Saturday, January 27, 2024

অগোচরে ইবাদতে নিমগ্ন থাকো

 আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কিছু ইবাদত গোপনে করা উত্তম। গোপন ইবাদত সওয়াবের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা হওয়ার জন্য গোপন ইবাদতে অভ্যস্ত হওয়া অবশ্যক।


গভীর ঈমানের পরিচায়ক

গভীর ও একনিষ্ঠ ঈমানের একটি বড় আলামত হলো গোপনে ইবাদত করা। কারো গোপন নেক আমল যখন বেড়ে যায়, তখন তিনি ঈমানের সর্বোচ্চ স্তরে উপনীত হতে পারেন। আর ঈমানের সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছে ‘ইহসান’। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ইহসান হচ্ছে তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ; যদি তাঁকে দেখতে না পাও তবে বিশ্বাস রাখবে তিনি তোমাকে দেখছেন। (বুখারি, হাদিস : ৫০)

আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়

অন্তরে ঈমান ও তাকওয়ার শিকড় যত শক্তিশালী হয়, নেক আমলের বৃক্ষ তত বেশি ফলবতী হয়। যার গোপন ইবাদত যত সুন্দর হয়, তার বাহ্যিক আমলগুলো তত পরিপাটি হয়। এ জন্য মহান আল্লাহ গোপন ইবাদত অত্যধিক পছন্দ করেন। তিনি বান্দাকে সঙ্গোপনে দোয়া করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের রবকে ডাকো বিনীতভাবে ও চুপে চুপে। নিশ্চয়ই তিনি সীমা লঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৫৫)

রিয়া ও লৌকিকতা মুক্ত ইবাদত

ইবাদতের সওয়াব বিনষ্ট হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হলো রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা। সে জন্য ইবাদত যখন রিয়ামুক্ত হয়, তখন সেটা খাঁটি ও কবুলযোগ্য হয়। আর এ জন্যই মহান আল্লাহ গোপন ইবাদত সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান করো, তবে তা কতই না উত্তম! আর যদি তা গোপনে করো এবং অভাবীদের প্রদান করো, তাহলে তোমাদের জন্য সেটাই উত্তম। (এর দ্বারা) তিনি তোমাদের কিছু পাপ মোচন করে দেবেন। আর তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তার খবর রাখেন।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৭১)
তাফসিরবিদ ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘এই আয়াতে দলিল আছে যে প্রকাশ্যে দান করার চেয়ে গোপনে দান করা বেশি উত্তম। কেননা গোপন আমলের মাধ্যমে রিয়া বা লৌকিকতা থেকে অধিক নিরাপদ থাকা যায়।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির ১/৭০১)

আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত হয়

বান্দা যখন আল্লাহর নির্দেশ লঙ্ঘন করে, তখন আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি ভীষণ রাগান্বিত হন। আর আল্লাহর রাগ ও ক্রোধকে ঠাণ্ডা করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হলো গোপন ইবাদত, বিশেষ করে গোপনে দান করা। আল্লাহ বলেন, ‘যারা তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে, তাদের জন্য উত্তম পারিতোষিক আছে তাদের রবের কাছে। তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তান্বিত হবে না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৭৪)

অন্তরের শুদ্ধতা অর্জন

সঙ্গোপনে ইবাদতের মাধ্যমে যে তৃপ্তি পাওয়া যায়, কারো সামনে ইবাদত করার সময় সেটা পাওয়া যায় না। হাশরের ময়দানে সবাই যখন দিশাহারা হয়ে যাবে, তখন তারা আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে প্রশান্ত চিত্তে। মহান আল্লাহ বলেন : ‘যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো কাজে আসবে না, কেবল যে ব্যক্তি বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে, সে ছাড়া। (সেদিন) জান্নাতকে আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে।’ (সুরা : শুআরা, আয়াত : ৮৮-৯০)

