শিশুর মানসিক বিকাশের সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় প্রয়োজনমাফিক সবকিছু শিশুকে নিশ্চয়ই দেবেন। তবে প্রাচুর্য শিশুর জন্য নেতিবাচক হয়েও দাঁড়াতে পারে; বরং শিশুকে এমনভাবে গড়ে তুলতে পারেন, যাতে সে নিজের ইচ্ছার পাশাপাশি অন্যের ইচ্ছাকেও গুরুত্ব দিতে শেখে। বস্তুগত জিনিসের প্রতি যাতে শিশুর অতিরিক্ত আকর্ষণ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। মানবতা ও সৃজনশীলতার চর্চাও কিন্তু হতে পারে খেলনার মাধ্যমেই।
খেলনা বেশি হলে ক্ষতি কী
অতিরিক্ত খেলনা থাকলে শিশু হয়তো এখনই একটা খেলনা নেবে, খানিক বাদেই ঝুঁকে পড়বে অন্য একটায়। এতে তার নির্দিষ্ট কোনো দিকে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। অস্থির আচরণ করতে পারে। আবার শিশু যখনই যে খেলনা কিনতে চায়, তক্ষুনি যদি তা পেয়ে যায়, তাহলে সে এতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। পরবর্তী সময়ে কোনো কিছু না পাওয়ার অনুভূতি তার ভেতর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। সামাজিক পরিসরে অন্যদের সঙ্গে মিশতে গিয়ে অসুবিধা হতে পারে তার। বস্তুগত জিনিসের প্রতি মোহও গড়ে উঠতে পারে।
যেসব বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন
শিশুর খেলনা বাছাইয়ে সৃজনশীলতার প্রতি গুরুত্ব দিন। তার যেসব খেলনা আছে, নতুন খেলনা কেনার সময় সেসবের চেয়ে ভিন্ন কিছু বেছে নিন। শিশুর ভালোর জন্য কখনো কখনো তাকে ‘না’ বলুন। সে নিজে যদি অতিরিক্ত খেলনা কেনার জন্য জেদ করে, তাহলে বুঝিয়ে বলুন, এত খেলনা তার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু নেওয়া ঠিক নয়। শিশুকে বোঝান তার বয়সের উপযোগী ভাষা বা উদাহরণ দিয়ে। আপনজনেরা উপহার দিতে চাইলে অবশ্য অনেক সময়ই আপনি তাঁদের নিষেধ করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে পুরোনো খেলনাগুলো অন্য কাউকে দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী করে তুলুন শিশুকে। সুবিধাবঞ্চিত কোনো শিশুর হাতে তুলে দিতে পারেন এসব খেলনা। আর কাজটি করার সময় আপনার শিশুকে সঙ্গে রাখুন। অন্যের জন্য কিছু করার মধ্যে যে আনন্দ আছে, সেটা সে সহজেই খুঁজে পাবে। বাড়িতে এ রকম একটা বাক্স রেখে দিতে পারেন, যেখানে শিশু তার কিছু খেলনা নিজেই গুছিয়ে রাখবে অন্যকে দেওয়ার জন্য।
সূত্রঃ ডা. মো. জসিম উদ্দীন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক
No comments:
Post a Comment