেরকে বিয়ে করতো, তারপর তাদের ওপর জুলুম করতে থাকতো৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, তোমরা যদি আশংকা করো যে তাদের সাথে ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে সমাজে আরো অনেক মেয়ে আছে, তাদের মধ্যে থেকে নিজের পছন্দমতো মেয়েদেরকে বিয়ে করো৷
দুইঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তাঁর ছাত্র ইকরামা এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ জাহেলী যুগে স্ত্রী গ্রহণের ব্যাপারে কোন নির্ধারিত সীমা ছিল না৷ এক একজন লোক দশ দশটি বিয়ে করতো৷ স্ত্রীদের সংখ্যাধিক্যের কারণে সংসার খরচ বেড়ে যেতো৷ তখন বাধ্য হয়ে তারা নিজেদের এতিম ভাইঝি ও ভাগ্নীদের এবং অন্যান্য অসহায় আত্মীয়াদের অধিকারের দিকে হাত বাড়াতো৷ এ কারণে আল্লাহ বিয়ের জন্য চারটির সীমা নির্ধারিত করে দিয়েছেন৷ জুলুম ও বেইনসাফী থেকে বাঁচার পন্থা এই যে, এ থেকে চারটি পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণ করবে যাতে তাদের সাথে সুবিচার করতে পার৷
তিনঃ সাঈদ ইবনে জুবাইর, কাতাদাহ এবং অন্যান্য কোন কোন মুফাস্‌সির বলেনঃ এতিমদের সাথে বেইনসাফী করাকে জাহেলী যুগের লোকেরাও সুনজরে দেখতো না৷ কিন্তু মেয়েদের ব্যাপারে ইনসাফ ও ন্যায়নীতির কোন ধারণাই তাদের মনে স্থান পায়নি৷ তারা যতগুলো ইচ্ছা বিয়ে করতো৷ তারপর তাদের ওপর জুলুম-অত্যাচার চালাতো ইচ্ছে মতো৷ তাদের এ ব্যবহারের প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, যদি তোমরা এতিমদের ওপর জলুম ও বেইনসাফী করতে ভয় করে থাকো, তাহলে মেয়েদের সাথেও বেইনসাফী করার ব্যাপারে ভয় করো৷ প্রথমত: চারটির বেশী বিয়েই করোনা৷ আর চারের সংখ্যার মধ্যেও সেই ক'জনকে স্ত্রী হিসেব গ্রহণ করতে পারবে যাদের সাথে ইনসাফ করতো পারবে৷
আয়াতের শব্দাবলী এমনভাবে গ্রথিত হয়েছে, যার ফলে সেখান থেকে এ তিনটি ব্যাখ্যারই সম্ভাবনা রয়েছে৷ এমনকি একই সংগে আয়াতটির এ তিনটি অর্থই যদি এখানে উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে, তাহলে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই৷ এ ছাড়া এর আর একটা অর্থও হতে পারে৷ অর্থাত এতিমদের সাথে যদি এভাবে ইনসাফ না করতে পারো তাহলে যেসব মেয়ের সাথে এতিম শিশু সন্তান রয়েছে তাদেরকে বিয়ে করো৷
এ আয়াতের ওপর মুসলিম ফকীহগণের 'ইজমা' অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তাঁরা বলেন, এ আয়াতের মাধ্যমে স্ত্রীর সংখ্যা সীমিত করে দেয়া হয়েছে এবং একই সংগে এক ব্যক্তির চারজনের বেশী স্ত্রী রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ হাদীস থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়৷ হাদীস বলা হয়েছেঃ তায়েফ প্রধান গাইলানের ইসলাম গ্রহণ কালে নয়জন স্ত্রী ছিল৷ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে চারজন স্ত্রী রেখে দিয়ে বাকি পাঁচজনকে তালাক দেবার নির্দেশ দেন৷ এভাবে আর এক ব্যক্তির (নওফল ইবনে মুআবীয়া) ছিল পাঁচজন স্ত্রী৷ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার এক স্ত্রীকে তালাক দেবার হুকম দেন৷
এছাড়াও এ আয়াতে একাধিক স্ত্রী রাখার বৈধতাকে ইনসাফ ও ন্যায়নিষ্ঠ ব্যবহারের শর্ত সাপেক্ষ করা হয়েছে৷ যে ব্যক্তি ইনসাফ ও ন্যায়নিষ্ঠতার শর্ত পূরণ না করে একাধিক স্ত্রী রাখার বৈধতার সুযোগ ব্যবহার করে সে মূলত আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে৷ যে স্ত্রী বা যেসব স্ত্রীর সাথে সে ইনসাফ করে না ইসলামী সরকারের আদালতসমূহ তাদের অভিযোগ শুনে সে ব্যাপারে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে৷
কোন কোন লোক পাশ্চাত্যবাসীদের খৃষ্টবাদী ধ্যান-ধারণার প্রভাবে আড়ষ্ট ও পরাজিত মনোভাব নিয়ে একথা প্রমাণ করার চেষ্টা করে থাকে যে, একাধিক বিয়ের পদ্ধতি (যা আসলে পাশ্চাত্যের দৃষ্টিতে একটি খারাপ পদ্ধতি) বিলুপ্ত করে দেয়াই কুরআনের আসল উদ্দেশ্য৷ কিন্তু সমাজে এ পদ্ধতির খুব বেশী প্রচলনের কারণে এর ওপর কেবলমাত্র বিধি-নিষেধ আরোপ করেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ এ ধরনের কথাবার্তা মূল নিছক মানসিক দাসত্বের ফলশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই নয়৷ একাধিক স্ত্রী গ্রহণকে মূলগতভাবে অনিষ্টকর মনে করা কোনক্রমেই সঠিক হতে পারে না৷ কারণ কোন কোন অবস্থায় এটি একটি নৈতিক ও তামাদ্দুনিক প্রয়োজনে পরিণত হয়৷ যদি এর অনুমতি না থাকে তাহলে যারা এক স্ত্রীতে তুষ্ট হতে পারে না, তারা বিয়ের সীমানার বাইরে এসে যৌন বিশৃংখলা সৃষ্টিতে ততপর হবে৷ এর ফলে সমাজ-সংস্কৃতি-নৈতিকতার মধ্যে যে অনিষ্ট সাধিত হবে তা হবে একাধিক স্ত্রীর গ্রহনের অনিষ্টকারিতার চাইতে অনেক বেশী৷ তাই যারা এর প্রয়োজন অনুভব করে কুরআন তাদেরকে এর অনুমতি দিয়েছে৷ তবুও যারা মুলগতভাবে একাধিক বিয়েকে একটি অনিষ্টকারিতা মনে করেন, তাদেরকে অবশ্যি এ ইখতিয়ার দেয়া হয়েছে যে,তারা কুরআনের রায়ের বিরুদ্ধে এ মতবাদের নিন্দা করতে পারেন এবং একে রহিত করারও পরামর্শ দিতে পারেন কিন্তু নিজেদের মনগড়া রায়কে অনর্থক কুরআনের রায় বলে ঘোষণা করার কোন অধিকার তাদের নেই৷ কারণ কুরআন সস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় একে বৈধ ঘোষণা করেছে৷ ইশারা ইংগিতেও এর নিন্দায় এমন একটি শব্দ ব্যবহার করেনি, যা থেকে বুঝা যায় যে, সে এর পথ বন্ধ করতে চায়৷
এখানে ক্রীতদাসীদেরকেও বুঝানো হয়েছে৷ অর্থাত যেসব নারী যুদ্ধবন্দিনী হিসেবে আসে এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হয়৷ একথা বলার অর্থ হচ্ছে এই যে, একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের স্বাধীন মহিলাকে বিয়ে করার দায়িত্ব পালন করতে না পারলে একজন যুদ্ধবন্দিনী হিসেবে আনীত বাঁদীকে বিয়ে করো৷ অথবা যদি তোমাদের একাধিক স্ত্রীর প্রয়োজন হয়ে পড়ে এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের স্বাধীন মেয়েদের বিয়ে করলে তাদের মধ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা তোমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে থাকে, তাহলে ক্রীতদাসীদেরকে গ্রহণ করো৷ কারণ, তাদের ব্যাপারে তোমাদের ওপর তুলনামূলকভাবে কম দায়িত্ব আসবে৷

