আল্লাহর ঘর মসজিদের কিছু আদব ও শিষ্টাচার রয়েছে। যেমন—
১. পরিপাটি হয়ে যাওয়া : মসজিদে পরিপাটি হয়ে উত্তম পোশাক পরিধান করে যাওয়া মুস্তাহাব। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে বনি আদম! প্রত্যেক নামাজের সময় তোমরা সুন্দর পোশাক পরিধান করো।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)
২. হেঁটে মসজিদে যাওয়া : সুযোগ থাকলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের বলব না, আল্লাহ তাআলা কী দিয়ে গুনাহ মুছে দেন এবং মর্যাদা বাড়িয়ে দেন? সাহাবারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! হ্যাঁ (বলে দিন)। তিনি বললেন, কষ্ট থাকার পরও ভালোভাবে অজু করা, মসজিদের দিকে বেশি কদম ফেলে যাওয়া এবং এক নামাজ শেষ করে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। আর এটাই হলো ‘রিবাত’ (প্রস্তুতি)। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৫১)
৩. ধীরস্থিরতার সঙ্গে মসজিদে যাওয়া : মসজিদে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে যাওয়া। তাড়াহুড়া না করা। নবীজি (সা.) বলেছেন, যখন সালাত শুরু হয়, তখন দৌড়ে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে না, বরং হেঁঁটে গিয়ে নামাজে যোগদান করবে। সালাতে ধীরস্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামাতের সঙ্গে সালাত যতটুকু পাবে আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় পরে তা পূর্ণ করে নেবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯০৮)
৪. প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দোয়া পড়া : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন এই দোয়া পড়ে—উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাফতাহলি আবওয়াবা রহমাতিক, অর্থ : হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করুন। তিনি আরো বলেন, আর (যখন কেউ) মসজিদ থেকে বের হয় সে যেন পাঠ করে—উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিক, অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৫২)
৫. দুই রাকাত নামাজ পড়া : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন দুই রাকাত নামাজ পড়ার পর বসে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭১৪)
৬. দুনিয়াবি কাজে লিপ্ত না থাকা : মসজিদে আসার পর ইবাদত-বন্দেগিকে প্রাধান্য দেবে এবং জাগতিক কাজ পরিহার করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা মসজিদে কাউকে ক্রয় বা বিক্রয় করতে দেখবে, তখন বলবে, আল্লাহ তোমার ব্যবসাকে লাভজনক না করুক।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৩২১)
৭. কণ্ঠ উঁচু না করা : মসজিদে আওয়াজ উঁচু করা শিষ্টাচারবহির্ভূত। কেননা হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় সাহাবিদের উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পড়তে শুনে পর্দা সরিয়ে বললেন, জেনে রেখো! তোমাদের প্রত্যেকেই স্বীয় রবের সঙ্গে চুপিসারে আলাপে রত আছ। কাজেই তোমরা পরস্পরকে কষ্ট দিয়ো না এবং পরস্পরের সামনে কিরাতে বা নামাজে আওয়াজ উঁচু কোরো না। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৩৩২)
আল্লাহ সবাইকে মসজিদের শিষ্টাচার রক্ষার তাওফিক দিন। আমিন।
No comments:
Post a Comment