বিপদ-আপদের ঘনঘটার মধ্যেও যে জিনিস মানুষকে সঠিক পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখে এবং কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতিতে পদস্খলন হতে দেয় না সেই একমাত্র জিনিসটি হচ্ছে আল্লাহ প্রতি ঈমান ৷
যার অন্তরে আল্লাহর প্রতি ঈমান নেই সে এসব বিপদ -আপদকে হয় আকস্মিক দুর্ঘটনার ফল মনে করে অথবা এসব বিপদ-আপদ দেয়ার ও দূর করার ব্যাপারে পার্থিব শক্তিসমূহকে কার্যকর বলে বিশ্বাস করে কিংবা সেসবকে এমন কাল্পনিক শক্তিসমূহের কাজ বলে মনে করে যাদেরকে মানুষের কুসংস্কারজনিত বিশ্বাস ক্ষতি ও কল্যাণ করতে সক্ষম বলে ধরে নিয়েছে অথবা তারা আল্লাহকে সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী বলে নিখাদ ও নির্ভেজাল ঈমানের সাথে মানে না ৷
ভিন্ন ভিন্ন এসব ক্ষেত্র ও পরিস্থিতিতে মানুষ নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয় ৷ একটি বিশেষ সীমা পর্যন্ত সে বিপদ-আপদ বরদাশত করে বটে কিন্তু তার পরই সে পরাজয় স্বীকার করে নেয় ৷ তখন বিভিন্ন আস্তানায় মাথা নত করে, সব রকম আপমান ও লাঞ্ছনা স্বীকার করে নেয় ৷ এ সময় সে যে কোন হীন কাজ ও আচরণ করতে পারে ৷ সব রকম ভ্রান্ত কাজ করতে প্রস্তুত হয়ে যায় ৷ আল্লাহকে গালি দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেনা ৷ এমনকি আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে ৷
অপরদিকে যে ব্যক্তি একথা জানে এবং আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তা'আলার হাতেই সবকিছু ৷ তিনিই এই বিশ্ব-জাহানের মালিক ও শাসক ৷ তাঁর অনুমোদনক্রমেই বিপদ-মসিবত আসতে এবং দূরীভূত হতে পারে ৷ এই ব্যক্তির মনকে আল্লাহ তা'আলা ধৈর্য ও আনুগত্য এবং তাকদীরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার 'তাওফীক' দান করেন ৷ তাকে সাহস ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে সব রকম পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার শক্তি দান করেন ৷ অন্ধকার থেকে অন্ধকারতম পরিস্থিতিতেও তার সামনে আল্লাহর দয়া ও সাহসহারা করতে পারে না যে, সে সত্য ও সঠিক পথ থেকে সরে যাবে বা বাতিলের সামনে মাথা নত করবে কিংবা আল্লাহ ছাড়া আর কারো দরবারে তার দুঃখ -বেদনার দাওয়াই বা প্রতিকার তালাশ করবে ৷
এভাবে প্রতিটি বিপদ মুসিবতই তার জন্য অধিক কল্যাণের দরজা উন্মুক্ত করে দেয় ৷ প্রকৃতপক্ষে কোন মুসিবতই তার মুসিবত থাকে না বরং পরিণামের দিক থেকে সরাসরি রহমতে পরিণত হয় ৷ কেননা সে এই মুসিবতে নিঃশেষ হয়ে যাক বা সফলভাবে উৎরিয়ে যাক-উভয় অবস্থায়ই সে তার প্রভুর দেয়া পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে যায় ৷
No comments:
Post a Comment