বিপদাপদে বড় হাতিয়ার

বিভিন্ন ধরনের বিপদাপদে আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহ লাভের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হলো গোপন আমল। কারণ গোপন আমলে ফজিলত বেশি এবং খুব তাড়াতাড়ি কবুল হয়। আর কবুলযোগ্য কোনো আমলের অসিলায় আল্লাহর কাছে দোয়া করলে যেকোনো বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যেমন আগের যুগের তিনজন ব্যক্তি পাহাড়ের গুহায় আটকা পড়েছিল। সেখান থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় তাদের ছিল না। অতঃপর তারা যখন তাদের নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল, তখন আল্লাহ তাদের গুহা থেকে বের করে আনেন। (বুখারি, হাদিস : ২২১৫)

ইউনুস (আ.) মাছের পেটে অবরুদ্ধ হয়ে কায়মনো বাক্যে আল্লাহকে ডেকেছিলেন এবং তাঁর তাসবিহ পাঠ করেছিলেন। ফলে আল্লাহ তাঁকে মাছের অন্ধকার পেটের ভেতর থেকে মুক্তি দান করেন। আল্লাহ বলেন, ‘যদি সে এই সময় আল্লাহর গুণগানকারী না হতো, তাহলে সে তার পেটে অবস্থান করত পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।’ (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১৪৩-১৪৪)

এ সময় তিনি দোয়া পাঠ করেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নি কুনতু মিনায যোয়া-লিমীন।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৮৭-৮৮)

এটি দোয়া ইউনুস নামে প্রসিদ্ধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো মুমিন কঠিন বিপদে এই দোয়া পাঠ করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫০৫)

আল্লাহর আরশের ছায়া লাভ

কিয়ামতের ময়দানে মহান আল্লাহ যে সাত শ্রেণির বান্দাকে ছায়া দান করবেন, তার মধ্যে তিন শ্রেণির লোক হবে গোপন আমলকারী। যেমন—নবী কারিম (সা.) বলেন, সেদিন সাত শ্রেণির ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন, যেদিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না।...(তন্মধ্যে অন্যতম হলো) ওই ব্যক্তি, যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহ্বান জানায়, কিন্তু সে এই বলে প্রত্যাখ্যান করে যে ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ আর সেই ব্যক্তি ছায়া পাবে, যে এমন গোপনে দান করে যে তার ডান হাত কি ব্যয় করে বাঁ হাত সেটা জানতে পারে না। অতঃপর সে ব্যক্তি, যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার দুই চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়। (বুখারি, হাদিস : ৬৬০)
রেফা: উম্মে আহমাদ ফারজানা

খতনা করানোর আগে জেনে নেই

 আমাদের দেশে শীতকালে স্কুল বন্ধ থাকে, তাই সাধারণত এই সময় শিশুদের খতনা বা মুসলমানি করানো হয় সবচেয়ে বেশি। রাজধানীতে সম্প্রতি খতনার পর ৫ বছর বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অনুমতি ছাড়াই ‘ফুল অ্যানেসথেসিয়া’ দিয়ে শিশুটির খতনা করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। একটা সময় হাজাম দিয়ে খতনা করানোর চল থাকলেও আজকাল চিকিৎসকের কাছে গিয়ে খতনা করানো হয় বেশি। নিরাপত্তার কথা ভেবেই চিকিৎসককে দিয়ে খতনা করান অভিভাবকেরা।

