PHILOSOPHY শব্দটাকে
ভাংলে ১০টি বর্ণমালা বের হয়। এর এক একটি বিষয় নিয়ে “Living a
Happy Life”
বিষয়ে অনেক কথা বলা যায় যা সূখী জীবনের জন্য খুবই দরকারী। সে দরকারী কথাগুলো হলোঃ চলুন
আমরা PHILOSOPHY শব্দটাকে ভেঙে টুকরো টুকরো করি, দেখি কি পাওয়া যায়ঃ
P=Present Moment=বর্তমান সময়ঃ
অতীতের দীর্ঘশ্বাস আর
ভবিষ্যতের আশ্বাস বাস্তব জীবনে কোনটাই কাজে আসে না। বর্তমানটাই জীবন্ত। তাই বর্তমানটাকে ভাল কাজে লাগান। মনে রাখবেন
গতকাল হলো ইতিহাস, আগামীকাল হলো রহস্যাবৃত আর আজ হলো দীপ্তিময় আশীর্বাদ। গতকাল হলো
ব্যাংকের একটি বাতিল চেক, আগামীকাল হলো ব্যাংকের একটি প্রতিজ্ঞাপত্র বা প্রমিসরী নোট
আর আজ হলো রেডী ক্যাশ-একে ব্যবহার করো সার্থকভাবে।
H=Health=স্বাস্থ্যঃ
WHO’র ভাষায় Health
is a state of complete physical, mental and social well-being and not merely
the absence of disease or infirmity.
স্বাস্থ্য হলো একজন মানুষের শারীরিক, মানষিক এবং সামাজিক সুখের
সামগ্রিক বাস্তব অবস্থা। স্বাস্থ্য কেবল “আমার কোন অসুখ নেই বা আমি ভগ্ন
স্বাস্থ্যের অধিকারী নই” -এমন কিছুই বুঝায় না।
আবার হিরোফিলাস নামের গ্রীক দার্শনিক বল্লেন, “When
health is absent, wisdom cannot reveal itself, art cannot manifest, strength
cannot fight, wealth becomes useless, and intelligence cannot be applied.”
যখন আমাদের স্বাস্থ্য ভাল থাকে না তখনঃ
১. আমাদের প্রজ্ঞা খোলে না
২. আমরা আমাদের আঁকা চিত্রকলাগুলোকে বিমূর্ত
করতে পারি না
৩. আমার বল-শক্তিকে কোথাও প্রয়োগ করে
দেখাতে পারি না
৪. আমাদের সম্পদগুলোও ব্যবহার করতে পারি
না সেগুলোকে অর্থহীন মনে হয়
৫. আমরা আমাদের বুদ্ধি-বিবেচনাকে কোথাও
ব্যবহার করতে পারি না।
I= Ignite the Happiness= সূখ জাগিয়ে তুলুন, জ্বলে
উঠুন আপন শক্তিতে
অন্যের ভেতর সুখ জাগিয়ে তুলুন। কোন সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে অন্যকে
সুখী করতে তুলতে পারলে যে আনন্দ পাওয়া যায় তা অপার। নিঃস্বার্থভাবে নিজের গাঁটের
টাকা খরচ করে হলেও অন্যের ভেতর সুখের ঢেউ বা ঊর্মি তুলুন -দেখবেন ভাল লাগবে।
L= Love Unconditionally=নিঃস্বার্থ
ভালবাসুন
মানুষকে ভালবাসুন। না। দু’তরফা নয়, একতরফা
ভালবাসুন- মানে কারো কাছ থেকে ভালবাসা আদায় করবার জন্য ভালবাসা নয়। কিন্তু মনে
রাখতে হবে যে ভালবাসতে হলে অবশ্যেই সত (অনেষ্ট) থাকতে হবে। সত্য বলতে হবে। সত্য
বলবার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা যে আপনাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হবে না। যাকে
ভালবাসবেন বা ভালবেসেছেন- আপনার সযত্ন, ভদ্র ও সোজাসাপ্টা তথা সুষম ব্যবহারের
মাধ্যমে তার মনে স্থায়ী ও স্থির বিশ্বাস আনুন।
O= Open to Learning= শেখার বাতায়ন খোলা রাখুন
জ্ঞানী মানুষেরা সারা জীবনব্যাপী শেখে। এটাই তাদের সাফল্য আর সুখের
চাবি। শিক্ষণ মানুষকে একই জিনিষ বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন কিছু
শেখাবে। জ্ঞানী মানুষদের সাহচর্যে থেকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, প্রশিক্ষণের
মাধ্যমে, তাদের সাথে সময় কাটানের মাধ্যমে এবং পঠন পাঠনের মাধ্যমে অমূল্য অনেক
কিছুই শেখা যায়। তবে শেখার মত মাসষিকতা অবশ্যই দরকার।
S=Self Audit= নিজের
দোষ নিজে খুঁজুন। ‘স্বীয় আত্মার হিসাব
গ্রহণ করুন বা ‘মুহাসাবাতুন নাফস’ করুন।’
আত্মসমালোচনার ফলে:
১. নিজের দোষত্রুটি নিজের
সামনে প্রকাশ করার মাধ্যমে মানুষ স্বীয় ভুলত্রুটি জানতে পারে। ফলে তার হৃদয় ভালো কাজের
দিকে আকৃষ্ট হয় এবং মন্দকাজ থেকে দূরে থাকতে পারে।
২. আত্মসমালোচনা দ্বীনের
বা ধর্মের ওপর দৃঢ়তা অর্জনের সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম, যা মানুষকে আল্লাহর দরবারে মুহসিন
ও মুখলিছ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে।
