খিয়ানত বা কোন কিছুর অপব্যবহার বা ক্ষতি সাধন করা বিশেষভাবে ক্ষতিকর একটি অভ্যাস। ইসলাম সব সময় খিয়ানত নিরুতসাহিত করে। আল কুরআনের অনেক জায়গায় খিয়ানত না করার জন্য আল্লাহ বান্দাহকে সতর্ক করে দিয়েছেন। আল্লাহ মানব শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের খিয়ানত সম্পর্কে বিশেষভাবে জানেন এবং সেগুলোর হিসাব তিনি নেবেন বলে আল কুরআনের মাধ্যমে জানিয়েছেন। তাই আমরা যদি পরিপূর্ণ মুসলিম বা সমর্পিত বান্দাহ হতে চাই, তাহলে খিয়ানত সম্পরকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকি।
ইসলামের দৃষ্টিতে খিয়ানত একটি বিস্তৃত বিষয়। বস্তুগত সহায়-সম্পদ আত্মসাত থেকে মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করা পর্যন্ত খিয়ানতের অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বাস ভঙ্গ বা খেয়ানত করা ইসলামের দৃষ্টিতে কবিরা গুনাহ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ঈমানদাররা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে খিয়ানত কোরো না এবং জেনে শুনে নিজেদের পারস্পরিক আমানতের খিয়ানত কোরো না।’ (সুরা: আনফাল, আয়াত:২৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নাই, তার ঈমান নাই, আর যে প্রতিজ্ঞা পূরণ করে না তার ধর্ম নাই।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১১৯৩৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চারটি দোষ যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে হবে প্রকৃত মুনাফিক। আর যার মধ্যে এর একটি পাওয়া যাবে তার মধ্যে নিফাকের একটি দোষ পাওয়া গেল, যতক্ষণ না সে ওই দোষ বর্জন করবে—
১. যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় সে খিয়ানত করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩)
খিয়ানতকারীর সাথেও খিয়ানত করা যাবে না: আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত। রাসূল সা: বলেছেন, যে তোমার সাথে আমানত রেখেছে তার আমানত আদায় করে দাও। যে তোমার সাথে খিয়ানত করেছে তার সাথেও খিয়ানত করো না। (তিরমিজি ও আবু দাউদ) ‘কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ তায়ালা জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে কল্যাণকামিতার সাথে তাদের তত্ত্বাবধান না করে তাহলে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (বুখারি : ৬৭৩১ ও মুসলিম) ‘যদি কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনগণের দায়িত্ব লাভ করল এবং তার মৃত্যু হলো এ অবস্থায় যে, সে ছিল খিয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ‘তায়ালা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (বুখারি: ৬৭৩২)
No comments:
Post a Comment