২. ইসলামী শিক্ষা সিরিজ থেকেঃ . জামাল আল বাদাবী: পৃষ্ঠা ৩৮১-৩৮৩
৩. The Family structure in Islam- HAMMUDAH ABD AL ATI, American Trust Publication, 1977.

অপরূপ প্রতিশোধ

নবী মুহাম্মদ মৃত্যু শয়নে কহিলেন সবে ডাকি-
‘জীবন সন্ধ্যা ঘনায়ে এসেছে, নাহি আর বেশী বাকী-
হে আমার প্রিয় ভক্তবৃন্দ, হে আমার সহচর,
করে থাকি যদি কোন অবিচার কোন দিন কারো ’পর
করে থাকি যদি অপরাধ কিছু অন্যায় ক্রোধ-
সবার মাঝারে ইহলোকে আজি লও তার প্রতিশোধ।’
সমবেত জন সে কথা তাঁহার তুলিলোনা কেহ কানে,
কাহারো হৃদয়ে লাগেনি আঘাত একথা সবাই জানে।
হেনকালে সেথা আক্কাস উঠি কহিলেন নবীবর,
মেরেছিলে তুমি কোড়া একদিন অধমের দেহ পর।’
নবী মুহাম্মদ যুবকে তখনি পৃষ্ঠ দিলেন পাতি,
‘আমার পৃষ্ঠে বসন ছিলনা’- কহিল কপট মতি।
শুনিয়া সে কথা হজরত তবে মৃদু ও মধুর স্বরে,
‘তাই হোক’- বলি অঙ্গাবরণ ফেলিয়া দিলেন দূরে।
সোনার সে তনু হেরি আক্কাস পুলকে আত্মহারা,
মিটিলো তাহার মনের বাসনা, ঝরিলো নয়নে ধারা।
মাথা নত করি হযরত পানে হইয়া সে আগুয়ান,
প্রতিশোধ-রূপে পৃষ্ঠে তাহার চুম্বন করে দান।
গভীর পুলকে সবারি তখন কন্ঠ হইল রোধ,
হাসিমুখে নবী কহিলেন, এ যে অপরূপ প্রতিশোধ।’
-গোলাম মুস্তাফা