সারকামসিশন( Circumcision) শব্দটি এসেছে লাতিন সারকামডায়ার থেকে, যার অর্থ হলো চারদিক থেকে কেটে ফেলা(Latin circum (meaning 'around') and caedere (meaning 'to cut'))। পুরুষের লিঙ্গের অগ্রভাগের কিছু চামড়া চারদিক থেকে কেটে নেওয়ার পদ্ধতির নামই হলো সারকামসিশন বা খতনা।
কেন খতনা করা হয়?
সাধারণত ধর্মীয় রীতি অনুসারে মুসলিম ছেলে শিশুদের এটি করা হয়। কিছু কিছু জন্মগত রোগেও সাকামসিশন করার নির্দেশনা আছে। এর মধ্যে আছে—
যাদের লিঙ্গের অগ্রভাগের ছিদ্র ছোট থাকে, বারবার তাদের প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে।
যাদের চামড়া গ্লান্স লিঙ্গের পেছনে আটকে গিয়ে ব্যথা করে, তাদের ক্ষেত্রে এটি করা হয়।
এই দুটি অবস্থার মেডিকেল টার্ম হলো ফাইমোসিস আর প্যারাফাইমোসিস।
আবার কারও কারও জন্য এটা করা নিষেধ। যেমন—
যাদের হিমোফিলিয়া hemophilia নামের রক্তরোগ আছে, তাদের সারকামসিশন করতে বারণ করা হয়। কারণ কাটাছেঁড়া করা হলে তাদের রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না।
যাদের প্রস্রাবের নালির ছিদ্র ভিন্ন জায়গায় থাকে। এসব রোগীদের নালি ঠিক করার অস্ত্রোপচারের সময় লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া নতুন নালি তৈরিতে কাজে লাগে।
কোন বয়সে খতনা করা উচিত
বিশ্বের অনেক দেশেই জন্মের সঙ্গে সঙ্গে খতনা করে দেওয়া হয়। এ সময় শিশুর ব্যথাজনিত বোধ সেভাবে তৈরি হয় না, ফলে ক্ষত দ্রুত শুকিয়ে যায়।
তবে ৪ থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুদের খতনা করলে সমস্যা সবচেয়ে কম হয়।
বেশি ছোট শিশুরা ভয় পায় ও কান্নাকাটি করে বেশি। আর বড়দের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ইরেকশনের কারণে রক্তপাত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়।
তবে শিশুর খতনা করানোর আগে বাড়ি থেকে তাকে সাহস দিন। তাকে না বলে, গোপন করে বা জোর করে খতনা করাতে গেলে সার্জারির সময় আঘাতজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বর্তমানে কিছু ডিভাইস, এমনকি লেজারের মাধ্যমেও খতনার সার্জারি হচ্ছে। তবে ডিভাইস ব্যবহার করা হলে ব্যবহারকারী চিকিৎসক প্রশিক্ষিত কি না, সেটা জেনে নেওয়া জরুরি। লোকাল অ্যানেসথেসিয়া বা জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে এই অস্ত্রোপচার করা যেতে পারে। জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অস্ত্রোপচার করতে হলে অবশ্যই শিশুকে ৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। দেশে পর্যাপ্ত অবেদনবিদ ও এনআইসিইউ সুবিধা না থাকায় অনেক সময় শিশুমৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। তাই সন্তানের অস্ত্রোপচারের আগে কোন ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হবে, জেনে রাখা জরুরি।
খতনার অস্ত্রোপচার-পরবর্তী জটিলতা এড়াতে
খতনার অস্ত্রোপচারে সবচেয়ে বেশি যে জটিলতা দেখা যায়, তা হলো, রক্তপাতজনিত সমস্যা। অনেক সময় বাড়ি নিয়ে আসার পর আবার রক্তপাত শুরু হতে পারে। বেশি রক্তপাত হলে প্রথমে কাপড় দিয়ে চেপে ধরে রাখতে হবে। এরপরও না কমলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এ ছাড়া খতনার পরে লিঙ্গে ইনফেকশন ও লিঙ্গের অগ্রভাগে ক্ষত হতে পারে। সঠিক ওষুধ ও নিয়মিত ড্রেসিংয়ে এগুলো সহজেই সেরে যায়। লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হলে অনেক সময় লিঙ্গের গোড়া তিন-চার দিন ফোলা থাকতে পারে। এতে ভয়ের কিছু নেই।
এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের পরের এক সপ্তাহে ক্ষতস্থান থেকে অল্প রক্তমিশ্রিত পানির মতো তরল আসতে পারে। এটিও এমনিতেই সেরে যাবে। নিয়মিত কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে ওঠে। অস্ত্রোপচার-পরবর্তী সময় লুঙ্গি বা নরম ঢিলে কাপড় পরলে ব্যথা কম হয়। এক সপ্তাহের মধ্যেই ক্ষত সেরে গেলে স্বাভাবিক পোশাক পরে সব কাজ করা সম্ভব।
সূত্র: ডা. রেজা আহমদ, কনসালট্যান্ট সার্জন, ইবনে সিনা হাসপাতাল, সিলেট
May be an image of flower
All reactions:

