সময়ের আবর্তনে মানুষের জীবন কখনো সুখ, কখনো বা দুঃখ-বেদনা ও জয়-পরাজয় স্পর্শ করে থাকে। মানুষ যখন সময় নামক সুখের অংশে প্রবেশ করে তখন সুখ আর সুখের অবগাহনে বিমোহিত হয়। পক্ষান্তরে যখন সে দুঃখের অংশে প্রবেশ করে তখন দুঃখ-বেদনায় জীবন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে। মহান আল্লাহই সময়ের আবর্তন ঘটান। তিনি বলেন- ‘যদি কোনো আঘাত (আহত-নিহত, হতাশা, নৈরাশ্য, দুঃখ-বেদনা এককথায় পরাজয়) তোমাদের স্পর্শ করে থাকে, এ রকম আঘাত (পরাজয়) তো কাফিরদেরও স্পর্শ করেছে। এ দিনগুলো আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। কারণ এভাবে আল্লাহ তায়ালা জানতে চান কারা ঈমানদার আর তোমাদের কিছু লোককে শহীদ হিসেবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ জালিমদের ভালোবাসেন না।’ (সূরা আলে ইমরান-১৪০)
আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘ প্রকৃত কথা এই যে, সঙ্কীর্ণতার সাথে প্রশস্ততাও রয়েছে। আসলে সঙ্কীর্ণতার সাথে আছে প্রশস্ততা।’ (সূরা আলাম নাশরাহ : ৫-৬) কথাটি দু’বার বলা হয়েছে। যদিও রাসূলুল্লাহ সা:-কে পুরোপুরি সান্ত্বনা দেয়ার জন্য আয়াতটি নাজিল হয়েছে, তথাপি এটি সব মুমিনের জন্য প্রযোজ্য। দুঃখ-বেদনা, আপদ-বিপদ বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকে না; বরং এরপর শিগগির ভালো অবস্থা শুরু হয়। আল্লাহ আমাদের শুভাকাংক্ষী। তিনি আমাদের ভালো চান। তিনি আমাদের এমন কাজ করতে নিষেধ করছেন যার মধ্যে আমাদের নিজেদের ধ্বংস নিহিত রয়েছে। মৃত্যুর কাজটি আল্লাহর অধিকার। অতএব, কেউ যদি কাজটি নিজের হাতে তুলে নেয় সে মূলত আল্লাহর অধিকারে হস্তক্ষেপ করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান আর তাঁর কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’ (সূরা ইউনুস-৫৬) তাই নিজে নিজে জীবন হরণ করা আল্লাহ পছন্দ করেন না। এ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং পরিণামের ভয়াবহতা, কঠোর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির কথাও বলেছেন।
No comments:
Post a Comment