তৈল

তৈল
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
তৈল হলো এদেশের মানুষের মানচিত্র । গল্পটি পড়ে দেখুন ও সংগ্রহে রাখুন
তৈল যে কি পদার্থ, তাহা সংস্কৃত কবিরা কতক বুঝিয়াছিলেন। তাঁহাদের মতে তৈলের অপর নাম স্নেহ। বাস্তবিকও স্নেহ ও তৈল একই পদার্থ। আমি তোমায় স্নেহ করি, তুমি আমায় স্নেহ কর অর্থাৎ আমরা পরস্পরকে তৈল দিয়া থাকি । স্নেহ কি? যাহা স্নিগ্ধ বা ঠান্ডা করে , তাহার নাম স্নেহ । তৈলের ন্যায় ঠাণ্ডা করিতে আর কিসে পারে ?
সংস্কৃত কবিরা ঠিকই বুঝিয়াছিলেন। যেহেতু তাহারা সকল মনুষ্যকেই সমানরূপে স্নেহ করিতে বা তৈল প্রদান করিতে উপদেশ দিয়াছেন।
বাস্তবিকই তৈল সর্বশক্তিমান; যাহা বলের অসাধ্য, যাহা বিদ্যার অসাধ্য , যাহা ধনের অসাধ্য, যাহা কৌশলের অসাধ্য, তাহা কেবল একমাত্র তৈল দ্ধারা সিদ্ধ হইতে পারে।
যে সর্বশক্তিময় তৈল ব্যবহার করিতে জানে, সে সর্বশক্তিমান। তাহার কাছে জগতের সকল কাজই সোজা। তাহার চাকরির জন্য ভাবিতে হয় না — উকীলিতে পসার করিবার জন্য সময় নষ্ট করিতে হয় না , বিনা কাজে বসিয়া থাকিতে হয় না, কোন কাজেই শিক্ষানবিশ থাকিতে হয় না।যে তৈল দিতে পারিবে, তাহার বিদ্যা না থাকিলেও সে প্রফেসার হইতে পারে। আহাম্মুক হইলেও ম্যাজিষ্ট্রেট হইতে পারে, সাহস না থাকিলেও সেনাপতি হইতে পারে এবং দুর্লভরাম হইয়াও উড়িষ্যার গভর্ণর হইতে পারে।
তৈলের মহিমা অতি অপরূপ ।তৈল নহিলে জগতের কোন কাজ সিদ্ধ হয় না । তৈল নহিলে কল চলে না, প্রদীপ জ্বলে না,ব্যঞ্জন সুস্বাদু হয় না, চেহেরা খোলে না , হাজার গুন থাকুক তাহার পরিচয় পাওয়া যায় না,তৈল থাকিলে তাহার কিছুরই অভাব থাকে না।
সর্বশক্তিময় তৈল নানারূপে সমস্ত পৃথিবী ব্যাপ্ত করিয়া আছেন। তৈলের যে মূর্তিতে আমরা গুরুজনকে স্নিগ্ধ করি, তাহার নাম ভক্তি,যাহাতে গৃহিণীকে স্নিগ্ধ করি,তাহার নাম প্রণয়; যাহাতে প্রতিবেশীকে স্নিগ্ধ করি,তাহার নাম মৈত্রী; যাহা দ্ধারা সমস্ত জগৎকে স্নিগ্ধ করি,তাহার নাম শিষ্টাচার ও সৌজন্য “ফিলন_ªপি।” যাহা দ্ধারা সাহেবকে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম লয়েলটি ;যাহা দ্ধারা বড়লোককে স্নিগ্ধ করি, তাহার নাম নম্রতা বা মডেষ্টি । চাকর বাকর প্রভৃতিকেও আমরা তৈল দিয়া থাকি, তাহার পরিবর্তে ভক্তি বা যত্ন পাই । অনেকের নিকট তৈল দিয়া তৈল বাহির করি।
পরস্পর ঘর্ষিত হইলে সকল সকল বস্তুতেই অগ্ন্যুদ্গম হয় । অগ্ন্যুদ্গম নিবারণের একমাত্র উপায় তৈল ।এইজন্যই রেলের চাকায় তৈলের অনুকল্প চর্বি দিয়া থাকে । এইজন্যই যখন দুজনে ঘোরতর বিবাদে লঙ্কাকাণ্ড উপস্থিত হয় , তখb রফা নামক তৈল আসিয়া উভয় ঠাণ্ডা করিয়া দেয় । তৈলের যদি অগ্নিনিবারণী শক্তি না থাকিত, তবে গৃহে গৃহে গ্রামে গ্রামে পিতাপুত্রে স্বামী-স্ত্রীতে রাজায়-প্রজায় বিবাগ বিসম্বাদে নিরন্তর অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নির্গত হইত ।
পূর্বেই বলা গিয়াছে, যে তৈল দিতে পারে , সে সর্বশক্তিমান , কিন্তু তৈল দিলেই হয় না। দিবার পাত্র আছে,সময় আছে,কৌশল আছে।
তৈল দ্ধারা অগ্নি পর্যন্ত বশ¨তাপন্ন হয়। অগ্নিতে অল্প তৈল দিয়া সমস্ত রাত্রি ঘরে আবদ্ধ রাখা যায় । কিন্তু সে তৈল মূর্তিমান্ ।
কে যে তৈল দিবার পাত্র নয় , তাহা বলা যায় না। পুঁটে তেলি হইতে লাটসাহেব পর্যন্ত তৈল দিবার পাত্র । তৈল এমন জিনিষ নয় যে,নষ্ট হয় । একবার দিয়া রাখিলে নিশ্চয়ই কোন না কোন ফল ফলিবে। কিন্তু তথাপি যাহার নিকট উপস্থিত কাজ আদায় করিতে হইবে, সেই তৈলনিষেধের প্রধান পাত্র। সময় — যে সময়েই হউক, তৈল দিয়া রাখিলেই কাজ হইবে । কিন্তু উপযুক্ত সময়ে অল্প তৈলে অধিক কাজ হয় ।
কৌশল — পূর্বেই উল্লেখ করা গিয়েছে, যেরূপেই হউক, তৈল দিলে কিছু না কিছু উপকার হইবে। যেহেতু তৈল নষ্ট হয় না, তথাপি দিবার কৌশল আছে । তাহার প্রমাণ ভট্টাচার্যেরা সমস্ত দিন বকিয়াও যাহার নিকট পাঁচ সিকা বৈ আদায় করিতে পারিল না , একজন ইংরেজিওয়ালা তাহার নিকট অনায়াসে ৫০ টাকা বাহির করিয়া লইয়া গেল। কৌশল করিয়া এক বিন্দু দিলে যত কাজ হয়, বিনা কৌশলে কলস কলস ঢালিলেও তত হয় না ।
ব্যক্তিবিশেষে তৈলের গুনতারতাম্য অনেক আছে। নিষ্কৃত্রিম তৈল পাওয়া অতি দুর্লভ। কিন্তু তৈলের এমনি একটি আশ্চর্য সম্মিলনীশক্তি আছে যে, তাহাতে যে উহা অন্য সকল পদার্থের গুনই আত্নসাৎ করিতে পারে। যাহার বিদ্যা আছে, তাহার তৈল আমার তৈল হইতে মূল্যবান। বিদ্যার উপর যাহার বুদ্ধি আছে,তাহার আরও মূল্যবান। তাহার উপর যদি ধন থাকে, তবে তাহার প্রতি বিন্দুর মূল্য লক্ষ টাকা। কিন্তু তৈল না থাকিলে তাহার বুদ্ধি থাকুক, হাজার বিদ্যা থাকুক, হাজার ধন থাকুক, কেহই টের পায় না।

