Saturday, January 27, 2024

মুমিনের যেমন আমল আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়

 একজন মুমিন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে আমৃত্যু ইবাদত ও আমলের মধ্যে জীবন পার করবে, এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং মুমিনের জন্য করণীয় হলো ইবাদতে বিরক্ত না হওয়া। ইবাদতে বিরক্ত না হওয়ার অর্থ হচ্ছে, ইবাদতে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। কারণ সামর্থ্যের অতিরিক্ত আমল করা শুরু করলে কয়েক দিন পর সেটাতে বিরক্তি চলে আসবে।

তাই ইবাদতে মধ্যপন্থা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়। নবী করিম (সা.) বলেন, হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করতে থাকো। কারণ আল্লাহ (সওয়াব দানে) ক্লান্তি বোধ করেন না, যতক্ষণ না তোমরা (আমল সম্পাদনে) ক্লান্ত হয়ে পড়ো। আর আল্লাহর কাছে ওই আমল সবচেয়ে প্রিয়, যা অল্প হলেও নিয়মিত করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ৫৮৬১)
ইবাদতে বিরক্ত হওয়ার অর্থ হচ্ছে আমল সম্পাদনে শৈথিল্য অনুভূত হওয়া। সামর্থ্যের বেশি অনুশীলনের কারণে এটা ঘটে। কখনো কখনো কারো কারো ক্ষেত্রে এটা হয়; যেমন—কেউ যদি ইবাদতে অবসর নেওয়ার জন্য তাহাজ্জুদ শুরু করতে চায় এবং প্রথম পর্যায়েই দু-তিন ঘণ্টার কিয়ামুল লাইলে কঠোরভাবে আত্মনিয়োগ করে, তাহলে দেখা যাবে যে কয়েক দিন পর তার উদ্যমে ভাটা পড়বে এবং সে তাহাজ্জুদ ছেড়ে দেবে। সে জন্য মধ্যপন্থা অবলম্বন করে সামর্থ্য অনুযায়ী ইবাদতে প্রবৃত্ত হওয়া উচিত, যেন সেটা নিয়মিত সম্পাদন করা যায়, বিরক্তি না আসে এবং আগ্রহে ভাটা না পড়ে।
অনেক সময় পাপের কারণে ইবাদতে বিরক্তি চলে আসে। সে জন্য ইবাদতে বিরক্তি আসার কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি ঈমানি শক্তি ও শারীরিক সক্ষমতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে। কারো জন্য হয়তো তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হওয়া সহজ, আবার কারো জন্য সিয়াম পালন করা সহজ। আবার কেউ সব ক্ষেত্রেই সমানভাবে ইবাদত করতে সক্ষম; যেমন—আবু বকর (রা.) সব ইবাদতে সমানভাবে তৎপর ছিলেন।
অন্যদিকে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) শারীরিক দুর্বলতার কারণে সিয়াম কম রেখে তাহাজ্জুদ ও কোরআন তিলাওয়াতে বেশি সময় ব্যয় করতেন। এ ক্ষেত্রে নিজের সময়, শরীর ও সক্ষমতার আলোকে ভারসাম্য বজায় রেখে ইবাদত করতে হবে। তবে ফরজ ইবাদতে কোনো শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না।
তাই কেউ যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ ফরজ ইবাদতগুলোতে বিরক্তি অনুভব করে, কোরআন তিলাওয়াতে ক্লান্তি বোধ করে, তাহলে বুঝে নিতে হবে, বেশি পাপের কারণে তার হৃদয় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে, যার আশু চিকিৎসা করা প্রয়োজন। আর অন্তরের রোগব্যাধির প্রধান প্রতিষেধক হলো তাওবা-ইস্তিগফার ও কোরআন অনুধাবন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমরা কোরআন নাজিল করি, যা মুমিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমতস্বরূপ।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮২)
মহান আল্লাহ আমাদের আমলময় ও কল্যাণময় জীবন দান করুন।
May be an image of text that says "জিকির HIDDEN HAYA বলেছেন: রাসূলুল্লাহ শয়তান আদম সন্তানের কলবের বা অন্তরের উপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহর জিকির করে তখন সরে যায় আর যখন গাফিল বা অমনোযোগী হয় তখন শয়তান তার দিলে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে। গ্রন্থ: মিশকাতুল মাসাবীহ হাদিস নম্বর: ২২৮১"
All reactions:
Atowar Khan

No comments:

Post a Comment