পুষ্টিগুণের বিচারে ফুলকপির চেয়ে এগিয়ে থাকবে ব্রকোলি

 Broccoli Vs. Cauliflower

পুষ্টিবিদেরা বলছেন, সস্তার ফুলকপিতে ভিটামিন এ, ই, কে, ভিটামিন বি৫, বি ৬, ক্যালশিয়াম, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং জ়িঙ্কের মতো একাধিক জরুরি ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। সেই সঙ্গে ফুলকপি হল ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত এই সব্জি পাতে রাখলে হার্টের রোগ কিংবা ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এমনকি, এতে মজুত থাকা ফাইবার ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তাই আপনার রোজের পাতে এই সব্জির পদ রাখা যেতেই পারে।
আবার, ব্রকোলিতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ৬, রাইবোফ্ল্যাভিন, নিয়াসিন, থায়ামিন, আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক, ক্যালশিয়ামের মতো জরুরি ভিটামিন ও খনিজ। শুধু তা-ই নয়, এতে মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই সব্জি খেলে ডায়াবিটিস, অস্টিয়োপোরোসিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে। এমনকি, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও সাহায্য করে ব্রকোলি।
পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে গেলে ফুলকপির মতো করে রসিয়ে ব্রকোলি রান্না করা যাবে না। তবেই ব্রকোলির মধ্যে সমস্ত উপাদান বজায় থাকবে। কিন্তু গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে ফুলকপি বা ব্রকোলি কম খাওয়াই ভাল।
-আনন্দবাজার
No photo description available.
All reacti

খলিফা নিযুক্তির পর আবু বকর রা. এর প্রথম ভাষণ : বিশ্বনেতাদের জন্য যা আজও প্রাসঙ্গিক

 পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বনবির পর অনন্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মাধুর্য ব্যবহার, ব্যক্তিত্বের বলিষ্ঠতা, অগাধ জ্ঞানের গভীরতা, কালজয়ী আদর্শিক একনিষ্ঠতা, কুরআনের নীতি-জ্ঞানে পরিপক্বতা, দায়িত্ব পালনে কর্তব্য-নিষ্ঠা, অধিকার বস্তবায়নে ত্যাগের মহিমা আর নিঃস্বার্থ প্রজা পালনে সমগ্র পৃথিবীব্যাপী যত রাষ্ট্রনায়ক সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রথম যাঁর নামটি শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তিনি হলেন ইসলামি খিলাফাতের প্রথম খলিফা, হজরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু।