তৈল দিবার প্রবৃত্তি স্বাভাবিক। এ প্রবৃত্তি সকলেরই আছে এবং সুবিধামত আপন গৃহে ও আপন দলে সকলেই ইহা প্রয়োগ করিয়া থাকে, কিন্তু অনেকে এত অধিক স্বার্থপর , বাহিরের লোককে তৈল দিতে পারে না।তৈলদান প্রবৃত্তি স্বাভাবিক হইলেও উহাতে কৃতকার্য হওয়া অদৃষ্টসাপেক্ষ।
আজকাল বিজ্ঞান, শিল্প প্রভৃতি শিখাইবার জন্য নানাবিধ চেষ্টা চলিতেছে।যাহাতে বঙ্গের লোক প্রাকটিক্যাল অর্থাৎ কাজের লোকের হইতে পারে; তজ্জন্য সকলেই সচেষ্ট, কিন্তু কাজের লোক হইতে হইলে তৈলদান সকলের আগে দরকার। অতএব তৈলদানের একটি স্কুলের নিতান্ত প্রয়োজন। অতএব আমরা প্রস্তাব করি, বাছিয়া বাছিয়া কোন রায়বাহাদুর অথবা খাঁ বাহাদুরকে প্রিন্সিপাল করিয়া শীঘ্র একটি স্নেহ-নিষেধের কালেজ খোলা হয় । অন্ততঃ উকীলি শিক্ষার নিমিত্ত ল’ কালেজে একজন তৈল অধ্যাপক নিযুক্ত করা আবশ্যক। কালেজ খুলিতে পারিলে ভালই হয়।
কিন্তু এরূপ কালেজ খুলিতে হইলে প্রথমতই গোলযোগ উপস্থিত হয়। তৈল সবাই দিয়া থাকেন — কিন্তু কেহই স্বীকার করেন না যে, আমি দেই। সুতরাং এ বিদ্যার অধ্যাপক জোটা ভার । এ বিদ্যা শিখিতে হইলে দেখিয়া শুনিয়া শিখিতে হয়। রীতিমত লেকচার পাওয়া যায় না । যদিও কোন রীতিমত কালেজ নাই, তথাপি যাঁহার নিকট চাকরীর বা প্রমোশনের সুপারিস মিলে , তাদৃশ লোকের বাড়ী সদাসর্বদা গেলে উত্তমরূপ শিক্ষালাভ করা যাইতে পারে । বাঙালীর বল নাই, বিক্রম নাই, বিদ্যাও নাই, বুদ্ধিও নাই। সুতরাং বাঙালীর একমাত্র ভরসা তৈল — বাঙালীর যে কেহ কিছু করিয়াছেন, সকলই তৈলের জোরে, বাঙালীদিগের তৈলের মূল্য অধিক নয়; এবং কি কৌশলে সেই তৈল বিধাতৃপুরুষদিগের সুখসেব্য হয়, তাহাও অতি অল্পলোক জানেন । যাঁহারা জানেন,তাঁহাদিগকে আমরা ধন্যবাদ দিই। তাঁহারাই আমাদের দেশের বড় লোক, তাঁহারাই আমাদের দেশের মুখ উজ্জ্বল করিয়া আছেন।
তৈল বিধাতৃপুরুষদিগের সুখসেব্য হইবে, ইচ্ছা করিলে সে শিক্ষা এদেশে হওয়া হওয়া কঠিন । তজ্জন্য বিলাত যাওয়া আবশ্যক। তত্রত্য রমণীরা এ বিষয়ের প্রধান অধ্যাপক, তাহাদের থ্রু হইলে তৈল শীঘ্র কাজে আইসে।
শেষে মনে রাখা উচিত , এক তৈলে চাকাও ঘোরে আর তৈলে মনও ফেরে।

