Saturday, January 25, 2025

‘গুড ফ্যাট’ আর ‘ব্যাড ফ্যাট’

 সুষম খাবারের একটা অন্যতম উপাদান হচ্ছে চর্বি বা ফ্যাট। ফ্যাটযুক্ত খাবার মানেই খারাপ নয়; কিন্তু ফ্যাট বাছাই করতে শিখতে হবে। জানতে হবে কোনটা ‘গুড ফ্যাট’ আর কোনটা ‘ব্যাড ফ্যাট’। যেমন মোনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড(fat molecules with one unsaturated carbon bond) ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড(fat that contains more than one unsaturated carbon bond) হলো গুড ফ্যাট।

অন্যদিকে স্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলো( fats are typically solid at room temperature) ব্যাড ফ্যাট। কারণ, সম্পৃক্ত চর্বি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের রক্ত, যকৃৎ, মস্তিষ্ক, ত্বকের নিচে ও শরীরের অন্য অংশে জমে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। গুড ফ্যাট শরীরের ব্যাড ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে, হার্টের সুরক্ষা দেয়।
গুড ফ্যাট
অলিভ অয়েলের প্রায় ৮৫ শতাংশ গুড ফ্যাট। এর মধ্যে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (অলিক অ্যাসিড) ৮০ শতাংশ ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (লিনোলেয়িক অ্যাসিড) ১৫ শতাংশ।
সূর্যমুখী তেলে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম। এখানে অলিক অ্যাসিড অপেক্ষা লিনোলেয়িক অ্যাসিড কিছুটা বেশি থাকে, তবে তা অলিভ অয়েল অপেক্ষা কম।
তিসির তেলে পর্যাপ্ত ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এ তেলে
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি–অক্সিড্যান্টের বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
চিনাবাদাম তেলে অলিক অ্যাসিডসহ ৫০ শতাংশের বেশি মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এটি ভিটামিন ই-এর ভালো উৎস। তবে বেশি পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট অক্সিডেশনের ঝুঁকিপূর্ণ।
মাছের তেলে উপকারী ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ডিমে প্রোটিনের পাশাপাশি ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়।
অ্যাভোকাডো গাছের ফল থেকে অ্যাভোকাডো তেল পাওয়া যায়। এ তেলকে জলপাই তেলের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এটি মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ।
ব্যাড ফ্যাট
যেসব তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে, সেসব ব্যাড ফ্যাট। এসব তেল বেশি খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, ভিএলডিএল বাড়তে পারে এবং উপকারী চর্বি এইচডিএল কমতে পারে।
সয়াবিন তেলে গুড ফ্যাটের চেয়ে ব্যাড ফ্যাট বেশি। উচ্চ তাপমাত্রা সয়াবিন তেলে ট্রান্সফ্যাট ও ক্ষতিকর অ্যাক্রিলামাইড তৈরি করে।
নারিকেল তেলেও প্রায় ৯০ শতাংশ অসম্পৃক্ত ফ্যাট থাকে। তবে এখানে ভিটামিন ই এবং প্রতিরক্ষামূলক ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসহ উচ্চ মাত্রার অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট পাওয়া যায়। এ তেল না খাওয়াই উত্তম।
বাটার, ঘি, গরু-খাসির চর্বি, হাঁস-মুরগির চামড়া, মার্জারিন, রিফাইন পাম অয়েল, ডালডা ব্যাড ফ্যাটের অন্তর্ভুক্ত। এগুলোতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট অনেক বেশি থাকে।
ফ্যাট বা চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার সময় সচেতন থাকতে হবে। বাদ দিতে হবে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্সফ্যাট। তেল যেটাই ব্যবহার করেন, পরিমিত গ্রহণ করতে হবে।
রেফারেন্সঃ মো. ইকবাল হোসেন: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা,চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

No comments:

Post a Comment