রাসূল (সাঃ)-এর মিরাজের (উর্ধ্বগমন আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য) কথা শোনামাত্র বিনা বাক্যে বিশ্বাস স্থাপন করার কারণে রাসুল (সাঃ) হযরত আবু বকর (রাঃ) কে সিদ্দিক উপাধি তে ভূষিত করেন। হযরত আবু বকর (রা) রাসুল (সাঃ)-এর জীবনসহচর ও ইসলামের একনিষ্ঠ সেবক ছিলেন। নেতৃস্থানীয় ও বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি আশারায়ে মুবাশ্বারাগণেরও একজন। ইসলামে দানশীলতায় তাকে কেউ এখন পর্যন্ত অতিক্রম করতে পারেনি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় তিনিই ছিলেন গোটা মুসলিম উম্মাহর নেতা। তাঁর ওফাতের পর দাফন শেষ হওয়ার আগেই পরবর্তী খলিফা নির্ধারণ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। মদিনার আনসাররা ‘সাকিফা বনু সায়িদা’ নামক স্থানে একত্রিত হয়। সেখানে কিছু সংখ্যক মুহাজিরও ছিলেন। আনসাররা অভিমত দিলেন যে, পরবর্তী খলিফা তাঁদের মধ্য থেকেই নির্বাচিত হোক। মুহাজিররা এর প্রতিবাদ জানালেন। দু’পক্ষ থেকে দু’জন খলিফা নির্বাচনের দাবিও কেউ কেউ জানালেন। এভাবে একটি গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হল।
খবর পেয়ে আবু বকর, উমর ও আরো কয়েকজন মুহাজির সাহাবী সেখানে গেলেন। আবু বকর (রাঃ)একটি চমৎকার ভাষণ দিলেন। তাঁর ধীরতা ও যুক্তি-প্রমাণের কাছে সবাই নতি স্বীকার করল। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু খলিফা হিসাবে আবু বকরের নাম প্রস্তাব করলেন ও প্রথমেই তাঁর হাতে বাইয়াত নিলেন। এরপর সকলেই বাইয়াত নিলেন। এভাবে ইসলামের প্রথম খলিফা মনোনীত হলেন আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু।
খলিফা মনোনীত হওয়ার পর তিনি একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন, যাতে একজন খলিফার দায়িত্ব এবং জনগণের কর্তব্য সম্পর্কে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি এই ভাষণটিতে রয়েছে বিশ্বের সমস্ত নেতৃবর্গের জন্য উত্তম শিক্ষা। তিনি বললেন,
“হে লোকসকল, আমাকে তোমাদের উপর কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমি তোমাদের সর্বোত্তম ব্যক্তি নই। সুতরাং যদি আমি সঠিক কাজ করি তবে আমাকে সাহায্য করবে, আর যদি ভুল করি তবে আমাকে সংশোধন করে দিও।
সততা একটি পবিত্র আমানত এবং মিথ্যা হচ্ছে বিশ্বাসঘাতকতা। তোমাদের দুর্বলরা ততক্ষণ পর্যন্ত সবল যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাকে তার অধিকার আদায় করে দেই ইনশাআল্লাহ এবং তোমাদের শক্তিশালীরা ততক্ষণ পর্যন্ত দুর্বল যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের কাছে থেকে পাওনা আদায় করে দেই ইনশাআল্লাহ।
কোনো জাতি জিহাদ ত্যাগ করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করে ছাড়বেন। কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়লে আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন। আমাকে ততক্ষণ মেনে চলো যতক্ষণ আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে চলি। যদি আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে না চলি, তাহলে আমার প্রতি তোমাদের আনুগত্যের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।”
আবু বকর খলিফা হওয়ার আগে মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্বে ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একজন নবির নেতৃত্ব ও উম্মতের নেতৃত্বের মাঝে পার্থক্য আছে। নবীর প্রদর্শিত পথে একজন সাধারণ মানুষ কিভাবে নেতৃত্ব দেবে তা দেখিয়ে গেছেন আবু বকর। যেসব মূলনীতি তাঁর ভাষণের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে, তা উম্মাহর নেতাদের জন্য সর্বকালে অনুসরণীয়।
আবু বকর (রা.) স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিলেন যে শরিয়তের উৎস কুরআন ও সুন্নাহ। আনুগত্য ততক্ষণ, যতক্ষণ কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নেতৃত্ব ছিল প্রশ্নাতীত, কারণ আল্লাহ নিজে তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন,নিয়ন্ত্রন তরেছেন ও সংশোধন করেছেন। মুসলিম নেতা জবাবদিহি করবে উম্মাহর কাছে, উম্মাহর দায়িত্ব নেতাকে সঠিক পথে চালানো। সুবিচার ও সমতা হবে ইসলামি রাষ্ট্রের ভিত্তি। নেতা ও জনতার মাঝে সম্পর্ক হবে সততা ও বিশ্বস্ততার।
আজ মুসলিম অধ্যুসিত রাষ্ট্রসমূহ ইসলামী কানুনের ভিত্তিতে পরিচালিত নয়,এমনকি ইসলামী অনুশাসনের প্রতি অনেকেরই আস্থা নেই। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে মুসলিম জাতি রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে হয় ধর্ম নিরপেক্ষ নতুবা বিজাতীয় মতবাদে প্রভাবিত।ফলে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপালনে কারো মধ্যেই আল্লাহকে ভয় করে চলার নীতি দৃশ্যমান নয়। পরকালের ভীতি থাকলে স্বভাবতঃই একজন ব্যক্তি দায়িত্বশীল ও দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরো রাষ্ট্রে যেখানে ইসলামী চরিত্রের লোকেরা যে কয়দিন শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলো,তাদের কারো বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির কোন অভিযোগ না থাকাই একথার প্রমাণ বহন করে।
আল্লাহ আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনায় নিযুক্ত দায়িত্বশীলদের সহীহ বুঝ দিন।আমিন।
@জামা