Thursday, April 19, 2018

স্মার্ট মানুষ ও তাদের বৈশিষ্ট্য


স্মার্ট মানুষ ও তাদের বৈশিষ্ট্য
এভরিথিং স্মার্ট
আজকাল অনেক কিছুই স্মার্ট নামে বাজারে এসেছে। যেমন স্মার্ট ওয়াচ, স্মার্ট মোবাইল ফোন, স্মার্ট টেলিভিশন, স্মার্ট কিচেন ইত্যাদি। এসব কিছু যদি মানুষই তৈরী করে তা’হলে স্মার্ট মানুষ কি থাকা সম্ভব? আমি বলি সম্ভব! কেননা, সৃষ্টিকর্তা নিজেই স্মার্ট আর তাই মানুষও স্মার্ট।
১০টি কাজ স্মার্ট মানুষেরা করেন নাঃ 10 Things Smart People Don't Do
স্মার্ট বলতে আপনারা কি বোঝেন? স্মার্ট বলতে আপনাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে চটপটে কোন লোক, কোন মহিলা যারা বিভিন্ন কাজে পটিয়সী, তাই না? যারা কোন প্রশ্নের দ্রুত জবাব দিতে পারে, যারা পরীক্ষায় হাই স্কোর করে তারাও তো স্মার্ট আপনাদের চোখে তাই না? আসলে স্মার্ট তো ওরা এটা ঠিক আছে কিন্তু আরো আরো গুন যেগুলো এই স্মার্ট মানুষের অর্জন সে সব হলোঃ ১. এরা কমপ্যাশানেট বা দয়ালু বা সহানুভুতিশীল। ২. এরা ইমাজিনেটিভ বা স্বপ্ন দেখেন। ৩. এরা হাম্বল বা বিনয়ী। ৪. এরা অ্যাপ্র্রেশিয়েটিভ বা মহান। ৫. এরা আশুতোষ-অল্পেই তুষ্ট। ৬. এরা নিজেদের দেখে সারা দুনিয়ার অংশ হিসেবে। ৭. এরা খুবই ভাল করে জানে যে তারা মহত কাজ সম্পাদন করতে পারে।
০১. স্মার্ট মানুষেরা অতীত নিয়ে ভাবে না।
স্মার্ট মানুষেরা সব সময় বর্তমানের ওপরেই বিশ্বাসী । They don’t let past stumbles dictate their present state. এরা জানে যে ব্যর্থতা হলো সফলতার অন্যতম সোপান। ফেইলিউর ইজ দ্য পিলার অব সাক্সেস। ইফ য়্যু ওয়ন্ট টু সাকসিড, ডাবল্ ইওর ফেইলিউর। সাধারনতঃ দেখা যায় যে অনেকেই ব্যর্থ হওয়ার পর খেই হারিয়ে ফেলেন। এগিয়ে যাওয়ার উসাহ হারিয়ে ফেলেন। এটা স্মার্ট মানুষের কাজ নয়। স্মার্ট মানুষেরা অতীতকে পেছনে ফেলে দিয়ে বর্তমানের ওপর ভর করে সফলতার দিকে এগিয়ে যান। 
০২. স্মার্ট মানুষেরা নেতিবাচক দিককে কোন মূল্যই দেন না।
স্মার্ট মানুষেরা তাদের ভাবনাকে নিয়ন্ত্রনে রাখে। এই ভাবনাকে তারা ইতিবাচক বা পজিটিভ দিকে পরিচালনা করেন। স্মার্ট মানুষেরা গভীরভাবে বিশ্বাস করে যে মনের একট ধারন ক্ষমতা আছে। মন অনেক কিছুই অর্জন করতে পারে। স্মার্ট মানুষেরা জানেন যে জীবন অবশ্যই উপভোগ্য যদি ভাল স্বপ্ন দেখা যায়। আর এ থেকেই স্মার্ট মানুষেরা পরিবর্তিত হয়ে যায়।  
০৩. Smart মানুষেরা কোন কাজকে Problem মনে করে না।
স্মার্ট মানুষেরা যে কোনও কাজকে সামনা সামনি মোকাবেলা করে। স্মার্ট মানুষেরা যে কোন সমস্যার গঠনমূলক সমাধান খুঁজে বের করবার চেষ্টা করে। এরা যখন ব্যর্থ হয়, আবার নোতুন উদ্যোগে কাজ করবার প্রয়াস পায়। পড়ে গেলে থেমে থাকেনা। উঠে দাঁড়ায়। হেঁটে যাবার চেষ্টা করে। কারণ, স্মার্ট মানুষেরা জানে যে জীবন উপভোগ করা খুবই সহজ। স্মার্ট মানুষেরা সাহসী। এরা Problem থেকেই সমাধান পায়।
০৪. স্মার্ট মানুষেরা মনেই করেনা যে অন্যেরা কি বললো
পাছে, লোকে কিছু বলে, এটা স্মার্ট মানুষেরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনে না। আমাদের এই দুনিয়ায় সন্দেহপ্রবণ মানুষের কোনই অভাব নেই। নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে থাকেন এ ধরনের লোকদেরও কোন ঘাটতি নেই। মানুষকে ঘৃনা করে এমন লোকও সমাজে যথেষ্ট, আরও আছে যারা পিছু হটে। স্মার্ট মানুষেরা এসব মানুষদের এড়িয়ে চলে সব সময়।
০৫. স্মার্ট মানুষেরা সময় নষ্ট করে না
স্মার্ট মানুষেরা জানে সময় কত মূলবান। এরা সময়কে মূল্যায়ন করে। এরা ২৪ ঘন্টার ৮৬৪০০ সেকেন্ডেকে যথাযথভাবে কাজে লাগায়। কারণ এই সময় দুনিয়ার সকল মানুষের জন্য একইভাবে বরাদ্দ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে। এরা সব সময়ই Problem কাজ নিয়ে সময় কাটায়। আট ঘন্টা ঘুমিয়ে নেওয়ার পর আট ঘন্টা এক নাগাড়ে আট ঘন্টা কাজ করে যেতে পারে এই সব মানুষ।  রোদে রাখা বরফ যেমন দ্রুত গলে যায় স্মার্ট মানুষেরা তেমনি ভাবে দ্রুত আপনার কাজ সেরে নেয়। স্মার্ট মানুষেরা ছোট পাখীর মত বলে “এখন না কবো কথা আনিয়াছি তৃণলতা, আপনার বাসা আগে বুনি”। স্মার্ট মানুষেরা পিঁপড়ার মত বলে, “শীতের সঞ্চয় চাই, খাদ্য খুঁজিতেছি তাই, ৬ পায়ে পিলপিল চলি । স্মার্ট মানুষেরা মৌমাছির মত বলে, “ওই ফুল ফোট বনে, যাই মধূ আহরণে, দাঁড়াবার সময় তো নাই। আবার স্মার্ট মানুষেরা বলে, “আদমী যো চাহিয়ে, ওয়াক্তসে ডার কার রাহে; কৌনজানে কিস্ ঘড়ী, বাদলে ওয়াক্ত কি মেজাজ! বা আদম সন্তানেরা যেন সময়কে ভয় করে চলে কেননা, সময় যে কোন সময় তার ওপর তীব্র প্রতিশোধ নিতে পারে। কারণ, স্মার্ট মানুষেরা জানে “টাইম অ্যান্ড টাইড ওয়েট ফর নান।”
০৬. স্মার্ট মানুষেরা ইন্সট্যান্ট গ্রাটিফিকেশন বা তাতক্ষণিক আনন্দ ভুলে থাকেন
স্মার্ট মানুষেরা যে কাজ যত্ন কোরে করে সেই কাজই তাদেরকে আনন্দের ভাগীদার করে। বর্তমান সময়ের মহামানব নেলসন ম্যান্ডেলা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। উনি বলতেন, Joy shared Joy Multiplied, Sorrow shared sorrow divided  
০৭. যে কাজটি তাদের নিয়ন্ত্রনে নেই স্মার্ট মানুষেরা সে কাজের দিকে ভুলেও তাকান না।
কারণ, স্মার্ট মানুষেরা জানেন, বোঝেন যে এই কাজের পেছনে ছুটলে স্মার্ট মানুষের অনেক সময় মিছেমিছি নষ্ট হবে। স্মার্ট মানুষেরা সেই সব কাজের দিকে বেশী কোরে তাকান যে কাজটি তাদের নিয়ন্ত্রনে আছে।
০৮. স্মার্ট মানুষেরা সে সব মানুষকে যতনে এড়িয়ে চলেন যারা তাদেরকে নীচে নামিয়ে আনতে চায়।