৩. আত্মসমালোচনার মাধ্যমে
মানুষ আল্লাহর নেয়ামতগুলো, অধিকারগুলো জানতে পারে। আর সে যখন আল্লাহর নেয়ামত ও তার
অবস্থান সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে, তখন সে আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়ে উদ্বুদ্ধ
হয়।
৪. আত্মসমালোচনার মাধ্যমে
মানুষের মাঝে পরকালীন জওয়াবদিহিতার উপলব্ধি সৃষ্টি হয়। মাইমুন বিন মিহরান নামক এক তাবে‘য়ী
বলতেন, ‘মুত্তাকি ব্যক্তি সেই, যে নিজের জওয়াবদিহিতা এমন কঠোরভাবে গ্রহণ করে যেন সে
একজন অত্যাচারী শাসক’ (ইহয়াউ উলুমিদ্দীন ৩/৩৯৫) ।
৫. আত্মসমালোচনা জীবনের
লক্ষ্যকে সব সময় সজীব করে রাখে। এর মাধ্যমে আমরা অনুভব করতে পারি আমাদেরকে এই পৃথিবীর
বুকে অনর্থক সৃষ্টি করা হয়নি। পার্থিব জীবন শুধু খাওয়াদাওয়া, হাসিঠাট্টার নয়, এ জীবনের
পরবর্তী যে অনন্ত এক জীবন, তার জন্য যে আমাদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে, আত্মসমালোচনা
আমাদেরকে সর্বক্ষণ তা স্মরণ করিয়ে দেয়।
৬. মুহাসাবার বা আত্মসমালোচনার
ফলে কোনো পাপ দ্বিতীয়বার করতে গেলে বিবেকে বাধা দেয়। ফলে পাপের কাজ থেকে মুক্তি পাওয়ার
পথ আমাদের জন্য সহজ হয়ে যায়।
আত্মসমালোচনা শুধু ধর্মীয় জীবন নিয়েই নয় বরং অর্থনৈতিক জীবন, শিক্ষাগত জীবন, পারিবারিক জীবন, নিজের আবেগিক দিক, পেশাগত জীবন, সামাজিক জীবন এবং নিজের শারীরিক দিক আত্মসমালোচনার ভেতর রাখতে হবে।
আত্মসমালোচনা শুধু ধর্মীয় জীবন নিয়েই নয় বরং অর্থনৈতিক জীবন, শিক্ষাগত জীবন, পারিবারিক জীবন, নিজের আবেগিক দিক, পেশাগত জীবন, সামাজিক জীবন এবং নিজের শারীরিক দিক আত্মসমালোচনার ভেতর রাখতে হবে।
O= Optimism=
Optimism=আশাবাদ
যারা আশাবাদী দেখবেন
তাদের ভেতর স্ট্রেস ব সানষিক চাপ নেই। সব কাজের ভেতরেই ইতিবাচক কোন কিছু খুঁজুন।
পেয়ে যাবেন। যারা আশাবাদী নয়, তারা সকল সমস্যাকে জটিলতর করে তোলে। কিন্তু যারা
আশাবাদী তারা সকল সমস্যার ভেতর সমাধান দেখতে পায় আর এটা তার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়।
আশাবাদী লোকদের কাছে সমস্যা হলো অপোরচ্যুনিটি বা সুযোগ। তাই আশাবাদী হোন, সমস্যা সমাধানকেন্দ্রীক
লোক বনে যান। জীবন সহজ হবেই।
P=Power of Now=
“আজ”-এর শক্তি
কোন কাজ ফেলে রাখবেন না।
আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু -এভাবে চলবেন না। এটা যারা কারেন তারা হলো দীর্ঘসূত্রী বা প্রোক্রাস্টিনেটর।
তাই আজই “মি. প্রফেসর” হয়ে যান। মি. “ল্যাটার” হবেন না। দীর্ঘসূত্রী হলে আপনার
ব্রেন বা ঘিলুটা একা মেস হয়ে যাবে আর আপনি পরিপাটি থাকতে পারবেন না।
H= High
Gratitude=কৃতজ্ঞ হোন।
যে সকল লোকের ভেতর কৃতজ্ঞতা বোধ আছে
তারা দুনিয়ার সবচেয়ে সূখী। এই দুনিয়ায় বিলিয়ন বিলিয়ন লোক আছে যারা আপনার চেয়ে অনেক
গরীব-হতদরিদ্র। এই দুনিয়ায় বিলিয়ন বিলিয়ন লোক আছে যারা আপনার চেয়ে অনেক বেশী
অসুস্থ। তাই দিনের শেষে যখন আপনার মাথাটি আরামের বালিশ ছোঁয় তখনই আপনি গুনতে থাকুন
কি পারিবারিক, অর্থনৈতিক, শারীরিক, মানষিক, আবেগিক, শিক্ষা বিষয়ক, পেশাগত আশীর্বাদ
আপনি পেয়েছেন আপনার সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে।
Y= Yes to Change=হ্যাঁ, আমি বদলে যাবো
কথায় বলে, “গড়ায়মান শিলার গায়ে শ্যাওলা থাকে না “অ্যা রোলিঙ স্টোন গ্যাদার্স নো মস। তাই বদলে যান। আপনার খোল নলচে পাল্টান। খাপ খাওয়ান জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে। মনে রাখবেন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বদলে যাওয়া অনেক মূল্যবান একটি বিষয়। যারা বদলাতে পারে না, তারা টিকতেও পারেনা। সেই জন্যই বলা হয়, “যে সহে, সে রহে।”-হি হু এনডিওরস- ক্যান উইথস্ট্যান্ড HE WHO ENDURES, CAN WITHSTAND. আর নিজেকে পরিবর্তন করাতে হলে পজিটিভ মনোভাব অত্যন্ত বেশী দরকার।
সূত্রঃ অনেক
No comments:
Post a Comment