All reactions:
Atowar Khan, Zaman Shams and 47 others

পান করুন এক গ্লাস হলুদ জল

 হলুদ খাবারের স্বাদ এবং রঙ বাড়ালেও, এটি সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং ত্বকের সমস্যার জন্যও ব্যবহৃত হয়। এছাড়া শরীর সুস্থ রাখতেও হলুদ খুবই সহায়ক। যৌবন ধরে রাখতে প্রতিদিন পান করুন এক গ্লাস হলুদ জল। তাহলে আপনি থাকবেন নিরোগী।

সুস্থ থাকার জন্য হলুদ: হলুদে কারকিউমিন নামক রাসায়নিক থাকে যা ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং এটি শরীরের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম জলে হলুদ মিশিয়ে পান করলে তা মস্তিষ্কের জন্য খুবই ভালো।
হলুদ একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে। অনেক গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন হলুদ খেলে পিত্তরস বেশি হয়। এ কারণে খাবার সহজে হজম হয়। হলুদের জল পান করলে রক্ত জমাট বাঁধে না এবং এটি রক্ত পরিষ্কার করতেও সহায়ক।
হলুদে উপস্থিত কারকিউমিনের কারণে, এটি জয়েন্টের ব্যথা এবং ফোলা উপশমে ওষুধের চেয়ে ভাল কাজ করে। নিয়মিত হলুদ জল পান করা ফ্রি র‌্যাডিক্যালের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে, যা মুখে বয়স বেড়ে যাওয়ার ছাপ ফেলতে দেয় না, বয়স ধরে রাখে।
বায়োকেমিস্ট্রি এবং বায়োফিজিকাল রিসার্চের গবেষণা অনুসারে, হলুদের নিয়মিত সেবন গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে পারে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে পারে। শরীরকে ডিটক্স করতে, লেবু, হলুদ গুঁড়ো এবং মধু মিশিয়ে গরম জল পান করুন।
এই পানীয়টি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে খুবই সহায়ক। আবার রূপচর্চার ক্ষেত্রেও হলুদ খুব উপকারী। তবে সাবধান, হলুদ কখনওই মুখে ২০ মিনিটের বেশি লাগিয়ে রাখবেন না। মুখে হলুদ ও চন্দন বাটা লাগান। অযথা হলুদের মধ্যে বেশি উপকরণ মেশাবেন না। শুধু এটুকু চর্চাতেই ত্বক থাকেব ঝলমলে ও দূর হবে ত্বকের পোড়াভাব।
May be an image of medicine and drink

সর্দি-কাশির বিকল্প ওষুধ

 সর্দি-কাশির সমস্যা হল বারোমাসের। শীতকালে এ সবের বাড়বাড়ন্ত হয় ঠিকই, তবে সব দোষ শীতকালের নয়। অনেকেই আছেন, যাঁদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা সারা বছর ধাওয়া করে। আর শীত আসতেই একটু বেশি কাবু হয়ে পড়েন। সর্দি, কাশি, হাঁচি কিছুতেই যেতে চায় না। ওষুধ খেয়েও স্বস্তি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

