Monday, May 18, 2020

নেতিবাচকতা


নেতিবাচক দিক থেকে সরে গেলেই সুন্দর সুন্দর জিনিষ চোখে পড়তে থাকবে।
নেতিবাচকতা আমাদেরকে এবং আমাদের চারপাশের সবাইকে প্রভাবিত করে। এটা আমাদের সক্ষমতা সীমিত করে ফেলে। নেতিবাচকতা আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর  বিরূপ প্রভাব রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা ইতিবাচকভাবে জীবনযাপন করতে চায় তাদের তুলনায় যারা নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা করে তারা বেশি চাপ, অসুস্থতায় ভোগে।  
এখানে নেতিবাচকতা থেকে পরিত্রাণ পেয়ে আরো ইতিবাচক হয়ে উঠার কিছু উপায় তুলে ধরা হলো-
১. সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞ হোন:
একজীবনে যা কিছু পেয়েছেন তার ওপর কৃতজ্ঞ থাকুন। যখন আমরা কৃতজ্ঞ হতে শুরু করি এবং আমাদের জীবনের ছোট-ছোট সংগ্রাম থেকে শুরু করে সবকিছুর প্রশংসা করি তখন তা আমাদের আরও ভালো করে গড়ে তোলে। আমাদের কৃতজ্ঞতাবোধ আরও বেশি কিছু অর্জনে সহায়তা করে। এটি আপনার জীবনকে আরো পরিপূর্ণ করে তুলবে। এর ফলে আমরা আরও ইতিবাচক হতে পারবো।
২. আরো হাসুন: 
ব্যস্ততম জীবন যাপনে আপনার নিজেকে রোবটের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু জীবন নিয়ে সিরিয়াস মনোভাব আপনার ভেতর নেতিবাচকতা তৈরী করতে পারে। ইতিবাচক হয়ে উঠা মানে হলো-জীবনের জটিল পর্যায়গুলো হালকাভাবে নেওয়া। হাসি আমাদের মেজাজকে হালকা করে এবং জীবনকে এত গুরুত্ব সহকারে না নেওয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে ইতিবাচক হতে সাহায্য করে। কেবল কাজ নিয়ে পড়ে না থেকে মাঝেমধ্যে হাস্যরসে নিজেকে সামিল করুন। এতে মন এতে মন আরো ফুরফুরা হয়ে উঠবে। এতে আপনি সুখানুভূতি পাওয়ার পাশপাশি আরো ইতিবাচক হয়ে উঠবেন, সন্দেহ নেই। 
৩. অন্যদের সাহায্য করুন: 
নেতিবাচকতা আর স্বার্থপরতা হাতে হাত রেখে চলে। যে ব্যক্তিরা কেবল নিজের জন্যই বেঁচে থাকে তাদের জীবনের কোন উচ্চ উদ্দেশ্য নেই।
আপনার জীবনের উদ্দেশ্য এবং ইতিবাচকতা তৈরি করার সবচেয়ে মৌলিক উপায় হলো অন্যদের জন্য কাজ করা। ছোট থেকে শুরু করুন; স্টারবক্সে আপনার সামনে দাড়ানো ব্যক্তিকে দরজা খুলে প্রবেশ সাহায্য করুন। 
অন্যদের সাহায্য করার বিষয়টি আপনাকে মূল্যবোধের অবিচ্ছেদ্য ধারণা দেবে যা ইতিবাচকতায় রূপ নেবে। এ কাজে মানুষের প্রশংসাও পাবেন আপনি। 
৪. চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন করুন: 
আমরা আমাদের শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষক কিংবা সেরা শত্রু দুটাই হতে পারে। নিজের ভেতর থেকেই পরিবর্তন শুরু হয়। যদি আপনি আরও ইতিবাচক হতে চান, তবে আপনার চিন্তার পরিবর্তন করুন। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা মগজে ধারণ করে আপনি কখনোই ইতিবাচক জীবনের অধিকারী হতে পারবেন না। 
আপনার মনে যদি নেতিবাচক চিন্তাভাবনা উদয় হয় তবে এটি লিখে ফেলুন এবং ইতিবাচক কথা দিয়ে এটি পুনরায় লিখুন। উদাহরণস্বরূপ,আপনি লিখলেন, 'আমি বিশ্বাস করতে পারি না যে আমি পরীক্ষায় এতটা খারাপ করবো।' এরপরে লিখুন, 'আমি পরীক্ষায়ও আশানুরূপ ফলাফল করি নাই। কিন্তু আমি জানি যে, আমি সক্ষম এবং পরেরবার আমি আরও ভাল করবো।' 
৫. ইতিবাচক মানুষের সংস্পর্শে থাকুন: 
সাধারণত যেসব লোকদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকি আমরা সে রকমটাই হয়ে উঠি। যদি আমাদের বন্ধুরা নেতিবাচক চিন্তাভাবনা অধিকারী হয় তবে আমরাও সেরকম হয়ে উঠি। আমরা তাদের আচরণ অনুকরণ করি এবং তাদের মতো হয়ে যাই। আমাদের চারপাশের লোকেরা যদি ইতিবাচক আচরণ সমর্থন না করে বা না দেখায় তবে আরো ইতিবাচক হওয়া উঠা আমাদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। যতই কঠিন হোক না কেন আপনার জীবন থেকে নেতিবাচক মানুষগুলোকে সরিয়ে ফেলুন। এ ধরনের মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক রাখবেন না। ইতিবাচক হওয়ার পথে এটা এক বিশাল পদক্ষেপ। 
৬. কার্যকর থাকুন: 
মনে কোনো ধরনের নেতিবাচক চিন্তা এলে তা পাত্তা দেবেন না। নেতিবাচক চাপকে ইতিবাচক কাজে রূপান্তর করুন। মনে নেতিবাচক চিন্তা বা চাপ থাকলে ঘরের বাইরে হেঁটে আসুন এবং বিরতি নিন। আপনার চোখ বন্ধ করে, কয়েকবার গভীরভাবে শ্বাস নিন। মন যখন শান্ত হবে, একটি কলম এবং কাগজ নিয়ে বসুন, লিখে ফেলুন পরিস্থিতি বা সমস্যাগুলো। সমস্যার সমাধান করতে চার বা পাঁচটি পদক্ষেপ বা সমাধান লিখে ফেলুন। 
৭. দায়িত্ব নিন: 
অনেকই আছেন যারা ভুল করলে সহজে তা স্বীকার করতে চাননা বরং নিজেদের পরিস্থিতির শিকার বলে অজুহাত দেখান। এটা নেতিবাচকতার লক্ষণ। পরিস্থিতির দোষারোপ করা এবং অন্যদের দোষারোপ করার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন। এতে আপনি অনেকটাই ইতিবাচক হয়ে উঠবেন। নিজের জীবন, চিন্তাভাবনা এবং কর্মের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করা ইতিবাচক জীবন তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ।
সূত্র: লাইফহ্যাক

No comments:

Post a Comment