Wednesday, May 2, 2018

বিছানায় গমন (প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি) -ইসলাম কি বলে?


১. প্রত্যেক মুসলমানকে অবশ্যই বিছানায় আশ্রয় নেয়ার আগে ইস্তিঞ্জা করতে তথা মূল মূত্র ত্যাগ করতে হবে।
২. অজু করার মাধ্যমে পবিত্র অবস্থায় বিছানায় গমন আবশ্যক।
৩. ভরপেটে শুতে না যাওয়া স্বাস্থ্য বিধিসম্মত।

কখন ঘুমাতে হবে, -ইসলাম কি বলে?

১. এশার নামাজ পড়ার আগে শুতে যাওয়া ঠিক নয়, কারণ এর ফলে নামাজ কাজা হতে পারে।

২. দিনে যখন নামাজের সময় শুরু হয়, সেই সময় ঘুমানো যাবেনা নামাজ পড়া ছাড়া। এসময় ঘুমিয়ে পড়লে নামাজ তরক হতে পারে।
৩. জোহর, আসর নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে অল্পক্ষণ আরাম করা বা ঘুমানো যেতে পারে। এর ফলে চোখ ও শরীর আরাম লাভ করে এবং দিবসের বাকী কাজ সম্পাদনের জন্য তা দেহে সজীবতা এনে দেয়।
৪. প্রয়োজনীয় কাজ করে অথবা কোন অতিথিকে আপ্যায়ণ করে এশার নামাজের পর পরই মুসলমানদের ঘুমিয়ে পড়া উচিত। এভাবে তারা সজীবতা লাভ করতে পারে এবং দিনটি পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারে।

বিছানা, -ইসলাম কি বলে?

১. সাধারণ ডিজাইন ও নির্মাণের মাধ্যমে বিছানা তৈরি করতে হবে। এটা খুব বেশি আরাম দায়ক অথবা অস্বস্তিকর হওয়ার প্রয়োজন নেই। আলস্য বা পরিশ্রমবিমুখতাকে প্রশ্রয় না দিয়ে প্রয়োজনীয় আরামের উপযোগী আরামদায়ক হলেই হয়।
২. বিছানাটি মেঝে থেকে খুব ‍উঁচুতে হওয়া উচিত নয়- বিশেষভাবে লক্ষ্যে এটা করা উচিত।
৩.বিছানা এমন স্থানে স্থাপন করা উচিত নয়, যাতে শরীরের একাংশ রোদে এবং অপরাংশ ছায়ায় পড়ে।
৪. নিরাপত্তার জন্য যে সব ছাদে প্রতিরক্ষা প্রাচীর নেই, সে সব স্থানে শয়ন চলবেনা। তেমনিভাবে যেসব নির্জন স্থানে হঠাত অসুস্থতা, অনুপ্রবেশকারীদের হামলা অথবা অগ্নিকাণ্ডের ন্যায় জরুরি অবস্থার সাহায্য-সহায়তা পাওয়া যায় না- এসব স্থানে শয়ন করা উচিত নয়।
৫. পল্লী এলাকার মত অনেক স্থান নিকটবর্তী কোন বাথরুম না থাকলে বিছানার নীচে উপযুক্ত পাত্রে পানি রাখা প্রয়োজন। অসুস্থ, ‍বৃদ্ধ এবং যারা দরজার বাইরে ঘুমান তাদের জন্য এটা বেশ প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।

ঘুমাতে যাবার আগে, -ইসলাম কি বলে?

প্রত্যেক মুসলমানকে নিম্নোক্ত বিধি মানতে হবেঃ

১. লেপ-তোশক-বালিশ ঝেড়ে দেখতে হবে তার নীচে কোন ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ লুকিয়ে আছে কিনা।
২. নিম্নোক্ত দোয়া পড়তে হবেঃ বিইসমিকা আল্লাহুম্মা আহইয়া ওয়া বিইসমিকা আমুতু (হে আল্লাহ, তোমার নামেই আমি বেঁচে আছি ও মৃত্যুবরণ করব)।
৩. ডান দিকে পাশ করে শোয়া।
৪. উপুড় হয়ে না শোয়া।
৫. জোর করে ঘুমাবার চেষ্টা না করা। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী স্বাভাবিক নিয়মেই ঘুম এসে যাবে।
৬. আল্লাহর নাম নিয়ে শুতে হবে এবং ঘুম না আসা পর্যন্ত তাঁর নাম নিতে হবে। এর ফলে শরীরে শিথিল ভাব আসবে এবং দিনের সমস্যা ও জটিলতার চিন্তা দূর হবে।
৭. শরীরে প্রকৃত চাহিদা অনুসারে (কম বা বেশি নয়) নিজের ঘুম নিয়ন্ত্রণ করা।

ঘুম থেকে জাগা, -ইসলাম কি বলে?

১. ভোরে ঘুম থেকে জাগতে হবে। এর ফলে সারা দিনের কাজের উপর ইতিবাচক মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া সুস্পষ্ট হয় এবং যারা একাজ করেন তাদের কাছে এটা অনুধাবন সহজ।
২. আগের দিনের ন্যায় দিনে আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করতে হবে এবং তার শোকরা আদায় করতে হবে।
৩. ফজরের নামাজের জন্য অজু করার আগে টুথব্রাশ বা মেছওয়াক দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। রাতের বেলা দীর্ঘ সময়ের জন্য জাগলে এরূপ করা ‍উচিত।
৪. যদি কোন প্রবাহমান পানি না পাওয়া যায়, তাহলে ঘুম থেকে জেগে প্রথমে নিজের হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। পাত্রে সংরক্ষিত পানির হাত ডুবানোর আগেই তা করতে হবে। এর কারণ ঘুমন্ত ব্যক্তি জানেনা রাতে তার হাত কি স্পর্শ করেছিল।
সূত্রঃ ড. মারওয়ান ইব্‌রাহিম আল কায়সি

No comments:

Post a Comment