সুস্থ থাকতে ওষুধের উপর ভরসা রাখার পাশাপাশি, কিছু খাবারও খেতে হবে। যেগুলি ঠান্ডা লাগার জীবাণু প্রতিহত করবে। রইল তেমন কিছু খাবারের সন্ধান।রসুন
ঠান্ডা লাগলে রসুন খেতে পারেন। রসুনে রয়েছে অ্যালিসিনের মতো অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সর্দি-কাশির জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার শক্তি জোগায়। শরীর সহজে দুর্বল হতে দেয় না। তবে রান্নায় রসুন খাওয়ার চেয়ে কাঁচা খেতে পারেন। বেশি উপকার পাবেন।
হলুদ
খালিপেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নামে পরিচিতি। ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে তো বটেই, এ ছা়ড়াও প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে, হাঁটুর ব্যথা কমাতেও হলুদের জুড়ি মেলা ভার। হঠাৎ করে ঠান্ডা লেগে গেলে হলুদ খেতে পারেন। কমে যাবে কয়েক দিনে।
দই
ঠান্ডা লাগলে দই খেতে চান না অনেকেই। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডা লাগলেও দই খেতে পারেন। কোনও সমস্যা হবে না। বরং দ্রুত সেরে ওঠা যাবে। কারণ, দইয়ে রয়েছে প্রোটিন ও ক্যালশিয়ামের মতো উপাদান। যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সেই সঙ্গে এতে হজমশক্তিও উন্নত হয়।
anandabazar
All reac

মুন্সীগঞ্জের ছেলে জগদীশ চন্দ্র বসুর প্রতিবাদ

 মার্কিন পত্রিকা হারপার্সকে ভুল স্বীকারে বাধ্য করেছিলেন জগদীশচন্দ্র

জগদীশচন্দ্র ইংল্যান্ডে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা গল্পটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে বিখ্যাত মার্কিন সাহিত্য পত্র হারপার্স ম্যাগাজিনে পাঠিয়ে ছিলেন। প্রত্যাশা ছিল পত্রিকার পাতায় লেখাটি প্রকাশিত হবে। ভারত তথা বাঙালির দুই গর্ব রবীন্দ্রনাথ ও জগদীশচন্দ্র বসু পরস্পরের শুধু মাত্র গুণমুগ্ধ নয় তাদের মধ্যে গভীর সখ্য ছিল। মার্কিন ম্যাগাজিনটি অবশ্য রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা গল্পটি ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করল না, একই সঙ্গে জগদীশ বোস কে জানিয়ে দিল "ভারতীয় লেখক সম্পর্কে মার্কিন পাঠকদের কোনও আগ্ৰহ নেই"। এই অপমান জগদীশচন্দ্র ভুলতে পারেন নি, ঘটনার রেশ থেকে গিয়েছিল প্রতিবাদী বিজ্ঞানীর মননে। শুধু তাই নয় শেষ পর্যন্ত ওই পত্রিকাকে বিজ্ঞানীর কাছে ভুল স্বীকার করতে হয়।
বেশ কিছু বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য নোবেল পেলেন ১৯১৩সালে। সারা বিশ্বের মানুষের প্রশংসা পেলেন কবি, সবাই রবীন্দ্রনাথকে আরও বিশদে জানতে চায়। কেন পিছিয়ে থাকবে তাঁর লেখা প্রকাশে প্রত্যাখান করা মার্কিন পত্রিকা হারপার্স। তারা যোগাযোগ করলেন বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর সঙ্গে। বিজ্ঞানীকে অনুরোধ করে লিখলেন রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কিছু লিখে পাঠাও।
জগদীশচন্দ্র পুরনো স্মৃতি ভুলে যাননি তিনি হারপার্স ম্যাগাজিনকে লিখলেন -একদিন তারা রবীন্দ্রনাথকে জানতে চায়নি, তাঁর অনুবাদ ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের অপমানকর চিঠিটাও তিনি সঙ্গে পাঠাচ্ছেন। আশা করেন হারপার্স সেই চিঠিটাও প্রকাশ করবে।
বলা বাহুল্য শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি জগদীশচন্দ্র হেসেছেন। রবীন্দ্রনাথের নোবেলপ্রাপ্তির পরে হারপার্স পত্রিকা জগদীশচন্দ্র বসুর কাছে তাদের ভুল স্বীকার করে। শুধু তাই নয়, ১৩বছর পরে পত্রিকায় জগদীশচন্দ্র বসুকে প্রত্যাখ্যানের অপমানকর চিঠিটাও ছাপতে বাধ্য হয়।
সংকলনেঃ অরুণাভ সেন।
পুস্তক ঋণ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার, হাসিকান্না হীরাপান্না, চণ্ডী লাহিড়ী
May be an image of 2 people
All reac

অপছন্দেও যে কল্যাণ থাকতে পারে আমরা কি সত্যই জানি?