স্মার্ট মানুষেরা সংসার পাতে তাদের সাথে যারা তাদের মূল্য জানে, বোঝে, বন্ধুত্ব করে তাদের সাথে যারা বন্ধুত্বে মর্যাদা দিতে জানে। They spent most of their time with positive, intelligent & uplifting people.

০৯. স্মার্ট মানুষেরা অহংকারী হয় না। They don’t display arrogance.
ভাল করে দেখবেন যে যারা স্মার্ট মানুষ তারা কখনোই বলবে না যে আমি স্মার্ট কারণ, স্মার্ট মানুষেরা সব সময়ই বিনয়ী হয়ে থাকেন। স্মার্ট মানুষেরা কখনোই তাদের কাজের জন্য গর্ব বোধ করে না।
১০. স্মার্ট মানুষেরা শুষ্কং কাষ্ঠং নয় বা নিরস গোছের কোন কিছু নয়। এরা সব সময়ই সরস। এরা দারুন হিউমারাস-কৌতুক প্রিয়।
এ কথার অর্থ এই যে স্মার্ট মানুষেরা মানুষকে সব সময় ধন্যবাদ দেন। এটা তাদের স্বভাবজাত বা Instinct বা সহজাতবোধ। একটা পাখীর বাচ্চা যখন ডিম থেকে বের হয় তখন কিন্তু সে বাসা তৈরী করতে পারে না। যখন তার ডিম পাড়বার সময় হয়, তখন সে আপনা থেকেই বাসা বোনার কাজ শিখে নেয়। আর এটাই পাখীর Instinct বা সহজাতবোধ। আর Instinct বা সহজাতবোধ নিয়েই Smart মানুষেরা ধন্যবাদ দিয়ে মানুষের মনটা অনুক্ষণ ভিজিয়েই চলেন। আনস্মার্ট মানুষেরা এটা টেরও পায় না। এটা দুঃখজনকও বটে।
রাসুল (স.) এর উদাহরণঃ
আমাদের নবী (স.)এ রকমই স্মার্ট মানুষ ছিলেন। ওপরে যে সব গুণের কথা বলা হলো, খেয়াল করে দেখুন আমাদের নবী (স.) এঁর মধ্যে এর কোন গুনটা ছিল না। সবটাই পাবেন তাঁর মধ্যে। সেই জন্যই আল কুরআন বলে, “লাক্কাদ কানা লাকুম ফি রাসুলুল্লাহি উসওয়াতুন হাসানা” বা রাসল(সা.)এঁর মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ LAQAD KANA LAKUM FI RASULILLAHI USWATUN HASANAH-"Indeed in the Messenger of Allah you have a good example to follow for him who hopes for Allah and the Last Day, and remembers Allah Quran: Sura Al-Ahzab Ch 33 Ayat 21.
খোলাফায়ে রাশেদার সবারই মধ্যে ছিল Smartness যারা আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দাহ্ তারা সবাই স্মার্ট । এরা বিদ্বান, পরোপকারী, বিদ্যোতসাহী, বিনয়ী, সাহসী, দৃঢ়চিত্ত, সুযোগ পেলেই মানুষের প্রতি দয়া দেখানোর কাজ করেন বা Act of little kindness করেন আর তাদের প্রভুর প্রতি অসম্ভব অনুরক্ত থাকেন। এরা তাদের প্রভুকে ডাকেন ভক্তির সাথে, বিনয়াবনতভাবে, তাদের নিঃশ্বাসের চেয়েও নীচু স্বরে। 
তূলনা
স্মার্ট মানুষ বনাম আনস্মার্ট মানুষ মানুষ

