Wednesday, November 13, 2024

ইন্ডিয়ান স্যান্ড স্নেক

 ১৭৯৬-পর ২০২৪। দীর্ঘ ২২৮ বছর পর মুর্শিদাবাদে দেখা মিলল বিরল প্রজাতির এক সাপ!

ইংরেজি নাম, ইন্ডিয়ান স্যান্ড স্নেক। ল্যাটিন ভাষায় স্যামোফিস কন্ডেনারুস (বিজ্ঞানসম্মত নাম)। বুধবার দুপুরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কার ২ নম্বর নিশিন্দা কলোনিতে সাপটিকে প্রথম দেখা যায়। বাড়ির উঠোনে মাটির গর্তে সাপটি লুকিয়ে ছিল। গ্রামের সকলেই অচেনা সাপটিকে দেখে অবাক হয়ে যান। খবর দেয়া হয় সর্পবিশারদ প্রলয় চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি খবর পেয়ে গ্রামে গিয়ে উদ্ধার করেন সেটিকে। এরপর অন্য সর্প বিশারদদের সাহায্য নিয়ে, ‘স্কেল কাউন্ট’ করে ‘প্রকৃত পরিচয়’ জানা যায়।
প্রলয় জানান, সাপটির পেটের তলার হলুদ-সাদা ও গায়ের উপরে বাদামি রঙের দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সেটিকে নির্বিষ ‘বেত আছড়া’ সাপ বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু খুঁটিয়ে দেখতেই ফারাক চোখে পড়ে। এর পর সাপটির বেশ কিছু ছবি তুলে সরীসৃপ বিশারদদের কাছে পাঠানো হয়। এরপর সেটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। প্রলয় বলেন, ‘সাপটি মৃদু বিষধর। তবে মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। প্রধানত গিরগিটি, টিকটিকি, ছোট ব্যাঙ খেয়ে বেঁচে থাকে। এটি অবিভক্ত বাংলায় এর আগে ১৭৯৬ সালে পাওয়া গিয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য-সংক্রান্ত একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।’
সর্পবিশারদ অনির্বাণ চৌধুরী জানান, ব্রিটিশ সর্পবিশারদ রাসেল ১৭৯৬ সালে অবিভক্ত বাংলা থেকে পাওয়া এই প্রজাতির সাপের একটি নমুনা থেকে ইন্ডিয়ান স্যান্ড স্নেকের ছবি এঁকেছিলেন। এর পর ১৮২০ সালে সর্প বিশারদ মেরেম ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় এই সাপের সন্ধান পেয়েছিলেন। ১৯৮৩-তে সর্পবিদ জেসি ড্যানিয়েল এবং ১৯৮৬-তে টিএসএন মূর্তি তাদের বইয়ে স্যান্ড স্নেকের সম্ভাব্য প্রাপ্তিস্থান হিসেবে দাক্ষিণাত্য, ওড়িশার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের নামও উল্লেখ করেন। প্রলয়ের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এর আগে এই প্রজাতির সাপ কখনো উদ্ধার হয়নি।
তবে ভারতবর্ষের হিমালয় পাদদেশ, মধ্যভারতের বিভিন্ন অংশ, দক্ষিণের পূর্বঘাট পর্বতের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে সাপটির দেখা মিলেছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশেও প্রথমবার পাওয়া গিয়েছিল।
উদ্ধার করা সাপটিকে যেখানে উদ্ধার করা হয়েছিল সেই স্থানের কাছেই ছেড়ে দেয়া হয় বলে প্রলয় জানান। তিনি বলেন, ‘বিরল প্রজাতির সাপটিকে বংশবৃদ্ধির সুযোগ দেওয়ার জন্য স্থানান্তরিত না করে তার প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেয়া উচিত ছিল। বাড়ির লোকজন প্রাথমিকভাবে রাজি না হলেও সাপটি নির্বিষ শোনার পর এবং বিরল সেটি জেনে তারাই বাড়ির পাশে ছাড়ার অনুরোধ করেন। সাপটিকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতিও দেন।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
May be an image of 1 person and snake
lkis Khanom

No comments:

Post a Comment