 না দেখেই বিয়ে, বাসরঘরে গিয়ে যা দেখলেন যুবক!

যুবতীর গুণের প্রশংসা শুনে তার প্রতি মুগ্ধ হয়ে না দেখেই বিয়ে করেন এক যুবক। স্ত্রীকে বাসরঘরে গিয়েই প্রথম দেখেন। কিন্তু স্ত্রীর ঘোমটা খুলতেই তিনি মনোবেদনায় বিষণ্ণ হয়ে পড়েন। দেখেন, তার পরম কাঙ্খিত স্ত্রী রূপসী নয়, কালো।
তাই তিনি স্ত্রীর কক্ষ ত্যাগ করেন। মনের দুঃখে স্ত্রীর কাছে আর ফিরে আসেন না। নাম তার আমের বিন আনাস। অবশেষে স্ত্রী নিজেই তার কাছে যান। প্রিয় স্বামীকে বলেন, ‘ওগো! তুমি যা অপছন্দ করছো, হয়তো তাতেই তোমার কল্যাণ নিহিত আছে, এসো।’ অতঃপর আমের স্ত্রীর কাছে যান এবং বাসর রাতযাপন করেন।
কিন্তু দিনের বেলা স্ত্রীর অসুন্দর চেহারার প্রতি তাকাতেই তার মন খারাপ হয়ে যায় আবার। মনের দুঃখে আমের এবার বাড়ি ছেড়ে দেন। চলে যান বহুদূরে, অন্য শহরে। এদিকে বাসর রাতেই যে তার স্ত্রী গর্ভধারণ করেছেন, এ খবর তিনি রাখেন না। আমের ভিনদেশে লাগাতার বিশটি বছর কাটান।
বিশ বছর পর তিনি নিজ শহরে ফেরেন। এসেই প্রথমে নিজ বাড়ির কাছের সেই প্রিয় মসজিদে ঢোকেন। ঢুকেই দেখেন এক সুদর্শন যুবক পবিত্র কোরআনের মর্মস্পর্শী দরস পেশ করছেন। আর বিশাল মসজিদ ভরা মানুষ পরম আকর্ষণে তা হৃদয়ে গেঁথে নিচ্ছে। তাঁর হৃদয়গ্রাহী দরস শুনে আমেরের অন্তর বিগলিত হয়ে যায়। আমের লোকদের কাছে এই গুণী মুফাসসিরের নাম জানতে চাইলে লোকেরা বলেন, ‘ইনি ইমাম মালেক।’
আমের আবার জানতে চান, ‘ইনি কার ছেলে?’ লোকেরা বললো, ‘এই এলাকারই আমের বিন আনাস নামের এক ব্যক্তির ছেলে। যিনি বিশ বছর আগে বাড়ি থেকে চলে গেছেন, আর ফিরে আসেননি।’ আবেগে উত্তাল আমের ইমাম মালেকের কাছে এসে বললেন, ‘আমাকে আপনার বাড়িতে নিয়ে চলুন। তবে আমি আপনার মায়ের অনুমতি ছাড়া আপনার ঘরে প্রবেশ করবো না। আমি আপনার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবো।
আপনি ভেতরে গিয়ে আপনার মাকে বলবেন, দরজায় একজন লোক দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি আমায় বলেছিলেন, তুমি যা অপছন্দ করছো, হয়তো তাতেই তোমার কল্যাণ নিহিত আছে।’ এ কথা শুনেই ইমাম মালেকের মা বললেন, ‘হে মালেক! দৌড়ে যাও, সম্মানের সঙ্গে তাঁকে ভেতরে নিয়ে আসো, উনিই তোমার বাবা। দীর্ঘদিন দূরদেশে থাকার পর উনি ফিরে এসেছেন।’
May be an image of mosquito net, flower and dais
All reaction