স্মার্ট মানুষ পরিবর্তনকে সাদরে গ্রহণ করে
আনস্মার্ট মানুষ পরিবর্তনকে ভয় পায়।

স্মার্ট মানুষ নোতুন আইডিয়া নিয়ে কথা বলে
আনস্মার্ট মানুষ মানুষের দোষ-ত্রুটি নিয়ে কথা বলে

স্মার্ট মানুষ নিজের কৃতিত্ব অপর লোকদের দিয়ে দেয়
আনস্মার্ট মানুষ অপরের কৃতিত্ব নিজের নামে চালায়

স্মার্ট মানুষ অপরের সফলতা কামনা করে
আনস্মার্ট মানুষ অপরের পরাজয় কামনা করে

স্মার্ট মানুষ এরা খুশী ভাগ করে নেয় আর দুঃখও ভাগ করে নেয়
আনস্মার্ট মানুষ এরা অপরের আনন্দে ঈর্ষান্বিত হয়

স্মার্ট মানুষেরা যুক্তি প্রদর্শনের সময় গেুলো নরমভাবে উপস্থাপন করে
আনস্মার্ট মানুষেরা খুব রেগে গিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়।
পাশাপাশি ভাবুন তো একবার আনস্মার্ট মানুষ কেমন হবে?
“করিতে পারিনা কাজ, সদা ভয়, সদা লাজ,
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
অড়ালে আড়ালে থাকি, নীরবে আপনা ঢাকি,
সম্মুখে চরণ নাহি চলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
হৃদয়ে বুদ্বুদ-মত ওঠে শুভ্র চিন্তা কত
মিশে যায় হৃদেয়ের তলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি, সযতনে শুষ্ক রাখি,
নির্মল নয়নের জলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
একটি স্নেহের কথা, প্রশমিতে পারে ব্যথা,
চলে যাই উপেক্ষার ছলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
মহত উদ্দেশ্যে যবে, একসাথে মিলে সবে,
পারিনা মিলিতে সেই দলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
বিধাতা দিয়েছেন প্রাণ, থাকি সদা ম্রিয়মান,
শক্তি মরে ভীতির কবলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।” -এরা সকলেই আনস্মার্ট। একথা অনেক আগেই কবি কামিনী রায় বলে গেছেন। কিন্তু আমরা তলিয়ে দেখিনি কবি কি বলে গেলেন।

স্মরণে রাখুনঃ
A Smart person will give you smart answers but a wise person will ask you smart questions. কারণ, সকল স্মার্ট মানুষই জ্ঞানী। স্মার্ট মানুষেরা অহংবোধ বা “ইগো” এড়িয়ে চলেন। কারণ, যার জ্ঞান ভাল তার অহংবোধ কম, যার জ্ঞান কম তার অহংবোধ বেশী-More the knowledge lesser the ego, lesser the knowledge more the ego. So, don’t be ego derived, seek knowledge, be SMART.

Wednesday, April 18, 2018

9 really amazing Co-incidences


9 really amazing Co-incidences
০১. ভুলের ভুল, বিউটিফুলঃ
কম্পিউটারের ভুলে আমেরিকায় একবার প্যাট্রিসিয়া নামের দু’জন মহিলাকে একই সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর দেয়া হয়। কোম্পানীর লোকেরা এই ভুল শুধরোতে তাদের দু’জনকে ডেকে পাঠায়। তারা দুজনেই হাজির হলে কোম্পানীর লোকেরা যা দেখলেন তাতে তাদের চোখ চড়ক গাছ! ০১. জন্মের পর তাদের দু’জনের নাম দেয়া হয় প্যাট্রিসিয়া অ্যান ক্যাম্পবেল। ০২. এদের দু’জনেরই বাবার নাম রবার্ট ক্যাম্পবেল। ০৩. এদের দু’জনেরই জন্ম তারিখ ১৯৪১এর ১৩ই মার্চ। ০৪. ১৯৫৯ সালে দু’জনেই বিয়ে করেন সামরিক বিভাগের দুই পুরুষকে। ০৫. এদের দু’জনেরই ১৯ আর ২১ বছর বয়সী ২টি করে সন্তান রয়েছে। ০৬. এদের দু’জনেরই আসক্তি রয়েছে তৈল চিত্রে। ০৭. দু’জনেই লেখ-পড়া করেছেন কসমেটিকস্ নিয়ে। ০৮. এক সময় এরা দু’জনেই চাকুরী করেছেন বুক- কীপার হিসেবে।  কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন! হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ!


০২. যেন নাম লেখা বুলেটঃ
১৮৯৩ সালে হেনরী জিগল্যান্ড তার গার্ল ফ্রেন্ডের সঙ্গে পাট চুকে দিলে মেয়েটি আত্ম হত্যা করে। মেয়েটির ভাই এটি খুবই সিরিয়াসলি নেয়। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সে হেনরীর বাড়ীর কাছে অবস্থান নেয়। একবার বাগানে হেনরীর দেখা পেলে সে হেনরীর ওপর গুলি চালায়। গুলিটি হেনরীর মুখে লেগে পাশের একটি গাছে বিদ্ধ হয়। ঘটনার ২০ বছর পর ১৯১৩ সালে হেনরী বাগানের সেই গাছটি উপড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য হেনরী ব্যবহার করে ডিনামাইট। ডিনামাইটে বিষ্ফোরণ ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই গাছে ঢুকে পড়া সেই বুলেটটি অবিশ্বাস্য গতিতে ঢুকে পড়ে হেনরীর মাথায়। হেনরী ততক্ষনাত মারা যায়। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন!

