বকেয়া দায় মিটিয়ে ফেলো, যত দ্রুত পারো!
ছেলেটা শসা বিক্রি করছিল বাসের বাইরে থেকে। এক যাত্রী শসা নিলেন। টাকাও দিলেন। তবে বিশ টাকার নোট। ঠিক তখনই বাস ছেড়ে দিল। ছেলেটা বাকি দশটাকা যাত্রীকে ফেরত দিতে পারলো না।
এদিকে সে যাত্রীও সিট থেকে উঠে দাঁড়ালো জানালার ফাঁক দিয়ে টাকাটা ফেরত নেয়ার জন্য। কিন্তু বাসের স্পিড অনেক। লোকটা বললও- এই ছেলে, যাহ টাকা ফেরত দেয়া লাগবে না। চকলেট খেয়ে নিস।
কিন্তু শিক্ষার স্থায়িত্ব, মানবিক বিবেক আর ব্যক্তিত্বের স্থায়ীত্ব ছেলেটার এতই বেশি যে- সে তার মাথা থেকে শসার ডালা এক দোকানে রেখেই জানপ্রাণ ছেড়ে দৌড়াতে লাগলো বাসের পেছনে। তাকে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। শসা ক্রেতা সে যাত্রী বার বার বলছে- আহা রে থাম থাম। আসিস না। ফেরত দেয়া লাগবে না টাকা।
কিন্তু কে শোনে কার কথা! ছেলেটা অবিরাম দৌড়িয়েই যাচ্ছে। একে তে প্রচণ্ড গরম। তারওপর সে দৌড়াচ্ছে। বাস প্রায় আধা কিলোমিটারের মতো চলে এসেছে। এক পর্যায়ের বাসের যাত্রীরা ড্রাইভারকে বললেন, ড্রাইভার সাব দ্রুত বাস থামান। বাস থামলো। ছেলেটে এক লাফে বাসে উঠে সে যাত্রীর কাছে গিয়ে দশটাকা ফেরত দিল।
সবাই বিস্মিত। কী হলো এটা? সে যাত্রীও একটু বিরক্ত হলেন। বললেন, কতবার বললাম, টাকা ফেরত দেয়া লাগবে না। শুনলি না কেন!
ছেলেটা রীতিমতো হাফাচ্ছিল। দম নিয়ে বলল- নাহ স্যার! লাগবে না। আমি বাড়তি নেব না।
অন্য যাত্রীরা তার এই কাজে দারুণ মুগ্ধ হলো, অবাকতো হয়েছেই। এক যাত্রী তার ব্যাগ থেকে জুসের বোতল বের করে ছেলেটাকে দিয়ে বলল- প্লিজ একটু খা। ছেলেটা অল্প একটু মুখে দিল।
তার শরীরে ক্লান্তি, কিন্তু চোখেমুখে প্রশান্তি। যেন সে দীর্ঘদিনের একটা দায় মিটিয়ে ফেলল। বাস তাকে নামিয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে আগাতে থাকলো। ছেলেটা ধীর পায়ে তার রেখে আসা শসার ডালার দিকে এগিয়ে যেতে পা বাড়ালো।
ধার: অজান্তা
No comments:
Post a Comment