Thursday, October 11, 2018

গল্পটি হয়তো তোমাদের পছন্দ হবে

একটি কল পেয়েই ডাক্তার সার্জন খুব দ্রুত হাসপাতালে এলেন। উনি কলটি যতদূর সম্ভব দ্রুত অ্যাটেন্ড করেছেন। এর পর তিনি কাপড় বদলে অপারেশন থিয়েটারে চলে গেলেন।
ডাক্তার লক্ষ্য করলেন অসুস্থ ছেলেটির বাবা অস্বস্তি নিয়ে পায়চারী করছেন আর ডাক্তারের দিকে চোখ পড়তেই একবারে রেগে গেলেন। বল্লেন, আপনি এতটা সময় পরে কেন এলেন? আপনি কি জানেন না যে আমার ছেলের অবস্থা আশংকাজনক? আপনার কি দায়িত্বজ্ঞান বলতে কিছু নেই?
ডাক্তার কিছুই না বলে শুধু একটু হাসলেন। এর পর বল্লেন, আমি হাসপাতালে ছিলাম না। একটু দূরেই ছিলাম। আর আমার অফিস থেকে খবর পেয়েই যত দ্রুত সম্ভব চলে এলাম। আমি চাই আপনি এবার শান্ত হবেন আর আমাকে কাজ করতে দেবেন।
কিন্তু ছেলেটির বাবা শান্ত তো হলেনই না বরং তার মেজাজ আরো বিগড়ে গেল। এবার তিনি বেশ চড়া গলায় বল্লেন, কি করে বুঝবেন যে আমার জায়গায় যদি আপনার ছেলের ছেলে অসুস্থ থাকতো আর তার অবস্থা যদি আশংকাজনক হতো? আপানার ছেলে যদি মরতে বসতো তাহলে কি হতো আপনার মনে?
ডাক্তার আবারো ছেলেটির বাবাকে শান্ত হতে বল্লেন। বল্লেন, পড়েনি কোরআনে আল্লাহ বলেন, তোমাকে এই মাটি থেকে তৈরী করা হয়েছে, আবার মাটিতেই ফিরে যেতে হবে আবার মাটি খেকেই তোমাকে তোলা হবে?
ডাক্তারতো আপনার ছেলের আয়ূ বাড়াতে পারবে না। দয়া করে ছেলের কাছে যান আর সেখানে গিয়ে তাকে শান্তনা দিন। আমার পক্ষে যতদূর করা সম্ভব তা অবশ্যই করবো।
হ্যাঁ, হ্যাঁ- জানি, উপদেশ দেয়া খুবই সোজা, ছেলেটির বাবা বিড় বিড় করতে লাগলো।
সার্জারীতে বেশ ভালই সময় লাগলো। আর দেখা গেল সার্জন সাহেব খুব খুশী মনে অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে আসছেন। ছেলেটির বাবাকে বল্লেন, আলামদুলিল্লাহ, আপনার ছেলের অপারেশন ভালো হয়েছে। ও আশংকামূক্ত। আশা করি ও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
ছেলের বাবার কোন প্রতি উত্তর না শুনেই বেরিয়ে গেলেন। তিনি বল্লেন, কোন কিছু শোনার বা জানার থাকলে কর্তব্যরত নার্সকে জিজ্ঞাসা করুন।
তাকে এতটা উদ্বিগ্ন কেন মনে হলো? আমাকে তো আর কিছুই কেন বল্লেন না? ছেলেটির বাবা জিজ্ঞাসা করলো নার্সকে।
নার্স এবার বল্লেন। বলবার সময় তার দু গাল বেয়ে চোখের পানি পড়ছিল। ভাই সাহেব, গতকাল এক সড়ক দুর্ঘটনায় সার্জন সাহেবের ছেলে মারা গেছেন। উনি তার ছেলের জানাযার নামাযের প্রস্তুতিতে ছিলেন আর এসময় আমি তাকে আপনার ছেলের আশংকাজনক অবস্থার কথা জানাই। আর উনি খুবই দ্রুত এসে সার্জারিতে অংশ নিয়ে আল্লাহর ইচ্ছায় আপনার ছেলেকে সুস্থ করিয়ে তোলার দায়িত্ব নেন। এবার তিনি তার ছেলের জানাযায় অংশ নেয়ার জন্য চলে গেছেন।
উপদেশ:
কখনো কোন কিছু দিয়ে, কোন কাজ দিয়ে আর এক জনকে বিচার করতে যাবে না। কারণ, আপনি জানেন না যে কার মনের অবস্থা কি, তার জীবনের অবস্থাই বা কি!

No comments:

Post a Comment