০৩. ভাগ্যবান হিউরাঃ
১৬৬০-এর ৫ই ডিসেম্বরে বৃটেনের ডোভার প্রণালীতে  জাহাজ ডুবি হলে বেঁচে যাওয়া লোকটির নাম ছিল হিউ। ১৭৬৭ ৫ই ডিসেম্বরে একই জায়গায় আর একটি জাহাজ ডুবি হলে ১২৭ জন প্রাণ হারায়। বেঁচে যাওয়া একমাত্র লোকটি ছিলেন হিউ। ১৮২০-এর ৮ই আগষ্টে টেমস নদীতে একটি পিকনিক নৌকা ডুবে গেলে প্রানে বেঁচে যাওয়া একমাত্র লোকটি ছিলেন হিউ। ১৯৪০এর ১০ই জুলাইয়ে একটি বৃটিশ ট্রলার জার্মনীর একটি মাইনবাহী জাহাজকে বিধ্বস্ত করলে একজন লোক তার ভাতিজা প্রাণে রক্ষা পায়। এদের দু’জনের নামও ছিল হিউ।  হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন!

০৪. মৃত্যু তাদের আলাদা করতে পারেনি!
১৯৯৬এ প্যারিসে এক মোটর দুর্ঘটনা ঘটে। এতে দুজন ড্রাইভার ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। পুলিশের একটি দল এর একটা কিনারা করতে অনুসন্ধানে নেমে পড়ে। তারা এক সময় এর পেছনে ঘাতক চক্রের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করে। পরে তারা জানতে পারে যে এই নিহত দুজন ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। তারা অনেকদিন আলাদা ছিলেন। তারা কেউই জানতেন না যে দু’জনেই ড্রাইভে বের হয়েছেন। কিন্তু মৃত্যু আবারো তাদের মিলন ঘটালো। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! একই সময়ে ঘটনার সংঘটন কেমন!

০৫. খুঁজে ফেরাঃ
হারিয়ে যাওয়া ১০ বছরের লিসাকে খুঁজতে একবার তার বাবা মাইকেল ডিক পরিবারের অন্যান্যরা যুক্তরাজ্যের সব জায়গায় পাত্তা লাগান।  মেয়ের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় তার হতাশ বাবা পরিবারের অন্যান্যরা সাফোক-এর একটি ফ্রি প্রেসে যান। প্রেসের মালিক কবরের কাগজে বিজ্ঞাপণ প্রচার করে এই পরিবারকে সাহায্য করার কথা বলেন। সৌভাগ্যবশতঃ লিসা বিজ্ঞাপন পড়ে ফেলে। মজার ব্যাপার এই যে, ফ্রি  প্রেসের বিজ্ঞাপনে ছবি দেবার সময়ে লিসা তার বাবার পিছনেই ছিল। সুযোগ নিয়েই লিসা বাবা কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! একই সময়ে ঘটনার সংঘটন কেমন!
       
০৬. ভীতিকর লাইন্সেসঃ
১৯৯০এর শেষের দিকে বৃটেনের নর্থ ওয়েলস্-এর আরগোড হাই স্কুলে ১৫ বছর বয়সের একটি ছেলে জি.সি.এস. পরীক্ষা দিতে বসেছে। ছেলেটির নাম জেমস বন্ড। তার পরীক্ষার উত্তর পত্রের রেফারেন্স নম্বর ছিল জিরো জিরো সেভেন। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন!


০৭. উদ্ধারঃ
১৯৬৫ সালে পর্তুগালের সালেম বীচে সমুদ্র স্নানের সময় বছর বয়সী রজার হঠাৎ দুরে ভেসে যায়। ডুবে যাওয়া থেকে তাকে সাহায্য করেন এক বয়স্কা মহিলা নাম তার অ্যালিস ব্লেইজ। ১৯৭৪এর কোন এক সময়ে একই বীচে স্নানের সময় রজার দেখেন দূরে একজন লোক সাগর জলে খাবি খাচ্ছে। রজার তাকে উদ্ধার করে। পরে পরিচয় নিয়ে জানা গেল এই লোকটি ছিল অ্যালিস ব্লেইজ -এর স্বামী। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন! 

০৮. জনশ্রæতি আছে যে বজ্র কাউকে একবারের বেশী আঘাত করে নাঃ

১ম বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে বৃটিশ অশ্বারোহী দলের অফিসার মেজর সামারফিল্ড যুদ্ধ ক্ষেত্রেই বজ্রাঘাতে আহত হলে তার শরীরের বাঁ-পাশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাকে চিকিৎসার জন্য কানাডার ভ্যানক্যুভারে নেয়া হয়। এখানে একবার তিনি মাছ ধরতে বের হন। এসময় বজ্রাঘাতে তার শরীরের ডানপাশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। দুবছর পরে একটু ভালো হলে সামারফিল্ড একবার স্থানীয় বাগানে ঘুরছিলেন। এসময় আকাশ মেঘ করে গরমকালের ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। আবারো তার ওপরে আরো একবার বজ্রপাত হলে সামারফিল্ড স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে।  এর দুবছর পরে মেজর সামারফিল্ড মারা যায়। মৃত্যুর বছর পরে তার কবরের সমাধীটিও বজ্রাঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন!   



০৯. সাবধান! মৃত্যু তোমার পিছেই রয়েছে

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী ডনী ডি টোয়িট একবার শ্রোতৃমন্ডলীর উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করছিলেন। বক্তৃতার বিষয় ছিল-“মৃত্যু যে কাউকে যে কোন সময় ধরে ফেলতে পারে।”
বক্তৃতার শেষে ডনী ডি টোয়িট শুকনো গলা ভিজে নেয়ার উদ্দেশ্যে এক টুকরো পিপারমিন্ট মুখে পুরে দেন। তখন তখনই দম বন্দ হয়ে তিনি মারা যান। হোয়াট অ্যা বিউটিফুল কো-ইনসিডেন্স ইজ! কেমন একই সময়ে ঘটনার সংঘটন!