Saturday, January 27, 2024

যে সাত অবস্থায় শরিয়তের বিধানে শিথিলতা রয়েছে

 প্রয়োজনবোধে ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামের বিধান কখনো সহজ, কখনো কঠিন করা হয়েছে। ফিকহবিদদের মতে, সাতটি ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান সহজ করা হয়েছে। যেমন—

১. সফর : ইসলামের দৃষ্টিতে বিধানের শিথিলতাযোগ্য সফর হলো তিন দিন ও তিন রাত্রের পথ বা ৪৮ মাইল দূরের পথ। কেউ যদি এই পরিমাণ দূরে যাওযার নিয়তে বাড়ি থেকে বের হয়, তাহলে সে মুসাফির হবে। তার জন্য শরিয়ত কিছু বিধান শিথিল করেছে। যেমন—কসর তথা চার রাকাত ফরজের ক্ষেত্রে দুই রাকাত পড়া, রমজান মাসের রোজা ভঙ্গ করা, এক দিন এক রাতের বেশি সময় ধরে মোজা মাসেহ করা, কোরবানি রহিত হওয়া ইত্যাদি।
২. অসুস্থতা : অসুস্থতার ফলে জীবনের প্রতি আশঙ্কা বোধ হলে অথবা কোনো অঙ্গ ক্ষতি হওয়ার বা অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার কিংবা বিলম্বে সুস্থ হওয়ার ভয় হলে তখন তায়াম্মুম করা বৈধ। অনুরূপ অসুস্থতার কারণে জামায়াত বর্জন করা জায়েজ। অতিবৃদ্ধের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদিয়া প্রদান করা জায়েজ।
৩. বাধ্য হওয়া : কেউ যদি বাধ্য হয়ে মুখে কুফরি বাক্য উচ্চারণ করে, কিন্তু অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে, তাহলে কুফরি বাক্য উচ্চারণের কারণে সে কাফির হবে না।
৪. ভুলে যাওয়া : কেউ যদি রোজা রেখে ভুলক্রমে পানাহার করে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হবে না।
৫. অজ্ঞতা : যে ব্যক্তি অজ্ঞ তথা যার ইসলামের ব্যাপারে জ্ঞান নেই, তার জন্য শরিয়তের অনেক বিধি-বিধান শিথিল করা হয়েছে।
৬. অক্ষমতা ও কষ্টকর অবস্থা : অক্ষম ও কষ্টকর অবস্থায় শরিয়তের বিধান শিথিল করা হয়েছে। যেমন—অপবিত্র জামা নিয়ে নামাজ আদায় করা। যদি পবিত্র জামা না থাকে এবং জামার এক-চতুর্থাংশের কম নাপাকি থাকে অথবা এক দিরহাম পরিমাণ নাজাসাতে গলিজা (পেশাব, পায়খানা ইত্যাদি) থাকে তাহলে ওই জামা নিয়ে নামাজ পড়া জায়েজ।
৭. স্বাস্থ্যগত ত্রুটি : কারো স্বাস্থ্যগত ক্ষেত্রে ত্রুটি থাকলে তার ওপর ইসলামের বিধান আরোপিত হয় না। যেমন—নাবালেগ, মাতাল প্রমুখের ওপর ইসলামের বিধান আরোপিত হয় না।
মহানবী (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তি দায়মুক্ত, তাদের কোনো কোনো পাপ লেখা হয় না—ক. ঘুমন্ত ব্যক্তি—জাগ্রত হওয়ার আগ পর্যন্ত, খ.মাতাল—সুস্থ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এবং গ. শিশু—প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৪৩

No comments:

Post a Comment